জেনে নিন নতুন টাইগার-গুরু রাসেল ডমিঙ্গো সম্পর্কে



সাফাত জামিল, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
বিশ বছর বয়সেই ডমিঙ্গো নিয়েছিলেন কোচিং-দীক্ষা

বিশ বছর বয়সেই ডমিঙ্গো নিয়েছিলেন কোচিং-দীক্ষা

  • Font increase
  • Font Decrease

সদ্য সমাপ্ত ওয়ানডে বিশ্বকাপের ব্যর্থতায় স্টিভ রোডসকে ছাঁটাইয়ের পর যখন বিসিবি নতুন কোচ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিল, তাতে সাড়া দিয়ে অন্য সবার আগে ঢাকায় এসেছিলেন এক দক্ষিণ আফ্রিকান। সব যাচাই-বাছাই শেষে ৪৪ বছর বয়সী সেই দক্ষিণ আফ্রিকানকেই নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। বলা হচ্ছে বাংলাদেশ দলের নতুন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কথা—বাইশ গজে ব্যাট-বলের লড়াই ছেড়ে বিশ বছর বয়সেই যিনি নিয়েছিলেন কোচিং-দীক্ষা।

১৯৭৪ সালে পোর্ট এলিজাবেথে জন্ম নেওয়া ডমিঙ্গোর খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার সীমাবদ্ধ থেকেছে ইস্টার্ন প্রভিন্সের যুবদলের মধ্যেই। সিনিয়র দলে উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ রাসেল মাত্র বাইশ বছর বয়সেই পেয়ে যান প্রথম কোচিং সনদ, আর ২৫ বছর বয়সে সেই ইস্টার্ন প্রভিন্সে ফিরে আসেন যুবদলের কোচ হিসেবে।

জাতীয় দলে কিংবা ফার্স্ট-ক্লাস ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা ছাড়াই কোচিং ক্যারিয়ারের শুরু থেকে সুনাম কুড়ানোর ঘটনা বিরলই বটে। হিলটন অ্যাকারম্যানের অধীনে দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় একাডেমিতে কাজ করা ডমিঙ্গো বাংলাদেশে পা রাখেন ২০০৪ সালে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেই আসরে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ হিসেবে কাজ করা রাসেল ডমিঙ্গো ঠিক তার পরের বছর শীর্ষ ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি ওয়ারিয়র্সের হেড কোচ হিসেবে যোগ দেন। তাঁর হাত ধরেই পরবর্তী পাঁচ মৌসুমে প্রায় ৬ জন ক্রিকেটারের ডাক পড়ে জাতীয় দলে। ২০০৯-১০ মৌসুমে ঘরোয়া ওয়ানডে এবং টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্টের সিংহাসনে বসার পাশাপাশি টানা দুই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টুয়েন্টি আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ওয়ারিয়র্স। ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ডমিঙ্গোর ওয়ারিয়র্স অবশ্য ফাইনালে হেরে যায় আইপিএল শিরোপাধারী চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/24/1566632079923.jpg
ডমিঙ্গো বাংলাদেশে প্রথম পা রাখেন ২০০৪ সালে


জাতীয় পর্যায়ে কোচিংয়ের সুযোগ লুফে নিতে কখনো দ্বিধা করেননি। ২০১০ সালে ফের বাংলাদেশ যাত্রায় রাসেল দায়িত্ব পান দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের। এর পরের বছর নিজভূমে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ফিরতি সফরেও একই পদে বহাল থাকা ডমিঙ্গো সে বছরের জুনেই ডাক পান সিনিয়র দলের কোচিং ইউনিটে। হেড কোচ গ্যারি কারস্টেনের সহকারী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ডমিঙ্গোকে এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

