টেনিসে সর্বকালের সেরা ফেদেরার-নাদাল-জোকোভিচ



শেহজাদ আমান, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
সৌভাগ্যবান বর্তমান সময়ের টেনিসপ্রেমীরা, সর্বকালের সেরা তিন খেলোয়াড়কে একসাথে দেখতে পারছেন

সৌভাগ্যবান বর্তমান সময়ের টেনিসপ্রেমীরা, সর্বকালের সেরা তিন খেলোয়াড়কে একসাথে দেখতে পারছেন

  • Font increase
  • Font Decrease

রজার ফেদেরার। রাফায়েল নাদাল। নোভাক জোকোভিচ। আধুনিক টেনিসের ‘বিগ থ্রি’। এই তিনজনই যে পুরুষদের টেনিসে সর্বকালের সেরা তিনজন, তা নিয়ে খুব কম মানুষই দ্বিমত পোষণ করে। আর এর স্বপক্ষে সাক্ষ্য দিচ্ছে তাঁদের পরিসংখ্যান। রজার ফেদেরার গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন ২০ বার, রাফায়েল নাদাল ১৮ বার ও নোভাক জোকোভিচ ১৫ বার। এই তিনজনের মিলিত গ্র্যান্ড স্লামের সংখ্যা ৫৩! বলাই বাহুল্য, তাদের মতো এত বেশি গ্র্যান্ড স্লাম ট্রফি কেউ জিততে পারেননি পুরুষদের টেনিসের ইতিহাসে। আর আজকের দিনের টেনিসামোদীরা নিজেদেরকে সৌভাগ্যবান ভাবতেই পারেন—এই তিন কিংবদন্তি বর্তমানে, একই সময়ে খেলে চলেছেন বলে। সর্বকালের সেরা এই তিন খেলোয়াড়কে একসাথে দেখতে পারছেন বলে।

তারা যেসময় খেলছেন, সেই সময়ে গ্র্যান্ড স্লাম ছাড়াও অন্যান্য ট্রফিতেও এই ত্রয়ীর আধিপত্য প্রচণ্ড। বিভিন্ন মাস্টার টুর্নামেন্টের বেশিরভাগের শিরোপা যাচ্ছে এই তিনের ঝুলিতে। গত প্রায় ১৫ বছর ধরেই যেন এই ত্রয়ীর একাধিপত্য টেনিসে। এই দেড় দশক সময়কালে মেয়েদের টেনিস দেখেছে অনেক উত্থান-পতন। ফ্রেঞ্চ ওপেনে যেমন নাদাল, উইম্বলডনে যেমন ফেদেরার বা অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে যেমন জোকোভিচ টানা শিরোপা জিতেছেন, মেয়েদের টেনিসে এমনটা দেখা যায়নি গত দেড় দশকে। গত দেড় দশকে এক সেরেনা উইলিয়ামস ছাড়া আর কোনো নারী টেনিস তারকাই সেভাবে টিকে থাকতে ও সাফল্য অর্জন করতে পারেননি। তাও ফেদেরার, নাদাল ও জোকোভিচের মতো অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা নিয়ে নিজেকে তিনি ধরে রাখতে পেরেছেন খুব কমই। গত দশ বছরে প্রায় সব গ্র্যান্ড স্লামেই শিরোপা ঘুরেফিরে গিয়েছে এই ত্রয়ীর হাতে। মাঝে অ্যান্ডি মারে, স্টান ভাভরিঙ্কা ও মারিন চিলিচের মতো কেউ কেউ ৩-৪টি স্লাম শিরোপায় ভাগ বসালেও তারা ধরে রাখতে পারেননি তাদের এই সাফল্য। হতে পারেননি ধারাবাহিক।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/20/1566289905892.jpg

একে অন্যের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হলেও তাদের মধ্যে রয়েছে দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক


২০১৭-এর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে ২০১৯-এর উইম্বলডন পর্যন্ত টানা ১১টি গ্র্যান্ড স্লাম ভাগ করে নিয়েছেন এই ত্রয়ী। জোকোভিচ জিতেছেন চারটি, নাদাল তিনটি আর ফেদেরার তিনটি। অথচ তাদের প্রত্যেকেই ত্রিশোর্ধ্ব। নেই তারুণ্যের মধ্যগগণে। ছেলেদের টেনিসে এই তিনজনের দীর্ঘদীনের সাফল্যের রহস্য কী?

