একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট যুদ্ধ আজ
১০ বছর পর নৌকা-ধানের শীষ প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বিতা
প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনে ইভিএমে ভোট
একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আজ। বিরোধপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও সব দলের অংশগ্রহণে হতে যাচ্ছে এবারের নির্বাচন। সকাল ৮টা থেকে ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। চলবে বিকাল চারটা পর্যন্ত। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সঙ্গে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভোটের লড়াইয়ে ভোটাররা যাদের পক্ষে রায় দেবেন তারাই আগামী পাঁচ বছরের জন্য সরকার গঠন করবেন।
শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে নির্বাচনী প্রচার বন্ধ হয়েছে। গতকাল রাতের মধ্যেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে ব্যালট পেপারসহ ভোটগ্রহণ সামগ্রী। নির্বাচন কমিশন সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে সারাদেশে বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় ছয় লাখ আট হাজার সদস্য। যানবাহন চলাচলের ওপর আরোপ করা হয়েছে বিধিনিষেধ। আজ সারাদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ভোটের মাঠে দীর্ঘ ১০ বছর পর নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে যাচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ ১২টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল। এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বিএনপিসহ জোটের শরিকরা।
দুই শীর্ষ জোটের প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্য দিয়ে ইতোমধ্যে প্রচার প্রচারণা শেষ হয়েছে। বিএনপি নেতৃত্বার্ধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দলীয় প্রার্থীদের প্রচারণায় বাধা দেওয়া, হামলা-মামলার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলছে বিএনপি জামায়াতের হামলায় তাদের ছয়জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। দুই দলের এমন অভিযোগের মধ্যেই আজ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের মাঝপথে ঐক্যফ্রন্ট বা বিএনপি ভোট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও আওয়ামী লীগসহ মহাজোটের প্রার্থীদের ফলাফল হাতে নিয়ে ঘরে ফিরতে হবে। অভিযোগ করেন, বিএনপি জোট আওয়ামী লীগের উপর হামলা চালিয়ে, নিজেরাই সবার কাছে নালিশ করে বেড়ায়। জিতলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে আর হারলে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই বিএনপির নীতি, বলেন শেখ হাসিনা। ফের ক্ষমতায় এলে সমৃদ্ধ দেশ গড়ার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এর জবাবে ভোটের মাঠ থেকে কোনোভাবেই সরে দাঁড়াবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সাথে আলাদা সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপির মধ্যে কারো মতামতে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই, নির্বাচন থেকে সরেও যাব না। সকাল সকাল কেন্দ্রে যান। ভোট দিন। আপনারা ভয় পাবেন না। আপনারা গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাবে। জনগণের শক্তির সাথে তারা পারবে না। প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার যারা ভোট গ্রহণের দায়িত্বে আছেন আপনারা সম্মানিত মানুষ। সততার সাথে দায়িত্ব পালন করলে আপনাদের সম্মান বাড়বে।
এদিকে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নির্ভয়ে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। শনিবার দুপুরে রাজধানীর আজিমপুরে সেনা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ভোটের আগে ও পরে কেউ যাতে নাশকতা করতে না পারে সেজন্য সারা দেশে ৫০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান সেনাপ্রধান। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছি। আমাদের লোকজনকে এলাকাভিত্তিক ভাগ করে দিয়েছি, কোথাও পুলিশ কোথাও বিজিবি কোথাও র্যাব যাচ্ছে ,কোথাও সেনাবাহিনী যাচ্ছে। আমরা অলরেডি সারা দেশে ৫০ হাজার সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছি। তারা সব সময় টহল দিয়ে যাচ্ছে। আমরা সবাইকে কাজের মধ্যে রেখেছি। যাতে কেউ অরাজকতা করতে না পারে সেটিই আমাদের লক্ষ্য থাকবে।