২০১২ সালের ডিসেম্বরে অবশেষে সহকারীর তকমা ঝেড়ে ফেলেন রাসেল ডমিঙ্গো। টি-টুয়েন্টি দলের হেড কোচ হিসেবে কারস্টেনের স্থলাভিষিক্ত হন নিউজিল্যান্ড সিরিজের ঠিক আগে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সে সময় শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেট না খেলে কোনো জাতীয় দলের হেড কোচ হওয়ার কীর্তি এই ডমিঙ্গো আর একই সিরিজের কিউই কোচ মাইক হেসনের ছাড়া ছিল না আর কারোই। বেশ ভালোভাবেই সে দায়িত্ব পালন করতে থাকা ডমিঙ্গোর কোচিং ক্যারিয়ারের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হয় ঠিক তার পরের বছরেই। ২০১৩ সালের মে মাসে সব ফরম্যাট থেকে গ্যারি কারস্টেনের সরে দাঁড়ানোর ঘোষণায় পুরো জাতীয় দলের দায়িত্বই বর্তায় ডমিঙ্গোর কাঁধে।

পরে রাসেলের চুক্তির মেয়াদ আরো দুই বছর বাড়ায় প্রোটিয়া বোর্ড। তাঁর অধীনে দক্ষিণ আফ্রিকা এরপর ২০১৪ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ শেষ করে সেমিফাইনালে পৌঁছে। ২০১৭ পর্যন্ত হেড কোচের দায়িত্ব পালন করা রাসেল ডমিঙ্গো পরবর্তীতে মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করে সাড়া পাননি বোর্ডের। ওটিস গিবসন তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলে ডমিঙ্গো আবার ফিরে যান নিজভূমে, ঘরোয়া টি-টুয়েন্টি লিগে প্রিটোরিয়া ম্যাভেরিকসকে নিয়ে কাটান ব্যস্ত সময়। পাশাপাশি বহাল ছিলেন প্রোটিয়াদের ‘এ’ দলের কোচের পদে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/24/1566632115903.jpg
তাঁর অধীনে দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ওয়ানডে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে পৌঁছায়


আর দশজন প্রাক্তন ক্রিকেটারের মতো অবসরের পর খেলাটিকে ভিন্ন স্তরে নিয়ে যাবার চেষ্টা নয়, বরং পুরোদস্তুর পেশাদার এক কোচ হবার লক্ষ্য অনুসরণেই নিজেকে গড়েছেন রাসেল ডমিঙ্গো। প্রধান কোচের ভূমিকায় সাধারণত প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাফল্য বিশেষভাবে পরিলক্ষিত বলে তা ডমিঙ্গোর জন্যও সবসময় ছিল বেশ চ্যালেঞ্জিং—“যেহেতু শীর্ষ পর্যায়ে খেলবার কোনো শংসাপত্র আমার নেই, তাই নিশ্চিতভাবেই সেই মর্যাদাটা আমাকে অর্জন করে নিতে হতো। হয়তো এটা এভাবেই হবার কথা, তাই আমাকে সবচেয়ে কঠিন পথটি বেছে নিতে হয়েছিল আর হতে হয়েছিল খেলাটির এক মনোযোগী ছাত্র।”

সৌভাগ্যক্রমে ডমিঙ্গো সে লক্ষ্য অনুসরণে নিজেকে চেনান একেবারে শুরুতেই, আর ২০০০ সালের গোড়ার দিকে অংশ নেন মনোযোগী ছাত্র হবার জন্য আদর্শ এক আয়োজনের। তাঁকে কোচ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রোটিয়া বোর্ডের নেওয়া উদ্যোগে রাসেল শিক্ষানবিশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ড্রেসিংরুমে সময় কাটান বব উলমার ও গ্রাহাম ফোর্ডের সাথে। সেখানে শক্ত বন্ধন গড়েন মাত্র সাতটি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলে প্রায় একইরকম আড়ম্বরহীন ক্যারিয়ার কাটানো ফোর্ড ও কারস্টেনের সঙ্গে।

