‘লিখে দিও বীণা রাণী কষ্টে আছে’



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ), বার্তা২৪.কম
বীণা রাণী। ছবি: বার্তা২৪.কম

বীণা রাণী। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

একটা সময় যাত্রাপালার মঞ্চে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। নিজের অভিনয় শৈলী দিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন দর্শকদের হৃদয়ে। মঞ্চে তার অভিনয় দেখে দর্শকরা হেসেছেন, কখনো কেঁদেছেন, কখনো হয়েছেন আবেগাপ্লুত। কখনো বা তার অভিনয় গুণে মুগ্ধ দর্শক সারিতে বেজে উঠেছে মুহুর্মুহু করতালি। ষাটের দশক থেকে শুরু করে দীর্ঘ চার দশক ধরে অভিনয় করেছেন অসংখ্য যাত্রাপালায়।

অভিনয় জীবনে সুনাম-খ্যাতির পাশাপাশি পেয়েছেন অগণিত দর্শকের ভালোবাসা। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সেগুলো আজ শুধুই স্মৃতি বিধবা বীণা রাণী সরকারের (৭৫) কাছে। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়া যাত্রাদলের এই গুণী অভিনয় শিল্পী অভাব-অনটনে মানবেতর জীবনযাপন করলেও কেউ খোঁজ খবর নিচ্ছে না। মাঝে মাঝে স্থানীয় যাত্রাশিল্পী ও পরিচিতদের সঙ্গে বীণা রাণীর দেখা হয়, কিন্তু সেটা শুধু নিতান্তই কুশল বিনিময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাদের কেউ তাকে আর্থিক সহযোগিতা করে না।

বীণা রাণীর বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের গোবিন্দ বাড়ি এলাকায়। তার স্বামী প্রয়াত যাত্রাশিল্পী চিত্তরঞ্জন সরকার। দাম্পত্য জীবনে প্রবীণ এই শিল্পীর কোনো সন্তান নেই। বর্তমানে এক বোনের মেয়ে তাকে দেখভাল করে।

গতকাল বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে বীণা রাণীর দেখা মিলে গৌরীপুর পৌর শহরের হাতেম আলী রোড এলাকায়। ওই এলাকার একটি পাঠক সংগঠনের কার্যালয়ে বসে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কিছুক্ষণ গল্প হয় বীণা রাণীর। বাস্তব জীবনের সেই গল্পগুলোও যেন অনেকটা যাত্রাপালার গল্পের মতোই।

বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, ‘আমার পৈত্রিক বাড়ি খুলনা জেলায়। অভাবের কারণে পড়াশোনা করা হয়নি। জীবিকার তাগিদে ষাটের দশকে ১৫ বছর বয়সেই যাত্রাপালায় অভিনয় শুরু করি। রাহুগ্রাস নামে একটি যাত্রাপালায় নায়িকা চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে এই জগতে পা রাখি। ওই সময় যাত্রাপালার অভিনয় শিল্পী বায়না করার জন্য ময়মনসিংহের গৌরীপুর থেকে খুলনায় লোক আসত। তখন রঞ্জন অপেরা নামে একটি যাত্রাদলে কাজ করার জন্য বাবা নগেন্দ্র নাথ বর্মণের সঙ্গে গৌরীপুর চলে আসি। স্বাধীনতার কয়েক বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে রঞ্জন অপেরার ম্যানেজার চিত্তরঞ্জন সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয়। এরপর থেকে অভিনয়ের পাশাপাশি এখানেই স্থায়ী হয়ে যাই।’

দীর্ঘ অভিনয় জীবনে প্রেয়সী, আনারকলি, কঙ্কাল, ছোট-মা, সিরাজউদ্দৌলা সহ অসংখ্য যাত্রাপালায় অভিনয় করেছেন বীণা রাণী। অভিনয়ের আয়-রোজগারের টাকায় ফিরিয়ে আনেন সংসারে সচ্ছলতা। নব্বই দশকের দিকে অভিনয় থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলেও স্বামী চিত্তরঞ্জন রয়ে যান এই পেশায়। কিন্তু ২০০০ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে বীণার। অসহায় হয়ে পড়েন এই প্রবীণ শিল্পী। ২০০৪ সালে পৌরসভা থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেয়া হয় বীণাকে। এরপর থেকে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ভাতার টাকাই একমাত্র সম্বল। কিন্তু সামান্য ওই টাকায় তার ভরণ-পোষণ ও চিকিৎসার খরচ চলে না।

বীণা রাণীর সঙ্গে কথা বলতে বলতে দুপুরের বেলা বিকেলে গড়িয়েছে। তেজ হারিয়েছে সূর্যের আলো। এমন সময় আগমন ঘটে স্থানীয় সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান বোরহানের। তিনি বলেন, ‘দিদি আপনার শরীর কেমন?’ জবাবে বীণা রাণী বলেন, ‘বয়সের ভারে চলতে পারি না। ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছি। এই বয়সে কত কিছু খেতে মন চায়, কিন্তু অভাবের কারণে একবেলার বেশি ভাত খেতে পারি না। ভালো চিকিৎসার জন্য ঋণ করতে মন চায়। কিন্তু আমি মরে গেলে ঋণ পরিশোধ করবে কে? খবরের পাতায় লিখে দিও বীণা রাণী কষ্টে আছে।’

কথাগুলো বলতে বলতেই হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন বীণা। পরক্ষণেই চোখের জল মুছে নিজেকে সামলে হাসতে হাসতে বলেন, ‘বেলা হয়েছে এখন চলে যাব।’ কষ্টের কথা বলতে গিয়ে হাসছেন কেন জানতে চাইলে বীণা রাণী বলেন, ‘এই হাসিটাই তো আমাদের অভিনয়।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;