তারেক মাসুদ: আমাদের সেলুলয়েডের কবি



মরিয়ম সুলতানা, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
তারেক মাসুদ

তারেক মাসুদ

  • Font increase
  • Font Decrease

ঋত্বিক ঘটকের কিন্তু সিনেমা বানানোর কথা ছিল না। তবুও কেন তিনি সব ছেড়েছুঁড়ে কেবল সিনেমা বানাতে নেমেছিলেন, তা কি আমরা জানি? তিনি সিনেমা বানিয়েছিলেন কারণ সিনেমাই হলো একসাথে এত বিপুল সংখ্যক মানুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করার একমাত্র মাধ্যম। অন্য কোনো মাধ্যমে যদি এরচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা যেত তাহলে সিনেমা ছেড়ে সেই মাধ্যমেই স্থানান্তরিত হতে রাজি ছিলেন ঋত্বিক ঘটক।

একজন ঋত্বিক ঘটকের মতো আমাদেরও একজন তারেক মাসুদ ছিলেন, যাকে বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম নক্ষত্র হিসেবে ধরা যায়। তিনি সিনেমার নেশায় পড়ে সিনেমা বানিয়েছিলেন কিনা জানি না, তবে তিনি তাঁর নিজের সমগ্র জীবন যে শুধুমাত্র সিনেমার জন্যই উৎসর্গ করে গিয়েছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের যখন মৃতপ্রায় দশা, নামকাওয়াস্তে বাণিজ্যিক ছবির প্রবল দাপটে সত্যিকারের চলচ্চিত্র শিল্প যখন রীতিমতো গাঢ় অন্ধকারের মাঝে ধুঁকছে; তখন এই স্বপ্নের ফেরিওয়ালা একটা আলোর মশাল হাতে জ্বেলে অক্লান্তভাবে ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। তিনি চেয়েছিলেন আবাল বৃদ্ধা বণিতা সকলের মাঝে মুক্তির আলো ছড়িয়ে দিতে। তাইতো জীবনের শেষ দিন অবধি চলচ্চিত্রের জন্য কাজ করে গেছেন সেলুলয়েডের এই কবি, আমাদের তারেক মাসুদ।

যদিও তিনি পৃথিবী থেকে চিরবিদায়ের আগে লিখে গিয়েছেন, “চলচ্চিত্রকার না হলে লেখক হওয়ার চেষ্টা করতাম।” কেন তবে তিনি লেখক না হয়ে সিনেমাওয়ালা হলেন? তবে কি ঋত্বিকের মতো তাঁরও উদ্দেশ্য ছিল, নিজের চিন্তা-ভাবনা এবং দর্শনকে সিনেমার মধ্যদিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে পৌঁছে দেওয়া? উদ্দেশ্য যেটাই হোক, তিনি যে সিনেমাকে নিছক একটা বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেননি; তা আজ আমরা তাঁর রেখে যাওয়া কাজগুলির মধ্যদিয়ে উপলব্ধি করতে পারি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/13/1565706104240.jpg
◤ তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ পরিচালিত অন্তর্যাত্রা সিনেমার পোস্টার ◢


আবু তারেক মাসুদ, পরবর্তীকালে যিনি আমাদের কাছে তারেক মাসুদ হিসেবে ধরা দিয়েছেন, ১৯৫৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে, বাংলাদেশ) ফরিদপুর মহকুমার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মায়ের নাম নুরুন নাহার মাসুদ ও বাবার নাম মশিউর রহমান মাসুদ। তাঁর বাবা ছিলেন কলকাতার বিখ্যাত প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েট, সত্যিকারের একজন আধুনিক মনের মানুষ। কিন্তু তারেক মাসুদের নানির মৃত্যুর পর তার পিতার মাঝে এক আমূল পরিবর্তন আসে এবং নিমিষেই তিনি হয়ে ওঠেন একজন কট্টরপন্থী মুসলমান। ফলস্বরূপ তাঁর পিতা তাদের বাড়িতে মহিলাদের পর্দা করার বিধান চালু করে। সেই সাথে তারেককে একজন ‘আলেম’ বানানোর ইচ্ছেও পোষণ করেন। অতঃপর শিশু তারেকের প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয় একটি আলিয়া মাদ্রাসা।

