চার্লি চ্যাপলিন: প্রথম আন্তর্জাতিক সিনে তারকা



ড. মাহফুজ পারভেজ
চার্লি চ্যাপলিন, ছবি: সংগৃহীত

চার্লি চ্যাপলিন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চার্লি চ্যাপলিন (১৬ এপ্রিল ১৮৮৯-২৫ ডিসেম্বর ১৯৭৭) নামে সমধিক পরিচিত হলেও তাঁর পুরো নাম চার্লস স্পেনসার চ্যাপলিন জুনিয়র। প্রচণ্ড দারিদ্র্যের মধ্যে জন্ম নিলেও পরিশ্রম ও মেধায় তিনি পরিণত হন এক বিশ্ববরেণ্য অভিনেতায়।

তাকে গণ্য করা হয় প্রথম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র তারকা হিসেবে। অভিনয়, চলচ্চিত্র নির্মাণ, কাহিনী রচনা ইত্যাদির মাধ্যমে তার আগে কেউ সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিতে পারেননি। বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা তিনি, যিনি হাসির আড়ালের মানবিক বেদনা তুলে ধরে লাখ লাখ দর্শককে কাঁদাতে পারতেন।

তাঁর সময়কালে তিনি হয়েছিলেন প্রধান সেলিব্রেটি। কোটি মানুষ তার পোষাক, অঙ্গভঙ্গি নকল করতো। প্রজন্মের আইকন ছিলেন তিনি। সুইজারল্যান্ডের কর্সিয়ের-সুর-ভেভিতে চ্যাপলিনের বাড়ি মানোইর দে বানকে 'চ্যাপলিন্স ওয়ার্ল্ড' নামে একটি জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়েছে। রয়টার্স একে ‘চার্লি চ্যাপলিনের জীবনী ও কাজ প্রদর্শন করা ক্রিয়াশীল জাদুঘর’ বলে বর্ণনা করে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/16/1555407781957.jpg
চ্যাপলিন্স ওয়ার্ল্ড জাদুঘর, সুইজারল্যান্ড

লন্ডনের মিউজিয়াম অব দ্য মুভিং ইমেজ চ্যাপলিনের একটি স্থায়ী প্রদর্শনী রেখেছে এবং ১৯৮৮ সালে তাঁর জীবন ও কর্মজীবনকে উৎসর্গ করে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে। লন্ডন চলচ্চিত্র জাদুঘর ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ‘চার্লি চ্যাপলিন - দ্য গ্রেট লন্ডনার’ নামে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে।

লন্ডনের লেস্টার স্কয়ারে ১৯৮১ সালে উন্মোচিত দ্য ট্রাম্প চরিত্রে চ্যাপলিনের একটি ভাস্কর্য রয়েছে। মধ্য লন্ডনের এই লেস্টার শহরে চ্যাপলিনের নামানুসারে একটি রাস্তার নামকরণ করা হয় 'চার্লি চ্যাপলিন ওয়াক'।

লন্ডন, হ্যাম্পশায়ার ও ইয়র্কশায়ারে তাঁর নামে নয়টি স্মারক নীল প্লাক রয়েছে। সুইস শহর ভেভিতে তাকে সম্মান জানাতে ১৯৮০ সালে তাঁর নামে একটি পার্কের নামকরণ করে এবং ১৯৮২ সালে একটি ভাস্কর্য স্থাপন করে। ২০১১ সালে ভেভিতে দু’টি ১৪ তলা ভবনে চ্যাপলিনের চিত্র খচিত দু’টি ম্যুরাল উন্মোচন করা হয়।

আইরিশ শহর ওয়াটারভিলও চ্যাপলিনকে সম্মান জানিয়েছে, যেখানে তিনি ১৯৬০ -এর দশকে তাঁর পরিবার নিয়ে কয়েকটি গ্রীষ্ম কাটিয়েছেন। ১৯৯৮ সালে একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয় এবং ২০১১ সাল থেকে এই শহরে বার্ষিক চার্লি চ্যাপলিন হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করে আসছে। এই উৎসব চালু করার উদ্দেশ্য ছিল চ্যাপলিনের রেখে যাওয়া কাজ এবং নতুন কৌতুক প্রতিভাসমূহ প্রদর্শন করা।

