মবিন-মান্নানকে নিয়ে বিপাকে আ.লীগ
বিকল্পধারাকে জোটে টানতে গিয়ে বিপাকে পড়ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এ জন্য আপাতত বিকল্পধারা নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টকে বাদ দিয়ে প্রার্থীদের মনোনয়ন ঘোষণা করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। বিকল্পধারায় ‘উইনেবল/ ইলেকটেবল’ প্রার্থীর অভাব রয়েছে বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ মনোনয়ন বোড সূত্র জানায়, উইনেবল প্রার্থী থাকলে আওয়ামী লীগ তাদের নিজস্ব প্রার্থীকে বসিয়ে দিতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগের শক্ত প্রার্থী বসিয়ে দিতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ বেঁকে বসবে। যার প্রভাব পড়বে ভোটে।
বিকল্পধারা ও আওয়ামী লীগ উভয় দলের দুটি আসন নিয়ে এখন এ ধরনের জটিলতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে নোয়াখালী-৪ আসনে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান জোটগত প্রার্থিতা চাচ্ছেন। কিন্তু এ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে শক্ত প্রার্থী মনে করে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। তাকে বাদ দিলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বেঁকে বসবেন। দলের মনোনয়ন বোর্ড বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
একই সমস্যা সিলেট-৬ আসন নিয়ে। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে বসিয়ে দিয়ে শমসের মবিন বিকল্পধারার প্রার্থী হতে চাচ্ছেন। শমসের মবিন মনোনয়ন জমাও দিয়েছেন এ আসনে। এটাও তৃণমূল আওয়ামী লীগ মানছে না। দল ছাড়া অন্য দলের প্রার্থী জিততে পারবে না বলে দলের হাইকমান্ডকে জানানো হয়েছে।
এ অবস্থায় বিকল্পধারাকে জোটে নেওয়া নিয়ে এক ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বিকল্পধারা অপেক্ষা করছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে চূড়ান্ত বৈঠক করার জন্য।
এ নিয়ে জানতে চাইলে বিকল্পধারার সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক জানান, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চূড়ান্ত হলেই বিকল্পধারা তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে। সম্ভাব্য প্রার্থী সম্পর্কে আওয়ামী লীগকে ধারণা দিয়ে রাখা হয়েছে। এখন চূড়ান্ত আলোচনাটা বাকি।
বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) মান্নান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি অনিশ্চিত পর্যায়ে রয়েছে। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। আমি নোয়াখালী থেকে নির্বাচন করতে চাই।’
কিন্তু আওয়ামী লীগ তাদের ইউনেবল কোনো প্রার্থী থাকলে তাকে সরিয়ে দেবে কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে আগেও আমি নির্বাচন করেছি। এখন আওয়ামী লীগ যদি না দেয় বা জোটে সিদ্ধান্ত না হয় তাহলে আমরা বিকল্পধারার জোট যুক্তফ্রন্ট থেকে প্রার্থী হব।’
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এখন আলোচনা সাপেক্ষে আওয়ামী লীগ কতটা ছাড় দেবে সেটা ঠিক করা বাকি রয়ে গেছে। কারো সঙ্গে না গেলে আমরা একাই নির্বাচন করব। তবে আমাকে আসন ছেড়ে দিতে আওয়ামী লীগকে এখনো প্রস্তাব করিনি।’
সদ্য বিকল্পধারায় যোগ দেওয়া শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে দু’একদিন পরে যে বৈঠক হবে সেখানে আলোচনা হবে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট হলে আসন ছেড়ে দিতে হবে তাদের। যদি না দেয় তখন আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমি সিলেট থেকে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, দু’একদিনের মধ্যে দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করে প্রকাশ করা হবে। আর জোটের কেউ আসন নিতে চাইলে তাকে শক্ত প্রার্থী বা জেতার মতো অবস্থা থাকতে হবে। তাছাড়া কাউকে দেওয়া হবে না।