এরপর পুরো ষাটের দশক তারেক মাসুদ তাঁর পিতার নির্দেশে ছুটে চলেছেন এক মাদ্রাসা থেকে আরেক মাদ্রাসায়। তার বর্ণনানুযায়ী তিনি প্রায় প্রায় পাঁচ-ছয়টি মাদ্রাসায় পড়েছেন যেগুলি দেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থিত। কোনোটি ওই ফরিদপুরের ভাঙ্গায়, কোনোটি ঢাকার লালবাগে, কোনোটি ঢাকার কাকরাইলে, কোনোটি আবার যশোরের মধুমতি নদীর পাড়ের বাহিরদিয়ায় অবস্থিত। পরবর্তীতে তিনি ঢাকার লালবাগের একটি মাদ্রাসা থেকে মৌলানা পাস করেন।

জীবনের প্রথম মাদ্রাসা দর্শনের অভিজ্ঞতা তারেক মাসুদ দিয়েছেন এভাবে, “আমার প্রথম ভর্তি হওয়া ভাঙ্গার মাদ্রাসাসংলগ্ন একটি বিরাট দিঘি ছিল। যেটি আমরা ব্যবহার করতাম। আমি যখন প্রথম মাদ্রাসায় গেলাম সেদিন রাত ৩টা সাড়ে ৩টার দিকে আমাকে তুলে সেই বিরাট দিঘির ঘাটে নিয়ে যাওয়া হলো। কুয়াশার মধ্যে সামান্য আলো-আঁধারিতে দেখা যাচ্ছিল সবাই মেসওয়াক করছে। আমাকেও মেসওয়াক করা শিখানো হলো। আসলে একটি শিশুর ওই ধরনের অভিজ্ঞতা একরকম ইন্দ্রজালিক অভিজ্ঞতা।”

এরপর এলো ১৯৭১ সালের সেই অমানবিক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ক্ষণ, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। তারেক মাসুদ এবং তার পরিবার প্রত্যক্ষ করলেন যুদ্ধের ভয়াবহতা। কিন্তু ১৯৭১ সালের ওই নয় মাসের যুদ্ধের পর বাংলাদেশে স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গে যেন তারেক মাসুদের জীবনেও স্বাধীনতা ফিরে এলো। কারণ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তাঁর মাদ্রাসা শিক্ষার পরিসমাপ্তি ঘটে। তাঁর কট্টরপন্থী মুসলিম বাবার হাত ধরেই তিনি ফের প্রবেশ করেন সাধারণ শিক্ষার জগতে। বাবার উদ্যোগে তিনি ১৯৭৩ সালে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রাইভেটে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেন এবং প্রথম বিভাগে পাস করেন। এরপর তিনি ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের কো-এড কলেজ ‘আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ’-এ ভর্তি হন। কিন্তু তিনি আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে মাত্র ছয় মাস পড়াশোনা করার পর নটরডেম কলেজে বদলি হয়ে যান এবং সেখান থেকে মানবিক বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/13/1565706254284.jpg
◤ তারেক মাসুদের চলচ্চিত্র-যাত্রায় স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ ছিলেন বড় অনুপ্রেরণা ◢


