ঋত্বিক ঘটক: চলচ্চিত্রের শিল্পিত কারিগর



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
ঋত্বিক ঘটক, ছবি: সংগৃহীত

ঋত্বিক ঘটক, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘কোমল গান্ধার’, ‘সুবর্ণরেখা’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ইত্যাদি কালজয়ী চলচ্চিত্রের নাম উচ্চারিত হলেই ভেসে উঠে একজন বিশিষ্ট নির্মাতার মুখচ্ছবি। বাংলা চলচ্চিত্রে এমনই অনেক জীবনছোঁয়া-ক্লাসিক সিনেমার নির্মাতা ঋত্বিক ঘটক। সিনেমার পর্দায় মানবিকতার সঙ্কট, মানবযন্ত্রণা ও জনবেদনার সুনিপূণ ভাষ্যকার তিনি। কমার্শিয়াল ফ্যান্টাসি ফিল্মের জগত ভেঙে মানুষের জীবন ঘনিষ্ঠ আর্টের জগত নির্মাণ করতে চেয়েছেন ঋত্বিক। যত না তিনি একজন সাধারণ চলচ্চিত্রকার, তারচেয়ে বেশি চলচ্চিত্রের শিল্পিত কারিগর।

খরা, মারী, মন্বন্তর, দুর্ভিক্ষ, দেশভাগ আর শরণার্থী জীবনের বিদীর্ণ যাতনার কথা তাঁর মতো আর কেউ চলচ্চিত্রের ভাষায় বলতে পারেন নি। উপমহাদেশের ধ্রুপদী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় ও মৃণাল সেনের পাশাপাশি তাঁর নামও সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হয় সিনেমার ইতিহাসে।

বাংলাদেশের ঢাকা শহরের পুরনো অংশের জিন্দাবাজারে ১৯২৫ সালে ৪ঠা নভেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন ঋত্বিক ঘটক। পিতা সুরেশ ঘটক ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। মা ইন্দুবালা দেবী গৃহিনী। তিনি বাবামায়ের ১১তম ও কনিষ্ঠতম সন্তান। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা ও রাজশাহীতে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে এমএ কোর্স শেষ করেও পরীক্ষা দেন নি তিনি।

ঋত্বিক ঘটক ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় হাজার হাজার শরণার্থীদের মিছিলে মিশে নিজের পরিবারে সঙ্গে চলে যান কলকাতায়। শরণার্থীর অস্তিত্বের সঙ্কট, দেশত্যাগের বেদনা, উদ্বাস্তুর আর্থ-সামাজিক হাহাকার জীবনভর তাঁকে তাড়িত করে। তাঁর জীবন, শিল্পচর্চা ও চলচ্চিত্রে বার বার ফিরে ফিরে আসে এইসব মানবিক কষ্ট ও অস্তিত্বের সঙ্কটের জ্বলন্ত প্রসঙ্গ। ফলে তিনি কলকাতার জীবনে বামপন্থী সংগঠন ‘ভারতীয় গণনাট্য সংঘ’ বা ‘আইপিটিএ’-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে নাটকরচনা, অভিনয় ও নাট্যপরিচালনায় ব্যস্ত থাকেন ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত।

তারপর ‘ছিন্নমূল’ ছবিতে অভিনয় ও সহকারী পরিচালক হিসাবে শুরু হয় তার চলচ্চিত্র জীবন। তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি ‘নাগরিক’। ষাটের দশকে মুক্তি পায় তাঁর ত্রয়ী বা ট্রিলজি নামে পরিচিত তিনটি ছবি। এগুলো হলো: মেঘে ঢাকা তারা, কোমল গান্ধার ও সুবর্ণরেখা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহর ও শহরতলীর ছিন্নমূল, দেশত্যাগী, উদ্বাস্তু জীবনের চরম বেদনার শৈল্পিক প্রকাশ ঘটে ঋত্বিকের এইসব দাগকাটা চলচ্চিত্রে।। ছবিগুলো বাণিজ্যিকভাবে চরম অসফল হলেও তিনি সৃষ্টি করেন শৈল্পিক নির্মাণশৈলীর নিজস্ব চলচ্চিত্র ঘরানা।

