বিশ্বের ৫ এআই আর্টিস্ট: মেশিন যখন সৃজনশীল
ঢাকা: বিজ্ঞানীরা হরহামেশাই বলে থাকেন, ভবিষ্যতের বিশ্ব হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর। টেক-জায়ান্টরা বিলিয়ন-ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করছে শুধু এআই-কে আরও কর্মক্ষম করে তোলার জন্য।
সক্ষমতার বিচারে এআই মানুষের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে গেছে কেবল দু’টি জায়গা বাদে, মানবিক চিন্তা ও সৃজনশীল মনন। তবে বসে নেই বিজ্ঞানীরা। এআই-কে মানুষের মতো চিন্তা-ক্ষমতা ও আচরণ দিতে দিন-রাত এক করে ফেলছেন তারা। যদি পারেও, প্রশ্ন উঠছে— এআই কি আর্ট অর্থাৎ শিল্প সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে?
আমরা আমজনতা যাই বলি না কেন, বিষয়টি নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ নিয়েছে বিজ্ঞানীরাও। আর নেবেই-বা-না কেন! এই এআই-দের পারদর্শিতা দেখলে আপনারও চোখ কপালে উঠবে। দেখে নিই এই সময়ের পাঁচ ‘আর্টিস্ট’ এআই।
এআই যখন বিটলস
এই তো কদিন আগে, একটি হিউম্যান-এআই’র সমন্বয় একটি পপ সং এর সুর তৈরি করে। পরে দেখা গেলো, ১৯৬০ সালে তৈরি করা বিটলসের একটি গানের সুরের সঙ্গে অবিশ্বাস্যভাবে মিলে যাচ্ছে। এআই’র সৃষ্টি করা সেই সুরের কথা একজন মানুষ লিখলেও মেলডিটি কিন্তু কম্পিউটারের ব্রেইন থেকেই আসা। এই সুর তৈরি করতে ওই এআই ১৩ হাজার লিড শিট থেকে ডেটা নেওয়ার জন্য ‘ফ্লো মেশিন’ নামে একটি সিস্টেম ব্যবহার করে। লিড শিট হলো পপ সংয়ের মেলডির মিউজিক্যাল নোটেশন।
বিপ্লব যখন নাচে
সাদা ফেব্রিকে মোড়ানো একটি ডোম ফ্রেমওয়ার্কের ভেতর একটি এআই রোবট মানুষের নাচের অনেক মুদা রেকর্ড করে নিজে নিজেই বিশ্লেষণ করে নেয়। পরে এটি সেইসব নাচের মুদ্রাগুলো হুবহু নেচে দেখায়। তাল-লয়ের এতোটুকু নড়চড় হয়নি।
ফুটন্ত ডায়নোসর
এলগরিদমের মাধ্যমে এআই-কে ভিজুয়াল স্টাইলের বেসিক এলিমেন্টগুলো শেখানো হয়। এর ফলে এআই এর নিউরাল নেটওয়ার্ক সেগুলো ব্যবহার করে নতুন নতুন ডিডজটাল শিল্পকর্ম তৈরি করে। এই এলগরিদম কাজে লাগিয়ে এক এআই তৈরি করে ‘বোটানিক্যাল ডায়নোসর’। তাতে ছিলো ট্রাইসেরাটপস, টি. রেক্স, স্টেগসরাস ও অন্যান্য ডায়নোসরের ছবি। তাও আবার ফুল ও গাছপালাসহ। এ ধরনের টেকনিককে বলা হয়, স্টাইল ট্রান্সফার যা বিভিন্ন আর্ট স্টাইলকে অনুসরণ করে ছবি তৈরি করে।
মাস্টারক্লাস শিল্পী
ভিনসেন্ট নামে এক এআই বেশ কয়েকজন হিউম্যান আর্টিস্টের সঙ্গে সহকারী হিসেবে থেকে শিখে নেয় রঙের ব্যবহার, কনট্রাস্ট, ব্রাশস্ট্রোকস প্রভৃতি। পরে এআই ভিনসেন্ট ২০ শতাব্দীর রেনেসাঁকালীন আট হাজার ছবি এঁকে দেয়। খোদ ভিনসেন্ট ভ্যান গগ-ও এতো ছবি আঁকেননি।
দুঃস্বপ্নে হাতকড়া
দুঃস্বপ্ন কে না দেখে! অনেকের এখান থেকে মানসিক রোগও হয়ে যায়। ‘নাইটমেয়ার মেশিন’ নামে এক এআই দুঃস্বপ্নকে ছবিতে রূপান্তর করে দেখিয়েছে। নিউরনের ডেটা স্ট্রাকচারকে গভীর বিশ্লেষণের মাধ্যমে দুঃস্বপ্নকে এটি ছবিতে রূপ দেয়।
এবার বলুন, এই এআইগুলো কি কোনো অংশে একজন শিল্পীর চেয়ে কম?