প্রথমেই বলা যেতে পারে টেনিসের প্রতি তাদের গভীর ভালোবাসা বা কমিটমেন্টের কথা। এই কমিটমেন্ট না থাকার কারণে অনেক পুরুষ টেনিস খেলোয়াড়ই লম্বা করতে পারেননি তাদের ক্যারিয়ার। তাদের প্রায় সমসাময়িক লেটন হিউয়িট, মারাত সাফিনরা প্রথমদিকে বেশ কিছু সাফল্য পেলেও, র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠলেও, তারা তা ধরে রাখতে পারেননি দীর্ঘদিন। ফেদেরারকে দেখলেই ব্যাপারটা অনেকটা বোঝা যায়। ৩৮ বছর বয়সে যেখানে সবাই অবসরের কথা ভাবে, সেখানে তিনি এখনো খেলে চলেছেন সমান দাপটে। জিতছেন শিরোপাও। ১৯৯৮ থেকে পেশাদার সার্কিটে খেলে চলেছেন তিনি। তবু, অচিরেই অবসরে যাবেন, এই ভাবনা তার এখনো নেই। একই ব্যাপার খেটে যায় নাদাল ও জোকোভিচের বেলায়। ৩৩ ও ৩২ বছর বয়সী এই দুজনও টেনিসকে মনেপ্রাণে ভালোবেসে টিকে আছেন। ইনজুরির কারণে খেলা থেকে দূরে সরে থাকতে হয় তাদের মাঝেমাঝেই। বিশেষ করে, এই ক্ষেত্রে নাদালের কথা বলতে হয় আলাদা করে। ইনজুরির হানা তার ক্যারিয়ারে নিয়মিত একটা ঘটনা। এমনকি টুর্নামেন্ট চলাকালেও অনেক সময় আক্রান্ত হয়েছেন ইনজুরিতে। তবুও ফাইনালে উঠেছেন, যদিও হয়তো শেষ পর্যন্ত জিততে পারেননি শিরোপা। যেমন, ২০১৭-এর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে এই ঘটনাই ঘটেছিল তার সাথে। তেমনি জোকোভিচও মূলত ইনজুরির কারণে ২০১৬’র উইম্বলডন থেকে থেকে ২০১৮’র ফ্রেঞ্চ ওপেন পর্যন্ত পর্যন্ত জিততে পারেননি একটিও গ্র্যান্ড স্লাম। কিন্তু দুরন্ত প্রতাপে ফিরে এসে তিনি জিতে নিয়েছেন পরের পাঁচটি গ্র্যান্ড স্লামের চারটিই। তাই, নিঃসন্দেহে তাদের সাফল্যের আরেকটি কারণ এই হার না মানা মনোভাব।

অলরাউন্ড পারফরম্যান্সও তাদের সাফল্যের আরেকটি কারণ। কী হার্ড কোর্ট, কী ক্লে কোর্ট, কী গ্রাস কোর্ট—সবখানেই শিরোপা জিতেছেন এই ত্রয়ী। তাই, চার ধরনের গ্র্যান্ড স্লামই পকেটে আছে তাদের। যে নোভাক জোকোভিচ জিততে পারছিলেন না ফ্রেঞ্চ ওপেন, তিনিও ২০১৬ সালে তা জিতে দেখালেন। এরকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স আছে টেনিস ইতিহাসের খুব কম খেলোয়াড়েরই। ফেদেরারের ফোরহ্যান্ড, নাদালের ব্যাকহ্যান্ড, জোকোভিচের গ্রাউন্ড স্ট্রোকের মতো অসাধারণ ক্রীড়াশৈলি, খুব কম টেনিস খেলোয়াড়ই দেখাতে পেরেছেন।

আসুন, এবার দেখা যাক গত দেড় যুগে এই তিন মহাতারকার অর্জনগুলো এবং করা যাক পারস্পারিক সাফল্যের একটা তুলনা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/20/1566289973138.jpg
৩৮ বছর বয়সেও সমান দাপটে খেলে চলেছেন রজার ফেদেরার


ফেদেরারের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা ২০০৩ সালের উইম্বলডন জয়। অন্যদিকে নাদাল ২০০৪ সালে সর্বপ্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলেও শিরোপা জেতেন ২০০৫ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনে। জোকোভিচ ২০০৩ সাল থেকে পেশাদার আন্তর্জাতিক টেনিসে বিচরণ করলেও প্রথম বড় সাফল্য তার হাতে ধরা দেয় ২০০৮ সালে। সেবছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে তিনি প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা জেতেন।