মধ্য ষাটের দশকে ঋত্বিক ঘটক কলকাতা থেকে চলে যান মহারাষ্ট্রের পুনা শহরে। সেখানে ফিল্ম ইন্সটিউটে ভিজিটিং প্রফেসর হিসাবে চলচ্চিত্র বিষয়ে অধ্যাপনা করেন তিনি। নির্মাণ করেন আদিবাসী জীবন, বিহার, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, লেনিনকে নিয়ে শর্টফিল্ম ও তথ্যচিত্র।

ভালো ছবি নির্মাণের প্রত্যাশা নিয়ে ঋত্বিক ঘটক আবার মূলধারার চলচ্চিত্র জগতে ফিরে আসেন সত্তর দশকে। একজন বাংলাদেশী প্রযোজকের হাত ধরে তিনি আবার ক্যামেরা হাতে তুলে নেন। নির্মাণ করেন অদ্বৈতমল্ল বর্মণ রচিত মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের জীবন সংগ্রামের অনবদ্য কাহিনী অবলম্বণে কালজয়ী চলচ্চিত্র ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। তাঁর নির্মিত শেষ ছবি ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’।

অনিয়ম, উদ্বেগ, রোগ তাকে ক্রমেই জর্জরিত করতে থাকে। ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৬ সালে ৫১ বছর বয়সে কলকাতায় মারা যান তিনি। স্বল্প পরিসরের জীবনে সুতীব্র ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক উত্থান-পতনের মধ্যেও ঋত্বিক ঘটক উপমহাদেশের চলচ্চিত্রে সংযোজন করেছেন ভিন্নতর স্বতন্ত্র মাত্রা। শিল্পসম্মত ভালো ছবি নির্মাণের আজীবন সংগ্রামী তিনি। সমাজের নিগৃহীত, প্রান্তিক, ছিন্নমূল ও অন্তজ্য মানুষ এবং তাদের অন্তর্গত বেদনার অগ্রণী চলচ্চিত্রকার তিনি।

আর্থিক ও বাণিজ্যিকভাবে অসফল হলেও চলচ্চিত্র নির্মাণশৈলীর অসামান্য শৈল্পিক কৃত্বিত্বের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন ঋত্মিক ঘটক। উপমহাদেশের নেতৃস্থানীয় চলচ্চিত্রকার হিসাবে ঋত্বিক ঘটক লাভ করেন ভারতের পদ্মশ্রী পুরস্কার। বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারেও তিনি ভূষিত হন। তাঁর ভাই মণীশ ঘটক একজন নামকরা লেখক এবং ভ্রাতৃকন্যা মহাশ্বেতা দেবী বরেণ্য ঔপন্যাসিক ও সমাজসেবী। স্ত্রী সুরমা ঘটকের সঙ্গে দাম্পত্য জীবনে তার দুই কন্যা ও এক পুত্রের জন্ম হয়।

৯৩তম জন্মদিনে ক্ষণজন্মা বিরল প্রতিভাবান চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের প্রতি বার্তা২৪.কমের বিনম্র শ্রদ্ধা। তিনি বেঁচে থাকবেন তাঁর কালজয়ী চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। আশাহত ও বিপণ্ন মানুষের কথা রূপালি পর্দায় মানবিক আর্তিতে তুলে ধরার প্রেরণা জাগিয়ে কাল-কালান্তরে বেঁচে থাকবেন তিনি ।

   

বুবলীকে সঙ্গে নিয়েই বিরতি ভাঙছেন সিয়াম



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
‘জংলি’তে সিয়ামের নায়িকা বুবলী

‘জংলি’তে সিয়ামের নায়িকা বুবলী

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন বছর পর সিনেমা থেকে দূরে ছিলেন একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ। গত রবিবার থেকে ঢাকার মোহাম্মদপুরে শুরু হয়েছে ‘জংলি’ সিনেমার শুটিংয়ের মাধ্যমে বড়পর্দার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন এই অভিনেতা।

নিজের জন্মদিনেই ‘জংলি’র ফার্স্ট লুক উন্মোচন করে সিনেমাটির ঘোষণা দেন সিয়াম। সে সময় সিনেমাটি নিয়ে খানিক ধারণা পাওয়া গেলেও এতে নায়িকা কে থাকছেন তা জানা যায়নি। তবে এবার জানা গেল, জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শবনম বুবলীর সঙ্গেই ফিরতে যাচ্ছেন সিয়াম। ‘জংলি’তে সিয়ামের বিপরীতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন বুবলী। এর আগে এই জুটি প্রথমবারের মতো অভিনয় করেন রায়হান রাফি পরিচালিত চরিকির অরিজিনাল ফিল্ম ‘টান’-এ।

