বৃষ্টিতে বিচ্ছিন্ন শাহপরীর দ্বীপ: দুর্ভোগে ৪০ হাজার মানুষ
বৃষ্টির কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ। যাতায়াত ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় দ্বীপের ৪০ হাজার মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
সাত বছর আগে দ্বীপের সড়কটি সাগরের জোয়ারে ভেঙ্গে দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই দ্বীপের দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার। সাবরাং হারিয়াখালী থেকে দ্বীপ পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার সড়ক বিলীন হয়ে গেছে। সড়ক সংস্কারের অভাবে পোহাতে হচ্ছে এই দুর্ভোগ।
২০১২ সালে জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপের পশ্চিমাংশের বাঁধ ভেঙ্গে সাগরের পানি দ্বীপে গ্রাস করলে ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে সড়কের বিশাল অংশ ভেঙ্গে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই বাঁধ ভাঙন দিয়ে দীর্ঘ সময়ে জোয়ার ভাটার বৃত্তে বন্দি ছিল দ্বীপবাসী। ওই সময় বসত ভিটেসহ সর্বস্ব হারিয়ে অনেকে পাড়ি জমায় অন্যত্র। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভাঙা বাঁধে জোড়া লাগলেও সড়ক সংস্কার এখনো হয়নি।
গত কয়েকদিন ধরে টেকনাফে চলছে মুষলধারায় বৃষ্টি। এসময়ে দ্বীপে যাতায়াতকারীরা পায়ে হেটে ভাঙ্গা সড়কের কিছুদূর গিয়ে নৌকায় কিংবা স্পিড বোটে দ্বীপে যাতায়াত করছেন।
মোঃ ইলিয়াছ নামক একজন স্থানীয় বলেন, 'এখন যাতায়াতের খরচ বেড়ে গেছে। এসময়ে কোন রোগী অসুস্থ হলে মরণ ছাড়া তার উপায় থাকেনা। তবে শুষ্ক মৌসুমে বেড়িবাঁধ দিয়ে যাতায়াত করা যেত'
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, দ্বীপ রক্ষায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে ২ দশমিক ৬৪৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। সাগরের গ্রাস থেকে রক্ষায় বাঁধের উচ্চতা সাড়ে ৬ মিটার, প্রস্থ সাড়ে ৪ মিটার এবং বাঁধে পাথরের সিসি ব্লক স্থাপনের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে এই কাজ শেষ হওয়ার পথে। ফলে ভাঙ্গা সড়ক সংস্কারে কোন অসুবিধা হবে না।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী জাকারিয়া বলেন, সাগরের ভাঙ্গা বাঁধ বন্ধ হলেও এখনও সড়কটি সংস্কার হয়নি। এই বর্ষায় দ্বীপের মানুষদের কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। বাঁধ দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সাাবরাং উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান নূর হোসেন বলেন, শাহপরীর দ্বীপ ভাঙ্গা বাঁধ বন্ধ করা হয়েছে। রক্ষা বাঁধের কাজও চলছে দ্রুত গতিতে। সড়ক সংস্কার জরুরী হয়ে পড়েছে। তবে বর্ষার পরে সড়কের কাজ শুরু হবে।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারের সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, শাহপরীর দ্বীপ সড়কের ৮ কিলোমিটার সংস্কারে প্রকল্প পুনরায় টেন্ডার করা হচ্ছে। এ কাজ বাস্তবায়নে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছিল। সঠিক সময়ে কাজ না করায় টেন্ডারটি বাতিল করা হয়েছে। পুনরায় টেন্ডার শেষে দ্রুত সড়কের কাজ করা হবে। তবে বর্ষার পরে সড়কের কাজ শুরু হবে।