তিনি আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে পড়ার সময় থেকেই ঢাকার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে যেতে থাকেন। চাচাত ভাই কামাল মাহমুদের বন্ধু স্থপতি প্রিন্সের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশ ফিল্ম সোসাইটির অফিসে যান এবং ১৯৭৪ সাল থেকে তিনি চলচ্চিত্র সংসদের নিয়মিত কর্মী হয়ে ওঠেন। ১৯৭৪ সালের পর থেকেই তিনি চলচ্চিত্র চর্চার পরিধিতে নিজেকে ধীরে ধীরে প্রস্তুত করে তোলেন। চলচ্চিত্র ছাড়াও তারেক মাসুদ আগ্রহী ছিলেন সংগীত, চিত্রকলা, স্থাপত্য, নৃতত্ত্ব এবং মনঃস্তত্ত্ব বিষয়ে। সব বিষয়ের সঙ্গে চলচ্চিত্রের আন্তঃসম্পর্ক বিষয়ে তিনি বুঝতে চাইতেন। সেজন্যই পরবর্তীতে বিভিন্ন বিষয়ের মেধাবী সমবয়সীদের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে এবং পারস্পরিক লেনদেনের মধ্য দিয়ে প্রস্তুতি চলে চলচ্চিত্রে নেতৃত্বদানের।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই তিনি বাম আন্দোলন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্দোলন প্রভৃতির সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকেছেন। চলচ্চিত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই পরিচয় হয় মোরশেদুল ইসলাম, তানভীর মোকাম্মেল, শামীম আখতার প্রমুখের সাথে। তিনি চলচ্চিত্র বিষয়ক অসংখ্য কর্মশালা এবং কোর্সে অংশ করেছিলেন। শিক্ষাগুরু হিসেবে পেয়েছিলেন বিকল্পধারার চলচ্চিত্রের অন্যতম পথিকৃৎ প্রয়াত আলমগীর কবীরকে।

এরপর তিনি পুনে ফিল্ম ইন্সটিটিউটে ফিল্মের ওপর পড়তে যেতে চাইলেন কিন্তু হঠাৎ করে সেখান থেকে স্কলারশিপ দেওয়া বন্ধ হয়ে গেলে সে আশায় গুড়েবালি পড়ল। তারপর ১৯৮২ সালে তিনি ফের আমেরিকায় ফিল্মের ওপর পড়তে যাওয়ার জন্য মনস্থির করে ফেললেন, এমনকি পারিবারিকভাবে অর্থও যোগাড় করে ফেলেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/13/1565705853091.jpg
◤ তারেক মাসুদের শিক্ষাগুরু ছিলেন বিকল্পধারার চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ আলমগীর কবীর ◢


তার এই আমেরিকায় যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “১৯৮২ সালে আমি আমেরিকায় ফিল্মের ওপর পড়াশোনার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলাম এবং পারিবারিকভাবে অর্থ জোগাড় করেছিলাম। এদিকে সুলতান তখন আমাদের মতো যুবকদের কাছে কিংবদন্তি। তার ওপর আহমদ ছফার একটি লেখা আমাদের সুলতানের ওপর চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ করে। আমরা তখন বিচ্ছিন্নভাবে বেশ কয়েকজন সুলতানের ওপর প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করার কথা ভাবছিলাম। আমরা যারা বিকল্পধারা নিয়ে ভাবছিলাম তাঁরা সুলতানের ওপর ছবি করাটা খুবই জরুরি মনে করছিলাম। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেন আমার সুলতানের প্রতি এই আগ্রহের বিষয়টি জানতেন। তখন বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্স করেছি। আনোয়ার ভাই আমাদের ক্যামেরার শিক্ষক ছিলেন। তিনি সবসময় উৎসাহ দিতেন ছবি বানানোর জন্য। আমি একদিন তাঁর জিগাতলার বাসায় গিয়ে যখন বললাম যে আমি তো পড়াশোনার জন্য বিদেশ চলে যাচ্ছি। উনি বললেন, আজকের কাগজ দেখেছো? আমি বললাম, না। উনি আবার বললেন, ইত্তেফাক খুলে দেখো, ব্যাক পেইজে বড় করে নিউজ শিল্পী সুলতান হাসপাতালে, মারাত্মকভাবে অসুস্থ। মনে আছে তুমি বলেছিলে সুলতানের ওপর ডকুমেন্টারি করবে। তুমি যদি এখন পড়তে বাইরে চলে যাও, ফিরে এসে দেখবে শিল্পী নেই। তোমার মনের মধ্যে কিন্তু একটা বিরাট আফসোস থেকে যাবে। আমি আনোয়ার ভাইকে বললাম, আমি বাইরে যাবার যাবতীয় কাজ সেরে ফেলেছি, আমি চলে যাব। তারপর জিগাতলা বাসস্ট্যান্ডে ছয় নাম্বার বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। অনেক সময় নিচ্ছে সেদিন বাসটা, এটাও একটা কাকতালীয় ঘটনা। বাসটা এত দেরি না করলে হয়তো মাথার মধ্যে এত উল্টো বুদ্ধি আসত না। বাস আসছে না, আসছে না। এ সময় আমার মাথায় উল্টো বুদ্ধিটা এলো, আমি বিদেশে যাব না। ওই টাকা দিয়েই ইমিডিয়েটলি আমি সুলতানের ওপর ছবি বানানো শুরু করে দেব। দ্যাটস হাউ আই গট্ ইনটু ফিল্ম মেকিং।”

