ভোট নিয়ে প্রার্থীদের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে প্রার্থীদের মতবিনিময় সভায় উঠে এসেছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর প্রার্থীদের প্রচার সামগ্রী ছিড়ে ফেলার অভিযোগ। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিরোধীদলের প্রার্থীরা।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম মহনগরের ছয়টি আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন বিভাগীয় কমিশনার।প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী চলা সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও রির্টানিং কর্মকর্তার কাছে প্রার্থীরা নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ তুলে ধরেন।
সভার শুরুতে চট্টগ্রাম-৫ আসনে ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী নাঈমুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন গণসংযোগে বাধা, হুমকি দিয়ে আসছে। প্রশাসন কার্যত কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আশঙ্কা হচ্ছে ৩০ তারিখ ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবে কিনা।‘
নির্বাচনের ন্যূনতম পরিবেশ নেই জানিয়ে চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, ‘এলাকায় নেতা-কর্মীদের ঘরে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না, প্রতিদিন রাতে ধরপাকড় চলছে। প্রচারণাকালীন এ কয় দিনে ৫০ জনের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু, অবাধ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের নামে ভয়ংকর, অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম-৪ আসনে বিএনপি প্রার্থী ইসহাক কাদের চৌধুরী বলেন, ‘প্রচারণার কাজ শেষে বাসা থেকে ফেরার পথে ২৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে গায়েবি মামলায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানালেও কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
চট্টগ্রাম-১১ আসনে বিএনপি প্রার্থী আমির খসরু মাহমুদ বলেন, ‘অভিধানে নতুন সংযোজন গায়েবি মামলা। দেশে নেই, জেলহাজতে, মৃত এমন ব্যক্তির নামে নতুন করে মামলা দেওয়া হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের বাসায় না ফেলে তার ভাই-বোনদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষ ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন কিনা, ভোট দিতে পারবেন কিনা তার সমাধান করা হউক।’
চট্টগ্রাম-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘কোনো ভয়ভীতির পরিস্থিতি দেখছি না। সর্বত্রই ব্যানার পোস্টার দেখছি। যদি আতঙ্ক, উৎকণ্ঠার কথা বলা হয়, তাহলে ফিরে যেতে হবে কারা পেট্রোল মেরে মানুষ পুড়িয়েছে।’
প্রার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট মামলা, অভিযোগে অভিযান, তল্লাশি পরিচালনা করি। এটি পুলিশের রুটিন কাজ। তথ্য ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করি না। আর ব্যানার-পোস্টার ছিড়ে ফেলার বিষয়ে সহমর্মিতা না দেখালে হবে না। এরপরেও যদি অভিযোগ থাকে তাহলে এসপিকে জানাবেন।’
অনুষ্ঠানে সমাপনীর বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার চট্টলার সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশ কামনা করে প্রার্থীদের উত্থাপিত বিষয়গুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।