সুখী হওয়ার পাঁচ উপায়



সেন্ট্রাল ডেস্ক ২

  • Font increase
  • Font Decrease
"বিজ্ঞানে এটা প্রমাণ হয়েছে যে সুখী হতে হলে সচেতন প্রচেষ্টার প্রয়োজন," বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান এবং কগনিটিভ বিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক লরি স্যান্টোস। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, "এটা খুব একটা সহজ কাজ নয়, এজন্যে সময় লাগবে।" তবে তিনি হয়তো জানেন যে সুখী হতে হলে কী করতে হবে? কারণ তিনি পড়ান 'মনোবিজ্ঞান ও সুন্দর জীবন' বিষয়ে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১৬ বছরের ইতিহাসে তার ক্লাস শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১২,০০। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি রেকর্ড। ইতিবাচক মনোবিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে এই কোর্সটি পরিচালনা করেন অধ্যাপক স্যান্টোস। এটা মনোবিজ্ঞানেরই একটি শাখা যেখানে সুখ এবং আচরণগত পরিবর্তনের বিষয়ে পড়ানো হয়। কিন্তু এসব তত্ত্ব আমরা কীভাবে আমাদের প্রতিদিনের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারবো? "সুখী হওয়া বিষয়টি এমন নয় যে এটা আপনা আপনি হয়ে যায়। সুখী হওয়ার জন্যে আপনাকে এটা চর্চ্চা করতে হবে," বলেন অধ্যাপক স্যান্টোস, "এটা অনেকটা ভালো সঙ্গীত শিল্পী বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠার মতোই, সাফল্যের জন্যে তাদেরকে যেমন চর্চ্চা করতে হয় সুখী হওয়ার ব্যাাপরেও আপনাকে সেটা করতে হবে।" কীভাবে সুখী হতে হবে তার কিছু কলাকৌশল তিনি শিক্ষার্থীদের শেখান সপ্তাহে দুদিন। আপনি সুখী হতে চান কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আপনি তো আর ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছেন না? এখান তার দেওয়া পাঁচটি টিপস তুলে ধরা হলো। চর্চ্চা করার চেষ্টা করে দেখতে পারেন। ১. কৃতজ্ঞতার একটি তালিকা তৈরি করুন অধ্যাপক স্যান্টোস তার শিক্ষার্থীদের বলেন, প্রত্যেক রাতে তারা যাদের কাছে বা যেসব জিনিসের কাছে কৃতজ্ঞ তার একটি তালিকা তৈরি করতে। "এটা শুনতে খুব সহজ মনে হতে পারে, কিন্তু আমরা দেখেছি যেসব শিক্ষার্থীরা নিয়মিতভাবে এটা চর্চ্চা করেন তাদের সুখী মনে হয়," বলেন অধ্যাপক স্যান্টোস। ২. আরো বেশি করে ও নিশ্চিন্তে ঘুমাতে চেষ্টা করুন এই কাজটা করা সবচেয়ে সহজ বলে মনে হয় কিন্তু আসলে এই কাজটা করা খুব কঠিন, বলেন তিনি। এখানে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, প্রতি রাতে আট ঘন্টা করে ঘুমানো। এবং এই কাজটা করতে হবে এক সপ্তাহ ধরে। অধ্যাপক স্যান্টোস