বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষা বাংলা



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
অমর একুশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

অমর একুশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease
শুধু নিজের ভাষা বলেই নয়, তথ্য-পরিসংখ্যান বলছে বাংলা বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষা। সংখ্যা ও গুণের দিক থেকে এবং অন্যবিধ কারণে বাংলা বিশ্বসভায় সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত।
 
কয়েক বছর আগে প্রকাশিত ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক’-এর তথ্য অনুসারে সারা বিশ্বে বাংলাভাষী জনসংখ্যা ছিল সাতাশ কোটির কাছাকাছি। চলতি ২০১৯ সালে সংখ্যাটি আরো অনেক বেড়েছে। মনে করা হয়, বর্তমানে পুরো দুনিয়ায় তিরিশ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন, যার অর্ধেক বাংলাদেশে আর বাকী মানুষ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা ও বিশ্বের নানা স্থানে বসবাসকারী বাঙালি।
 
সংখ্যাটি বিশ্ব ও এশিয়া মহাদেশের বিবেচনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ভাষাগত ও জনগোষ্ঠীর এই সংখ্যাগত বিশালত্ব এশিয়া মহাদেশে বাংলাকে দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষিক-জাতিগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং এশিয়া মহাদেশের ৭০০০ ভাষার মধ্যে মাতৃভাষার অবস্থানে বাংলাকে স্থান করে দিয়েছে দ্বিতীয় আসনে। এই সম্মান বাংলা অর্জন করেছে নিজস্ব যোগ্যতায়।
 
লক্ষ্যণীয় তথ্য হচ্ছে, আমাদের বাংলাভাষা বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা। সেই সঙ্গে ভারতের আঠারোটি অফিসিয়াল ভাষার মধ্যে অন্যতম। এখানেই শেষ নয়, বাংলা ভাষায় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত, ভারতের জাতীয় সঙ্গীত আর জাতীয় স্তোত্র রচিত। ১৯৯৯ সালে ইউনেসকো ১৯৫২-এর দুর্বার ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামদীপ্ত আন্দোলনের ঘটনাকে সশ্রদ্ধ মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছে। ২১ ফেব্রুয়ারি ঘোষিত হয়েছে আন্তর্জাতিক ‘মাতৃভাষা দিবস’ রূপে। বিশ্বের ১৮৮টি দেশের মানব জাতি এই দিনটিকে ‘মাতৃভাষা দিবস’ রূপে উদযাপন করে চলেছেন শ্রদ্ধার ডালি এবং ভালোবাসার অর্ঘ্য নিবেদন করে, যার কৃতিত্ব বাংলা ভাষা ও বাঙালির। 
 
সম্মানজনক তথ্য আরো আছে। ‘এথনোলগ’ নামে একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপের কথা প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়। ‘এথনোলগ’ হলো একটি ওয়েব-বেসড ক্যাটালগ। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এখানে জরিপের মাধ্যমে পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বের ভিন্ন ভিন্ন জনগোষ্ঠীর ভাষাসমূহ সংগ্রহ করে লিপিবদ্ধ করা হয়ে থাকে। তাদের জরিপ অনুযায়ী, বাংলা ভাষিক জনসংখ্যার গরিষ্ঠতা বিচারে বিশ্বের দশটি প্রধানতম ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষার স্থান পঞ্চমে।
 
পর্যায়ক্রমে এর আগের চারটি ভাষা হলো, ম্যান্ডারিন চায়নিজ, স্প্যানিশ, ইংলিশ ও হিন্দি। পরের পাঁচটি ভাষা হলো: আরবি, রাশিয়ান, পর্তুগিজ, জার্মান, ফ্রেঞ্চ। অর্থাৎ, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতির তালিকায় সামনের কাতারে অবস্থান করছে বাংলা ভাষা, যা আমাদেরকে বিশ্ব-সংসারে অগ্রবর্তী হওয়ার জন্য নিত্য প্রাণিত করছে।
 
