ইশকুল আমি মেলা আগেই ছাড়ছি!



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, ময়মনসিংহ (গৌরীপুর), বার্তা২৪.কম
শিশুহকার আকাশ মিয়া, ছবি: বার্তা২৪

শিশুহকার আকাশ মিয়া, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ছেলেটির বয়স আনুমানিক ১২। পরনে ময়লা শার্ট-প্যান্ট। ছোট ছোট বাহারি পণ্যসামগ্রী বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে হেঁটে চলেছে সড়কের পাশ দিয়ে। মাঝে মাঝে হেঁকে উঠছে, ‘‘এই ক্লিপ,আয়না, চিরুনি, চুল বাঁধার ফিতা, চুরি, টিপ আছে, লাগবে নাকি?, পোলাপাইনের খেলনা, তসবিহ আছে, লজেন্সও বেঁচি’’।

পথে কোনো ক্রেতা ডাক দিলে থামছে ছেলেটি। তাদের কাছে জিনিসপত্র বিকিয়ে আবার হেঁটে চলে; নতুন ক্রেতার আশায়।

সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের ধানমহাল এলাকায় দেখা মেলে এই শিশুহকারের। নাম তার আকাশ মিয়া। ইশারায় ডাক দিতেই সে বলে ওঠে, “কী লাগবো মামা?”। সাংবাদিক পরিচয় দিলে ভুল ভাঙে তার। বার্তা২৪.কমের সাথে কিছুক্ষণের জন্য গল্প জমে ওঠে ছেলেটির।

আকাশ জানায়, তার বাবা হাদিস মিয়া, তিনি পেশায় কাঠুরে। তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নে। তিন ভাইয়ের মধ্যে আকাশ বড়। জীবিকার তাগিদে সংসারের হাল ধরতে এই পেশা বেছে নিয়েছে।

আকাশ বলে, ‘‘ছোটবেলা আব্বায় লেহাপড়ার লেইগ্যা ইশকুলে ভর্তি করছিলো। কিন্তু আমি ইশকুলে যাইতাম না। আব্বায় ইশকুলে যাওয়ার লেইগ্যা বকাবাইদ্য করলেও আমি হুনতাম না। তহন আব্বায় কইলো, আমার তো জমিদারি নাই, ঘরে বইয়্যা থাকলে তোরে খাওয়াইবো কেডা?। তাই প্যাটের দায়ে দুই বৎসর আগে এই ব্যবসায় নামছি। তয় কয়েক মাস আগে ব্যবসাডা ছাইড়্যা দিছিলাম। কিন্তু কয়েকদিন আগে গাছ কাটতে গিয়া পা কাইট্যা ফেইল্যা আব্বা বিছনায় পইড়্যা যায়, তাই আবার ব্যবসায় নামছি।”

গৌরীপুর পৌর শহরের একটি বাড়ির ছোট কক্ষ ৮০০ টাকায় ভাড়া নিয়ে দুই চাচাতো ভাইকে সাথে নিয়ে থাকে আকাশ। তার ওই দুই ভাইও এই ব্যবসা করে। প্রতিদিন পৌর শহর ও ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে বাঁশের পণ্যসামগ্রী ঝুলিয়ে বিক্রি করে আকাশ। তার কাছে সর্বোচ্চ দামের জিনিস হচ্ছে ৪০ টাকা মূল্যের তসবিহ, সর্বনিম্ন দামের জিনিস ২৫ পয়সা মূল্যের লজেন্স। এছাড়ার তার এখানে ৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে তরুণীদের মাথার ক্লিপ, চুল বাঁধার ফিতা, মাথার বেন, চিরুনি, কলম, বাচ্চাদের খেলনা সামগ্রীসহ হরেকপণ্য আছে। এছাড়াও পণ্যসামগ্রীর বিনিময়ে আকাশ গ্রামের মহিলাদের ঝড়ে যাওয়া মাথার চুল সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ শহরে বিক্রি করে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/12/1549941870562.jpg

আকাশ জানায়, প্রতিদিন ৩০০ টাকার মতো বিক্রি করলে অর্ধেক লাভ হয়। আর মাসে চুল বিক্রি করেও ১০ হাজার টাকা পায় সে। এক কেজি চুলের দাম পাঁচ হাজার টাকা। মাসে পাঁচ হাজার টাকা সে বাড়িতে পাঠায়।

আকাশের মা কল্পনা বেগম, তিনি গৃহিণী। এক ভাই আশিক, তার বয়স নয় বছর। সবচেয়ে ছোট ভাই সোহেলের বয়স চার বছর। তারা কেউ লেখাপড়া করে না।

আকাশের সাথে কথা বলতে বলতেই সন্ধ্যা নেমে আসে। সড়কে জ্বলে ওঠে নগরবাতি। এমন সময় কয়েকজন ক্রেতা এসে হাজির হন আকাশের কাছে। তাদের একজন হারুন অর রশিদ। চিরুনি কিনে টাকা দেয়ার সময় তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘কী ভাই, তুমি এই বয়সে লেখাপড়া না করে ব্যবসায় নেমেছ কেন? লেখাপড়া করলে তো চাকরি-বাকরি করে অনেক বড় হতে পারতে!’’

আকাশের জবাব, ‘‘ইশকুল আমি মেলা আগেই ছাড়ছি। তাই লেহাপড়া কইর‌্যা আমার বড় অওনের সুযোগ নাই। তয় দোআ কইরেন, ব্যবসার টেকাটা জমাইয়্যা যেন বড় একখান বাড়ি করতে পারি, ভাঙা ঘরে থাকতে ভাল্লাগে না!”

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;