মেঘপাহাড়ের ডাক-১০

চেরাপুঞ্জি: বৃষ্টির বিশ্ব বসতি



মাহমুদ হাফিজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চেরাপুঞ্জিকে আমি নাম দিয়েছি বৃষ্টির বিশ্ব বসতি। এখানে বৃষ্টি আকাশ থেকে পড়ে না। যে মেঘ থেকে আমরা বৃষ্টি ঝরতে দেখি, সে মেঘেরা বাস করে সেখানে। আর মেঘবৃষ্টির পরিমাণ এতো বেশি যে বহু আগে তা বিশ্বরেকর্ড করে বসে আছে। সে হিসেবে আমরা আজ বৃষ্টির বিশ্ব বাড়ির অতিথি। কিন্তু বৃষ্টি কই? ঘনমেঘে চারপাশ ছেয়ে আছে, বৃষ্টির কোনো আলামত দেখতে পাচ্ছি না। বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুরা ফেসবুকে আমার চেক ইন আর গুগল মানচিত্রের লোকেশন দেখে ‘ওখানে বৃষ্টি পাবে না, চেরাপুঞ্জিতে এখন বৃষ্টি হয় না’ বলে যে মন্তব্য করেছিল, তাই কি তবে সত্য হতে চলেছে? রেইনকোট আর ছাতাগুলো টাটা সুমোর পেছনের বুটে পড়ে আছে। গায়ে চড়ানো তো দূরে থাক, এগুলোর মোড়ক পর্যন্ত খোলা হয়নি। অথচ যাওয়ার প্রস্তুতির সময় ভ্রমণসঙ্গী গিন্নী ও কনিষ্ঠপুত্রধনের জিজ্ঞাসার জবাবে বলেছি, ‘রেইনকোট-ছাতার এন্তেজাম, কারণ এবারের ভ্রমণ বৃষ্টিমুখর। বৃষ্টি দেখতেই শিলং যাচ্ছি’।

থাংখারাং পার্কের লুকআউট পয়েন্ট থেকে কিনরেম ফলস দেখে বের হতেই মেঘের ঘনঘটা। বৃষ্টি এলো এলো। বৃষ্টিকে স্বাগত জানাচ্ছি বটে, উদ্বেগও আছে। ভারিবর্ষণ শুরুর আগেই শেলা-সোহরা সড়কের কাঁচা অংশ অতিক্রম করে ওপরের পাহাড়ের দিকে উঠে যেতে হবে। আসার সময় সড়কের কাঁচা অংশের যে অবস্থা দেখেছি, ঢলে তা যে গাড়ি চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়বে, তাতে সন্দেহ নেই।

পিচঢালা নতুন রাস্তায় এলেই গাড়ি ঊর্ধ্বগামী হতে থাকে। সেভেন সিস্টার্স ফলসের এর দিকে এগোতে থাকলেই গাড়ির মধ্যে তুসুর চিৎকার ‘মেঘ মেঘ, পাহাড়ের নিচে নেমে যাচ্ছে মেঘ’। সবাই তাকিয়ে দেখি, ডানের  উপত্যকাজুড়ে মেঘের ভেলা পাহাড়শীর্ষসমূহের নিচের দিকে পরিভ্র্রমণরত। সবুজ পাহাড়ের কোলে শুভ্র মেঘের এই পরিভ্রমণ চোখকে প্রশান্ত করে দেয় আমাদের। চোখের সামনে ইউরোপীয় সৌন্দর্য দেখে আমরা গাড়ি থেকে না নেমে আর স্থির থাকতে পারি না। জায়গাটির নাম নেই। আমি গুগলে দেখলাম, কিছুদূরে একটা নামের উল্লেখ রিংগুড নামে একটা নামের উল্লেখ আছে। সেভেন সিস্টার্স ফলস থেকে জায়গাটি অন্তত তিন কিলোমিটার নিচের দিকে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/19/1560949374296.jpg

ডাইনের ভ্যালির দিকে তাকিয়ে দেখি মেঘপাহাড়ের বিরামহীন লুকোচুরি। কখনো পাহাড়ের নিচে নেমে যাচ্ছে মেঘ। কখনো আবার পাহাড়কে চুমু দিয়ে উঠে যাচ্ছে ওপরে। কোনো কোনো মেঘের দল একস্থানে ভেসে রয়েছে। কিছু মেঘ উড়ছে একাধিক পাহাড়ের মাঝখানে ঢেউখেলানো ভাঁজে ভাঁজে। এই অভূতপূর্ব চোখের সাড়ে তিন ইঞ্চি লেন্সে তা রেকর্ড করে মস্তিষ্কের ডার্করুমে রেখে দেই। এই লেখাটি আসছে মস্তিষ্কের ডার্করুম থেকে সেই চলচ্ছবি ডেভেলপের মধ্য দিয়ে। মোবাইল ক্যামেরায় কিছু মেঘকে ক্যামেরাবন্দী করতেও আমাদের  দলটি ভুল করলো না। এই দৃশ্যপটটির মজা হচ্ছে এখান থেকে সেভেন সিস্টার্স ফলসটিও দেখা যায়। তবে সেভেন সিস্টার্স যে চুনাপাথরের পাহাড় থেকে নামছে, জায়গাটি তার নিচে বলে জলপ্রপাতটি ওপরের দিকে দৃষ্টিগোচার হয়।  