বলেন, "আমরা সবাই জানি যে বেশি ঘুমাতে পারলে এবং নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারলে বিষণ্নতায় ভোগার সম্ভাবনা কম থাকে। এর ফলে ইতিবাচক মনোভাবও তৈরি হয়।" ৩. ধ্যান করুন আপনার কাজ হবে প্রত্যেকদিন ১০ মিনিট করে মেডিটেট বা ধ্যান করা। অধ্যাপক স্যান্টোস বলেন, তিনি যখন ছাত্রী ছিলেন তখন তিনি নিয়মিত ধ্যান করতেন এবং দেখেছেন সেটা করলে মন ভালো থাকে। এখন তিনি একজন অধ্যাপক, এখন তিনি তার শিক্ষার্থীদের শেখাচ্ছেন কিভাবে ধ্যান করতে হয়। তিনি বলেন, এধরনের কাজে পূর্ন মনোযোগ দিতে হয় যা মানুষকে সুখী হতে সাহায্য করতে পারে। ৪. পরিবার ও বন্ধুদের সাথে আরো সময় কাটান অধ্যাপক স্যান্টোস বলেছেন, গবেষণায় পরিষ্কার একটি বিষয় দেখা গেছে- পরিবার ও বন্ধুদের সাথে ভালো সময় কাটালে আপনি সুখী হবেন। আপনার যদি ভালো বন্ধুত্ব থাকে এবং সামাজিক যোগাযোগ থাকে এবং তাদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ হয় তখন তারা উল্লেখযোগ্য রকমের ভালো বোধ করেন। এজন্যে যে খুব বেশি কিছু করতে হবে তা নয়, স্যান্টোস বলেন, "শুধু এটা নিশ্চিত করুন যে আপনি এই সময়ে বেঁচে আছে, মনে করুন যে আপনারা একসাথে বর্তমান সময় কাটাচ্ছেন এবং আপনি কিভাবে আপনার সময় কাটাচ্ছেন সেবিষয়ে একটু সচেতন থাকুন।" তিনি বলেন, আপনার সুখী হওয়ার জন্যে সময় সম্পর্কে আপনার ধারণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। "আমাদের কতো অর্থ আছে সেটা দিয়ে আমরা প্রায়শই আমাদের সম্পদের হিসাব করি। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, সম্পদ হচ্ছে আসলে আমাদের হাতে কতো সময় আছে সেটার সাথে সম্পর্কিত," বলেন তিনি। ৫. সোশাল মিডিয়ায় যোগাযোগের পরিবর্তে বাস্তবে এই যোগাযোগ বৃদ্ধি করুন অধ্যাপক স্যান্টোস মনে করেন, সোশাল মিডিয়া থেকে সুখের বিষয়ে মিথ্যা যেসব ধারণা পাওয়া যায় সেসবে ভেসে যাওয়া উচিত নয়। "সবশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ইন্সটাগ্রামের মতো সামাজিক নেটওয়ার্কের মাধ্যম ব্যবহার করেন তারা, যারা এটা খুব বেশি ব্যবহার করেন না তাদের চাইতে কম সুখী," বলেন তিনি। তো, এখন তো সব জানা হয়ে গেলো। আপনি যদি সত্যিই জীবনে সুখী হতে চান, তাহলে কৃতজ্ঞ হতে শুরু করুন, পরিবারের সাথে আরো বেশি সময় কাটান, বন্ধুদের সাথে মেলামেশা করুন, দিনের একটা সময়ে কিছুক্ষণের জন্যে নিজেকে সবকিছু থেকে সরিয়ে ধ্যানে মগ্ন হউন, সোশাল মিডিয়া থেকে দূরে সরে এসে আরো একট বেশি ঘুমাতে চেষ্টা করুন। ইয়েলের শিক্ষার্থীদের জন্যে যদি এটা কাজ করে, তাহলে এসব পরামর্শ আপনার ক্ষেত্রেও নিশ্চয় কাজ করবে। সূত্র: বিবিসি।
   

