‘বেঁচে না থাক, অন্তত লাশটা যেন পাই’



আরিফ আহমেদ সিদ্দিকী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, পাবনা, বার্তা২৪.কম 
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গত সোমবার স্বামী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইলে সর্বশেষ কথা বলেছেন স্ত্রী আসমা খাতুন। জীবিকার তাগিদে মাটিকাটা শ্রমিক হিসেবে গেল ১০ দিন আগে তার স্বামী ২০-২৫ জনের সঙ্গে মুন্সিগঞ্জে গেছেন। তবে গত ১৫ জানুয়ারি তার স্বামীকে বহনকারী ট্রলারটি ডুবে গেছে এমন সংবাদে তার ভেতরে বইছে স্বজন হারানোর বেদনা।

শুধু আসমা খাতুনই নন, তার মতো বাকিদের পরিবারেও চলছে শোকের মাতম। কেউবা বিলাপ করছেন, কেউবা স্বজন ফিরে পাওয়ার আশায় কোরআন তেলাওয়াত করছেন।

মাটিকাটা শ্রমিক রফিকুলের স্ত্রী আসমার মতোই স্বামী, দুই ছেলে ও ভাই নিখোঁজে পাগলের মতো প্রলাপ করছেন হানুফা খাতুন। দুই ছেলে নিখোঁজে জব্বার আলীর অবস্থাও করুন। প্রতিবেশী স্বজনরা তাদের সান্ত্বনা দিতে এসে নিজেরাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছেন। চলছে গগন ফাটানো কান্না। এলাকার আকাশে-বাতাসে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

স্বামী, ভাই, সন্তান হারানো পরিবারগুলোর সদস্যরা স্বজনদের নিখোঁজের খবর মেনে নিতে পারছেন না। তাদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকেই। কেউ বা হারাচ্ছেন সজ্ঞা। আর কেউ প্রলাপ বকছেন।

নিখোঁজ স্বজনরা দাবি নিয়ে বলেন, ‘বেঁচে না থাক, অন্তত লাশটা যেন পাই।’

জানা গেছে, পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের মুণ্ডুমালা, দাসমরিচ, চণ্ডীপুর আর মাদারবাড়ীয়া গ্রামের বাতাস গত দু’দিন ধরে ভারী হয়ে আছে। গেল সোমবার গভীর রাত থেকে এসব গ্রামের ১৭ জন ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন। যাদের হদিস এখনো মেলাতে পারেনি উদ্ধারকারীরা।

বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত কেউই এই নিখোঁজ ব্যক্তিদের বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি।

নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা জানান, জীবিকার তাগিদেই ২০-২৫ জনের একটি দল একত্রে মুন্সীগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে মাটিকাটার কাজ করতেন। নিখোঁজদের মধ্যে মুণ্ডুমালা গ্রামের একই পরিবারের দুই সহোদরসহ ৯ জন, দাসমরিচ গ্রামের একই পরিবারের চারজনসহ মোট পাঁচজন, চণ্ডীপুর গ্রামের দুজন এবং মাদারবাড়ীয়া গ্রামের একজন নিখোঁজের তালিকায় রয়েছেন।

নিখোঁজ ১৭ জন শ্রমিকরা হলেন- পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের মুণ্ডুমালা গ্রামের গোলাই প্রামাণিকের ছেলে সোলেমান হোসেন, জব্বার ফকিরের ছেলে আলিফ হোসেন ও মোস্তফা ফকির, গোলবার হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন, আব্দুল মজিদের ছেলে জাহিদ হোসেন, নূর ইসলামের ছেলে মানিক হোসেন, ছায়দার আলীর ছেলে তুহিন হোসেন, আলতাব হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন, লয়ান ফকিরের ছেলে রফিকুল ইসলাম, দাসমরিচ গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে ওমর আলী ও মান্নাফ আলী, তোজিম মোল্লার ছেলে মোশারফ হোসেন, আয়ান প্রামাণিকের ছেলে ইসমাইল হোসেন, সমাজ আলীর ছেলে রুহুল আমিন, মাদারবাড়িয়া গ্রামের আজগর আলীর ছেলে আজাদ হোসেন, চণ্ডীপুর গ্রামের আমির খান ও আব্দুল লতিফের ছেলে হাচেন আলী।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/17/1547722007461.jpg

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে খান মরিচ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান বলেন, ‘আমার কাছে খবর আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি আমার ছোট ভাই রতন রহমানকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়াতে পাঠিয়েছি। গজারিয়ার স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আমার এলাকার নিখোঁজদের নাম পরিচয় উল্লেখ করে একটি তালিকা দেয়া হয়েছে।

এদিকে ট্রলারডুবিতে বেঁচে যাওয়া শ্রমিক পাবনার ভাঙ্গুড়ার হাবিবুর রহমান ও পরশ কুমার সিং জানান, নদীতে প্রায় এক ঘণ্টা সাঁতার কেটে একটি বালুর জাহাজে উঠে প্রাণে বাঁচেন তারা।

বেঁচে যাওয়া আরেক শ্রমিক মামুন আলী জানান, তারা ১৪ জন প্রাণে বেঁচে গেলেও কেবিনের ভেতরে থাকা ২০ জনের কেউই বেরোতে পারেনি।

মামুন আরও জানান, তেলের ট্যাংকারটি দেখতে পেয়ে ট্রলারের চালক বিপদ সংকেত বাজান। এ সময় তারা তাড়াহুড়া করে ওপরে উঠে আসার আগেই ট্যাংকারটি ট্রলারকে ধাক্কা দেয়। এরপরই ট্রলারের বাইরে থাকা শ্রমিকরা ছিটকে নদীতে পড়ে যায়। আর ডুবে যায় ট্রলারটি। কিন্তু তেলের ট্যাংকারটি তাদের উদ্ধারে কোনো ধরনের সাহায্য করেনি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাবনার জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এ দুর্ঘটনাটি মর্মান্তিক। খবরটি জানার সঙ্গে সঙ্গেই মুন্সিগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।’

উল্লেখ্য, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরঝাপটার কাছে মেঘনা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকারের ধাক্কায় মাটিবোঝাই ট্রলারডুবির ঘটনায় ২০ শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। সাঁতরে তীরে উঠে এসেছেন ১৪ জন। ১৫ জানুয়ারি রাত ৩টার দিকে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ট্রলারে মাটি নিয়ে ৩৪ জন শ্রমিক যাচ্ছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বক্তাবলীতে। নিখোঁজ ২০ শ্রমিকের মধ্যে ১৭ জনের বাড়ি পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;