আর নির্বাচন কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুসহ কেউ যাতে সহিংসতার শিকার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচন অনেক সুন্দরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনসহ আমরা প্রত্যেককে বলেছি, আপনারা এমন এক নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করবেন যাতে জনগণের মধ্যে কোনো ভীতি কাজ না করে। আমরা সবাই এমন কোনো ঘটনা না ঘটাই যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এভাবেই আমাদের প্রতিটি দলকে সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। আমরা সবাই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের সংস্কৃতি আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।’
নির্বাচন কমিশন বলছে, শান্তিপূর্ণ ভোট নিয়ে কোন শঙ্কার কারণ নেই। কমিশন ইতোমধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। ভোটাররা নির্বিঘ্ন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার দুপুরে আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানা প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, দেশে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনি পরিবেশ বজায় রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।"
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী (অবঃ) বার্তা২৪.কমকে বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য কমিশন সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রায় ছয় লাখের বেশি সদস্য ভোটের মাঠে কাজ করছেন। ভোটররা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারেন তার জন যতটা প্রস্তুতি দরকার, সেটি আমরা সম্পন্ন করতে পেরেছি। জরুরি প্রয়োজনে পরিবহন কাজের জন্য প্রস্তুত রয়েছে সশস্ত্রবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা ভোটারদের নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা নিয়েছি। ভোটারদের নিরাপত্তায় অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গ সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠে রয়েছেন। ভোটের জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশা করছি।
জানা গেছে, নির্বাচনে ভোটার ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫জন। আর মহিলা ভোটার ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন। ভোটে ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার ( দুইজন বিভাগীয় কমিশন ও ৬৪ জন জেলা প্রশাসক) দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ৪০ হাজার ১৮৩। ভোকক্ষ ২ লাখ সাত হাজার ৩১২টি। ভোটে ৪০ হাজার ১৮৩জন প্রিজাইডিং অফিসার, দুই লাখ সাত হাজার ৩১২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ৪ লাখ ১৪ হাজার ৬২৪ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন।
ভোটে প্রার্থী ১ হাজার ৮৬১ :
সব প্রক্রিয়া শেষে সংসদ নির্বাচনে ভোটের ব্যালটে থাকছে ১ হাজার ৮৬১ প্রার্থীর নাম; তাদের মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১৭৩৩ জন; বাকি ১২৮ জন স্বতন্ত্র। আওয়ামী লীগ ও শরিকদের মিলিয়ে নৌকার ২৭২ জন প্রার্থী চূড়ান্ত লড়াইয়ে আছেন। তাদের বিপরীতে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি ও শরিকদের প্রার্থী সংখ্যা ২৮২। স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ১২৮ জন।
দলগুলোর মধ্যে এলডিপির ৮ (ধানের শীষ ৪), জেপি ১১ (মহাজোট ২), সাম্যবাদী দল ২, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৮ (ধানের শীষ ৪), সিপিবি ৭৪, আওয়ামী লীগ ২৬০ (নৌকা ২৭২), বিএনপি ২৫৭ (ধানের শীষ ২৮২), গণতন্ত্রী পার্টি ৬, ন্যাপ ৯, জাতীয় পার্টি ১৭৫ (মহাজোট ২৫), বিকল্পধারা ২৬ (নৌকা ৩), ওয়ার্কার্স পার্টি ৮ (নৌকা ৫), জাসদ ১১ (নৌকা ৩), জেএসডি ১৯ (ধানের শীষ ৪), জাকের পার্টি ৯০, বাসদ ৪৪, বিজেপি ৩ (ধানের শীষ ১), তরিকত ফেডারেশন ১৭ (নৌকা ১), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ২৪, বাংলাদেশ মুসলীম লীগ ৪৮, এনপিপি ৭৯, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম ৮ (ধানের শীষ ৩), গণফোরাম ২৮ (ধানের শীষ ৭), গণফ্রন্ট ১৩, পিডিপি ১৪, বাংলাদেশ ন্যাপ ৩, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ১১, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ১৮, কল্যাণ পার্টি ২ (ধানের শীষ ১), ইসলামী ঐক্যজোট ২৫, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ৫, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২৯৮, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ২৫, জাগপা ৪, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ২৮, খেলাফত মজলিস ১২ (ধানের শীষ ২), বিএমএল ১, মুক্তিজোট ২, বিএনএফ ৫৭ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে রয়েছেন।