কোচ হিসেবে গ্রাহাম ফোর্ডকে নিজের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা মনে করতেন রাসেল। দারুণ জয়ের উদযাপনে বাঁধ দেওয়া কিংবা অপ্রত্যাশিত হারে বিচলিত না হবার দীক্ষা যে তাঁর থেকেই পেয়েছিলেন। যুবদল নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাঁকে সবসময়ই আলাদা রেখেছে অন্য যে কোনো কোচ থেকে। এমনকি ইয়োহান বোথা, রবিন পিটারসনদের মতো তারকাদের নিজ হাতে গড়েছিলেন রাসেল। নিজের অধীনে শুধু পাননি গ্রায়েম স্মিথ আর এবি ডি ভিলিয়ার্সদের।

রাসেল ডমিঙ্গো দক্ষিণ আফ্রিকার খোলনালচে পাল্টে দেবার মিশনে প্রয়োগ করেছিলেন নিজের জীবন থেকে নেওয়া সব শিক্ষা। ব্যাট-বলের লড়াইয়ে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছাড়াও বিনয় ও পরিণতিবোধের সাহায্যে যে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব, সেটি প্রমাণেই নিরলস কাজ করে গেছেন তিনি। সেই ধারায় এবার নিয়োগ পেলেন টাইগারদের হেড কোচ হিসেবে। কোচিং ইউনিটে যেখানে সাথে পাচ্ছেন নিল ম্যাকেঞ্জি, শার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ট, রায়ান কুকের মতো অভিজ্ঞ স্বদেশীদের।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/24/1566632201027.jpg
আপাতত দুই বছরের চুক্তিতে বাংলাদেশের কোচ হয়েছেন ডমিঙ্গো


দায়িত্ব পেলে পরের দিনই নেমে পড়বেন কাজে—রাসেলের এমন প্রতিশ্রুতিতে প্যাশনের আঁচ পেয়েছে বিসিবি। বোর্ডকে তেমন কোনো শর্তের বেড়াজালেও ফেলেননি বলেই তালিকার বাকি দুজনকে হটিয়ে রোডস-উত্তর বাংলাদেশ দলের গুরু নিযুক্ত হলেন কদিন বাদেই ৪৫-এ পা রাখতে যাওয়া সদা হাস্যোজ্জ্বল এই অভিজ্ঞ কোচ। শুধু জাতীয় দলই নয়, রাসেলের কর্মপরিকল্পনায় থাকবে ‘এ’ দল, হাইপারফরমেন্স এবং অনূর্ধ্ব-১৯ দলও। আপাতত আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করলেও ডমিঙ্গো প্রথম পরীক্ষায় বসছেন আসছে সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজটি দিয়ে।

“উপমহাদেশের ক্রিকেটকে বদলে দিতে নয়, বরং এই ধারার সাথে মানিয়ে বদলে যেতে এসেছি”—রাসেল ডমিঙ্গোর এমন আশাবাদে নতুন যুগে পা রাখতে যাচ্ছে সাকিব-তামিম-মুশফিকরা। জীবনে বহু চরাই-উৎরাই পার করে আসা এই দক্ষিণ আফ্রিকানের নতুন মিশনে রইল শুভকামনা।

   

উদাল: রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা



মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উদাল: রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা

উদাল: রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা

  • Font increase
  • Font Decrease

উদাল, সোনালি হলুদ সৌন্দর্যে মুগ্ধতা ছড়ানো মাঝারি সাইজের বৃক্ষ। পত্রঝরা উদাম শরীরে পুরো গাছজুড়ে শুধুই সোনালি হলদে রঙের ফুল। বসন্তে হলদে পাপড়ি ঝরে রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা। প্রকৃতির এক অপর সৌন্দর্য উদাল বৃক্ষ ও তার ফুল।

উদাল আমাদের দেশীয় উদ্ভিদ। এদের প্রিয় আবাস পাহাড়ি এলাকা হলেও আগে সারাদেশেই কমবেশি দেখা যেত। নির্বিচারে গাছ উজাড় হতে থাকায় অন্য গাছের সাথে এ দেশী গাছটিও বিপন্ন। ঢাকার মিরপুর জাতীয় উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন, বাংলা একাডেমি, ঢাকার রমনা পার্ক, ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র তীরের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পার্কসহ সমতলের অনেক স্থানে উদাল দেখা যায়। চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিশেষ করে বান্দরবান ও কক্সবাজারের মিশ্র চিরসবুজ বন এবং গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের পাতাঝরা শালবনের স্যাঁতসেঁতে জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে উদাল গাছ দেখা যায়।


