বহু ভাষার জগৎ



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

এ জগৎ বহু ভাষার মানুষে পূর্ণ। এ জগৎ বহু বর্ণের মানুষে ভরা। এ জগৎ বৈচিত্র্যে এক অপার ভাণ্ডার।

ভাষা, মানুষ, প্রকৃতি, নদ-নদী, ভূমিরূপ, সব কিছু মিলিয়েই এ জগৎ-সংসার বড় বিচিত্র এক জায়গা, এখানে বৈচিত্র্যের মধ্যে সাধিত হয়েছে ঐক্য, সমন্বয় ও সহাবস্থানের সূত্র।

বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতি জগতের বিচিত্র সমাবেশের এক উজ্জ্বল ও গর্বিত সদস্য। ফলে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির পাশাপাশি, বিশ্বের অপরাপর ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের জানতে-বুঝতে হয়। সহনাগরিক ও জগতের আমাদের মতো আরো যারা আছে, তাদের সম্পর্কে না জেনে বসবাস করা যায় না। মেলামেশা ও আদান-প্রদানের মাধমেই জগতে বসবাসকারী সকল সদস্যের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে।

অতএব বহুজন যেমনভাবে বাংলা শিখতে আসে, আমরা তেমনিভাবে বিদেশি ভাষা শিখতে চেষ্টা করি। কিন্তু সাধারণভাবে আমাদের দিক থেকে বিদেশি ভাষা শিক্ষার প্রচলিত ধরণটি কেমন, সেটা লক্ষ্য করে দেখার মতো বিষয়।

বর্তমান পরিস্থিতিতে জীবিকার ভাষা, বিজ্ঞান ও বিশ্বায়নের ভাষা, কিংবা ‘সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট’র ভাষা বলে পরিচিত ইংরেজি, এমন কি, ফরাসি, স্পেনীশ, আরবি, কোরিয়ান ভাষাকে চিহ্নিত করা হয় এবং এসব শিখতে আমাদেরকে কেউ মানা করছে না। সমস্যাটি তখনই হয়, যখন অন্য ভাষা শেখার নাম করে মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করা হয়। অন্য ভাষাকে অতি গুরুত্ব দিয়ে বাংলা ভাষাকে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বহীন করা হলেই বিপদ।

বিশ্বায়নের চলমান সময়ে মানুষ যে কেবল ইংরেজি শিখছে, তা নয়। যেখানে চাকরি আছে, সেখানকার ভাষাই শিক্ষা করার একটা প্রবল বেগ মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। কেউ যদি একটু নজর দিয়ে ফুটপাতের বইয়ের দোকানগুলোর দিকে তাকান, তাহলে বাংলা ভাষীদের জন্য অন্তত দশটি ভাষা শেখানোর মতো চটি বই বিক্রি হতে দেখতে পাবেন।

রাজধানী ঢাকার নীলক্ষেত, পল্টন ও বায়তুল মোকাররমের অস্থায়ী বইয়ের দোকানে খেয়াল করে দেখেছি, সেখানে সহজে ইংরেজি শেখানোর হরেক রকম বইয়ের পাশে আরবি, জাপানি, কোরিয়ান, হিন্দি, মালয়েশিয়ান, চাইনিজ, ফরাসি, স্পেনিশ ইত্যাদি ভাষা শেখানোর কায়দা-কানুনওয়ালা বই রয়েছে। হাতে নিয়ে দেখলেই টের পাওয়া যায় যে, ব্যাকরণ-সিদ্ধ কাঠামোয় বইগুলো রচিত হয় নি। নিরেট কাজ চালানোর মতো কিছু শব্দ ও বাক্য দিয়ে বইগুলোর পাতা পূর্ণ করা হয়েছে।

দোকানির কাছে জানতে চেয়েছিলাম, ‘মূলত কারা এইসব বইয়ের ক্রেতা?’ উত্তরে তার কাছ থেকে জানা যায়, ‘যারা বিদেশে কাজ করতে যেতে আগ্রহী, তারাই এসব বই কেনেনে।’ বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই যে, অদক্ষ জনশক্তি হিসাবে যারা বিদেশে চাকরির জন্য যাচ্ছে, তারাই সংশ্লিষ্ট দেশের ভাষা সম্পর্কে জানতে বইগুলোর সাহায্য নিচ্ছেন।

এইসব বিদেশি ভাষা শিক্ষার চটি বই চরমভাবে অসম্পাদিত। বাংলার সাথে তুলনা করে অন্য ভাষা শেখানোর বিজ্ঞানভিত্তিক কোনও প্রচেষ্টাও বইগুলোতে নেই। যা আছে, তা হলো, কিছু শব্দ ও বাক্যের অনুবাদ। এতে ‘ইয়েস, নো, ভেরিগুড’ ধরনের শিক্ষা ছাড়া বিশেষ কিছু হবে না।