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বর্তমানে অস্তিত্বমান ৭০০০ ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষার এই আসনটি নির্ণীত হয়েছে বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী বাংলাভাষী জনসংখ্যার সংখ্যাতত্ত্বগত আধিক্যের ভিত্তিতে। কিন্তু দেশের বাইরে প্রবাসের বিরূপ সামাজিক আবহাওয়ার বাস্তব প্রেক্ষিতে প্রবাসীদের বাংলা ভাষার চর্চা নানাবিধ সংকুলতায় পূর্ণ। তথাপি অনেকেই স্ব-উদ্যোগে সন্তান ও পরিবারের মধ্যে বাংলাকে ধরে রেখেছেন। একটি বৈশ্বিক পরিমণ্ডলের নানা ভাষা ও সংস্কৃতির স্রোতকে ঠেলে ঠেলে সেটা সম্ভব করেছেন বাংলা-প্রিয় বাঙালিরা।
 
অতএব বাংলা ভাষা আমাদের এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা বাঙালির, যার মূল কেন্দ্রস্থল বাংলাদেশ। যদি প্রবাসের বাংলা ভাষিক জনগোষ্ঠীকে বাংলা ভাষার সঙ্গে সম্পর্কিত রাখা সম্ভব না হয়, তাহলে যে বিশাল সংখ্যার জোরে আমরা বাংলা ভাষাকে নিয়ের বুক ফুলিয়ে চলি, সেটা সম্ভব হবে না। 
 
কারণ, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বাইরে মোট বাংলা ভাষিক জনগোষ্ঠীর এক-তৃতীয়াংশই প্রবাসী। বিশ্বব্যাপী প্রসারিত বাংলা ভাষার দিগন্তকে নির্বিঘ্ন রাখতে হলে প্রবাসীদের মাতৃভাষা চর্চায় মনোযোগ ও গুরুত্ব দিতেই হবে। সে কারণেই বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী অবস্থিত বাঙালির মধ্যে ভাষিক ও সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধ মজবুত হওয়া দরকার। সকলের সাংস্কৃতিক ঐক্যের শক্তিতে বাংলা হবে মজবুত ও আরো মহীয়ান।
   
বাংলা ভাষাকে ঘিরে সাংস্কৃতিক বন্ধন এ কারণেই জরুরি যে, সবাই মিলে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য নিবেদিত না হলে সভ্যতার আন্তর্জাতিক প্রবাহ থেকে আমরা পিছিয়ে পড়ব। এমন একটি শঙ্কার কথা প্রচ্ছন্নভাবে পাশ্চাত্যের ভাষাবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এশিয়া মহাদেশের ৫৫টি, আফ্রিকার ৩৭টি, ইউরোপের ৭টি, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিশেষত অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের ১৫৭টি এবং দুই আমেরিকার ১৬১টি ভাষা ইতোমধ্যেই বিলুপ্তির পথে। কারণ এই ভাষাগুলোয় যারা এখনো কমিউনিকেট করছেন তারা সকলেই হয় বৃদ্ধ, নয়তো প্রায়-বৃদ্ধ। ৯০০ কোটি মানুষের পৃথিবীতে এই লুপ্তপ্রায় ভাষাভাষী মানুষের সংখ্যা ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০০০ সংখ্যার নিচে। 
 
অতএব প্রবাসী বাঙালিদের অবশ্যই নিজেদের সন্তানদের বাংলায় দক্ষ করতে হবে, যারা এই রক্তরাঙা ভাষাকে এগিয়ে নেবে প্রজন্ম ও পরম্পরায়। হারিয়ে যেতে দেবে না মায়ের ভাষাকে। শত বিরূপতাতেও ধরে রাখবেন ভাষার বৃক্ষ ও সংস্কৃতির শেকড়।
 