উদালের বৈজ্ঞানিক নাম স্টারকুলিয়া ভেলোসা। ইংরেজিতে এটিতে হেয়ারি স্টারকুলিয়া বা এলিফ্যান্ট রোপ ট্রি নামে ডাকা হয়। এ গাছের বাকল থেকে এক প্রকার উন্নতমানের তন্তু পাওয়া যায়। এ তন্তু দিয়ে হাতি বেঁধে রাখার দড়ি বানানো হতো বলেও ইংরেজিতে এমন নামকরণ। আমাদের দেশে স্থানীয়ভাবে এটি চান্দুল নামেও পরিচিত। এই উদ্ভিদ মগ ও মারমাদের কাছে ফিউ বান, গারোদের কাছে উমাক এবং ম্রোদের কাছে নাম সিং নামে পরিচিত।

উদাল ২০ মিটার বা ততোধিক লম্বা হয়। এদের বাকল সাদাটে রঙের। এদের পাতার বোঁটা লম্বা, ফলক বড় ও পাতা খাঁজকাটা, পাতার প্রশাখার আগায় পাতা ঘনবদ্ধ। ফুলগুলি সোনালি হলুদ রঙের, ফুলের ভেতর বেগুনি। এর ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ থাকলেও পাকলে গাঢ় লাল রঙের হয়। বীজের রং কালো। বীজ স্বাদ অনেকটা বাদামের মতো হওয়ায় কাঠবিড়ালীর প্রিয় খাবার। তবে মানুষও এর ফল খেয়ে থাকে। বাকল থেকে আঁশ পাওয়া যায়। এ আঁশ দিয়ে দড়ি তৈরি হয়। কাঠ বাদামি রঙের, সাধারণত নরম ও হালকা হয়। এই গাছের কাঠ দিয়ে চায়ের বাক্স বানানো হয়।

উদাল ফল খাচ্ছে ইরাবতী কাঠবিড়ালি। ছবি: তবিবুর রহমান

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বার্তা২৪.কম-কে জানান, এ গাছ দেশের বন-জঙ্গলে প্রচুর হতো। এ গাছের পাতার বোঁটা দিয়ে শরবত বানানো হয়। উঁচু গাছ থেকে পাতার বোঁটা সংগ্রহ করা কষ্টসাধ্য হওয়ায় বড় বড় গাছ কেটে ফেলা হয়। এরপর এর গোড়া থেকে অনেক নতুন নতুন ডালপালা গজালে সেখান থেকে পাতার বোঁটা সংগ্রহ করা হয়। এছাড়াও উদাল গাছ থেকে স্বচ্ছ আঠা পাওয়া যায়। যা দিয়ে কনফেকশনারিসহ নানাবিধ কাজে ব্যবহার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এ উদ্ভিদ বর্তমানে বিপন্ন প্রজাতির। গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ তিনশ উদাল গাছের চারা বিভিন্ন স্কুল কলেজে বিতরণ করেছে। এবারও প্রায় পাঁচশ চারা বিতরণ করা হবে।


ড. জসীম বলেন, উদলের বাকলের শরবত খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। ফুলের বৃন্ত ছেঁচে জলের সঙ্গে চিনি দিয়ে শরবত করে খেলে প্রস্রাবের সমস্যা ও বাতের ব্যথা দূর হয়। তবে খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

রাঙ্গামাটি বনবিভাগের এসিএফ তবিবুর রহমান জানান, উদালের বীজের স্বাদ অনেকটা বাদামের মতো হওয়ায় কাঠবিড়ালির খুব প্রিয়। তবে এ বীজ মানুষও খেয়ে থাকে।

তিনি আরও জানান, ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের তফসিল ৪ অনুযায়ী উদালকে বাংলাদেশের ‘মহাবিপন্ন’ প্রজাতির তালিকাভুক্ত উদ্ভিদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

;

