যদি বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট পরিষেবা



তানিম কায়সার, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
একদিন যদি বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট?

একদিন যদি বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট?

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘুম থেকে উঠে আমাদের অধিকাংশের প্রথম কাজ ঘুম ঘুম চোখে মোবাইলটা হাতে নেওয়া। কোনো গুরুত্বপূর্ণ কল বা মেসেজ এলো কিনা চেক করা। আবার অনেকেই ঘুম ঘুম ভাব দূর করতে একটু ঢুঁ মারি ফেসবুকে। কী হবে যদি এমনই এক সকালে একদিন দেখি ইন্টারনেট আর কাজ করছে না! গুগল ম্যাপ ছাড়া কোনো অচেনা শহরে পথ খুঁজে নিতে হলে কী বেকায়দায়ই না পড়ে যাব তখন! যখন পছন্দের ওয়েবসাইটটি লোড নেবে না, ফেসবুকে বন্ধুবান্ধবদের মেসেজ করলেও তা আর ডেলিভার হবে না, তখন স্বাভাবিকভাবেই অধিকাংশ ইন্টারনেট অ্যাডিক্টরা ফ্রাস্ট্রেটেড হয়ে পড়ব।

ইন্টারনেট এখন আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের অংশ। একটা দিনও আমরা ইন্টারনেট ছাড়া কল্পনা করতে পারি না। বাসায় থাকলে যেভাবে একটু ক্ষিদা লাগলেই ফ্রিজ খুলে দেখি বারবার, তেমনিভাবে বারবার ইন্টারনেট চালু করে দেখতে হয় নতুন কিছু এলো বা হলো কিনা। এটুকু না হলে অস্থিরতার সীমা পরিসীমা নাই। ভেতরে অশান্তি কাজ করতে শুরু করে। কী হবে এই আমাদের, যদি হুট করে একদিন বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট?

প্রশ্নটা উঁকি মেরে গিয়েছিল স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষক জ্যাক হ্যানককের মাথায়। ২০০৮ সালে তিনি তার ছাত্রদের এসাইনমেন্টের অংশ হিসেবে টানা ৪৮ ঘণ্টা ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করে রাখতেন। ছাত্ররা বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। ইন্টারনেট ছাড়া তারা নিজেদেরকে নিপাট অসহায়রূপে আবিষ্কার করেছে। কারো সাথে যোগাযোগ করে ভালোমন্দ শেয়ার করতে না পেরে নিজেদেরকে কারাগারের বন্দী বলে মনে হয়েছে তাদের।

ইন্টারনেটের জনক ভিনটন জি কার্ফ


পৃথিবীতে ইন্টারনেট যাত্রা শুরু করে ১৯৬৯ সালে ভিনটন জি কার্ফ-এর হাত ধরে। এর প্রসার ঘটে ১৯৮০’র দশকের শেষভাগে এবং ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে। এই সময়ে বাণিজ্যিক ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীরা (আইএসপির) আবির্ভাব হতে থাকে। মূলত ১৯৯৫ সালে ইন্টারনেটকে বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত করা হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় ইন্টারনেট ভিত্তিক নতুন এই জয়যাত্রা। ফলে যেখানে ১৯৯৫ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করত। গত ২২ বছরের মধ্যে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৩ বিলিয়নে! যা পুরো পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি। আর প্রতি সেকেন্ডে এই পরিসংখ্যানে নতুন যুক্ত হচ্ছেন আরো দশজন করে। এটা শুধু প্রত্যক্ষভাবে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের সংখ্যা। এর বাইরেও অনেকে পরোক্ষ উপায়ে ইন্টারনেট ব্যবহার বা এর সুফল ভোগ করে থাকে। এমন সফলতার কথা হয়তো ইন্টারনেটের জনক ভিন জি কার্ফও ভাবতে পারেননি।

ইন্টারনেট আজ আমাদের জীবনে যেভাবে জড়িয়ে আছে, একইভাবে একদিন আবার নাইও হয়ে যেতে পারে। কী, বিশ্বাস হচ্ছে না? মনে করে দেখুন এই কিছুদিন আগেও দেশের রাজনৈতিক অবস্থা অস্থিতিশীল ছিল, তখনও কিছুদিনের জন্য আমরা ইন্টারনেট সেবার বাইরে ছিলাম। কোনো দেশ চাইলে কিল সুইচের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবস্থা বন্ধ করে দিতে পারে। ২০১১ সালের আরব বসন্তের সময় মিশর যেমনটা করেছিল। তুরস্ক এবং ইরানও হেঁটেছিল একই পথে। পাকিস্তানেও একটি মামলার রায়ের পর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ইন্টারনেট সেবা।