আরেকটি তথ্যও বেশ উদ্বেগের। বর্তমানে অস্তিত্বময় ভাষাপ্রবাহের গতিপ্রকৃতির বিভিন্ন তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে ভাষাবিজ্ঞানের পদ্ধতিগত বিশ্লেষণ শেষে এমন ভবিষ্যৎ সতর্ক বাণী উচ্চারিত হচ্ছে যে, একবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বর্তমান বিশ্বের ৭০০০ অস্তিত্বমান ভাষার প্রায় নব্বই শতাংশই বিলুপ্ত হয়ে যাবে অথবা অবলুপ্তির সম্মুখীন হয়ে পড়বে। যেভাবে নতুন জন্ম নেয়া জনপ্রিয় ভাষাগুলোর শক্তিশালী অভিঘাতে ক্রমে ক্রমে অব্যবহৃত হয়ে গেছে, ওল্ড চার্চ স্লাভেনিক, ক্লাসিক্যাল আর্মেনিয়ান, অ্যাভিস্টান, বিবলিক্যাল হিব্রু, কপটিক, নিউ টেস্টামেন্ট গ্রিক, গীজ, অর্ধমাগধী (মাগধী প্রাকৃত ও মাগধী অপভ্রংশ, যা বাংলা এবং উপমহাদেশীয় বহু ভাষার জননী), পালি, সংস্কৃত, ল্যাটিন প্রভৃতি।
 
ফলে এতিহ্যবাহী, সমৃদ্ধ, শক্তিশালী ও মহৎ একটি ভাষা থাকলেই হচ্ছে না, তাকে সঞ্জীবিত রাখারও দরকার পড়ছে। বিশেষত বিশ্বায়নের এই যুগে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রে মাইগ্রেটেড জেনারেশনের একটা অংশ তাদের পরের প্রজন্মের জন্য মাতৃভাষা চর্চার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করলেও উত্তর-পুরুষদের বেশিরভাগেরই পূর্ব-পুরুষদের ভাষার সঙ্গে আন্তরিক কোনো সম্পর্ক গড়ে উঠছে না। কারণ শৈশব থেকে যে সুনির্দিষ্ট দেশের অফিসিয়াল ও স্থানীয় ভাষার মাধ্যমে তাদের প্রাত্যহিক শিক্ষা অর্জন ও জীবন-যাপন করতে হয় (স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি প্রভৃতিতে শিক্ষালাভের ফলে), তার সমাজ-সংস্কৃতির পারিপার্শ্বিকতা আর বন্ধু সংসর্গের বাস্তবতাকে তাদের পক্ষে অগ্রাহ্য করা বাস্তবেই সম্ভব নয়। এই বাস্তবতার সঙ্গে লড়াই করেই বিদেশে বসবাসরত বাংলাভাষী মানুষের মুখে ও চর্চায় বাংলা ভাষাকে টিকে থাকতে হচ্ছে এবং অবশ্যই টিকিয়ে রাখতেও হবে।
 
এক্ষেত্রে বাংলাভাষী মানুষের সদিচ্ছা ও সম্মিলিত প্রয়াস অতীব জরুরি। বাংলা ভাষার বিশ্বময় ঐক্য ও মেলবন্ধন আমাদের মায়ের ভাষা বাংলার প্রচার ও প্রসার বাড়াবে, ভিত্তিকে বিশ্বময় দৃঢ় করবে এবং যে কোনো বিপদ ও সঙ্কট কাটাতে সাহায্য করবে। এজন্য বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষা বাংলাকে আরো সমৃদ্ধ ও গতিশীল রাখতে বিশ্বের সকল বাঙালিকেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। ভাষাশহিদদের রক্ত ও ভাষা সংগ্রামীদের ত্যাগের পথ বেয়ে অর্জিত বাংলা প্রেম ও বাংলা চর্চার ধারা বিশ্বের সকল বাংলাভাষী অঞ্চলে অব্যাহত রাখার মাধ্যমেই এই ভাষাকে চির সজীব ও সদা জীবন্ত রাখা সম্ভব হবে।
   

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;