বিগত ১৫ বছরে টেনিসে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী তিন টেনিস তারকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিরোপা জিতেছেন রজার ফেদেরার। তিনি সর্বমোট ৯৮টি প্রতিযোগিতামূলক টেনিস শিরোপা জিতেছেন ও রানার্সআপ হয়েছেন আরো ৫১ বার। ফেদেরারের ৯৮টি টেনিস শিরোপার মধ্যে গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপার সংখ্যা ২০টি। তিনি মোট ১০ বার পরাজিত হয়েছেন গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে। খেলোয়াড়ি জীবনের ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮টি জিতেছেন উইম্বলডনে। গ্র্যান্ড স্ল্যাম ছাড়াও মাস্টার্স শিরোপা প্রতিযোগিতায় ফেদেরার খেলেছেন ৪৭টি ফাইনাল, যার মধ্যে জিতেছেন ২৭টি ও হেরেছেন ২০ বার। এটিপি ওয়ার্ল্ড ট্যুর প্রতিযোগিতায় ১০ বার ফাইনাল খেলে জিতেছেন ৬ বার ও হেরেছেন ৪ বার। মাস্টার্স ও এটিপি ছাড়াও ফেদেরার ২০১৪ সালে খেলোয়াড়ি জীবনের একমাত্র ডেভিস কাপ জেতেন। সর্বমোট ফাইনাল খেলা ও শিরোপার সংখ্যার হিসেবে নাদাল ও জোকোভিচের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে ফেদেরার।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/20/1566290018405.jpg
অদম্য মানসিকতা বড় শক্তি নাদালের। বারবার ইনজুরিতে পড়েও ফিরে এসে জিতেছেন শিরোপা


স্প্যানিশ কিংবদন্তি টেনিস তারকা রাফায়েল নাদাল টেনিস ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (১৮টি) গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা জিতেছেন। খেলোয়াড়ি জীবনে জিতেছেন ৭৬টি টেনিস শিরোপা ও হেরেছেন ৩৬টি ফাইনালে। তিনি তার ১৮টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপার মধ্যে ১২টিই জিতেছেন ফ্রেঞ্চ ওপেনে ক্লে কোর্টে। তাই টেনিস বিশ্বে নাদাল পরিচিত ‘ক্লে কোর্টের রাজা’ হিসেবে।

১৮টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে জয়ের বিপরীতে নাদাল হেরেছেন ৭টি ফাইনালে। ফেদেরার ও জোকোভিচের চেয়ে মাস্টার্স শিরোপা জয়ের দিক দিয়ে অবশ্য এগিয়ে রয়েছেন নাদাল। খেলোয়াড়ি জীবনে তিনি জিতেছেন সর্বমোট ৩২টি মাস্টার্স শিরোপা ও হেরেছেন আরো ১৬টি ফাইনাল। মাস্টার্স ওপেনে সাফল্যের দিক থেকে তার সমকক্ষ টেনিস খেলোয়াড় ইতিহাসে বিরল। তবে তিনি এটিপি ট্যুর প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত শিরোপা জিততে পারেননি, হেরেছেন ২টি ফাইনালে। কিন্তু ৪ বার ডেভিস কাপের ফাইনাল খেলে জিতেছেন ৪ বারই।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/20/1566290067509.jpg
অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা বড় শক্তি জোকোভিচের


২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতার মধ্যদিয়ে টেনিস বিশ্বের লাইমলাইটে আত্মপ্রকাশ ঘটে জোকোভিচের। সেই থেকে এখন পর্যন্ত নোভাক জোকোভিচ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল খেলেছেন ২৩ বার। ১৫টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে জয়ের বিপরীতে হেরেছেন ৯টি ম্যাচে। গ্র্যান্ড স্ল্যাম ছাড়াও অন্যান্য টেনিস প্রতিযোগিতায়ও সাফল্য ধরে রেখেছেন তিনি। মাস্টার্স টেনিস ওপেনে সর্বমোট ৪৪টি ফাইনাল খেলেছেন জোকোভিচ। এর মধ্যে জিতেছেন ৩০টি ও হেরেছেন ১৪টি ম্যাচে।

এটিপি ট্যুর শিরোপা জয়ের দিক দিয়ে ফেদেরারের পরেই জোকোভিচের অবস্থান। মোট ৬ বার ফাইনাল খেলে তিনি শিরোপা জিতেছেন ৫ বার। এছাড়াও খেলোয়াড়ি জীবনের একমাত্র ডেভিস কাপ জেতেন ২০১০ সালে। শিরোপার সংখ্যা বিবেচনায় ফেদেরারের তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে থাকলেও নাদালের নিকটবর্তী অবস্থানে রয়েছেন ৬৯টি টেনিস শিরোপা জেতা এই সার্বিয়ান তারকা।