এবার আসুন জেনে নিই ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের ওপর এর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।

ইন্টারনেট বন্ধের পর প্রথম ধাক্কাটি হবে স্যোশাল মিডিয়ার বিলুপ্তি ◢


ইন্টারনেট বন্ধের পর সর্বপ্রথম যে ধাক্কাটি আমাদের সামলাতে হবে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিলুপ্তি। জীবনের অংশ হয়ে যাওয়া একটি অভ্যাস হুট করে হারিয়ে গেলে আমাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। ইন্টারনেট মানুষের যোগাযোগ-দূরত্বকে এত কমিয়ে দিয়েছে যে এটি বন্ধ হয়ে গেলে মানুষ দৈনন্দিন জীবনে ভোগান্তির শিকার হবে। এখন চাইলেই একটা পোস্ট দিয়ে হাজার মানুষকে জানিয়ে দেওয়া যায় আপনি একটু পরে কী করতে যাচ্ছেন। তখন আর এমনটা সম্ভব হবে না। মোবাইল হাতে ভিডিও কলের মাধ্যমে দেখে নিতে পারছেন প্রিয়জন এবং প্রয়োজনের অনেক কিছু। কিন্তু ইন্টারনেট না থাকলে প্রতিটি জায়গায় যেতে হবে সশরীরে। গচ্চা যাবে সময়, অপচয় হবে অর্থের।

ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেলে যখন সবাই সবাইকে ফোন করতে শুরু করবে, তখন টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেমের ওপরে অবিশ্বাস্যরকম চাপ পড়বে। এর ফলে ব্যাড কানেকশন, দুর্বল নেটওয়ার্ক, কল ড্রপের ঘটনাগুলো আরো স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াবে। মোবাইল অপারেটররা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের নেটওয়ার্ক এতটা পাওয়ারফুল বা আপগ্রেড করতে পারবে না। এদিকে এত বেশি নেটওয়ার্ক প্রেশার সহ্য করতে না পেরে মোবাইল ফোন টাওয়ারগুলো টেম্পোরারিলি হ্যাং হয়ে যেতে পারে। মোবাইল অপারেটররা যতদিন এই এক্সট্রা প্রেশার সহ্য করার জন্য নেটওয়ার্ক আপগ্রেড করছে, ততদিন পর্যন্ত এই সমস্যা চলতেই থাকবে।

টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেমের ওপরে অবিশ্বাস্যরকম চাপ পড়বে


এর পরের ধাক্কাটা আসবে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। যেহেতু বাসা থেকে বের হলেই প্রয়োজন পড়বে টাকার। ইতোমধ্যেই পুরো ব্যাংকিং ব্যবস্থা ইন্টারনেট নির্ভর। ইন্টারনেট ছাড়া আপনার ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড পরিণত হয়েছে অকেজো প্লাস্টিকের টুকরায়। কার্যত অচল হয়ে যাবে অর্থনৈতিক সিস্টেম। বন্ধ হয়ে যাবে সবধরনের ডিজিটাল পেমেন্ট ও মানি ট্রান্সফার সার্ভিস।

অবশ্য, ২০০৮ সালে পরিচালিত একটি গবেষণা থেকে জানা যায় কখনো যদি ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায় তাহলে প্রাথমিকভাবে ব্যাংকিংখাতে যে সমস্যা তৈরি হবে, পরবর্তী চারদিনেই তার থেকে উত্তরণ সম্ভব। গবেষণাটি করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড স্টেটস সাইবার কনসিকুয়েন্স ইউনিট।

ইন্টারনেটের অনুপস্থিতিতে সবচেয়ে বিরূপ প্রভাব পড়বে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর। অভ্যস্ত উপায়ে প্রিয়জনদের খোঁজ খবর নিতে না পেরে, হাল হকিকত জানতে না পেরে নতুন ধরনের ডিপ্রেশনে পড়ে যাবে মানুষ। এর নেতিবাদী ফল দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। তৈরি করতে পারে অচলাবস্থার, নতুন কোনো কর্মোদ্দীপনায় মনোনিবেশের ক্ষেত্রে বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে ইন্টারনেটে অভ্যস্ত পৃথিবীর অর্ধেকেরও বেশিসংখ্যক মানুষ। অজানা এই মানসিক বিপর্যয় কিভাবে সামাল দেবে মানুষ? পুরোপুরি কল্পনা করাও সম্ভব নয় যেন।

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;