চ্যাপলিনের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবে তাঁর নামানুসারে ১৯৮১ সালে সোভিয়েত জ্যোতির্বিদ লুদমিলা করাচকিনা আবিষ্কৃত একটি ছোট গ্রহের নামকরণ করা হয় ৩৬২৩ চ্যাপলিন। ১৯৮০ এর দশকে আইবিএম তাদের পার্সোনাল কম্পিউটারের প্রচারণায় চ্যাপলিনের মূর্তিটি ব্যবহার করে। ১৯৮৯ সালে সারা বিশ্বে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে চ্যাপলিনের ১০০তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয় এবং ২০১১ সালের ১৫ এপ্রিল তাঁর ১২২তম জন্মবার্ষিকীর আগের দিন গুগল তাদের বৈশ্বিক ও বিভিন্ন দেশের হোমপেজে একটি বিশেষ গুগল ডুডল ভিডিও তৈরি করে তাঁর জন্মদিন উদযাপন করে। বিশ্বের ছয়টি মহাদেশের অনেক দেশ চ্যাপলিনের চিত্র সম্বলিত পোস্টাল স্ট্যাম্প প্রকাশের মাধ্যমে সম্মাননা প্রদর্শন করেছে স্যার উপাধি পাওয়া এই শিল্পীকে।

চার্লি চ্যাপলিনের জন্ম সম্পর্কিত বৈধ কোনো প্রমাণপত্র পাওয়া যায়নি, তাই তাঁর জন্ম নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। সংবাদ মাধ্যম তাঁর জন্মস্থান সম্পর্কে নানা সময়ে নানা রকম তথ্য দিয়েছে। কিন্তু চ্যাপলিনের মতে, তিনি দক্ষিণ লন্ডনের ওয়ালওর্থের ইস্ট স্ট্রিটে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা-বাবা দুজনেই মঞ্চের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/16/1555407816217.jpg
যুবক চার্লি চ্যাপলিন

ইহুদি ধর্মানুসারী ও মুচি পরিবারের সন্তান চ্যাপলিন লন্ডনে প্রচণ্ড দারিদ্র ও কষ্টের মধ্য দিয়ে শৈশব পার করেন। তাঁর বাবার অনুপস্থিতি ও মায়ের অর্থাভাবের জন্য তাকে নয় বছর বয়সের আগের দুইবার একটি কর্মশালায় কাজ করতে পাঠানো হয়েছিল। যখন তাঁর বয়স ১৪ তখন তাঁর মাকে পাগলাগারদে পাঠানো হয়।

ফলে তিনি জীবনকে দেখেছেন রূঢ় বাস্তবতায়। হাসি, কান্না, দুঃখ, বেদনার অভিনয় করেছেন নিজের অভিজ্ঞতার রসে। ফলে তার অভিনয়ের প্রতিটি অভিব্যক্তিই বাস্তব বলে মনে হয়েছে।

মঞ্চ ও নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি জীবন শুরু করেন এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পান। ১৯ বছর বয়সে তিনি স্বনামধন্য ফ্রেড কার্নো কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হন, যারা তাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে নিয়ে যায়। চ্যাপলিন সেখানে হলিউড চলচ্চিত্র শিল্পের সাথে যুক্ত হন। তারপর তাঁর জীবনে বড় পর্দায় সাফল্য দেখা দেয়।

অচিরেই তিনি তার নিজের সৃষ্ট ভবঘুরে 'দ্য ট্রাম্প' চরিত্রের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেন এবং তার অনেক ভক্তকূল গড়ে ওঠে।

'শার্লট' নামে পরিচিত চ্যাপলিনের ট্রাম্প ভবঘুরে হলেও ব্রিটিশ ভদ্রজনোচিত আদব-কায়দায় সুসংস্কৃত এবং সম্মানবোধে অটুট। শার্লটের পরনে চাপা কোট, সাইজে বড় প্যান্ট, বড় জুতো, মাথায় বাউলার হ্যাট, হাতে ছড়ি আর অদ্বিতীয়তম টুথব্রাশ গোঁফ। চ্যাপলিন শুরুর দিক থেকেই তাঁর চলচ্চিত্রগুলো পরিচালনা করতেন। ১৯১৮ সালের মধ্যে তিনি বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের মর্যাদা লাভ করেন।

তাঁর নির্মিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হল 'দ্য কিড' (১৯২১), পরবর্তীতে তিনি আ ওম্যান অব প্যারিস(১৯২৩), দ্য গোল্ড রাশ (১৯২৫) এবং দ্য সার্কাস (১৯২৮) চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন এবং এসব চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/16/1555407994379.jpg
অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন

১৯৩০ এর দশকে তিনি সবাক চলচ্চিত্র নির্মাণ করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন এবং নির্বাক সিটি লাইট্স (১৯৩১) ও মডার্ন টাইমস (১৯৩৬) নির্মাণ করে প্রশংসিত হন। চ্যাপলিন তাঁর পরবর্তী চলচ্চিত্র ‘দ্য গ্রেট ডিক্টেটর’ (১৯৪০) এ অতিমাত্রায় রাজনৈতিক হয়ে ওঠেন এবং আডলফ হিটলারকে ব্যঙ্গ করেন।

১৯৪০ এর দশকে চ্যাপলিনকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় এবং তাঁর জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। তিনি সমাজতান্ত্রিকদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন বলে অভিযোগ ওঠে, পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে পিতৃত্বের মামলা চলাকালে তিনি কম বয়সী অপর এক মহিলাকে বিয়ে করায় তাঁকে নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা শুরু হয়।

তারপরও তাঁর চলচ্চিত্র দর্শক হারায়নি। পরবর্তীতে তিনি মঁসিয়ে ভের্দু (১৯৪৭), লাইমলাইট (১৯৫২) আ কিং ইন নিউ ইয়র্ক (১৯৫৭) এবং আ কাউন্টেস ফ্রম হংকং (১৯৬৭) চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।

নির্বাক চলচ্চিত্র যুগের অন্যতম মৌলিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব চ্যাপলিন নিজের ছবিতে নিজেই অভিনয় করতেন, এবং চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা, পরিচালনা, প্রযোজনা এমনকি সঙ্গীত পরিচালনাও করতেন। তিনি তাঁর সব চলচ্চিত্র ত্রুটিমুক্ত রাখার চেষ্টা করতেন এবং তাঁর আর্থিক স্বাধীনতার কারণে তিনি একটি চলচ্চিত্রের গল্পের বিকাশ ও চলচ্চিত্র নির্মাণে অধিক সময় ব্যয় করতে পারতেন। তার চলচ্চিত্রগুলোতে বৈরিতার সাথে দ্য ট্রাম্পের সংগ্রামের করুণ রসের সাথে স্ল্যাপস্টিক হাস্যরস বিদ্যমান ছিল। কয়েকটি চলচ্চিত্রে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়বস্তু ছিল এবং কয়েকটিতে আত্মজীবনীমূলক উপাদান ছিল।

চ্যাপলিনকে ১৯৭২ সালে চ্যাপ একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কারপ্রদান করা হয়। শিল্পকলায় অবদানের জন্য তাঁকে ফ্রান্স সরকার ১৯৭১ সালে লেজিওঁ দনরের কমান্ডার ও রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯৭৫ সালে নাইটহুডে ভূষিত করেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/16/1555407852980.jpg
চলচ্চিত্র নির্মাতা চার্লি চ্যাপলিন

মৃত্যুর পরও চ্যাপলিন তাঁর নির্মিত দ্য গোল্ড রাশ, সিটি লাইট্স, মডার্ন টাইমস ও দ্য গ্রেট ডিক্টেটর চলচ্চিত্র দিয়ে অমর হয়ে আছেন। এই চলচ্চিত্রগুলোকে প্রায়ই চলচ্চিত্রের সর্বকালের সেরা তালিকায় স্থান করে নিতে দেখা যায়।

ড. মাহফুজ পারভেজ: কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম

   

জিতেই যেতেন নিপুণ, তবে...



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নিপুণ /  ছবি : ফেসবুক

নিপুণ / ছবি : ফেসবুক

  • Font increase
  • Font Decrease

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ডিপজলের কাছে সাধারণ সম্পাদক পদে মাত্র ১৬ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন দুই বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। আজ (২০ এপ্রিল) সকালে ফল ঘোষণার পরে ডিপজলকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন পরাজিত এই প্রার্থী।

এ সময় সাংবাদিকদের নিপুণ বলেন, ‘ডিপজল ভাইয়ের বিপক্ষে মাত্র ১৬ ভোটে হারবো সেটা আমি চিন্তাও করিনি। আমি ভেবেছিলাম ডিপজল সাহেবের সঙ্গে আমি যখন দাঁড়াবো, খুব বেশি হলে ৫০টা ভোট পাবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ২৬টা ভোট নষ্ট হয়েছে, ২০৯টি ভোট আমি পেয়েছি। যেখানে ডিপজল ভাই পেয়েছেন ২২৫টি ভোট। শিল্পী সমিতির ভাই-বোনেরা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, তারা আমাকে ভালোবাসেন। আমাকে এত সম্মান দেওয়ার জন্যে আমি তাদেরকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’