সিয়াম আহমেদ ও শবনম বুবলী

আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবরের একটি শুটিং হাউজে সিয়ামের সঙ্গে দৃশ্যধারণে অংশ নেন নায়িকা। এমনটাই জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে। জানা গেছে, আগামী শুক্রবার পর্যন্ত ঢাকাতে শুটিং চলবে। এরপর ২৭ এপ্রিল থেকে মানিকগঞ্জের লোকেশনে টানা শুটিং হবে।

সিনেমাটি পরিচালনা করছেন এম রাহিম, যিনি এর আগে ‘শান’ নির্মাণ করেছিলেন। সেই সিনেমার পর আবারও একসঙ্গে আসছেন এই নির্মাতা-নায়ক জুটি। এই নির্মাতা বলেন, ‘‘শান’ এর পর অনেক কাজের প্রস্তাব এলেও আমি করিনি। শানের চেয়েও ভালো কিছু নিয়ে আসতে চেয়েছি, যার কারণে এতটা সময় লেগেছে। পরিপূর্ণ বিনোদিত হবার সব এলিমেন্টস এই সিনেমাতে আছে। এখন শুধু এতটুকু বলবো, দর্শক দুর্দান্ত কিছু পাবে।’

শবনম বুবলী ও সিয়াম আহমেদ

আজাদ খানের গল্পে ‘জংলি’র চিত্রনাট্য করেছেন যৌথভাবে কলকাতার সুকৃতি সাহা ও মেহেদী হাসান। আসছে ঈদুল আজহায় সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে।
এর আগে সিয়াম আহমেদ জানিয়েছিলেন, শুটিং শুরুর প্রায় ছয় মাস আগে থেকে কাজটির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম এবং সেটা শারীরিক ও মানসিক- দুইভাবেই। দর্শকদের নতুন কিছু দেওয়ার জন্যই সময় নিচ্ছিলাম। নিজেকে প্রস্তুত করে তবেই কাজে ফিরেছি।

;

সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এফডিসিতে মানববন্ধন



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এফডিসিতে মানববন্ধন

সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এফডিসিতে মানববন্ধন

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নব-নির্বাচিত কমিটির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে গতকাল হুট করে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হন। এরমধ্যে চারজন গুরুতর আহত হয়ে ৪ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদ এবং সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচারের দাবিতে বুধবার দুপুর থেকে এফডিসির সামনে মানববন্ধন করেছে বিনোদন সাংবাদিকসহ নানা বিটে কর্মরত সাংবাদিকরা। এটির আয়োজক ছিল টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান এসোসিয়েশন। এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ডিইউজের নব-নির্বাচিত অন্যতম সভাপতি সাজ্জাদ আলম তপু, সোহেল হায়দার, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রব, বাচসাসের সভাপতি রিমন মাহফুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তরা অবিলম্বে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিনেতা জয় চৌধুরী, শিবা শানু ও আলেকজান্ডার বো-কে সমিতির সদস্যপদ বাতিলসহ অন্যান্য শাস্তি নেওয়ার দাবি করেন।

 (বাঁমে) শিবা শানু, জয় চৌধুরী ও আলেকজান্ডার বো; আহত সাংবাদিকরা (ডানে)

বক্তরা বলেন, সাংবাদিকরা নানাক্ষেত্রে আজ নির্যাতিত। তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করে তাদেরকে আমরা মননশীল করি। কিন্তু তারা যখন মাস্তানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, তখন তারা সমাজে কী বার্তা দেন?

এদিকে ঘটনার তদন্তের জন্য ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পাঁচজন করে রাখা হয়েছে। আর উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন প্রযোজক আরশাদ আদনান।

দশ জনের তদন্ত কমিটিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে রয়েছেন লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকির, বুলবুল আহমেদ জয়, আবুল কালাম এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানা শাহ, রুবেল, রত্না।

;

বাঁধনকে উদাহরণ বিবেচনায় অভিভাবকত্ব নিয়ে হাইকোর্টের রুল



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
এক ফ্রেমে কন্যা সায়রাকে নিয়ে বাঁধন