তারেক মাসুদ ‘আদম সুরত’ নির্মাণ শুরু করেন ১৯৮২ সালে। তার মূলধন ছিল পৌনে দুই লাখ টাকা। কিন্তু সুলতানের খামখেয়ালী, ভুলোমনা, উদাসীন স্বভাবের কারণে ওই ছবি নির্মাণ করতে লেগে যায় সুদীর্ঘ ৭ বছর। ছবির ব্যয় বেড়ে যায় বহুগুণ। সে সময় ছবির এই দীর্ঘসূত্রিতার কারণে নানা ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ চলতে থাকে তার প্রতি। বন্ধুরা ঠাট্টা করে বলতে থাকেন, তারেক মাসুদ নতুন চলচ্চিত্র আন্দোলনের জন্ম দিচ্ছেন, যার নাম ‘সিনেমা-দেরীতে’। কারণ তখন বিশ্বব্যাপী নতুন সিনেমা আন্দোলনের নাম ছিল ‘সিনেমা-ভেরীতে’।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/13/1565705343466.jpg
◤ ১৯৮৪ সালে আদম সুরত চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে তারেক মাসুদ ◢


কিন্তু এই দীর্ঘ ৭ বছর সুলতানের সাথে থেকে থেকে তিনি লাভ করেন নতুন এক জীবনদৃষ্টি, সুলতানের চোখ দিয়ে আবিষ্কার করেছেন যেন নতুন বাংলাকে। সুলতানের জীবনদর্শনও তাকে গভীরভাবে আলোড়িত করে, যা তার পরবর্তী কাজগুলিতে লক্ষ্যণীয়। চেতনে হোক কিংবা অবচেতনে, তারেকের কাজে সুলতানের প্রভাব বিদ্যমান। এ প্রসঙ্গে তারেক মাসুদ বলেন, “আদম সুরত বানাতে গিয়ে আমি যতই ইমপ্রাকটিক্যাল কাজ করি না কেন, এমন এক আলোকপ্রাপ্ত মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিন থাকার ও চলার ফলে আমার একটা আত্মোন্নয়ন ঘটেছে বলে আমি মনে করি। শুধু গ্রামবাংলা নয়, শিল্প সম্পর্কে, জীবন সম্পর্কে কিছু ধারণা আমার মধ্যে বিকশিত হয়েছে।”

এই ছিল তারেক মাসুদের চলচ্চিত্র যাত্রার প্রারম্ভিক ভাগ। কিন্তু কে ভেবেছিল যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার এক সাধারণ মাদ্রাসা ছাত্র কালক্রমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের বরপুত্র হয়ে উঠে উঠবে?

তারেক মাসুদ তার সমগ্র জীবনে যা যা দেখেছেন, যে যে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন; সেগুলিকেই তিনি পরবর্তী সময়ে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি তার শিল্পকর্মের মধ্যদিয়ে তার সময়কার সময়টিকে ধরতে চেয়েছেন। চিত্রায়িত করেছেন পেছনে ফেলে আসা সময়কেও। তার সময়কার বর্তমান এবং আবহমান বাংলার ইতিহাসকে তিনি ছুঁতে চেয়েছিলেন তার সৃষ্টিকর্মের মধ্যদিয়ে।