আমরা সবাই জানি যে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলা ভাষার দুর্বলতার মতো বিদেশি ভাষায় দুর্বলতাও বর্তমানে প্রকট। জানতে পেরেছি, কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য কিংবা আরবি সাহিত্য পড়ানো হয় বাংলা ভাষায়। মধ্যপ্রাচ্যে নিজের চোখে দেখেছি, বিরাট বড় মাদ্রাসার ডিগ্রিধারী লোকজন এক লাইনও আরবি বুঝতে বা বলতে পারছে না। আগে মাদ্রাসাগুলোতে আরবি ছাড়াও ফারসি বা উর্দু ভাষা জ্ঞানসম্পন্ন অনেকেই ছিলেন। এখন খোঁজ নিলে বিশেষ কাউকে পাওয়ার উপায় নেই।

প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে জ্ঞানের আহরণ ও সঞ্চালনের জন্য অপরাপর বিদেশি ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা আছে। বিশ্বায়নের কারণে যোগাযোগ, চাকরি বা উচ্চশিক্ষার জন্যেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভাষা শিখতে হয়। এজন্য প্রায়-সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই ভাষা ইনসটিটিউট রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, সেখানে ছাত্র সংখ্যা মুষ্টিমেয়।

ইউরোপের একটি স্বাভাবিক প্রবণতাই হলো নিজের প্রথম ভাষার পাশাপাশি সেকেন্ড ও থার্ড ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে লোকজন। কাজের জন্য ভাষাকে তারা একটি মাধ্যম করে নিয়েছেন। আমরা শিক্ষা ব্যবস্থায় সেই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছি না। চাকরি বা অন্যবিধ প্রয়োজন হলে চটি বই কিনে ভাষা রপ্ত করছি।

অথচ ভাষা ইনটিটিউট ছাড়াও বিভিন্ন দূতাবাসের সাংস্কৃতিক শাখা তাদের দেশের ভাষা শেখাচ্ছে। একটু আগ্রহ থাকলেই ইংরেজির সঙ্গে সঙ্গে ফরাসি, জার্মান, রুশ, ফারসি, স্পেনিশ, জাপানিজ ভাষা শিখে ফেলা সম্ভব। এতে উচ্চশিক্ষার পথ সুগম হওয়া ছাড়াও ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক স্তরে উচ্চশিক্ষা ও চাকরির রাস্তাটাও প্রশস্ত হয়। বিভিন্ন দেশের সমাজ, সংস্কৃতি ও সাহিত্য বিষয়ক জ্ঞানের স্বাদ নেওয়াও হয়ে যায় উপরি পাওনা হিসাবে।

অভিভাবকরা একটু মনোযোগী ও উদ্যোগী হলেই সন্তানের শিক্ষা পরিকল্পনায় বিভিন্ন ভাষা শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেন। যে টাকা-পয়সা জীবনের বিভিন্ন উপাচারের পেছনে ব্যয় হয়, সেখান থেকে কিছুটা খরচ করলেই ভাষা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে নিজ নিজ সন্তানদের অনেক দূর এগিয়ে দেওয়া সম্ভব।

বর্তমান বিশ্বে একটি কথা প্রচলিত আছে যে, বাড়ি বা গাড়ি বা সহায়-সম্পতি নয়, সবচেয়ে ভালো বিনিয়োগ হলো শিক্ষায় বিনিয়োগ। এ সত্যটি সম্ভবত আমরা এখনও উপলব্ধি করতে পারছি না। করলেও আমাদের সন্তানদের ভাষা-জ্ঞান ও শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে নীতিটি প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হচ্ছি, যা কাম্য নয়।

বহু ভাষার এ বিচিত্র জগতে বাংলা যেমন শিখতে ও প্রসারিত করতে হবে, অপরাপর ভাষা সম্পর্কেও তেমনি আগ্রহ বাড়াতে হবে। কারণ এ বিশ্বে বিচ্ছিন্ন ও আলাদা থাকা সম্ভব নয়। পারম্পরিক মেলামেশা ও যোগাযোগ সাধন করে উপকৃত হওয়ার সময়কাল চলছে এখন। একালের সুযোগকে কাজে লাগাতে ভাষা একটি প্রধান হাতিয়ার। নিজের ভাষা এবং অন্য ভাষা শেখার মাধ্যমেই সেটা করা সম্ভব। বিদেশিদের বেশি বেশি বাংলা ভাষা শেখালে যেমন লাভ, বাংলাভাষীরা অধিক হারে বিদেশি ভাষা শিক্ষা করলেও তেমনই লাভ।

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;