দখল আর দূষণের কবলে নরসিংদীর নদ-নদী



শরীফ ইকবাল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, নরসিংদী
দখল হয়ে যাচ্ছে অন্যতম বৃহৎ এসব নদ-নদী, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

দখল হয়ে যাচ্ছে অন্যতম বৃহৎ এসব নদ-নদী, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নরসিংদী জেলার চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে শীতলক্ষ্যা ও মেঘনা নদী। এর শাখা নদীগুলোর মধ্যে- ব্রহ্মপুত্র, আড়িয়াল খাঁ, হাড়ি-দোয়া নদী, পাহাড়িয়া, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র অন্যতম। এসব নদ-নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠছে নরসিংদীর শিল্পাঞ্চল। কিন্তু দখল আর দূষণে বর্তমানে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে এসব নদ-নদী।

জানা গেছে, নদীপথে যাতায়াতের সহজলভ্যতার কথা চিন্তা করে পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ছোট বড় কারখানা। ফলে এই কারখানার বর্জ্য ও কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি নদীতে মিশে ভরাট হচ্ছে। আর বর্ষা মৌসুমে নদীগুলো পানিতে থৈ থৈ করলেও অন্য সময়ে পানি অনেক কম থাকে।

কারখানার বর্জ্য মিশে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে

 

জানা গেছে, এসব নদী দিয়ে এক সময় বড় বড় জাহাজ আর পাল তোলা নৌকা চলতো। ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য করতে নরসিংদীতে ছুটে আসতেন নদীপথেই। সেই থেকে নরসিংদীর এসব নদীর তীরে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকায় নদী সংকুচিত হতে থাকে। ফলে এখন বছরের বেশির ভাগ সময়ই নদীতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় নৌকাও চলে না। তাছাড়া কারখানার বর্জ্য মিশে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমেও পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের (ডিও) মাত্রা কম থাকে। এ কারণে এই নদীতে মাছ বাঁচে না।

 

সরেজমিনে দেখা গেছ, শিবপুর উপজেলার বড়ই তলা এলাকায় কয়েকটি কারখানার বর্জ্য গজারিয়া ব্রিজের নিচ দিয়ে যাওয়া আন্ডারলাইন দিয়ে হাড়িধোঁয়া নদে পরে। এছাড়া নরসিংদীর সর্ববৃহৎ শিল্পনগরী বিসিক (আমতলা) এলাকার একটি গার্মেন্টসসহ শতাধিক শিল্পের বর্জ্য দড়িচর ব্রিজের পাশ দিয়ে নদীতে পড়ে। আর ভেলানগর ব্রিজের নীচ দিয়ে হাড়িধোঁয়ায় পরে বেশ কয়েকটি কারখানার বর্জ্য। ঘোড়াদিয়া ব্রিজ, হাজিপুর ব্রিজের নিচ দিয়ে বেশ কয়েকটি কারখানার বর্জ্য এ নদে এসে মিলিত হয়। এছাড়া শীতলক্ষ্যার পানিতে সার কারখানার ক্যামিকেল ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গরম পানি পড়ায় মাছ বাঁচতে পারে না।

নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, নরসিংদী শহরের উত্তর পাশ দিয়ে প্রবাহিত ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ নদের ডিওর মান কমেছে। ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠানের অপরিকল্পিত বর্জ্য ও কেমিকেল মিশ্রিত পানি নিয়ন্ত্রণ করে ডিওর মান উন্নয়ন করা সম্ভব। গত মে ও জুনে ডিওর মাত্রা ছিল শূন্য দশমিক ৮/৯ মিলিগ্রাম/লিটার, জুলাইয়ে ২ দশমিক ১/২ এবং আগস্টে ২ দশমিক ৪ মিলিগ্রাম/লিটার।

নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর গোলাম মোস্তাফা মিয়া জানান, জনসংখ্যার আধিক্য, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ বিষয়ে অসচেতনতা, অপর্যাপ্ত পানিপ্রবাহসহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ঐতিহ্যবাহী নদ-নদীগুলোতে দূষণের মাত্রা বাড়ছে।

