রানা প্লাজা ধস

৩ দিন পর নিজেই নিজের হাত কাটেন রোজিনা



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ), বার্তা২৪.কম
রোজিনা ও তার স্বামী। ছবি: বার্তা২৪.কম

রোজিনা ও তার স্বামী। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ওরা দুই বোন। রোজিনা বেগম ও মর্জিনা আক্তার। দু’জনেই জীবিকার তাগিদে কাজ করতেন রাজধানীর সাভারের রানাপ্লাজার একটি পোশাক কারখানায়। শত কষ্টের মাঝেও তাদের সংসার গোছানোর স্বপ্নটা অল্প অল্প করে এগোচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই স্বপ্নের মৃত্যু ঘটে ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে। রানাপ্লাজা ধসের ঘটনায় মর্জিনার মৃত্যু হয়। আর ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে তিনদিন পর নিজেই নিজের হাত কেটে বেরিয়ে আসেন রোজিনা।

রোজিনার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামে। তার বাবার নাম ছফুর উদ্দিন। তিন বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে রোজিনা সবার বড়। রানাপ্লাজার দুর্ঘটনার পর রোজিনা বিভিন্ন সংস্থার দেয়া অনুদানের টাকায় নিজ গ্রাম গৌরীপুরের গাজীপুর বাজারের পাশে জমি কিনে নতুন বাড়ি নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। তার স্বামী সাইদুল ইসলাম পেশায় ভ্যান চালক। বড় মেয়ে রিমি আক্তার স্থানীয় একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট মেয়ে সাদিয়া আক্তারের বয়স চার বছর।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) নিজ গ্রামের বাড়িতে বসেই রানাপ্লাজার ভবনধসের দুর্বিষহ ঘটনা বার্তা২৪.কমের এ প্রতিবেদকের কাছে তুলে ধরেন রোজিনা। তিনি বলেন, ‘রানাপ্লাজার ভবনে ফাটল দেখা দেয়ায় সেদিন (২৪ এপ্রিল ২০১৩) সকালে গার্মেন্টস কর্মীরা ভেতরে ঢুকতে চাচ্ছিল না। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সকাল ৮টার শিফটে আমাদের জোর করে কারখানায় নিয়ে যায়। ওইদিন পৌনে ৯টার সময় আমার মেশিনের পাশের একটি পিলার ভেঙে পড়তে শুরু করে। শুরু হয় শ্রমিকদের চিৎকার আর আর্তনাদ। বের হওয়ার জন্য যে যার মতো ছুটছে। এরপর আর কোনো কিছুই মনে নেই।’

রোজিনা বলেন, ‘জ্ঞান ফেরার পর চোখ মেলেই দেখি অন্ধকার। দিন না রাত বুঝতে পারছিলাম না। তবে মানুষের চিৎকার আর মাইকের শব্দ পাচ্ছিলাম। এক সময় টর্চ লাইটের আলো দেখতে পেলাম। কিন্তু গলা শুকিয়ে যাওয়ায় কথা বলতে পারছিলাম না। পানির পিপাসায় বুক ফেটে যাচ্ছিল। বাম হাতটা আটকে গিয়েছিল পিলারের নিচে। কোমরে রড ঢুকেছে। পা দুটো চাপা পড়েছে মেশিনের নিচে। সামান্য নড়াচড়াও করা যাচ্ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আমাকে বের করে আনার অনেক চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। একজন চিকিৎসক দূর থেকে আমার সঙ্গে কথা বলে শারীরিক অবস্থা জানেন। দ্বিতীয় দিন রাতে চিকিৎসক আমাকে প্রস্তাব দেন নিজে নিজে বাম হাত কেটে বের হয়ে আসতে। কিছুতেই সেই সাহস করতে পারছিলাম না। পরে জীবন বাঁচাতে হাত কাটার সিদ্ধান্ত নেই। চিকিৎসকের শিখিয়ে দেওয়া পদ্ধতিতে তৃতীয় দিন দুপুরে বিশেষ ব্লেড দিয়ে নিজেই নিজের বাম হাত কেটে বের হই ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে। এরপর সিএমএইচ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সিআরপিতে ৭ মাস চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হই। ধ্বংসস্তূপে চাপা থাকার সময় বারবার মনে হচ্ছিল ছোট বোন মর্জিনার কথা। পরে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে জানতে পারি মর্জিনা ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মারা গেছে।’

জানা গেছে, দুর্ঘটনার পর রোজিনার বাসস্থানের নিশ্চয়তা হলেও জীবিকার নিশ্চয়তা হয়নি। স্বামীর ভ্যানগাড়ি চালানোর আয়ে সংসার চলে না। হাত হারালেও প্রতিবন্ধী ভাতা ভাগ্যে জোটেনি। গত দুই বছরে নিজের চিকিৎসা করাতে গিয়ে কয়েক লাখ টাকা ঋণ হয়েছেন। মাঝে মাঝে না খেয়েও থাকতে হয়।

রোজিনা আক্তার বলেন, ‘প্রথমদিকে সরকার থেকে ১০ হাজার টাকা ভাতা পেলেও এখন সেটা কমে সাড়ে ৮ হাজার হয়েছে। অভাবের তাড়নায় স্কুলে মেয়ের চার মাসের বেতন আটকা। একবার ঢাকার এক সাংবাদিক বলেছিল সন্তানের পড়াশোনার খরচ দেবে। কিন্তু পরে আর দেয় নাই।’

রোজিনার সঙ্গে গল্প করতে করতে সকালের বেলা দুপুরে গড়িয়েছে। তেজ ছড়াতে শুরু করেছে দুপুরের রোদ। এমন সময় আগমন ঘটে রোজিনার স্বামী সাইদুল ইসলামের। তিনি বলেন, ‘রানাপ্লাজা আমাদের জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই আমি চাই না আমার সন্তান গার্মেন্টসে কাজ করুক। কিন্তু অভাবের তাড়নায় প্রায়ই পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। তাই সন্তানের পড়াশোনার খরচ ও স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে আকুতি জানাচ্ছি।’

স্বামীর কথার রেশ টেনে রোজিনা বলেন, ‘তুমি ঠিক কথাই বলছ। অভাবের সংসারে নিজেরা লবণ দিয়ে ভাত খেলেও কষ্ট হবে না। নিজের চিকিৎসার কথা না হয় বাদই দিলাম, কিন্তু সন্তানদের পড়াশোনা করাতে অনেক টাকা লাগবে। আমরা এতো টাকা কোথায় পাব? সাহায্যের আকুতিটা সরকারের কাছে পৌঁছাবে তো?’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;