টেনিস বিশ্ব যখন তিন মহাতারকার নিয়ন্ত্রণে, তখন তাদের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে আলোচনা করতে গেলে অবশ্যই র‍্যাঙ্কিং নিয়েও আলোচনা করা জরুরি।

টেনিস ইতিহাসে সর্বাধিক সময় ধরে র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান ধরে রাখা খেলোয়াড় রজার ফেদেরার। তিনি সর্বমোট ৩১০ সপ্তাহ টেনিস র‍্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর অবস্থানে ছিলেন। ফেদেরারের পরেই জোকোভিচের অবস্থান। তিনি মোট ২২৩ সপ্তাহ টেনিস র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ অবস্থানে ছিলেন, যা ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। নাদাল অবশ্য ফেদেরার ও জোকোভিচ থেকে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছেন র‍্যাঙ্কিংয়ের দিক দিয়ে। প্রথম অবস্থানে ছিলেন মোট ১৮২ সপ্তাহ।

টেনিস বিশ্বের সেরা এ তিন খেলোয়াড়ের অলিম্পিকেও রয়েছে সফলতা ও ব্যর্থতা। অলিম্পিকে তিনজনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সফল নাদাল। ২০০৮ সালে বেইজিংয়ে তিনি স্বর্ণপদক জিতেছেন স্পেনের হয়ে। অন্যদিকে অলিম্পিকে ফেদেরারের রয়েছে রৌপ্যপদক ও জোকোভিচের রয়েছে একটি ব্রোঞ্জপদক।

কাজেই, টেনিসের এই তিন মহারথী যে সর্বকালের সেরা তিন টেনিস খেলোয়াড়, এ নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে খুব কম মানুষের। ‘সর্বকালের সেরা’ এই তিনকে একসাথে দেখতে পাচ্ছেন বলে নিজেদেরকে সৌভাগ্যবান বলে ভাবতেই পারেন বর্তমান সময়ের টেনিসামোদীরা। একই সময়ে এই তিনজনকে খেলতে দেখার পাশপাশি, এদের মধ্যকার ত্রিমুখী লড়াইটাও কিন্তু কম উপভোগ্য নয়। পরিসংখ্যান বলছে, পরস্পরের মোকাবেলায় এই তিনজনের জয়-পরাজয়ের সংখ্যার ভেতরও নেই খুব একটা পার্থক্য। কে সেরা সেটা নিয়ে তাদের ভক্তদের মধ্যে নিশ্চয় চলে অন্যরকম এক লড়াই। কিন্তু, সর্বকালের সেরা টেনিস-ত্রয়ী যে এই তিনজনই, এনিয়ে লড়াই করতে মনে হয় না এগিয়ে আসবে খুব বেশি মানুষ।

   

সুন্দরবনের জল-জঙ্গলের রূপকথা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
খুলনার দাকোপ উপজেলার সুন্দরবন ঘেঁষা গ্রাম নলিয়ান/ছবি: নূর এ আলম

খুলনার দাকোপ উপজেলার সুন্দরবন ঘেঁষা গ্রাম নলিয়ান/ছবি: নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

ওপাড়ে ঘন বন জঙ্গল, মাঝখানে শিবসা নদী আর এপাড়ে বাঁধের ধারের জমিতে সারিবদ্ধ ঝুলন্ত বাড়ি। জঙ্গলে হেঁটে বেড়ায় চিত্রা হরিণ, নদীর ডাঙ্গায় দেখা মেলে ভোঁদরের। সবুজভাব নদীতে ডিঙি নৌকায় জীবিকার সন্ধানে মাছ ধরে ঝুলন্ত বাড়ির বাসিন্দা। সবমিলে যেন জল-জঙ্গলের রূপকথা।

দৃশ্যটি খুলনার দাকোপ উপজেলার সুন্দরবন ঘেঁষা গ্রাম নলিয়ানের। এখানে জল-জঙ্গলের সঙ্গে মানুষের বসবাস। সুন্দরবনের সৌন্দর্য ও উপকূ্লের তাণ্ডব সহ্য করা নলিয়ানকে ক্যামেরাবন্দি করেছেন বার্তা২৪.কম-এর ফটো এডিটর নূর এ আলম।

শিবসা নদীর বাঁধের পাশে নলিয়ান। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখানকার মানুষের জীবন চলে ঝুঁকি নিয়ে/ছবি: নূর এ আলম


