চরের স্কুলে যেতে শিক্ষকদের ‘মাস্টার সার্ভিস’



অভিজিৎ ঘোষ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, টাঙ্গাইল, বার্তা২৪
শুধুমাত্র শিক্ষকরা ওই নৌকায় যাতায়াত করেন বলে নাম দিয়েছে ‘মাস্টার সার্ভিস’, ছবি: বার্তা২৪

শুধুমাত্র শিক্ষকরা ওই নৌকায় যাতায়াত করেন বলে নাম দিয়েছে ‘মাস্টার সার্ভিস’, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশাল চরাঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা প্রতিদিন নির্দিষ্ট শ্যালো ইঞ্জিন চালিত বড় নৌকায় যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে কর্মক্ষেত্রে যান। শুধুমাত্র শিক্ষকরাই ওই নৌকায় যাতায়াত করেন বলে এলাকার মানুষ এটার নাম দিয়েছে ‘মাস্টার সার্ভিস’। সম্প্রতি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার চরাঞ্চল গাবসারা ও অর্জুনা ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে এই মাস্টার সার্ভিসের দেখা মেলে।

জানা গেছে, জেলার ভূঞাপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার মধ্যে গাবসারা ইউনিয়ন পুরোটা, অর্জুনা ইউনিয়নের অর্ধেক, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের এক চতুর্থাংশ এবং পৌর এলাকার কিছু অংশ যমুনা নদীর দুর্গম চর। আর চরাঞ্চলে যাতায়াত করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। শুষ্ক মৌসুমে কোনো কোনো চরে পায়ে হেঁটে যাতায়াত করা গেলেও অধিকাংশ চরে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। আর বর্ষা মৌসুমে চরাঞ্চলে যাতায়াতের জন্য রয়েছে শতাধিক ছোট-বড় নৌকা। এসব নৌকা গোবিন্দাসী ঘাট থেকে যাতায়াত করে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নৌ-ঘাটে চা বিক্রেতারা চায়ের চুলায় আগুন দিচ্ছেন। ঘাটে তখন অর্ধশত নৌকা সারিবদ্ধভাবে বাঁধা। চরে যাওয়ার উপায় জানতে চাইলে চা বিক্রেতা রাসেল মিয়া বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘সকাল ৯টার আগে চরে নৌকা পাওয়া যায় না। কেউ যদি রিজার্ভ করে যেতে চান তাহলে যাবে। অন্যদিকে চরে যেতে নৌকায় কমপক্ষে ৬০-৭০ জন যাত্রী হলে নৌকা ছাড়বে। এছাড়া চরের স্কুলগুলোতে যেসকল মাস্টার চাকরি করেন তাদের নিয়ে ৮টার দিকে মাস্টার সার্ভিস নামে একটি নৌকা ছেড়ে যায়। সেই নৌকায় যেতে পারবেন।’

গল্প করতে করতে সকাল ৮টার আগে শিক্ষকরা ঘাটে চলে আসলেন। মাস্টার সার্ভিসে ওঠার জন্য সিঁড়ি থাকায় শিক্ষকদের কোনো কষ্টই করতে হয় না। নৌকায় রয়েছে জুতা রাখার বিশেষ ব্যবস্থা। মাস্টার সার্ভিসের নৌকার চালক জহুরুল। মজা করে তাকে অনেকে পাইলট বলে ডাকে। যাত্রীরা ছইয়ের নিচে, নৌকার দুপাশে এবং ছইয়ের ওপর সারিবদ্ধভাবে বসেছেন।

শিক্ষকরা জানান, সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে স্কুলে উপস্থিত হতে হয়। অনেক নৌকা থাকলেও ৯টার আগে কোনো নৌকা ছাড়ে না। ফলে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছাতে প্রায় প্রতিদিনই তাদের দেরি হয়। আবার সাড়ে ৪টার পর বাড়ি ফিরতেও বেগ পেতে হয়। সময়মতো পৌঁছাতে না পারলে স্কুলের পরিচালনা কমিটি ও বিভাগীয় কর্মকর্তাদের গালমন্দ শুনতে হতো। তাই এ অবস্থা এড়াতে কয়েকজন শিক্ষক ২০০৭ সালে ৩২ হাজার টাকা দিয়ে একটি পুরাতন নৌকা কেনেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/21/1548062561759.jpg

তারা আরো জানন, প্রথমে ১৩ জন শিক্ষক ওই নৌকায় য়াতায়াত করতেন। পিন্টু মিঞা নামের স্থানীয় একজনকে নৌকার চালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। মাসে তাকে প্রত্যেক শিক্ষক ৫শ’ টাকা করে বেতন দিতেন। অল্প দিনের মধ্যে নৌকাটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

জানা গেছে, বাসুদেব কোল, চর বিহারী ও গোবিন্দপুর বাজার ঘাট থেকে শিক্ষকরা নৌকায় ওঠেন ও নামেন। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে বা অন্য নৌকায় যার যার স্কুলে যান। তবে এক বছর পর পুরাতন নৌকাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লে শিক্ষরা বেশ বেকায়দায় পড়েন। তবে সুলতান মিঞা নামে একজন নিজস্ব নৌকা দিয়ে এ সার্ভিস চালু করেন। বর্তমানে হাসান ও জহুরুল দুইভাই ‘মাস্টার সার্ভিস’ চালু রেখেছেন।

শিক্ষকরা জানান, সার্ভিসটি চালু রাখতে ১১ সদস্যের পরিচালনা কমিটি আছে। প্রতি বছর নতুন কমিটি গঠন করা হয়।

শুশুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা ফাহিমা আক্তার বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘আগে অনিশ্চয়তার মধ্যে স্কুলে যাতায়াত করতাম। সময়মতো নৌকা পাওয়া যেত না। এখন ‘মাস্টার সার্ভিস’ চালু আছে বলেই শিক্ষকরা সময়মতো, নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে কর্মস্থলে যেতে পারছেন।’

কমিটির সভাপতি ও আছাতুন্নেছা দাখিল মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক আব্দুস সামাদ মণ্ডল বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘মাস্টার সার্ভিসে যাতায়াত করতে আগে মাসে ৫০০ টাকা দিতে হতো। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় ১০০ টাকা বাড়িয়ে ৬০০ টাকা করা হয়েছে। প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে চালককে টাকা দিতে হয়।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;