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;

ব্যাঙের চিৎকার যে কারণে শুনতে পায় না মানুষ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্যাঙ অন্য প্রাণীদের মতো চিৎকার করলেও শ্রবণ শক্তির চেয়ে ফ্রিকোয়েন্সি বেশি হওয়ার কারণে মানুষ তা শুনতে পায় না।

ব্রাজিলের স্টেট ইউনিভার্সিটি অব ক্যাম্পিনাসের এক দল গবেষকের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

আমাজন জঙ্গলে ব্যাঙ নিয়ে গবেষণা করার সময় তারা অদ্ভুত কিছু লক্ষ্য করেছিলেন। তারা দেখেন যে, স্মল লিফ লিটার ব্যাঙগুলি তাদের মাথা পিছনে ফেলে তাদের মুখ প্রশস্ত করে রেখেছে। তাদের দেখে মনে হচ্ছিল, তারা চিৎকার করছে। কিন্তু তারা কিছুই শুনতে পাচ্ছেন না।

যখন বিজ্ঞানীরা উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি অডিও রেকর্ডার ব্যবহার করে রেকর্ড করেছিল, তখন তারা উভচর প্রাণীদের ‘প্রতিরক্ষামূলক আল্ট্রাসাউন্ড’ রেকর্ড করতে সক্ষম হন। 

যখন তারা বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে শব্দ বিশ্লেষণ করেন, তখন তারা দেখতে পান যে, এটির ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জ ছিল ৭ কিলোহার্টজ থেকে ৪৪  কিলোহার্টজ। মানুষ ২০ কিলোহার্টজ এর বেশি ফ্রিকোয়েন্সি শুনতে পারে না।

এ গবেষক দলের মতে, ব্যাঙের চিৎকারটি শিকারিদের প্রতিক্রিয়া। শিকারিকে আক্রমণ করার জন্য বা অন্য প্রাণীকে আকৃষ্ট করার জন্য এটি তাদের কৌশল হতে পারে।

দলের একজন গবেষক মারিয়ানা রেতুসি পন্টেস বলেছেন, তিনি ভিন্ন গবেষণা ট্রিপে ব্যাঙকে একই আচরণ প্রদর্শন করতে দেখেছেন, কিন্তু তার কাছে এ শব্দ রেকর্ড করার জন্য সঠিক প্রযুক্তি ছিল না।

বাদুড়, তিমি, গন্ডার, কুকুর, কবুতর, কাটলফিশসহ সব ধরনের প্রাণী যোগাযোগের জন্য ইনফ্রাসোনিক এবং আল্ট্রা ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে এবং মানুষ এর কিছুই শুনতে পায় না।

আপনি যখন একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হাঁটা উপভোগ করছেন, তখন হয়তো আপনার চারপাশে একটি কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ থাকতে পারে, যা আপনি শুনছেন না।

;

মাটির নিচে প্রাচীন দুর্গের সন্ধান, অর্থের অভাবে বন্ধ কাজ



ছাইদুর রহমান নাঈম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কাপাসিয়া (গাজীপুর) থেকে ফিরে: গাজীপুরের কাপাসিয়ায় লাল মাটি ও ঝোপ-ঝাড়ের ভেতর ঐতিহাসিক এক একডালা দুর্গের সন্ধান মিলেছে। এর পর নিজস্ব অর্থায়নে শুরু হয় খনন কাজ। কিছুটা দৃশ্যমান হয় দুর্গ। তবে সরকারি অর্থায়ন না পাওয়ায় বন্ধ রয়েছে খনন কাজ। মাটির নিচে চাপা পড়া ইতিহাস খনন করে সামনে আসলে পর্যটনের সম্ভাবনা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, রানি ভবানী বানিয়া রাজাদের শেষ বংশধর ছিলেন। তার দরদরিয়া দুর্গ ছিল গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের দরদরিয়া গ্রামে, বানার নদের পারে। দুই দশক আগেও সেখানে দুর্গের ধ্বংসাবশেষ ভালোভাবে দৃশ্যমান ছিল। ক্রমান্বয়ে দৃশ্যমান ধ্বংসাবশেষ সব বিলীন হয়ে যায়।

দরদরিয়া দুর্গের ইতিহাসের গল্পগুলো মানুষের মুখে মুখে। তবে সেই ইতিহাসের অস্তিত্ব ছুঁয়ে দেখতে সেখানে শুরু হয় প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান খননকাজ শুরু করেন। তার সঙ্গে কাজ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী। সামনে আরও অনেকেই এই কাজে যুক্ত হবেন। নিজস্ব অর্থায়নে এই খননকাজ শুরু করেছেন সুফি মোস্তাফিজুর রহমান।