শিবসা নদীর বাঁধের পাশে নলিয়ান। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখানকার মানুষের জীবন চলে ঝুঁকি নিয়ে। ঘূর্ণিঝড় আইলার প্রলয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়া এখনকার বাসিন্দারা এখনও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি।

জোয়ারের পানির সমান উঁচু খুঁটির ওপর মাচা পেতে বানানো হয়েছে ঘর/ছবি: নূর এ আলম


নিজের বসতভিটা হারানোর পর ঠাঁই হয়েছে বাঁধের ধারের জমিতে। সেখানেও ঘর বানানোর মতো আর মাটি অবশিষ্ট নেই। ফলে জোয়ারের পানির সমান উঁচু খুঁটির ওপর মাচা পেতে বানানো হয়েছে ঘর।

এক একটি ঘর দাঁড়িয়ে আছে নড়বড়ে খুঁটির ওপরে/ছবি: নূর এ আলম


তাই এক একটি ঘর দাঁড়িয়ে আছে নড়বড়ে খুঁটির ওপরে। মোটামুটি মাঝারি ঝড় হলেই ঘরগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়।

নলিয়ানবাসীর দিনতিপাত করেন মাছ ধরে এবং সুন্দরবনে জীবিকার সন্ধান করে/ছবি: নূর এ আলম


নলিয়ানবাসীর দিনতিপাত করেন মাছ ধরে এবং সুন্দরবনে জীবিকার সন্ধান করে। সুন্দরবনে জেলেরা দিনে রাতে মাছ ধরে, তারা দিন-রাতের হিসাব করে না।

 শিবসায় ঝাঁপি জাল ফেলে মাছ ধরছেন জেলে/ছবি: নূর এ আলম


 শিবসায় ঝাঁপি জাল ফেলে মাছ ধরেন তারা। কিনারা দিয়ে কাদায় হাঁটা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

নারীরাও মাছ ধরতে সুন্দরবনের কাঁদামাটিতে নেমে যান ঠ্যালা জাল নিয়ে/ছবি: নূর এ আলম


এরপরও নারীরাও মাছ ধরতে সুন্দরবনের কাঁদামাটিতে নেমে যান ঠ্যালা জাল নিয়ে। অনেক জেলে ডিঙি নৌকায় করে শিবসায় ঘুরে মাছ শিকার করেন।

জেলেরা ডিঙি নৌকায় করে শিবসায় ঘুরে মাছ শিকার করেন/ছবি: নূর এ আলম


বর্ষায় শিবসার জলে ডুবে থাকা নলিয়ানের এক ঘর থেকে আরেক ঘরে যাওয়ার জন্য এই ডিঙি নৌকাগুলো ব্যবহার করা হয়।

শিবসা নদী/নূর এ আলম


নলিয়ানে উপকূলের বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করা চিত্র শুধু নয়, রয়েছে সুন্দরবনের নৈসর্গিক প্রকৃতি। শিবসার অপার সৌন্দর্য।

গাছে গাছে সাদা বকের উড়াউড়ি/ছবি: নূর এ আলম


নদীর পাড়ে চোখে পড়ে ঘন গাছপালার সবুজ বন। যাতে চোখ জুড়িয়ে আসে।

হোগলা পাতার ঝিরি ঝিরি শব্দ/ছবি: নূর এ আলম


যেখানে রয়েছে হোগলা পাতার ঝিরি ঝিরি শব্দ। গাছে গাছে সাদা বকের উড়াউড়ি, ভেসে আসে পাখির কিচিরমিচির। 

নলিয়ান পর্যটন কেন্দ্রে জঙ্গলের ভেতরে লোহার ব্রিজ/ছবি: নূর এ আলম


পর্যটকদের জন্য জঙ্গল ভেদ করে তৈরি করা লোহার ব্রিজ। পর্যটকরা সুন্দরবনে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হলে এই ব্রিজে হেলেন দিয়ে প্রকৃতির গন্ধ মেখে নেয়।

জঙ্গলে হরিণ খুনশুটিতে ব্যস্ত/ছবি: নূর এ আলম


সুন্দরবনের প্যাঁচেপ্যাঁচে কাঁদায় হেঁটে যেতে যেতে হঠাৎ দেখা মিলে হরিণের দলের সঙ্গে। জঙ্গলে তারা তখন নিজেদের মধ্যে খুনশুটিতে ব্যস্ত।

মায়াবী চোখে তাকিয়ে হরিণ/ছবি: নূর এ আলম


এরই ফাঁকে মায়াবী চোখ নিয়ে তাকিয়ে দেখে দু’পা বিশিষ্ট মানুষের দিকে। আড় চোখে তাকায় গাছের ডালে ঝুলে থাকা বানরের দলও। তারা সারাদিন বনে দৌড়ঝাঁপ করে।

