কাঠগোলাপের ছাঁয়ায় চিরনিদ্রায় মুঘল শাসনামলের সখিনা বিবি



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
সখিনা বিবির সমাধিস্থল। ছবি: বার্তা২৪.কম

সখিনা বিবির সমাধিস্থল। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারত উপমহাদেশে মুঘল শাসনামলের ঐতিহাসিক ঘটনার জন্য বীরাঙ্গনা সখিনা বিবির বীরত্বের কথা কারোরই অজানা নয়। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নে রয়েছে এই নারীর সমাধিস্থল। সুনসান নিবিড় প্রকৃতির মাঝে কাঠগোলাপ গাছের ছাঁয়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন সখিনা বিবি।

সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ঐতিহাসিক এই স্থানটি হতে পারে সম্ভাবনাময় একটি পর্যটন নগরী। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ঐতিহাসিক এই স্থানটি বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে।

গৌরীপুর উপজেলা সদর থেকে ১৩ কিলোমিটার পূর্বে মাওহা ইউনিয়নের কেল্লাতাজপুর গ্রামের কুমড়ী নামক স্থানে সখিনা বিবির সমাধিস্থল। তবে গ্রামের লোকজন এটাকে মাজার বলেই জানে। সমাধিস্থলের চারপাশে নিচু সীমানা প্রাচীরের কারণে এর ভেতরকার ইট-সিমেন্টের বাঁধানো সমাধি ও দৃষ্টিনন্দন কাঠগোলাপ গাছগুলো নজরে পড়ে। আশপাশে বাড়িঘর কম থাকায় পুরো এলাকাতেই অদ্ভুত নীরবতা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/19/1558258768667.jpg

সখিনা বিবির সমাধিস্থলের ফটকের সীমনা প্রাচীরে শ্বেতপাথরে লেখা আছে বিবি সখিনার কাহিনী। কাহিনী অনুসারে কুমড়ী গ্রামকে অনেকে ‘কেল্লাতাজপুর’ নামেও চেনেন। এই কেল্লাতাজপুরের মুঘল দেওয়ান উমর খাঁর কন্যা সখিনা ছিলেন অপরূপ সুন্দরী ও সর্ববিদ্যায় পারদর্শী। তার রূপ-গুণের খ্যাতি আশপাশের অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি ৫০-৬০ মাইল দূরের বারো ভূঁইয়ার অন্যতম কিশোরগঞ্জের জঙ্গলবাড়ির স্বাধীন শাসক ঈশা খাঁর দৌহিত্র ফিরোজ খাঁর কানেও পৌঁছে যায়। নানা কৌশলে বিবি সখিনার সঙ্গে যোগাযোগ হয় ফিরোজ খাঁর। অতঃপর দুজনের মধ্যে প্রণয় গড়ে উঠে।

কিন্তু উমর খাঁ মুঘল পক্ষীয় ছিলেন। অপরদিকে ঈশা খাঁর দৌহিত্র ফিরোজ খাঁ বংশানুক্রমে মুঘলদের শত্রু ছিলেন। তাই ফিরোজের পরিবার থেকে উমর খাঁয়ের দরবারে সখিনার জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসলে তা প্রত্যাখান করা হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/19/1558258793466.jpg

এদিকে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হলে বিশাল বাহিনী নিয়ে কেল্লাতাজপুরে অভিযান চালান ফিরোজ খাঁ। জয়ী হয়ে বিবি সখিনাকে নিয়ে জঙ্গলবাড়ি ফিরে যান।

এরপর পরাজিত উমর খাঁ মুঘলদের সহায়তায় বিশাল যুদ্ধ-বাহিনী নিয়ে জঙ্গলবাড়ি আক্রমণ করতে অগ্রসর হয়। ফিরোজ খাঁ পথিমধ্যে মুঘল বাহিনীকে পাল্টা আক্রমণ করলে শুরু হয় প্রবল যুদ্ধ। বিশাল মুঘল বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ফিরোজ খাঁ পরাজিত হয়ে বন্দী হন। সখিনাকে তালাক দেওয়ার জন্য তার ওপর চাপ দেন। কিন্তু ফিরোজ খাঁ তালাক দিতে রাজি হননি।

স্বামী বন্দী হবার সংবাদ সখিনার কাছে পৌঁছালে তিনি যুবকের ছদ্মবেশে যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত হন। ছদ্মবেশে সখিনা সেনাপতি হিসেবে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকলে পুনরায় ফিরোজের বিপর্যস্ত বাহিনী ঘুরে দাঁড়ায়।

নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে উমর খাঁ কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে মিথ্যা প্রচার করেন যে, যার জন্য এই যুদ্ধ সেই সখিনা বিবিকে ফিরোজ খাঁ তালাক দিয়েছে। আলামত হিসেবে ফিরোজের জাল করা স্বাক্ষর দেখানো হলো যুদ্ধক্ষেত্রে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/19/1558258814196.jpg

এরপর মুহূর্তে পাল্টে গেল যুদ্ধের ভাবগতি। যুবক (সখিনা) সেনাপতির মাথা ঘুরছে, দেহ কাঁপছে, গলা শুকিয়ে যাচ্ছে, ঘোড়ার লাগাম খসে পড়ছে আর তরবারির হাত হয়ে গেছে স্থবির। ধীরে ধীরে সেই যুবকের নিথর দেহটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। শিরোস্ত্রাণ খসে গিয়ে বের হয়ে পড়ে তার মেঘ বরণ চুল। সবাই দেখল এতক্ষণ যে যুবক বীর বিক্রমে যুদ্ধ করছিলেন, তিনি আর কেউ নন, উমর খাঁর আদরের দুলালী সখিনা। বীরাঙ্গনা নারী সখিনা যে জায়গায় প্রাণত্যাগ করেন, সেই কুমড়ী নামক স্থানেই গড়ে উঠেছে তার সমাধি।

স্থানীয় বেখৈরহাটি নরেন্দ্র কান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহ আলম বার্তা২৪.কমকে জানান, সখিনা বিবির সমাধিস্থলের অদূরেই ছিল বড় নদী। সেই নদী দিয়েই সৈন্যরা এসেছিল। ওই সময় গ্রামটি উঁচু মাটির সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল। কিন্তু সময়ের স্রোতে সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এক সময় ঐতিহাসিক এই স্থানটি উন্মুক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও ২০০৭ সালে এর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। তবে এই সমাধিস্থলকে ঘিরে যদি উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা, আবাসন সুবিধা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয় তাহলে এখানে পর্যটন নগরী গড়ে উঠবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারহানা করিম বার্তা২৪.কমকে জানান, সখিনা বিবির সমাধিস্থল সংস্কারের পাশাপাশি এখানে কীভাবে পর্যটন নগরী গড়ে তোলা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;