ভোটের আগে ওয়াজ মাহফিল আয়োজনে বাধা নেই
ভোটের আগে পূর্ব নির্ধারিত অথবা ইতোমধ্যে অনুমোদিত ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল কিংবা এ জাতীয় জমায়েত অথবা কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনে বাধা নেই বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
পূর্ব নির্ধারিত ওয়াজ মাহফিল ছাড়া এ সময়ের মধ্যে ওয়াজ মাহফিল আয়োজনের জন্য জেলা প্রশাসক অথবা উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) ইসির যুগ্ম-সচিব (নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখা) ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জানা গেছে, সম্প্রতি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন করে ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি না দিতে ইসির নির্দেশনার প্রেক্ষিতে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। ফলে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিধি-নিষেধের বিষয়টি কিছুটা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনুমতি সাপেক্ষে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠানের বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এসব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক বক্তব্য বা কোনো প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য দেওয়া যাবে না।
ইসির নির্দেশনায় বলা হয়, ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বিষয়ে একটি মহল বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। এ ধরনের অপপ্রচারের ফলে নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে বিরুপ ধারণা সৃষ্টি, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রকৃতপক্ষে ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা উক্তরূপ জমায়েতের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেননি। পূর্ব নির্ধারিত অথবা ইতোমধ্যে অনুমোদিত ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা উক্তরূপ জমায়েত অথবা অনুরুপ কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনে বাধা নেই। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে এবং নির্বাচন পূর্ব পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখতে পূর্ব নির্ধারিত ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা উক্তরূপ জমায়েত ছাড়া নতুন কোনো ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা উক্তরূপ জমায়েত অথবা অনুরুপ কোনো অনুষ্ঠান নির্বাচনের পর অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বরের পর আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশন অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত ও বিশেষ বিবেচনায় ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিলে কোনো প্রার্থী, রাজনৈতিক দলের সদস্য বা অন্য কেউ যেন কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা অথবা কারও পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো বক্তব্য প্রদান না করেন তার জন্যও নির্বাচন কমিশন বিশেষভাবে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এ লক্ষ্যে উক্তরুপ সভায় একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, উল্লিখিত প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা অনুরুপ জমায়েত সংক্রান্ত একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে অপপ্রচার রোধে এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অপচেষ্টা নস্যাৎ করার জন্য এমন ধর্মীয় সভা-জমায়েত আয়োজনে সূত্রোল্লিখিত নির্দেশনার যোগসূত্রে ক্ষেত্র বিশেষে রিটার্নিং অফিসার (বিভাগীয় কমিশনার, ঢাকা অথবা বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম অথবা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক) এর নিকট হতে অথবা সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বা রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার অনুমতি গ্রহণকরতঃ স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিতকরণের জন্য নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা প্রদান করেছেন। একই সঙ্গে এ ধরনের অনুষ্ঠানে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ১১ বিধি প্রতিপালনপূর্বক কোনো ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য বা কোনো প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য দেওয়া যাবে না মর্মেও নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন।
এমতাবস্থায়, নির্বাচন কমিশনের উল্লিখিত নির্দেশনা অনুসারে ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা উক্তরূপ জমায়েত অথবা অনুরুপ ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য নির্দেশিত হয়ে অনুরোধ করা হলো।