বানরের দৌঁড়ঝাপ/ছবি: নূর এ আলম


নলিয়ানের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। শিবসা নদীতে কুমিরও ভেসে ওঠে।

নদীর তীরে দেখা মেলে বিলুপ্তিপ্রায় প্রাণী ভোঁদরের/ছবি: নূর এ আলম


জনশ্রুতি আছে, কুমির আর মানুষের মধ্যে মাঝে মাঝে যুদ্ধও হয়।

 শিবসা নদীতে কুমিরও ভেসে ওঠে। জনশ্রুতি আছে, কুমির আর মানুষের মধ্যে মাঝে মাঝে যুদ্ধও হয়/ছবি: নূর এ আলম

বড় বড় ঘূর্ণিঝড় যারা মোকাবিলা করা নলিয়ানের কাছে কুমির আর এমন কি! সব কিছু তোয়াক্কা করে জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকাটাই বড় বিষয় তাদের কাছে!

;

ইতিহাসে ২৮ মার্চ: বর্ণবাদের প্রতিবাদে কিংয়ের পক্ষে ২৫ হাজার মানুষ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বর্ণবাদের বিরুদ্ধে মিছিলে নামেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র

বর্ণবাদের বিরুদ্ধে মিছিলে নামেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র

  • Font increase
  • Font Decrease

মানব ইতিহাস আমাদের অতীতের কথা বলে। আজ যা কিছু বর্তমান তার ভিত্তি তৈরি হয়েছিল আমাদের অতীতের কারণেই। সেই অতীতের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো ছাপ রেখে যায় ইতিহাসের পাতায়।  

আজ ২৮ মার্চ, ২০২৪। ইতিহাসের পাতা ওল্টালে দেখঅ যাবে, আজকে ঘটেছিল নানা ঐতিহাসিক ঘটনা। জেনে নেয়া যাক, কি ঘটেছিল আজকের তারিখে!

*মার্টিন লুথার কিং ছিলেন বর্ণবাদের বিপরীত আন্দোলনকারী আফ্রিকান নেতা। ১৯৬৫ সালে তিনি কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। সেখানে ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ তাকে সমর্থন করে মিছিলে নেমেছিলেন আজকের তারিখে। এই বিক্ষোভ পরবর্তীতে আলাবামায় জাতি, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে সমান অধিকার তৈরিতে বিশেষ প্রভাব ফেলেছিল।    

*যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ায় থ্রি মাইল আইল্যান্ড পারমাণবিক কেন্দ্রে ১৯৭৯ সালে পানির পাম্প ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটে। সেখান থেকে চারপাশে তেজস্ক্রিয় বাষ্প এবং আয়োডিন ছড়াতে শুরু করে। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টে কর্মরত ৫০০ জন কর্মী এই বাষোপর সংস্পর্শে আসায় শারীরিক সমস্যার আশঙ্কায় ছিল। আমেরিকার জনগণ এই ঘটনায় দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়ে।  

*১৯৮৬ সালে অ্যাচেসন এবং লিলিয়েনথাল পারমারবিক শক্তি সম্পর্কিত একটি রিপোর্ট তৈরি করেন। সেখানে আন্তর্জাতিকভাবে পারমাণবিক শক্তির নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা উল্লেখ করেন তারা। ২৮ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট তাদের সেই রিপোর্টটি প্রকাশ করে।

*হিলসবোরো দুর্ঘটনায় প্রায় ১শ লোকের প্রায় গিয়েছিল ১৯৯১ সালে। শেফিল্ডে পিষ্ট হয়ে ৯৬ জন লিভারপুল ফুটবল সমর্থক নিহত হন। এছাড়া আরও দেড় শতাধিক ভক্ত আহত হন। এই বিপর্যয়ে আদালতের রায়ে অসন্তুষ্ট ছিল নিহতদের পরিবার। তাই, আজকের তারিখে তারা রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিল।

*১৯৩৬ সালে শুরু হওয়া স্পেনের গৃহযুদ্ধ ১৯৩৯ সালের ২৮ মার্চ শেষ হয়েছিল।

;

তালপাতার পাখায় ঘোরে সংসারের চাকা



মাহবুবা পারভীন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আঁকাবাঁকা রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি তালগাছ। যা দেখে মনে পড়ে যায় রবী ঠাকুরের কবিতা ‘তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে।’ বলছি বগুড়ার কাহালু উপজেলার আড়োলা গ্রামের কথা। বর্তমানে গ্রামটি তাল পাখার গ্রাম নামে পরিচিত। এই গ্রামে প্রবেশ করতেই দেখা যায় নারী-পুরুষ সবাই তালপাতা দিয়ে পাখা বানানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গরমে তালপাতার পাখার বাতাস গা জুড়িয়ে যায়।