ভোটের মাঠে থাকছে ৬ লাখ ৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য:
ভোটে ভোটকেন্দ্র এবং নির্বাচনী এলাকায় প্রায় ৬ লাখ আট হাজার সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। এরমধ্যে পুলিশ প্রায় এক লাখ ২১ হাজার, আনসার প্রায় ৪ লাখ ৪৬ হাজার, গ্রাম পুলিশ প্রায় ৪১ হাজার। ভোটে ৩৮৯ উপজেলায় সেনাবাহিনীর ৪১৪ প্লাটুন (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন), ১৮ উপজেলায় নৌবাহিনীর ৪৮ প্লাটুন, ১২ উপজেলায় কোস্টগার্ডের ৪২ প্লাটুন (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন), বিজিবির ৯৮৩ প্লাটুন (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন), র্যাবের প্রায় ৬শ' প্লাটুন (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন), মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের প্রায় ২ হাজার প্লাটুন (প্রায় ৬৫ হাজার) দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও সারাদেশে জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশের টহল দল নিয়োজিত আছেন।
ভোটের মাঠে ১ হাজার ৩২৮ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট:
ভোটের মাঠে ১৩শ' ২৮ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য ৬৫২ জন অবশিষ্ট ৬৭৬ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোবাইল/ স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়াও ৬৪০ জন জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনে ১২২টি ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটিতে ২৪৪জন দায়িত্ব পালন করছেন।
নির্বাচনে ৮১টি প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৯শ' জন দেশীয় পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন। এছাড়াও ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েলথ হতে আমন্ত্রিত ও অন্যান্য বিদেশী পর্যবেক্ষক ৩৮ জন, কূটনৈতিক ও বিদেশী মিশনের ৬৪ জন কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশস্থ দূতাবাস, হাইকমিশন বিদেশী সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশী ৬১ জনসহ মোট ১৬৩ জন দায়িত্ব পালন করবেন।
ছয় আসনে ইভিএমে ভোট
নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ছয়টি সংসদীয় আসন নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ছয়টি আসনে প্রায় ২১ লাখ ২৪ হাজার ৪১১ জন ভোটার সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিতে পারবেন। ছয়টি আসনের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাতটি আসন থেকে ঢাকা-১৩, ঢাকা দক্ষিণের সাতটি আসন থেকে ঢাকা-৬, চট্টগ্রাম সিটির তিনটি আসন থেকে চট্টগ্রাম-৯ আসন নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যান্য সিটি করপোরেশনের মধ্যে রংপুর-৩ ও খুলনা- ২ আসন এবং বাকি ২১টি পৌরসভা ও সদর উপজেলা থেকে সাতক্ষীরা-২ আসন নির্ধারণ করা হয়েছে।
ফলাফল ঘোষণা
ফলাফল কেন্দ্রেই গণনা করা হবে। প্রিজাইডিং অফিসার ফলাফল গণনার পর উপস্থিত পোলিং এজেন্টদের কাছে হস্তান্তর করবেন। এরপর তিনি ফলাফল ও মালামাল সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের কার্যালয়ে এসে লিখিতভাবে জমা দেবেন। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার সেই ফলাফল রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠাবেন। পরে রিটার্নিং অফিসাররা আরএমএস -এর মাধ্যমে (ইসির ইন্টারন্যাল সাইট) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাবেন। সচিবালয়ে ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সেখান থেকে ৮টি বিভাগের জন্য ৮টি মনিটর থাকবে। সেগুলো আমরা মনিটরে দেখাবো। এই ৮টি বিভাগকে একত্র করে একটি মনিটরে দেখানো হবে। আরও একটি মনিটর থাকবে রাজনৈতিক দলভিত্তিক। এই ১০টি মনিটরের মাধ্যমে ফলাফল দেখানো হবে। ওখানে একটি মঞ্চ থাকবে, সেখান থেকে ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণাও করা হবে।
গাইবান্ধা- ৩ আসনে একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ভোট স্থগিত করে পুনঃতফসিল দেয়া হয়েছে। এই আসনে ২৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ নির্ধারণ করেছে ইসি।
গত ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর ১২ নভেম্বর পুনঃতফসিল করা হয়। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা প্রচার শুরু করেন, সেই সুযোগ শেষ হয় ২৮ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল ৮টায়।