এক ফ্রেমে কন্যা সায়রাকে নিয়ে বাঁধন

  • Font increase
  • Font Decrease

আবারও আদালতে সম্মানীত হলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। তাকে উদাহরণ বিবেচনায় অভিভাবকত্ব নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছে। কারণ বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র মা, যিনি সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়েছেন। তার আগে এবং পরে এখনো কোনো নারী সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পাননি।

গত ২২ এপ্রিল নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ধারণে নীতিমালা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে এই কমিটিকে নীতিমালা দাখিল করতে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুলসহ এই আদেশ দেন।

আজমেরী হক বাঁধন

অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০-এর ১৯(খ) ধারা অনুসারে কোনো নাবালক সন্তানের বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় অন্য কারো পক্ষে সেই নাবালকের অভিভাবক হওয়ার সুযোগ নেই। আইনটির এই ধারা সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কেন তা সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, এক রুলে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

সেদিনের আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী সারা হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা অনেক বড় একটা অর্জন। বাংলাদেশে যদিও নারীরা সন্তানদের হেফাজত (কাস্টডি) পাচ্ছেন, তবে একটি ঘটনা ছাড়া আর কাউকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন তার সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন। এর বাইরে বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো উদাহরণ নেই যে নারীরা সন্তানের অভিভাবকত্ব পাচ্ছেন।’

একসঙ্গে মডেলিং করেছেন বাঁধন ও তার কন্যা সায়রা

উচ্চ আদালতের এই রুল জারির পর ভীষণ উচ্ছ্বসিত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ অভিনেত্রী। আজ থেকে ছয় বছর আগে (২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল) ঢাকার দ্বাদশ সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান একমাত্র কন্যাসন্তান মিশেল আমানি সায়রার অভিভাবকত্ব দিয়েছিলেন বাঁধনকে। তিনি বলেন, ‘আইনটা পরিবর্তনের একটা প্রক্রিয়া শুরু হলো, এটা সবচেয়ে আনন্দের। যারা আপিল করেছেন তাদের সাধুবাদ জানাই। আমার অর্জনটা শুধু আমারই থাকুক তা চাই না, আমি চাই বাংলাদেশের সব মেয়ের অধিকার থাকুক তার সন্তানের ওপর।’

কন্যার সেলফিতে বাঁধন

বাংলাদেশের ইতিহাসে বাঁধনই প্রথম এবং একমাত্র মাছয় বছর আগে যখন কন্যা সায়রার অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন তখনো এই রায়ের মাহাত্ম্য পুরোপুরি বুঝতে পারেননি বাঁধন। সময়ের সঙ্গে এই রায়ের গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন তিনি। বলেন, ‘আমার পক্ষে যখন রায় এলো, তখন এর গুরুত্ব এতটা বুঝতে পারিনি। বাচ্চাটাকে কাছে রাখতে চেয়েছি, যেহেতু ওর সম্পূর্ণ ভরণ-পোষণ আমিই করতাম, আমি কেন ওর অভিভাবক হতে পারব না! বাচ্চার বাবা কোনো দায়িত্বই কখনো পালন করেননি। আদালতে সেটা প্রমাণও করতে পারেননি, তার জন্য আমাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হয়েছিল।’

আজমেরী হক বাঁধন

অভিভাবকত্বের অধিকার আদায়ে দীর্ঘ লড়াই করেছিলেন বাঁধন। ফলে এই আইন নিয়ে তার জানাশোনা বেশ। তিনি বলেন, ‘আইনজীবী সারা হোসেন কিন্তু উল্লেখ করেছেন, সাধারণত মাকে কাস্টডি দেওয়া হয়। তবে বাবা বেঁচে থাকতে মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হয় না। যদি বাবা না পান সে ক্ষেত্রে দাদা-চাচা, এমনকি নানা-মামারা অভিভাবকত্ব পান। অনেক পরে আসে মায়ের নাম। যে কারণে আমারটা ব্যতিক্রমী একটা রায় ছিল। আমাদের প্রচলিত আইনে একটা লুপ হোল কিন্তু আছে, মাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া যাবে, তবে যে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে সেটা খুবই কঠিন। কাস্টডি আর অভিভাবকত্ব এক নয়। আমাদের আইনে বাবা ন্যাচারাল গার্ডিয়ান, অভিভাবকত্বের প্রশ্নে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত মায়ের অস্তিত্ব নেই আসলে। এসব জায়গায় অনেক সংশোধনী আনা প্রয়োজন।’

;

মেহজাবীন-সিয়ামের নাটকীয় স্ট্যাটাসের অবসান!