বগুড়ার কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নের পাশাপাশি দুটি গ্রাম। একটির নাম যোগীরভবন, অপরটি আড়োলা আতালপাড়া। ইতোমধ্যে গ্রাম দুটি পাখার গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

সম্প্রতি গিয়ে দেখা যায়, দুটি গ্রামে একেক পাড়ায় একেক ধরনের পাখা তৈরি হয়। যোগীরভবন গ্রামে নারীরা তৈরি করেন হাতলপাখা বা ডাঁটপাখা। আর আড়োলা আতালপাড়ায় তৈরি হয় ঘোরানো পাখা বা ঘুন্নী পাখা আর পকেট পাখা। পাখা তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন দুটি গ্রামের সব নারী। শীতের শেষে বসন্তকালে, অর্থাৎ ফাল্গুন মাস থেকে পাখা তৈরির কাজ শুরু হয়।

পাখা তৈরিতে ব্যস্ত নারী

গ্রামে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে বাড়ির উঠানে রং তুলির আঁচড়ে ঘুরানো পাখা রাঙিয়ে তুলছেন সখিনা বেগম। রাঙানো পাখা বাঁধায় করছেন গোলজার। বাঁধা হয়ে গেলে পাখাটি বিক্রি করবেন তিনি।

হাতপাখার গ্রামে এবার ২০ লাখ পাখা বিক্রির প্রস্তুতি চলছে। এই পাখা চৈত্র মাস থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত বিক্রি হবে।

গ্রামের নারী-পুরুষ, শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা অবসর সময়ে পাখা তৈরির কাজ করেন। বংশ পরম্পরায় এই দুই গ্রামের মানুষ তালপাখা তৈরির কাজ করে আসছেন বলে জানান গ্রামের বাসিন্দারা। গরমে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে দিন দিন বাড়ছে পাখার চাহিদা, সেই সঙ্গে বাড়ছে পাখা তৈরির কাজের পরিধি।

আড়োলা গ্রামের খন্দকার বলেন, দাদার আমল থেকে তারা তাল পাতা দিয়ে হাতপাখা তৈরির কাজ করে আসছেন। কৃষি কাজের পাশাপাশি তালপাখা তৈরির কাজ করেন তিনি। তার স্ত্রীও সংসারের কাজের ফাঁকে রঙের আচর দিয়ে তাল পাখার সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ করে থাকেন। আকরাম আকন্দ বলেন, গত বছর তিনি পাখা বিক্রি করে সংসার খরচ বাদে এক লাখ টাকা সঞ্চয় করেছেন। তার মতে গত বছর দুই গ্রাম থেকে ১৫ লাখ তালপাখা বিক্রি হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এবার চাহিদা বাড়ায় ২০ লাখ পাখা বিক্রি হবে বলে তিনি জানান।

জানা যায়, তালগাছের পাতা (স্থানীয় ভাষায় তালের ডাগুর) দিয়ে তিন ধরনের পাখা তৈরি হয়। স্থানীয়ভাবে নাম দেয়া হয়েছে- পকেট পাখা, ঘুরানী পাখা এবং ডাগুর পাখা।

পাখা তৈরিতে তালের পাতা ছাড়াও বাঁশ, সুতা এবং লোহার তার প্রয়োজন হয়। পাখা তৈরির পর বিভিন্ন রঙের আচর দিয়ে সৌন্দর্য বাড়ানো হয়। ১০ টাকায় কেনা তাল গাছের একটি পাতা বা ডাগুড় দিয়ে তৈরি হয় বড় পাখা বা ডাগুর পাখা ২টি, ঘুরানী পাখা ৪টি এবং পকেট পাখা ৬টি।

তালপাতার পাখা

পাখা তৈরির কারিগর জানান, বছরের আশ্বিন মাস থেকে শুরু হয় বাঁশ এবং তালপাতা সংগ্রহের কাজ। এরপর বাঁশ ছোট ছোট আকারে কাটতে হয়। তালপাতাও কেটে পাখা তৈরির উপযোগী করা হয়। ফাল্গুন মাস পর্যন্ত চলে পাখা তৈরির কাজ। চৈত্র মাসের শুরু থেকে পাখার সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বাহারি রঙ করে বিক্রয় উপযোগী করা হয়।

রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রংপুর, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারি থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারীরা আসেন তালপাখা কিনতে।

যোগীর ভবন গ্রামের মামুনুর রশিদ বলেন, তিনি প্রতি বছর ১৭ থেকে ১৮ হাজার ডাগুর পাখা তৈরি করেন। এই পাখাগুলো বরিশাল, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়। গত বছরের তুলনায় এ বছর পাখার চাহিদা বেশি বলে জানান মামুনুর রশিদ। তিনি বলেন, একটি তাল পাতা বা ডাগুরের দাম ১০ টাকা হলেও বাঁশ ও রঙের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে খরচ বেড়ে গেছে।

আতাইল পাড়া গ্রামের পারভীন, মর্জিনা, সাবিনা, বেবি, সুমি জানান, তারা প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০টি হাত পাখা তৈরি করে বিক্রি করেন। বছরের ছয় মাস সংসারের কাজের ফাঁকে হাতপাখা তৈরির কাজ করে তারা বাড়তি আয় করছেন। এইসব নারীরা তাদের সৌখিন জিনিস কিনে থাকেন নিজের টাকায়।

পকেট পাখা ১১ টাকা, ঘুরানী পাখা ২০ টাকা এবং ডাগুর পাখা ৩০ টাকা দরে ব্যাপারীরা পাইকারি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তারা আবার বিভিন্ন মেলা কিংবা হাটে বাজারে খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রি করছেন।

গরমের সময় বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ার কারণে হাতপাখার চাহিদা বাড়ছে বলে পাখা কিনতে আসা ব্যাপারী করিম জানান। শহর এবং গ্রামে তীব্র গরম থেকে একটু প্রশান্তি পেতে ধনী-গরিব সবাই হাত পাখার ব্যবহার করে আসছেন যুগ যুগ ধরে।

;

ইতিহাসে ২৭ মার্চ:স্পেনে জোড়া বিমান সংঘর্ষে নিহত ৫৮৩



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
স্পেনে জোড়া বিমান সংঘর্ষে নিহত ৫৮৩

স্পেনে জোড়া বিমান সংঘর্ষে নিহত ৫৮৩

  • Font increase
  • Font Decrease

সময় এবং নদীর স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময়ের সাথে বছরের পর বছর কেটে যায়। বর্তমান হয় অতীত। তার সাথেই তৈরি হয় ইতিহাসের। মানব সভ্যতায় ঘটে যাওয়া ইতিহাস হয়ে থাকে জাতির কাছে স্মরণীয়। প্রতি বছর যখন ক্যালেন্ডারে একই তারিখগুলো ফিরে আসে, মানুষ পুরনো ঘটনার স্মৃতিচারণ করে।

আজ ২৭ মার্চ, ২০২৪। বিগত বছরগুলোতে এই তারিখে ঘটা অনেক ঘটনা হয়েছে স্মৃতিতে অমলিন। ইতিহাসের পাতায় জুড়ে গেছে নতুন নতুন ঘটনা। চলুন জেনে নিই,আজকের তারিখে কি ঘটেছিল!    

১৯৭৭ সালে স্পেনে টেনেরিফ বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। ডাচ এয়ারলাইনের সেই দুর্ঘটনায় কাউকেই জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। রানওয়েতে দু’টো জেট বিমানের সংঘর্ষে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। সেখানে উৎপন্ন বিধ্বংসী দাবানলে সর্বমোট ৫৮৩ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়।

বিশাল এক ঢেউয়ের আঘাতে ১৯৮০ সালে উত্তর সাগরের প্ল্যাটফর্ম ধসে পড়ে। রিগটি ডান্ডি থেকে ২৩৫ মাইল পূর্বে সেই আবাসন প্ল্যাটফর্ম দুর্ঘটনায় ১২৩ জন শ্রমিক মারা যান।

১৯৮৯ সালে সোভিয়েত সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই নির্বাচনে কমিউনিটি পার্টির অনেক রাশিয়ান উচ্চতর কর্মকর্তা পরাজিত হন। তৎকালীন সময়ে এই ঘটনাকে একটি বিদ্রোহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল।     

১৯৬৩ সালে ব্রিটেনে রেললাইন কম ব্যবহৃত হওয়ার কারণে অর্থনৈতিকভাবে বিপুল ক্ষতি হয়। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মোট রেলব্যবস্থার এক-চতুর্থাংশ সেবা কমিয়ে দেওয়া হবে। এই নিয়ে সুদূরপ্রসারী একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল ২৭ মার্চ।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

;