তারেক মাসুদ মৃত্যুর আগ অবধি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের অন্যতম নীতিনির্ধারক ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীন-ধারার চলচ্চিত্রকারদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বাংলাদেশের সবচেয়ে সুপরিচিত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ। তিনিই একমাত্র বাংলাদেশি চলচ্চিত্রকার যাঁর চলচ্চিত্র পৃথিবীর প্রায় ৪৪টি দেশে বাণিজ্যিকভাবে প্রদর্শিত হয়েছে। এমন নজির বাংলা ভাষার চলচ্চিত্রকারদের মধ্যে একমাত্র সত্যজিৎ রায় ছাড়া আর কারোই নেই।

অস্কার পুরস্কার প্রতিযোগিতায় তারেক মাসুদের মাটির ময়না (২০০২) একমাত্র চলচ্চিত্র যা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছে। ভুবনবিখ্যাত ‘কান’ চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর ছবি মাটির ময়না ‘আন্তর্জাতিক সমালোচক’ পুরস্কার লাভ করেছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/13/1565705022586.jpg
◤ তারেক মাসুদ পরিচালিত মাটির ময়না সিনেমার পোস্টার ◢


এছাড়াও ২০১১ সাল পর্যন্ত তারেক মাসুদের চলচ্চিত্রকর্মসমূহের মধ্যে প্রামাণ্য চিত্রগুলো হচ্ছে : সোনার বেড়ি (১৯৮৭), আদমসুরত (১৯৮৯), আহ আমেরিকা (১৯৮৯), গণতন্ত্র মুক্তি পাক (১৯৯০), ইউনিসন (১৯৯২), মুক্তির গান (১৯৯৫), শিশুকণ্ঠ (১৯৯৭), মুক্তির কথা (১৯৯৯), নিরাপত্তার নামে (১৯৯৮), অন্য শৈশব (২০০২) এবং কানসাটের পথে (২০০৮)।

আর কাহিনীচিত্রসমূহ হচ্ছে : শামীম আখতারের সঙ্গে যৌথভাবে স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি সে (১৯৯৩), মাটির ময়না (২০০২), ক্যাথরিন মাসুদের সঙ্গে যৌথভাবে অন্তর্যাত্রা (২০০৬), স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি নরসুন্দর (২০০৯) এবং রানওয়ে (২০১০)।

২০১১ সালের ১৩ আগস্ট ‘কাগজের ফুল’ নামক চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের লোকেশন ঠিক করার জন্য তারেক মাসুদ তার সহকর্মীদের নিয়ে পাবনার ইছামতী নদীর তীরে যান। লোকেশন-নির্বাচন শেষে দুপুরে ঢাকার উদ্দেশে তারেক মাসুদ তার গাড়িবহর নিয়ে রওনা দেন এবং খানিক পরে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে তারেক মাসুদের সঙ্গে ছিলেন তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাংবাদিক, সম্প্রচার কিংবদন্তি, টেলিভিশন সাংবাদিকতার পথিকৃৎ ও বিশিষ্ট চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীর। তিনিও একই দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদের সাথে মারা যান। প্রাণ হারায় আরো ৩ জন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/13/1565704665207.jpg
◤ দুর্ঘটনায় নিহত হন তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর (ডানে) ◢


কাগজের ফুল ছাড়াও তারেক মাসুদের অনেকগুলো ছবি নির্মাণাধীন ছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশের লোকজ উৎসব, মেলা দিবস ইত্যাদি নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র এবং বাংলাদেশের সিনেমা হলের বেহাল অবস্থা নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্রের নির্মাণপ্রক্রিয়া প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল। আর, তার স্বপ্নের ছবি কাগজের ফুলের প্রেক্ষাপট এবং ব্যাপ্তি ছিলো বিশাল। ছবির বিষয়বস্তু ছিল ১৯৪৭ সালের দেশভাগ। এবং এই ছবিই বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেটের ছবিতে পরিণত হতে যাচ্ছিল।

এই কিংবদন্তির প্রয়াণ দিবসে তার প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।

তথ্যসূত্র :
১. তারেক মাসুদের দেয়া সাক্ষাৎকার
২. উইকিপিডিয়া
৩. বাংলাপিডিয়া ও অন্যান্য

   

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;