জীবন সংগ্রামে হারতে চান না তৃতীয় লিঙ্গের শানু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
তৃতীয় লিঙ্গের শানু

তৃতীয় লিঙ্গের শানু

  • Font increase
  • Font Decrease

নাটোরের বাগাতিপাড়ার শাহনাজ খাতুন ওরফে শানু (৪৫) তৃতীয় লিঙ্গের একজন হয়েও নিজ গোত্রে গা না ভাসিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। জীবনের কঠিন বাস্তবতার কাছে হার না মেনে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। সন্তান হিসেবে মা ও ভাই-বোনের জন্য এখনও পালন করে চলেছেন নিজ দায়িত্ব। পুরুষের পোশাক পরে পরিশ্রম করে আর দশজন মানুষের মতো সমাজে সম্মানের সাথে বসবাস করে এক ব্যতিক্রমী ও বিরল দৃষ্টান্তের মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন শানু।

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রামের মতিজান বেগম ও মৃত আহসান আলী প্রামাণিকের দ্বিতীয় সন্তান শানু। তার জন্ম ১৯৭৪ সালে। বর্তমানে ৪৫ বছর বয়সী শাহনাজ ওরফে শানুর জীবনে নেই মনে রাখার মত কোন সুখের স্মৃতি। তার বয়স যখন ১০ বছর তখন মা-বাবা তার শরীরে বিশেষ পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। তখন থেকেই তাকে আলাদা করে রাখেন। ফলে মা-বাবার আদর আর ভালোবাসার পরিবর্তে শানুর ভাগ্যে জোটে তাচ্ছিল্য অনাদর আর অবহেলা। দুবেলা দুমুঠো খাবারও যখন আর জুটছিলো না তখন একটু খাবারের আশায় কাজ খুঁজতে থাকেন শানু। তার এমন অসহায়ত্ব দেখে এগিয়ে আসেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা। শানুকে তাদের সাথে রাখার জন্য নিয়ে যেতে চাইলে তিনি যাননি। তখন থেকেই মানুষের বাড়ি বাড়ি আর ক্ষেত-খামারে শুরু করেন হাড়ভাঙ্গা খাটুনি। দিনশেষে রাতে এসে থাকতেন বাড়ির এককোণে আর পরিশ্রমের সব টাকা তুলে দিতেন মায়ের হাতে। এরই মধ্যে বাবা মারা গেলে দিনমজুর বড়ভাইয়ের সঙ্গে সংসারের হাল ধরেন এবং দিনমজুরির টাকায় এক ছোট ভাই রিজু ও দুই বোনের শাবানা ও শাহানারার বিয়ে দেন শানু।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/23/1566552700199.gif

এখন শানু কাজ করেন স্থানীয় একটি খামারে। দিনপ্রতি মজুরি পান ৩০০টাকা। প্রতিদিনের মজুরির টাকা দিনশেষে তুলে দেন বৃদ্ধা মায়ের হাতে। মাকে পৃথিবীতে একমাত্র আশ্রয় মনে করে সর্বোচ্চ কষ্ট করে হলেও বাকী জীবন মায়ের সেবা করে যেতে চান শানু।

খামার মালিক মিল্টন ঘোষ বলেন, 'শানু কাজের ক্ষেত্রে খুবই মনযোগী। কাজ ফাঁকি দেন না। তার কাজে অসন্তুষ্ট হবার সুযোগ নেই। অসহায়ত্ব লাঘবে কাজ দিয়ে তার পাশে দাঁড়াতে পেরেছি বলে ভালো লাগে। তাকে অন্য দশজনের থেকে আলাদাভাবে দেখি না।'

চিথলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, 'শানু একজন সৎ, পরিশ্রমী ও অনুকরণীয় মানুষ। একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হয়েও সমগোত্রের অন্যদের মতো চাঁদাবাজি বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে না জড়িয়েও যে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায়, শানু তাই প্রমাণ করেছেন।

শানুর প্রতিবেশী মিরাজ উদ্দীন ও শরিফ উদ্দীন বলেন, 'ছোটবেলা থেকেই শানু কঠোর পরিশ্রম করে তার পরিবারের জন্য। কেউ তাকে 'হিজড়া' বলে গালি দিলেও সে কখনও ভেঙে পড়েনি বরং সে ছোটদের স্নেহ করে ও বড়দের প্রাপ্য সম্মান দেয়।'

পাকা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মখলেস হোসেন বাদশা বলেন, 'শানু একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং প্রতিবন্ধীও। তাকে প্রতিবন্ধী সহায়তা কার্ডের জন্য চিকিৎসকের সত্যায়নকৃত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হলেও সে কর্ণপাত করেনি। সমাজের শ্রমজীবী মানুষদের মতো খেটে খেয়ে সে নিজে বেঁচে আছে এবং পরিবারটিকে বাঁচিয়ে রেখেছে।' 

শানু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'আমার জীবনটা খুব কষ্টের ছিল। শৈশব থেকেই খাটতে খাটতে সব কষ্ট ভুলে গেছি। এখন আর কষ্ট নেই। যতদিন বেঁচে আছি মা'র জন্য কষ্ট করে যাবো। আমি হেরে যেতে চাই না।'

আত্মবিশ্বাস আর মনের জোরে স্রোতের বিপরীতে অবস্থান নিয়েও যে সম্মানের সাথে জীবনধারণ করা যায় তা প্রমাণ করেছেন তৃতীয় লিঙ্গের শাহানাজ ওরফে শানু।

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;