বরিশালের শত বছরের ঐতিহ্যের স্মারক শীতলপাটি



এস এল টি তুহিন, করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের পাটিকররা তাদের নিপুণ হাতের তৈরি শীতলপাটির জন্য বিখ্যাত।

উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের কাজলাকাঠী গ্রাম, রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া, রাজাপুর গ্রাম ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো তৈরি হয়, ঐতিহ্যের অনন্য স্মারক দেশ বিখ্যাত শীতলপাটি।

এই উপজেলায় এখন এক হাজারের বেশি পরিবার শীতলপাটি তৈরি করে সংসার চালাচ্ছে।

উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে প্রবেশ করে যতদূর দু’চোখ যায়, দেখা মেলে পাইত্রাগাছের বাগান। গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে দেখা মেলে বড় বড় পাইত্রা বা মোর্তাগাছের ঝোপ। বাড়ির আঙিনা, পরিত্যক্ত ফসলি জমি, পুকুর পাড়, সব জায়গাতেই বর্ষজীবী উদ্ভিদ তরতাজা পাইত্রাগাছ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের আভিজাত্যের স্মারক শীতলপাটি তৈরি হয়, এই পাইত্রাগাছের বেতি দিয়ে।

জানা গেছে, এসব গ্রামে পাইত্রাগাছের আবাদ হয়ে আসছে শত শত বছর ধরে। পাটিকরদের পূর্বপুরুষেরা যে পেশায় নিয়োজিত ছিলেন, আজও সেই পেশা ধরে রেখেছেন বাকেরগঞ্জের পাটিকররা।

এখনো এই সব গ্রামে ‘পাটিকর’ পেশায় টিকে আছে প্রায় এক হাজার পরিবার। আর তাদের সবার পেশাই শীতলপাটি বুনন। ফলে, উপজেলার এসব গ্রাম এখন ‘পাটিকর গ্রাম’ নামে পরিচিত।

সরেজমিন দেখা যায়, কাঁঠালিয়া, রাজাপুর ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো গ্রামীণ সড়ক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই ছোট ছোট টিনশেড ও আধাপাকা ঘরগুলোর বারান্দায় নারী-পুরুষ ও শিশুরা মিলে নানান রঙের শীতলপাটি বুনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কাঁঠালিয়া গ্রামের সবিতা রানীর পরিবারের সবাই মিলে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটান শীতলপাটি তৈরি করতে। একটু সামনে এগুতেই কথা হয়, প্রিয়লাল পাটিকরের সঙ্গে।

তিনি বলেন, পরিবারের পাঁচ সদস্য মিলে একটি পাটি তৈরি করতে কয়েকদিন চলে যায়। প্রতিজনের দৈনিক মজুরি ১০০ টাকা করেও আসে না। তারপরেও কিছু করার নেই। বাপ-দাদার পেশা হিসেবে এখনো শীতল পাটি বুনে যাচ্ছি। একদিকে, এখন গরম বেড়েছে, অপরদিকে, বৈশাখ মাস চলছে। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বৈশাখী মেলায় শীতলপাটির চাহিদা থাকে। তাই, পাইকাররা এসে আমাদের এলাকা থেকে পাটি কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করেন।

স্থানীয় পাটিকররা জানান, এখানকার তৈরি শীতলপাটি আন্তর্জাতিক মানের। কিন্তু প্লাস্টিক পাটির কারণে বাজারে শীতলপাটির চাহিদা কমে গেছে। সে কারণে সরকারিভাবে বিদেশে শীতলপাটি রফতানির কোনো ব্যবস্থা করা হলে পাটিকরদের জীবন-জীবিকা ভালো চলতো।

পাশাপাশি শীতলপাটি টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তারা। নয়ত এই পেশায় টিকে থাকা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসন, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাসহ জাইকা সংস্থার মাধ্যমে উপজেলার পাটিকরদের মধ্যে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ফলে, নতুন নতুন ডিজাইনের শীতলপাটি তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি আমরা তাদের সরকারি বিভিন্ন রকম সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

;

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;