ঢাকা-৫: প্রচারণায় এগিয়ে মোল্লা, পিছিয়ে নবী
যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, ডেমরা ও কদমতলী থানার আংশিক নিয়ে ঢাকা-৫ আসন। নব্বই-পরবর্তী সময়ে দুবার বিজয়ী হয়েছিলেন বিএনপির প্রার্থী সালাউদ্দিন। তারপর ২০০৮ ও ২০১৪ তে সংসদ সদস্য হন হাবিবুর রহমান মোল্লা। এবারও নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোল্লা আর বিএনপি থেকে প্রথমবারের মত নবী উল্লাহ।
নবী উল্লাহর আগে এ আসনে বিএনপি থেকে দুইবারের এমপি ছিলেন সালাউদ্দিন। ২০০৩ পানি ও বিদ্যুতের দাবিতে স্থানীয়দের আন্দোলনের মুখে দৌঁড়ে পালিয়েছিলেন সালাউদ্দিন। তখন তিনি দৌঁড় সালাউদ্দিন নামে পরিচিতি পান। এবার বিএনপি তাকে মনোনয়ন দেয়নি। মনোনয়ন পেয়েছেন স্থানীয় ডেমরা যাত্রাবাড়ি বিএনপির ২০ বছর নেতৃত্ব দেয়া নবী উল্লাহ। ঢাকা মহানগরর বিএনপিতেও তার প্রভাব রয়েছে।
তবে ভোটের মাঠে নিজ এলাকায় প্রচারে পিছিয়ে পড়েছেন তিনি। এ আসনে নৌকা প্রতীকে মোল্লার প্রচার প্রচারণা সরগরম। নৌকার পোস্টার দেখা গেছে এলাকার সর্বত্র। সায়েদাবাদ টার্মিনালে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা নৌকার পক্ষে বিশাল সভা সমাবেশ করেছেন।
বিপরীতে নবী উল্লাহকে মাত্র তিনদিন মাঠে দেখা গেছে। তেমন পোস্টার নেই নবী উল্লাহর। এ এলাকার সন্তান হিসেবে নবী উল্লাহর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। তার নিজস্ব যে নেতাকর্মী রয়েছেন তারাও এখন পুলিশী বাঁধায় নামতে পারছেন না।
এরমধ্যে নবী উল্লাহর একজন সমর্থককে পুলিশ আটক করে নিয়ে যাওয়ার আড়াই ঘণ্টা পর মারা গেছেন। পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে খুন করেছে অভিযোগ করেন তিনি।
নবী উল্লাহ অভিযোগ করেন, ‘রাতে পুলিশ গাড়ি নিয়ে এসে তার পোস্টার খুলে নিয়ে যায়। দিনে তার কর্মীরা প্রচারে নামলে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়।’
যুবদলের একজনকে আটক করে পুলিশ পরে হত্যা করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নবীর সমর্থকরা বলছেন, নবী এলাকার সন্তান। ২০ বছর বিএনপির যাত্রাবাড়ি ডেমরার নেতৃত্বে ছিলেন নবী। তার পক্ষে এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা ৩০ ডিসেম্বর ভোট বিপ্লব দেখাবেন।
তারা আরও বলেন, এ এলাকায় সাধারণ মানুষ পুলিশী নির্যাতন হয়রানিতে অতিষ্ট। এখনো এ অবস্থা চলছে। এ কারণে ধানের শীষের সমর্থনে নিরব থাকছেন বাসিন্দারা। ৩০ ডিসেম্বর ভোট দিতে পারলে তাদের বেশিরভাগের সমর্থন নবীর দিকেই যাবে।
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন এ আসন থেকে চারজন। কিন্তু শেষে মনোনয়ন পান দুইবারের এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা। এদের মধ্যে দুজন এখনও মোল্লার সমর্থনে মাঠে তৎপর হননি। এ অবস্থায় দলে কোন্দল নিয়ে মাঠে নেমেছেন মোল্লা।
সায়েদাবাদ যাত্রাবাড়ী এলাকায় সরকার দলীয় পরিবহন শ্রমিক নেতারা তাকে সমর্থন দিয়েছেন। ভোটে তারা মোল্লার সমর্থনে নৌকার পক্ষে কাজ করবেন বলে জনসভা করে ঘোষণা দিয়েছেন।
কয়েকহাজার শ্রমিক ও মালিক নিয়ে সায়েদাবাদে এক সভা করে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে আহ্বান করেছেন।
এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৫০ হাজার ৭২৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩১ হাজার ৫৯২ এবং নারী ভোটার ২ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ জন।
এই আসনে মহাজোটের শরীক জাতীয় পার্টিও লাঙল প্রতীকে প্রার্থী দিয়েছেন। প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন জাতীয় পার্টির মীর আবদুস সবুর আসুদ। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. আলতাফ হোসেন ‘হাতপাখা, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. আরিফুর রহমান ওরফে সুমন মাস্টার ‘আম’, গণফোরামের এস এম আলতাফ হোসেন ‘উদীয়মান সূর্য’, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির মো. আব্দুর রশিদ ওরফে আব্দুর রশিদ সরকার ‘কুঁড়েঘর’, ইসলামী ঐক্যজোটের মো. আব্দুল কাইয়ুম ‘মিনার’, জাকের পার্টির মো. রবিউল ইসলাম ‘গোলাপ ফুল’ ও গণফ্রন্টের শামীম মিয়া ‘মাছ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।