আমরাতো মানুষ, কেন আমাদের ছোট চোখে দেখে?



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ), বার্তা২৪.কম
বাবু লাল রবিদাস। ছবি: বার্তা২৪.কম

বাবু লাল রবিদাস। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মাঘের মিষ্টি সকাল। কুয়াশা ভেঙে তেজ ছড়াচ্ছে সূর্য। শীতের আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠছে প্রকৃতি। আর এই সাতসকালেই ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ লোক সড়কের পাশে পাটি বিছিয়ে সুই-সুতা দিয়ে জুতা সেলাই করে চলছে একমনে। মাঝে মাঝে দু’একটা দ্রুতগতির গাড়ি সড়কে ধুলা উড়িয়ে ছুটে চলেছে গন্তব্যে। বৃদ্ধ লোকটি তখন সুরক্ষা পেতে গলায় জড়ানো মাফলার দিয়ে নিজের নাক মুখ চেপে ধরছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে এই দৃশ্য চোখে পড়ে ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের পাটবাজার এলাকার হারুন টি স্টলের সামনে।

কাছে যেতেই বৃদ্ধ লোকটি এ প্রতিনিধিকে বলে ওঠেন, ‘জুতা সিলি না কালি করবাইন?’ সাংবাদিক পরিচয় দিলে ভুল ভাঙে তার। বার্তা২৪.কমকে তিনি জানান তার নাম বাবু লাল রবিদাস। বাড়ি উপজেলার জেলখানা মোড় এলাকা মমিনপুর গ্রামে। বাবা স্বর্গীয় সুন্দর রবিদাস। দুই ভাই-বোনের মধ্যে বাবু লাল সবার বড়। অভাব-অনটনের কারণে পৈত্রিক সূত্রেই এই পেশায় আসা তার।

কথা বলতে বলতেই এক যুবকের পুরাতন জুতা সেলাই করছিলেন বাবু লাল। সুই-সুতার ফোড়নে নিপুন কৌশলে খুব দ্রুতই কাজটি সম্পন্ন করলেন তিনি। কাজ শেষে টাকা দিয়ে চলে যায় যুবক। নতুন কাস্টমারের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে গল্প জুড়ে দেন বাবু লাল।

তিনি বলেন, ‘অভাবের লেইগ্যা ইশকুলে যাওয়া অয় নাই। সংরামের আগে থেইক্যাই বাপের লগে হাঁট-বাজারে বইয়্যা এই কাম করি। বাপ মইর‌্যা গেলেও আমি অহনো এই কামেই লাইগ্যা আছি।’

জানা গেছে, বাবু লালের বাবা-মা স্বর্গীয় হয়েছেন প্রায় ২০ বছর। দাম্পত্য জীবনে বাবু লাল বিয়ে করেছেন ফুলদাসী রবিদাসকে। তাদের সংসারে পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। কিন্তু অর্থের অভাবে তার কোনো সন্তানই প্রাথমিকের গণ্ডি পেরোতে পারেনি। এর মধ্যে তিন ছেলে বাদল, কার্তিক, সুবল ও দুই মেয়ে রাণী, রিতা বিয়ের পর আলাদা হয়েছে। তারা বাবু লালের খুব একটা খোঁজ নেন না। বর্তমানে দুই ছেলে সুজন, পূজন, এক মেয়ে সীমা ও স্ত্রীকে নিয়েই অভাব-অনটনে চলছে তার সংসার।

স্বাধীনতার আগে থেকেই পাটবাজার এলাকায় পাটি বিছিয়ে মুচির কাজ করতেন বাবু লাল। নব্বই দশকে বাবু লাল মুচির কাজ করে প্রতিদিন ২শ থেকে ২৫০ টাকার মতো আয় করতেন। তবে সময়ের পরিক্রমায় আশপাশে আরও মুচির দোকান হওয়ায় ব্যবসায় ভাটা পড়েছে বাবু লালের। তার এখানে জুতা কালি ১৫ থেকে ২০ টাকা। এছাড়া ছেঁড়া জুতা সেলাই করে মেরামত করা হয় ৫ থেকে ১০ টাকায়। দিনশেষে তার আয় হয় এখন ৭০ থেকে ৯০ টাকার মতো।

বাবু লাল বলেন, ‘ঘরের ভিডা ছাড়া আমার আর কিচ্ছু নাই। যে টেকা কামাই করি, হেইডা দিয়া সংসার চলে না। শেষ কবে যে দুইশ টেকা কামাই করছিলাম মনেও নাই। অভাবে পইড়্যা পোলা সুজইন্যারে ওয়ার্কশপের কামে দিছি। হে অহন সংসারে কিছু দেয়, হেরপরেও টানাটানি।’

কথা প্রসঙ্গে বাবু লাল জানান, নিচু জাতের লোক হওয়ায় অনেকই তাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে। অভাবগ্রস্ত হলেও কেউ সাহায্য করে না।

আক্ষেপ নিয়ে বাবু লাল বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় আমরাতো মানুষ, তারপরেও কেন আমাদের ছোট চোখে দেখে? আমরাতো কারো কাছে হাত পাতি না। কেউ আমাদের সাহায্যও করতে আসে না। এমন দৃষ্টি ভঙ্গি আমাদের অনেক কষ্ট দেয়?’

বাবু লাল আরও জানান, জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স ভুল হওয়ায় তিনি পান না বয়স্ক ভাতা। বর্তমানে ছোট মেয়ে সীমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। নান্দাইল থেকে মেয়ের বিয়ের জন্য লোক এসেছে। কিন্তু টাকার জন্য বিয়ের আলাপটা এগোতে পারছেন না তিনি।

এরই মাঝে সকালের কুয়াশা কেটে গেছে। আকাশে খেলা করছে ঝলমলে রোদ। এমন সময় গল্পে যোগ হয় চা দোকানি হারুন। গ্যাসের চুলোয় চায়ের কেটলি বসিয়ে হারুন বলেন, ‘বাবু লাল অভাবী হইলেও খুব সৎ মানুষ। জমি বেইচ্যা বড় দুই মাইয়্যারে বিয়া দিছে। কারো কাছে হাত পাতে নাই।’

কথার রেশ টেনে বাবু লাল বলেন, ‘অহন মনে হয় হাত পাতন লাগবোরো হারুন। ছোট মাইয়্যার বিয়ার ঘর আইছে। কিন্তু আমি তো সব জমি বেইচ্যা বড় দুই মাইয়্যারে বিয়া দিয়া দিছি। ছোট মাইয়্যার বিয়ার কথা তহন ভাবি নাই।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;