একই কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মান্নান জানান, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, মৎস্য ও জলজ প্রাণীর জীবনধারণের জন্য পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রতি লিটারে ৫ মিলিগ্রাম বা এর বেশি থাকা প্রয়োজন। এরনিচে হলে প্রাণি বা কোনও উদ্ভিদ বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।

তিনি আরও জানান, পানিতে ডিওর মাত্রা প্রতি লিটারে ৫ মিলিগ্রামের নিচে নেমে গেলে পানিতে শৈবাল জাতীয় উদ্ভিদ জন্মায় না। আর ৮০ ভাগ মাছ শৈবাল জাতীয় উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল। তাই ডিওর মান কম হলে ছোট ছোট মাছ মারা যায়। ফলে প্রাণীবৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যায়। হাড়িধোয়া নদে বছরের বেশির ভাগ সময়ই দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কম থাকে। বর্ষায় কিছুটা বাড়লেও তাতে কিছু শৈবাল, ব্যাকটেরিয়া ও কই, টাকি প্রজাতির মাছ ছাড়া অন্য কোনও মাছ ও জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই।

নরসিংদী পরিবেশ আন্দোলন (আপন) এর সভাপতি মইনুল ইসলাম মীরু জানান, নদ-নদীর দূষণ আর দখল নিয়ে একাধিকবার মানববন্ধন, সভা, সেমিনার ও প্রচারণা চালানো হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন দৃশ্যমান কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো অনেকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন।

নরসিংদীর ১০০ শয্যা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. একরামুল ইসলাম শামীম জানান, নদীর দূষিত পানিতে নামলে শরীরে খাঁজলী, পাচড়া, চর্মসহ বিভিন্ন রকমের রোগ দেখা দিতে পারে।

নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে পাওয়া তথ্য মতে, মেঘনা নদীটির ৪৫ কিলোমিটার নরসিংদীর ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। এরমধ্যে ভৈরব ও নরসিংদী অংশে নদীটির প্রস্থ হচ্ছে ১৫শ’ মিটার ও গভীরতা ২৫ মিটার। বর্ষাকালে এই নদী দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ১৬ হাজার ৫৬৮ ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হয়। শুষ্ক মৌসুমে প্রবাহিত হয় ১০৫ ঘনমিটার।

আর মেঘনার নরসিংদী অঞ্চলের একটি বিরাট অংশ দখল করে আছে প্রভাবশালীরা। এদের কেউ কেউ রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় আবার কেউবা সরাসরি রাজনীতি করার কারণে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাননা। প্রভাবশালীরা মেঘনার একটি অংশ দখল করে গাছের ডালপালা ও বাঁশের কঞ্চি ফেলে মাছের ঘের তৈরি করে। ফলে নদীপথে নৌকা, লঞ্চ, স্পিডবোটসহ অন্যান্য নৌযান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। তাছাড়া নদীর দুই তীরের জেলে পরিবারে নেমে এসেছে দুর্ভোগ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র চক্রবর্তী জানান, ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৫০০ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নরসিংদীর ৬টি নদী খনন কাজ চলছে।

   

প্রত্যেকের উচিত শেখ হাসিনাকে সহায়তা করা: গণপূর্ত মন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন তার লিডারশিপের মাধ্যমে একটি পরাধীন দেশকে স্বাধীন করে দিয়েছেন, ঠিক তেমনি তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যিনি এই দেশটাকে যেভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, আমাদের প্রত্যেকের উচিত তাকে সহায়তা করা।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়নের ম্যাক্স ইন্ডাস্ট্রির এএসি ব্লক এন্ড প্যানেলস কারখানা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা এখন অনেক ভালো অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছি। কি ছিলো পাকিস্তানের আমলে? শূন্য থেকে আজকে এই অবস্থানে এসেছি। এ অবস্থানে আসার পেছনে একটি মাত্র কারণ জনগণের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ততা ও গুড লিডারশিপ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান(অবঃ), হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আশরাফুল আলম, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার, ম্যাক্স ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমঙ্গীর, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহানা আখতার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন সরকার।

