আমিরাতে অসহায় জীবন কাটাচ্ছে হবিগঞ্জের কয়েক হাজার শ্রমিক



কাজল সরকার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, হবিগঞ্জ
ক্লান্ত শ্রমিকরা কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নিচ্ছেন, ছবি: সংগৃহীত

ক্লান্ত শ্রমিকরা কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নিচ্ছেন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। ধনী দেশের তালিকার মধ্যে অন্যতম রাষ্ট্র। দেশটিতে রয়েছে বাংলাদেশের জন্য বিশাল শ্রমবাজার। পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে রঙিন স্বপ্নে বিভোর হয়ে সেখানে পাড়ি জমিয়েছেন কয়েক লাখ বাংলাদেশি। কিন্তু পরিবারের সচ্ছলতা ফেরানো কিংবা স্বপ্নপূরণ তো দূরের কথা, উল্টো নিজেদেরই না খেয়ে মরতে হচ্ছে বিদেশ-বিভুঁইয়ে।

তিন থেকে চার মাস ধরে কাজ করেও বেতন পাচ্ছেন না আরব আমিরাতে কর্মরত হবিগঞ্জের কয়েক হাজার শ্রমিক। দিনরাত পরিশ্রম করিয়ে বেতন দিচ্ছে না কতিপয় বাঙালি দালাল। বিশেষ করে ভিজিট ভিসায় দেশটিতে যাওয়া বেশিরভাগ শ্রমিক এমন সমস্যার সম্মুখীন। কিন্তু যথাযথ ‘আইডি কার্ড’ না থাকায় দেশি-বিদেশি কোনো সংস্থার কাছে অভিযোগও করতে পারছে তারা।

আরক আমিরাতে যাওয়া প্রবাসীদের তথ্যমতে- দুবাই, শারজা, আবুধাবী, আজমান, আল-আইন ও ফজিরা শহরে হবিগঞ্জের প্রায় ত্রিশ হাজারের অধিক শ্রমিক রয়েছেন। এর মধ্যে ভিজিট ভিসায় সেখানে বসবাস করছেন অন্তত ১২-১৪ হাজার শ্রমিক। যাদের কাছ করতে হচ্ছে বাঙালি লাইসেন্সধারী শ্রমিকের আওতায়। আইডি না থাকায় দালালদের কথামত বিভিন্ন কোম্পানিতে কঠোর পরিশ্রম করতে হচ্ছে। অথচ এত পরিশ্রমের পরও অনেকেই তিন মাস আবার কেউ চার মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। বেতনের কথা বললে, দেই-দিচ্ছি করে কালক্ষেপন কিংবা অচিরেই দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। আবার কখনও কখনও হুমকি-ধামকি দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে এসব শ্রমিদের। কেউ আবার আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে চলছেন। যাদের আত্মীয়-স্বজন নেই তারা বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে চলছেন।

প্রবাসীদের তথ্যমতে, এভাবে বেতন না পাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। যার অধিকাংশই হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার। তবে সবচেয়ে বেশি রয়েছে বাহুবল উপজেলার। এছাড়া বানিয়াচং, চুনারুঘাট ও লাখাই উপজেলার শ্রমিকও রয়েছেন।

এমন পরিস্থিতির কারণে সহায়-সম্পত্তি বিক্রি করে আরব আমিরাত যাওয়া অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। কেউ এমন শ্বাসরূদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে স্বেচ্ছার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ আরব আমিরাত ইমিগ্রেশন ও বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আউট পাস সংগ্রহ করে দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন।

অনেক শ্রমিক অভিযোগ করেন, দালালদের মাধ্যমে ৪-৫ লাখ টাকা খরচ করে পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে সংযুক্ত আবর আমিরাতে পাড়ি জমিয়েছেন। দালালরা দৈনিক ৮ ঘণ্টা ডিউটি, সপ্তাহে ১ দিন ছুটি ও বেসিক ১৩৫ দিনার (২৭ হাজার ৭৩০ টাকা) বেতন দেবে বলেছিল। কিন্তু এখন তাদেরকে ১২ থেকে ৩৬ ঘণ্টা পর্যন্ত একটানা ডিউটি করিয়ে গত ৩-৪ মাস ধরে বেতনই দেয়নি। উল্টো ছোটখাট কোনো ভুল হলে ৫০ দিনার (১০ হাজার ২৭০ টাকা) বেতন কাটা হয়।

ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টায় সংযুক্ত আরব আমিরাত যাওয়া হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সাতকাপন ইউনিয়নের মানিকপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আরশ মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে মুঠোফোনে বলেন, ‘দেশে হাঁসের খামার করতাম। ভালোই দিন কাটছিল। দুবাই এসেছিলাম বেশি রোজগারের আশায়। কিন্তু এখানে এসে দেখি ভাগ্য পরিবর্তন তো দূরের কথা, ঠিকমতো খাইতেই পারতেছি না।’

তিনি বলেন, বাড়িতে সবাই আশায় আছে। চার মাস যাবত এক কোম্পানিতে কাজ করতেছি। এখন পর্যন্ত এক টাকাও পাইনি। বাড়ি থেকে বারবার টাকার জন্য টেলিফোন আসছে। এখন কি করব কিছুই বুঝতে পারতেছি না।’

চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা ইউনিয়নের উবাহাটা গ্রামের বাসিন্দা মো. কামরুল ইসলাম নামে এক প্রবাসী শ্রমিক বলেন- ‘এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে পরিবারের জন্য দুবাই এসেছিলাম। এসে খুব বিপদে পড়েছি। এক সাইটে কাজ করেছিলাম তিনমাস ধরে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এক টাকাও পাইনি। বাড়িতে টাকা দেওয়াতো দূরের কথা, কিভাবে খাবো, রুম ভাড়া দেবো বুঝতে পারছি না।’

বাহুবলে উপজেলার সাতকাপন ইউনিয়নের গগলপুর গ্রামের মো. বিলাথ মিয়া নামের এক শ্রমিক বলেন- ‘কয়েকমাস ধরে বেতন না পাওয়ায় সহকর্মীর কাছ থেকে টাকা ধার করে চলতে হচ্ছে। কিন্তু বাড়িতে দুশ্চিন্তা করবে বলে কিছুই বলতে পারছি না।’

একই ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. হাফিজ মিয়া বলেন- ‘বাড়ি থেকে টাকা এনে চলতে হচ্ছে। ৪-৫ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশ এসেছিলাম পরিবারের দায়িত্ব নেব বলে। উল্টো আমার ভরণ-পোষণ এখনও পরিবারকেই করতে হচ্ছে।’

বাহুবল সদরের বাসিন্দা মো. সেলিম মিয়া বলেন- ‘অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিদেশ এসেছিলাম। কিন্তু স্বপ্নপূরণ দূরের কথা, এখন না খেয়ে মরতে হবে মনে হচ্ছে।’ তিনি বলেন- ‘বাঙালি হয়েও বাঙালির দুঃখ বুঝে না। আমাদের জীবন নিয়ে খেলছে কিছু অসাধু বাঙালি। আমার এর প্রতিকার চাই।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;