আমরা পাহাড়ি বাঁক নিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই সেভেন সিস্টার্স বা মাওসমাই জলপ্রপাতের ভিউপয়েন্টে পৌঁছাই। রাস্তার পাশে বড়সড়ো পার্কিং, দোকানপাট। গাড়ি পার্ক করার জলপ্রপাত উপভোগ দেখতে নেমে পড়লাম আমরা। আমরা বলতে, চারজন। জলি,  তুসু আমি আর কবি কামরুল। হোস্টগণ অনেকবার আসায় গাড়িতেই বসে রইলেন। ঝির ঝিরি বৃষ্টি পড়ছে। তবে আমরা ছাতা বা রেইনকোট তখনো বের করিনি। জামাকাপড়ের ওপর যে বৃষ্টিসহনক্ষম জ্যাকেট আছে তা দিয়েই চালানো যাচ্ছে। আমার গায়ে লাল জ্যাকেট। যাত্রাকালে জলিকে বলেছিলাম, মেঘরাজ্য মেঘালয়ের সব ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড হবে সবুজ। সবুজের ওপর কন্ট্রাস্ট করতে গায়ের পোশাক হতে হবে জুৎসই রঙের, তাতে ছবি ভাল ফুটবে। সেমতে, জামার ওপরে চাপিয়েছি লাল জ্যাকেট। যে লোকেশনে দাঁড়িয়েই পোজ দিই না কেন ছবি হচ্ছে ‘সেইরকম’।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/19/1560949438025.jpg

রেলিঙঘেরা ভিউপয়েন্টের নিচে পাহাড়ি উপত্যকা। অদূরে পাহাড়ের গা’ দিয়ে নামছে সাত সাতটি জলপ্রপাতের ধারা। দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়, হা হয়ে ক্ষণিক সবকিছু ভুলে দাড়িয়ে থাকতে হয়। একহাজার ৩৩ ফুট উচ্চতার সেভেন সিস্টার্স বা মাওসমাই ফলস ভারতের অন্যতম দীর্ঘ জলপ্রপাতের মর্যাদা বহন করছে। জায়গাটি পর্যটকের পদভারের মুখরিত। ওয়াও ওয়াও ধ্বনি, আবাল বৃদ্ধ বণিতার গুঞ্জন, ক্যামেরা, ট্যাব, মোবাইলের ক্লিক ক্লিক। এখন প্রযুক্তির যুগ। মিডিয়া এখন আর সনাতনধারার পত্রিকা, বেতার, টেলিভিশনের মধ্যে সীমিত নেই। সোস্যাল মিডিয়া যুগে পর্যটন কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে কেউ ফেসবুকে লাইভ দিচ্ছে, কেউ ক্যামেরার সঙ্গে সেলফি স্ট্যান্ড লাগিয়ে সেলফি তুলছে, কেউ জলপ্রপাত পেছনে রেখে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে বর্ণনা দিয়ে ভিডিও করছে। নিশ্চিত ইউটিউব চ্যানেলে ছাড়া হবে এসব ভিডিও। প্রযুক্তিযুগে পর্যটনস্পটগুলোর চেহারাও গেছে বদলে গেছে। তুসু জলপ্রপাতকে পেছনে রেখে সেলফি তুলতে চেষ্টা করছে। আমি একজায়গায় ‘সেলফি ডেঞ্জার জোন’ লেখা সাইনবোর্ড দেখিয়ে তাকে সাবধান করে দিলাম।

দুপুরে শিলং থেকে বের হওয়ার সময় থেকে এখন পর্যন্ত চা খাইনি। ইতোমধ্যে মধ্যাহ্নের সময়ও চলে যাচ্ছে। হোস্টগণ বাসা থেকে খাবার দাবার সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। স্ট্রিমলেট ডেখার আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছেন, চেরাপুঞ্জির ‘দোকান’ সড়কে তাঁর বোনের বাড়ি আছে। সেখানে দুপুরের খাওয়ার পর চা পানের ব্যবস্থা হবে। আমাদের পেটে ততোক্ষণে ইঁদুর দৌড় শুরু হয়েছে। আমরা তা ভুলে আছি উদার প্রকৃতি দেখার ঘোরে। খাবার কথা মনে হলে, আগে খাওয়ার কাজটি সারার জন্যই সবাই একমত হওয়া গেল। চেরাপুঞ্জি সদরের ডুকান সড়কে ডেখারের বোনের বাড়ি। গাড়ি দ্রুত সেদিকে ছুটে চললো।

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;