ফরিদপুর-৪: বিভক্ত আ’লীগে সুযোগ নিতে চায় বিএনপি
ফরিদপুর (ভাঙ্গা) থেকে: আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রচার প্রচারণায় বাধা, হামলা, ব্যানার, পোস্টার ছিড়ে ফেলা, কেড়ে নেওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এমনকি পুলিশের বিরুদ্ধেও বরাবরই অভিযোগ করে আসছে বিএনপি।
সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন এই তিন নির্বাচনী এলাকার চিত্র ভিন্ন। আওয়ামী লীগ, স্বতন্ত্র ও বিএনপির প্রার্থীদের পোস্টার টাঙানো হয়েছে একই গাছে কিংবা বিল্ডিংয়ের ছাদে। সর্বত্রই বিএনপির ব্যানার পোস্টার সমানভাবে দেখা গেছে।
ভাঙ্গা উপজেলার নির্বাচনী এলাকা ঘুরে ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কাজী জাফর উল্লাহকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছিলেন নিক্সন চৌধুরী। এরপর থেকেই সমাজসেবা ও নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও জ্বালাময়ী বক্তৃতার মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি।
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিংহ প্রতীকে নির্বাচন করছেন নিক্সন চৌধুরী।
আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসনে আওয়ামী লীগের একটি অংশ স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সন চৌধুরীকে সমর্থন করছে। অপর অংশ কাজী জাফর উল্লাহর সঙ্গে। আওয়ামী লীগের এই বিভক্তিতে সুযোগ নিতে তৎপরতা চালাচ্ছে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিমের কর্মী-সমর্থকরা।
ভোটাররা বলছেন, এই আসনে বিএনপির ভালো অবস্থান ছিল না। আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দ্বন্দ্বে বিএনপি অবস্থান তৈরির করে চলেছে। এর পিছনে বিএনপির প্রার্থী সেলিমের অবদান রয়েছে মত সমর্থকদের। তিনি ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি।
পৌর এলাকায় সেলিমের প্রচারণা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কিছু কর্মী-সমর্থক পোস্টার নিয়ে ব্যস্ত। অনেকে আবার খাতা কলমে কষছেন প্রচারণার কৌশল ও কোথায় কী অবস্থা। অনেকটা দ্বিধাদ্বন্দ্বহীন ও ভয়ভীতি ছাড়াই চলছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা জানান দলীয় সমর্থক রফিকুল ইসলাম।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সন চৌধুরী এখানে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আওয়ামী লীগের কাজী জাফর উল্লাহর তুলনায় নিক্সন চৌধুরী জনপ্রিয় প্রার্থী। তবে আওয়ামী লীগের ভোটের বিভক্তিতে বিএনপি সুযোগ নিতে পারে। তবে ধানের শীষের নেতাকর্মীরা চুপচাপ আছে। ভেতরে ভেতরে কাজ করছে।
বিএনপি প্রার্থী সেলিমের মামা আমিনুর হক বার্তা২৪কে বলেন, ‘এই আসনে বিএনপির কোনো অবস্থান ছিল না। সেলিম দীর্ঘদিন ধরে এখানকার বিএনপিকে গোছানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দিন যতই যাচ্ছে বিএনপির অবস্থান শক্ত হচ্ছে।’
বিএনপির প্রচার প্রচারণায় কোনো বাধা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রচারণায় কোনো বাধা নেই। এখানে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। মাঝে মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এটার সুযোগ বিএনপি পেতে পারে।’