এরশাদের আসনে চমক দেখাতে চান সাব্বির
সাব্বির আহমেদ। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতা হিসেবেই পরিচিত তিনি। তাকে একটা সময় রংপুরের বাঘ বলা হতো। নব্বইয়ের ‘স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন’ থেকে শুরু করে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনে রাজপথে দাপুটে ভূমিকা ছিল তার।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মশাল প্রতীকে এরশাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাব্বির আহমেদ। তিনি এবার জাসদ ছেড়ে ভোট করছেন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির (পিডিপি) হয়ে। বাঘ প্রতীকে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। ছুটছেন পাড়া-মহল্লা থেকে হাট-বাজারে। পরিবর্তনের পক্ষে চাইছেন বাঘ প্রতীকে ভোট।
২০১৪ সালের নির্বাচনে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) বেডে থেকেই ভোট করেছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ওই নির্বাচনে প্রায় ৩০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। সে সময় প্রতিদ্বন্দ্বী সাব্বির আহমেদ মশাল প্রতীকে পেয়েছিলেন ২৫ হাজার ৫৯৪ ভোট।
এবারো নির্বাচনের সময় এরশাদ রয়েছেন রংপুরের বাইরে। অসুস্থতার কারণে চিকিৎসা নিতে চলে গেছেন সিঙ্গাপুরে। এতে কিছুটা হতাশ রংপুরের মানুষ। ভোটের হাওয়ায় যখন উৎসবে ভেসে থাকার কথা, তখন এলাকার এমপিকে কাছে না পেয়ে হতাশ সাধারণ ভোটাররা। এ হতাশাকে কাজে লাগিয়ে এবারো চমক দেখাতে চাইছেন সাব্বির আহমেদ। যদিও ২০১৪ সালের নির্বাচন আর এবারের নির্বাচন এক নয়।
সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর মহানগরীর টাউন হল চত্বর, সিটি বাজার ও পায়রা চত্বর এলাকাতে গণসংযোগকালে সাব্বির আহমেদের সঙ্গে কথা হয় বার্তা২৪.কমের প্রতিবেদকের। এ সময় তিনি বলেন, ‘তরুণ সমাজ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ আমার পাশে আছে। তারা পরিবর্তন চায়। এই পরিবর্তন রংপুরের উন্নয়নের জন্য। ভোট সুষ্ঠু হলে জনগণ আমার পক্ষে থাকবে।’
এদিকে সাবেক জাসদ নেতা সাব্বির আহমেদ নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ এনে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এরশাদের মনোনয়নের বৈধতা স্থগিতের জন্য নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছিলেন। এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে এরশাদ জয়ী হলে তার শপথগ্রহণ স্থগিতসহ তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন সাব্বির আহমেদ।
এবার রংপুর-৩ আসনে মহাজোট মনোনীত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ (লাঙ্গল) ও বিএনপি সমর্থিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী রিটা রহমান (ধানের শীষ) ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল (হাতপাখা), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাখাওয়াত হোসেন রাঙ্গা (মশাল), জাকের পার্টির আলমগীর হোসেন আলম (গোলাপ ফুল), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আনোয়ার হোসেন বাবলু (কোদাল), খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল (দেওয়াল ঘড়ি) এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শামসুল আলম (আম) ভোটযুদ্ধের মাঠে রয়েছেন। নয়জন প্রার্থীর মধ্যে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে আছেন লাঙ্গল, ধানের শীষ, হাতপাখা ও বাঘ প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ (সদর উপজেলা ও সিটি করপোরেশন) আসনে এবার মোট ভোটার ৪ লাখ ৪১ হাজার ৬৭৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২১ হাজার ১০৯ এবং নারী ভোটার ২ লাখ ২০ হাজার ৫৬৪ জন। এ আসনে ১৭৫টি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।