‘স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হব, ভাগ্যদোষে হলাম রিকশাচালক’



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ), বার্তা২৪.কম
যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন রিকশাচালক ইউসুফ আলী ইয়াসিন / ছবি: বার্তা২৪

যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন রিকশাচালক ইউসুফ আলী ইয়াসিন / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

‘স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে শিক্ষক হব। কিন্তু ভাগ্যদোষে হয়ে গেলাম রিকশাচালক। এখন স্কুলে যাওয়ার বদলে পেটের দায়ে রিকশা চালাই। তবে পোশাক ও কথাবার্তায় স্মার্ট হওয়ায় অনেকেই আমাকে রিকশাচালক ভাবে না। তাই আমি যাত্রীও পাই কম। তবে এটা নিয়ে আমার দুঃখ নাই।’

খুবই নরম স্বরে কথাগুলো বলছিলেন রিকশাচালক ইউসুফ আলী ইয়াসিন (৪০)। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের নওয়াগাও গ্রামের মৃত জাফর আলী ছেলে। দুই ভাই চার বোনের মধ্যে ইউসুফ পঞ্চম।

সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে রিকশাচালক ইউসুফের সঙ্গে বার্তা২৪.কম’র প্রতিবেদকের দেখা মিলে গৌরীপুর পৌর শহরের মধ্যবাজার এলাকায়। পরনে ছিল তার সাদা শার্ট-কালো প্যান্ট। গায়ে জড়ানো শীতের কোর্ট, মাথায় ওলের টুপি। শীতের রাতে অত্যন্ত পরিপাটি হয়ে তিনি রিকশা নিয়ে যাত্রীর অপেক্ষা করছিলেন।

কাছে গিয়ে ইশারায় ডাক দিতেই ইউসুফ বলেন, ‘কোথায় যাবেন ভাইয়্যা?’ সাংবাদিক পরিচয় দিলে ভুল ভাঙে তার।

যাত্রীর অপেক্ষায় থাকতে থাকতে বার্তা২৪.কম’র সঙ্গে গল্প জমে উঠে ইউসুফের। তিনি বলেন, ‘আমি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় আমার দরিদ্র কৃষক বাবা প্যারালাইসিস হয়ে বিছানায় পড়ে যায়। তখন অভাবের কারণে দিনে একবেলাও ভাত খেতে পারতাম না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংসারের হাল ধরতে স্কুল ছেড়ে কাজ নেই ঢাকায়। চার বছর সেখানে কাজ করে বাড়ি চলে আসি। কাজ নিই গৌরীপুরের একটি হোটেলে। কিন্তু হোটেল মালিক সকাল ৭টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত কাজ করাত। তাই বাধ্য হয়ে কাজ ছেড়ে দিয়ে রিকশা চালানো শুরু করি। এরপর থেকে প্রায় ২৫ বছর কেটে গেছে এই পেশায়।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/05/1549326392935.jpg

ইউসুফের বাবা মারা গেছেন ২৪ বছর আগে। বয়সের ভারে তার মা আমেনা খাতুনও বিছানায় পড়ে আছেন। দাম্পত্য জীবনে ইউসুফের স্ত্রী ও তিন ছেলে রয়েছে। এর মধ্যে বড় ছেলে প্রথম শ্রেণিতে ও ছোট ছেলে শিশু শ্রেণিতে পড়ে। সবার ছোট ছেলেটার বয়স তিন বছর।

প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত রিকশা চালান ইউসুফ। এতে তার আয় হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এই টাকা দিয়েই চলে তার সংসার, ছেলেদের পড়াশোনা ও বৃদ্ধ মায়ের চিকিৎসার খরচ।

ইউসুফ বলেন, ‘আমরা প্রয়াত শিক্ষাবিদ আশকার ইবনে শাইখের বংশধর। গরিব হলেও গুছিয়ে কথা বলি। সবসময় ভাল কাপড় পড়ি। কিন্তু যে টাকা আয় করি সেটা থেকে একসঙ্গে কাপড় কেনা সম্ভব হয় না। তাই প্রতিদিন ৫০টাকা স্থানীয় একটি কাপড়ের দোকানে জমা রাখি। এক মাস পর ১ হাজার ৫০০ টাকা জমা হলেল হলে সেখান থেকে নতুন শার্ট-প্যান্ট কিনে আনি। অবশ্য ভাল কাপড় পড়ায় লোকে আমাকে কটূক্তি করে বলে, ভাত খাইতে ভাত পায় না, সাইকেল দৌড়াইয়্যা আগতে যায়।’

অর্থের অভাবে ইউসুফ জমি কিংবা বাড়ি কিছুই করতে পারেননি। অন্যের জমিতে কুড়ে ঘর তুলে পরিবার নিয়ে থাকেন। রিকশা চালিয়ে খেয়ে না খেয়ে পরে থাকলেও কেউ তাদের খোঁজ নেয় না। সহযোগিতাও পায়না কারও কাছ থেকে। তবে এসব নিয়ে তার দুঃখ নেই। তার দুঃখ শুধু লেখাপড়া না করতে পারায়।

লেখাপড়া নিয়ে ইউসুফ বলেন, ‘আমার এখনো লেখাপড়া করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু এই বয়সে তো স্কুলে ভর্তি হতে পারব না। তবে কখনো বয়স্ক শিক্ষা চালু হলে, আমি ইউসুফ ভর্তি হব।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;