;

নীলফামারীতে এক পরিবার চারদিন ধরে অবরুদ্ধ, পুলিশ মোতায়েন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে জমিসংক্রান্ত ঘটনার জের ধরে একটি পরিবার চারদিন ধরে অবরুদ্ধ জীবনযাপন করছে। বাড়ি থেকে বের হলেই তাদের মেরে ফেলা হবে বলে জানানো হয়েছে। ভীত-সন্ত্রস্ত পরিবারের আট সদস্য প্রতিপক্ষের ভয়ে খেয়ে না-খেয়ে বাড়ির মধ্যে জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন।

অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্ত হয়ে পরিবারের এক সদস্য গোপনে পালিয়ে এসে পুলিশ নিয়ে গেলে পুলিশের সামনেই দুই পক্ষের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের হালকাপাড়ায় সরেজমিন দেখা যায়, মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে নুহ ইসলামের আধাপাকা বাড়ির গেট ভেতর থেকে বন্ধ। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পরিবারের লোকজনকে ডাকলে তারা জানলা খুলে প্রথমে বলেন, আপনারা সাংবাদিক আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারবেন! বাড়ি থেকে বের হলেই আরমান গংরা আমাদের পিটিয়ে মারবে।

এ ধরনের কথা হওয়ার সময় নুহ ইসলামের ভাগিনা বাড়ি থেকে সাংবাদিকদের কাছে আসতে চাইলে আরমান পক্ষের পাঁচ থেকে সাতজন ব্যক্তি লাঠিসোটা হাতে নিয়ে ‘ধর ধর’ বলে চিৎকার দিয়ে ধাওয়া করেন।

নুহ ইসলাম জানান, থানায় অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু কোনো নিরাপত্তা পাচ্ছি না। পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।

প্রতিপক্ষ প্রধান আরমান গ্রুপের সঙ্গে কথা বললে তাদের ১০ থেকে ১২ জন নারী-পুরুষ সমস্বরে বলেন, বুধবার পুলিশের সামনে আমাদের লোকজনকে নুহ-রা পিটিয়েছে। আমরা তাদের শাস্তি দেওয়ার পর শান্ত হবো।

এবিষয়ে কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লাশচন্দ্র মণ্ডলের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ সেখানে অবস্থান করবে।

 

;

মদ খেয়ে তরুণের দুই হাত ভেঙে দিলেন আওয়ামী লীগ নেতা



আল-আমিন রাজু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর হাতিরঝিল থানার ওমরআলী লেন এলাকায় মদ্যপ অবস্থায় এক তরুণকে পিটিয়ে দুই হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় ব্যবসার কাজে গেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই তরুণের নাম মানসিব আল জিসান(২৩)। তিনি রামপুরা বউবাজার এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদের ছেলে। এই ঘটনায় মামলা করেছে ভুক্তভোগী তরুণের পরিবার।

অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার নাম সালাউদ্দিন ভূঁইয়া মাসুম ওরফে মাসুম ভূঁইয়া। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি।