এক সময় লোকমুখে গল্প শোনা যেত, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের দরদরিয়া গ্রামে রয়েছে ‘রানির বাড়ি’। সেই মধ্যযুগের ইতিহাস এতদিন মানুষের মুখে মুখে ছিল। বাস্তবে তার অস্তিত্বের খোঁজ পাওয়া গেছে। বহুদিনের চেষ্টায় একদল গবেষক ‘রানির বাড়ি’ বা দরদরিয়া দুর্গ আবিষ্কার করেছেন। তাদের এ আবিষ্কার মধ্যযুগের ইতিহাস মানুষের বাস্তবে দেখার বাসনা পূরণ হবে। আংশিক খনন করা দুর্গটি দেখতে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজনের ভিড় করেছেন। তবে বর্তমানে অনুদানের অভাবে দুর্গটির খনন কাজ বন্ধ রয়েছে।

‘রানির বাড়ি’ বা দরদরিয়ায় সরজমিনে দেখা যায়, বালির বস্তা দিয়ে দুর্গের দুই পাস ঘিরে রাখা হয়েছে। পূর্ব দিকের অংশে খোলা রয়েছে। দুর্গের চারপাশে মলি বাঁশ দিয়ে বেষ্টনী দিয়ে রাখা রয়েছে। পাশের কৃষি জমিতে সেচের পানি দুর্গের ভেতর প্রবেশ করেছে।

পাশের কৃষি জমিতে সেচের পানি দুর্গের ভেতর প্রবেশ করেছে

কয়েকজন এলাকাবাসী জানায়, অনেক দিন ধরে খননকাজ বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় রেখে তারা চলে গেছে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন দেখতে এসে দুর্গ থেকে ইটের গাঁথুনি থেকে ইট খুলে নিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় থাকলে দুর্গের অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি জরুরি ভিত্তিতে দুর্গের খননের অংশটুকুর নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন।

স্থানীয় বাসিন্দা মঈনুদ্দিন (৬০) বলেন, ছোট থেকে শুনে আসছি এই রানির ভিটার কথা৷ কিন্তু এটার সঠিক ইতিহাস জানতাম না। সবটুকু খনন করা হলে ইতিহাস উন্মোচন হবে।'

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র টোক নগর ভেংগুরদী গ্রামের আশিক রব্বানী জিহান বলেন, এটি আমাদের কাপাসিয়ার জন্য বিশাল এক সম্পদ৷ এটি খনন করা হলে আগে কি ছিলো বা এখন কি আছে সেটা জানা যাবে৷ এটি দৃশ্যমান হলে গাজীপুর তথা বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক এক স্থাপনা হতে পারে৷ পর্যটন কেন্দ্র হলে এলাকার উন্নয়ন হবে।

 লাল মাটি ও ঝোপ-ঝাড়ের ভেতর ঐতিহাসিক একডালা দুর্গের সন্ধান

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান নিজ খরচে খননকাজ শুরু করেছেন। এই কাজে যুক্ত আছেন তার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ঐতিহ্য অন্বেষণ’ এর বেশ কয়েকজন প্রত্নতাত্ত্বিক।

অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কাপাসিয়ার রায়েদ ইউনিয়নের দরদরিয়া গ্রামে বানার নদের পূর্ব পাড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রানি ভবানীর দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। তিনি ছিলেন বেনীয়া রাজার শেষ বংশধর। তার দুর্গের সবচেয়ে বেশি অবস্থান দরদরিয়া গ্রামের উত্তর অংশে। এই কৃষি জমির পাশে উঁচু অংশ খননের পর বর্তমানে দুর্গের কিছু অংশের নিদর্শন দৃশ্যমান হয়েছে। এখনো পর্যন্ত যতটুকু খনন করা হয়েছে তা নিজস্ব অর্থায়নে করা হয়েছে। ফান্ড পেলে খননকাজ চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

 

;