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মেহজাবীন চৌধুরী ও সিয়াম আহমেদ

মেহজাবীন চৌধুরী ও সিয়াম আহমেদ

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের অন্যতম জনপ্রিয় দুই তারকা মেহজাবীন চৌধুরী ও অভিনেতা সিয়াম আহমেদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, এমনটাই জানেন শোবিজ পাড়ার সকলে। কিন্তু গত ২২ এপ্রিল হঠাৎ একে-অপরের বিপক্ষে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে পোস্ট দেন। 

প্রথমে মেহজাবীন নিজের ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘সিয়াম আহমেদ যেখানে থাকবে, প্লিজ আমাকে সেখানে ডাকবেন না।’

‘গেল ঈদের ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে একসঙ্গে নেচেছেন মেহজাবীন ও সিয়াম

কিছুক্ষণ পর সিয়াম তার সোশ্যাল হ্যান্ডেলে মেহজাবীনের পোস্টটি শেয়ার দিয়ে লেখেন, ‘মেহজাবীন-ও যেখানে থাকবে, আমার সেখানে যাওয়ার কোন ইচ্ছা নাই।’

দুই তারকার এমন ‘বিপরীতমুখী’ পোস্ট দেখে ভক্ত-অনুসারীদের অনেকেই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। তবে অনেকে আবার অনুমান করছিলেন, এটা কোনও কাজের প্রচারণা। অবশেষে জানা গেলো তাদের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যের আসল ঘটনা।

মেহজাবীন চৌধুরী

খোলাসা করলেন মেহজাবীন। আজ (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘সিয়াম আর আমার পাল্টাপাল্টি পোস্ট নিয়ে তো অনেক কথাই হচ্ছে। কিন্তু, আসলে সিয়াম আর আমার বন্ধুত্ব সবসময়ই বেশ ভালো। তবে, বন্ধুত্ব যত ভালোই হোক না কেন, সব সম্পর্কেই কিছু মান-অভিমান, কিছু ছোট অভিযোগ-অনুযোগ থাকে। আনন্দের আর অভিমানের মুহূর্ত মিলেই তো একটা সম্পর্ক সুন্দর হয়।’

সিয়াম আহমেদ

মসৃণ সম্পর্কে কিছু খুনসুটি-অভিমান থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন মেহজাবীন। তার ভাষ্য, ‘অভিমানের মুহূর্তগুলোতেই কিন্তু আমরা প্রিয়জনদের সবথেকে বেশি মিস করি আর উপলব্ধি করি তারা আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়গুলোতেই আমাদের মধ্যে একটু-আকটু খুনসুটি হয়ে থাকে।’

মেহজাবীন চৌধুরী

বন্ধুত্বের রসায়ন না হয় পরিষ্কার হলো, কিন্তু ঠিক কী কারণে ওই পোস্ট দিয়েছিলেন তারা? তাও পরিষ্কার করেন মেহজাবীন। জানালেন, একটি তেল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পেইনের অংশ এটি। সাধারণ মানুষকেও আহ্বান জানানো হয়েছে এতে অংশ নিতে। প্রিয়জনের সঙ্গে এমন অম্ল-মধুর মুহূর্তের স্মৃতি শেয়ার করতে বলা হয়েছে। সেখান থেকে ১০ জন বিজয়ী নির্ধারণ করা হবে। যারা নৈশভোজের সুযোগ পাবেন সিয়াম-মেহজাবীনের সঙ্গে।

সিয়াম বর্তমানে ব্যস্ত ‘জংলি’ সিনেমার শুটিংয়ে

প্রসঙ্গত, সিয়াম আহমেদ বর্তমানে ব্যস্ত আছেন তার নতুন সিনেমা ‘জংলি’র শুটিংয়ে। এটি পরিচালনা করছেন এম রাহিম। ছবিটি আসবে ঈদুল আজহায়। অন্যদিকে মেহজাবীনও নেমেছেন সিনেমায়। ক’দিন আগে তার জন্মদিনে নতুন সিনেমা ‘প্রিয় মালতী’র টিজার প্রকাশ্যে এসেছে। শঙ্খ দাশগুপ্ত নির্মিত ছবিটি চলতি বছরই মুক্তি পাবে।

;