ভুক্তভোগী তরুণের ভাই মোস্তাক আল মামুন বলেন, গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমার ছোট ভাই ব্যবসায়িক কাজে হাতিরঝিল থানার ওমরআলী লেনে যায়। এই সময় ইউনিট আওয়ামী লীগ নেতা মাসুম আমার ভাইকে ডেকে নানা ধরনের হুমকিধমকি দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে একটি লাঠি দিয়ে আমার ছোট ভাইকে বেধড়ক মারধর করেন। মারধর করে পকেটে থাকা ব্যবসায়ের দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। আমার ভাইকে মারধরের সময়ে আরও কয়েকজন ছিল। তারাও মারধর করেছে। হামলার সময়ে মাসুম মদ্যপ অবস্থায় ছিল।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মোস্তাক আরও বলেন, ইউনিট আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন মাসুম। ব্যবসায়ী, বাড়ির মালিক এমনকি ফুটপাতের দোকানদারদের কাছে থেকেও চাঁদা আদায় করে থাকেন। এলাকায় আমাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা। আমরা ব্যবসা করি এটাই তার মাথাব্যথার কারণ। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে যাকে ইচ্ছা তাকেই মারধর করেন। আমার ভাইকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের কারণে তার দুই হাত ভেঙে গেছে। এমনকি তাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য দৌড় দিলে পড়ে গিয়ে পায়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছে। পরবর্তীতে তাকে সবাই উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। বর্তমানে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে মাতাল অবস্থায় আমার ছোট ভাইকে মারধর করার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে। স্থানীয়রাও মারধরের সাক্ষ্য দিয়েছেন। আমার ভাই মাদ্রাসা থেকে আলেম পাস করেছে। এখন সে পড়ালেখার পাশাপাশি বাবার ব্যবসায় সময় দেয়। এই ঘটনায় মামলা করায় আমাকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি বাধ্য হয়ে ঈদের দিন থানায় জিডি করেছি।

এ দিকে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ঘটনার দিন ছিল রোজা। রোজার দিনে কেউ মদ খায়? যাকে মারধর করা হয়েছে সে গলিতে মাদক বিক্রি করছিল। হাতেনাতে ধরা পড়ায় তাকে মারধর করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি স্থানীয় হিসেবে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার। কারো কাছ থেকে দুই টাকা চাঁদা নিই না। ব্যবসা করে চলি। কেউ বলতে পারবে না কারো কাছ থেকে দুই টাকা চেয়েছি।

এদিকে তরুণকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাটি তদন্ত করছেন হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক মো. সুমন। তিনি বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। আমরা মামলাটি তদন্ত করছি। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে এখন কিছু বলতে চাচ্ছি না। আমরা কাজ করছি।

;

গাইবান্ধায় রেলপাত বিক্রির সময় অটোচালকসহ আটক ৩



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধায় চুরি করা রেলপাত (রেললাইন) ভাঙ্গারির দোকানে বিক্রির সময় এক অটোচালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে শহরের ব্রীজরোড এলাকার আশা ভাঙ্গারি দোকানে সরকারি এসব রেল লাইন বিক্রির সময় তাদেরকে হাতেনাতে আটক করে গাইবান্ধার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)। তবে, ভাঙ্গারির দোকানের মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা।

এ সময় চুরি করে বিক্রি করতে নিয়ে আসা রেলপাত এবং সেসব পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশাও জব্দ করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, উপজেলার পশ্চিম দুর্গাপুর এলাকার মৃত দুলা মিয়ার ছেলে সাগর মিয়া (৩০), ফুলছড়ি উপজেলার উত্তর কঞ্চিপাড়া এলাকার বাবর উদ্দিনের ছেলে ওয়াহেদ মিয়া (৪০) ও আশা ভাঙ্গারি দোকানের শ্রমিক সদর উপজেলার বালুয়া বাজারের পাকারখুটি এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে মোকলেছুর রহমান (৩৩)। তাদের মধ্যে ওয়াহেদ মিয়ার অটোতে এসব মালামাল পরিবহন করা হয়েছিল।

বিষয়টি মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম তালুকদার।

এ সময় তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের ব্রীজ রোডের একটি ভাঙ্গারীর দোকানে সরকারি রেলপাত অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের সময় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এসময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, এসময় তাদের কাছ থেকে খন্ড খন্ড তিন ফুট দৈর্ঘ্যের ৯ টুকরা রেললাইনের পাত উদ্ধার করা হয়। যা সেগুলো সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেওয়া হবে। রেলপাতগুলো বালাসিঘাটের পরিত্যাক্ত রেলপথের।

এ সময় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনে মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া এদের সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

;