নিপুণ /  ছবি : ফেসবুক

নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে মন্তব্য করে নিপুণ আরও বলেন, ‘প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই ২০২৪-২৬ নির্বাচন যারা পরিচালনা করেছেন তাদের। আমার মনে হয় আমার টার্মে থেকে আমি খুব সুন্দর একটি নির্বাচন পরিচালনা করেছি।’

তকাল শুক্রবার চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রাঙ্গনে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। চলে বিকেল ৬টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণের পর ভোট গণনা শুরু হয় রাত আটটায়। রাতভর গণনা শেষে সকাল পৌনে ৭টার দিকে দিকে প্রাথমিকভাবে ভোট ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু।

;

নিউইয়র্কে সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র উৎসবে সোহানা সাবা



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
সোহানা সাবা /  ছবি : নূর এ আলম

সোহানা সাবা / ছবি : নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শুরু হয়েছে ‘সুচিত্রা সেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’। আজ ও আগামীকাল (২০ ও ২১ এপ্রিল) জ্যামাইকা পারফরমিং আর্টস সেন্টারে সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে এই উৎসব।

বাংলাদেশ ও ভারতের ৩৯টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে এই উৎসবে। এছাড়াও রয়েছে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক আয়োজন ও জমকালো অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান। এতে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী সোহানা সাবা।

সোহানা সাবা /  ছবি : নূর এ আলম

তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সুচিত্রা সেন আমাদের প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে কতোখানি জায়গজুড়ে আছেন তা নতুন করে বলার কিছু নেই। অভিনেত্রী হিসেবে তিনি অনেকের আমারও অনুসরনীয়। সেই মহানায়িকার নামে চলচ্চিত্র উৎসব হচ্ছে, তাও আবার যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে- সবমিলিয়ে এমন সম্মানজনক আয়োজনে আমাকে আমন্ত্রন জানানোতে খুব গর্ব অনুভব করছি।’

ছবি : শিল্পীর সৌজন্যে

সোহানা সাবা ছাড়াও চিত্রনায়ক ফেরদৌস, চিত্রনায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, তমা মির্জাসহ অনেক জনপ্রিয় তারকারা অংশ নিচ্ছেন এই উৎসবে। অনুষ্ঠানের প্রতিটি আয়োজন সবার জন্য উন্মুক্ত। কোনো প্রবেশ ফি বা টিকেট নেই।

;

মেহজাবীনের আরেক নারীকেন্দ্রিক সিনেমা ‘প্রিয় মালতী’



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
বড় পর্দায় ‘প্রিয় মালতী’ হয়ে হাজির হবেন মেহজাবীন

বড় পর্দায় ‘প্রিয় মালতী’ হয়ে হাজির হবেন মেহজাবীন

  • Font increase
  • Font Decrease

নাটক, বিজ্ঞাপন ও ওয়েব প্ল্যাটফর্মে দারুণ সফল মেহজাবীন চৌধুরী। তবে বড়পর্দায় প্রিয় অভিনেত্রীকে দেখার আগ্রহ ভক্তদের দীর্ঘদিনের।

এ বছরই সেই অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। এরইমধ্যে জানা গেছে, বড়পর্দার জন্য করা মেহজাবীনের প্রথম চলচ্চিত্র ‘সাবা’।

এবার নিজের জন্মদিনেই সিনেমা হলের জন্য করা দ্বিতীয় সিনেমার ঘোষণা দিলেন এই জনপ্রিয় তারকা! শঙ্খ দাশগুপ্তের পরিচালনায় এবার বড় পর্দায় ‘প্রিয় মালতী’ হয়ে হাজির হবেন মেহজাবীন চৌধুরী। ফ্রেম পার সেকেন্ড ও চরকির যৌথ প্রযোজনায় সিনেমাটি এ বছরের কোনো একটা সময় মুক্তি দেয়া হবে সিনেমা হলে।

গত ১৯ এপ্রিল অর্থাৎ মেহজাবীনের জন্মদিনেই ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে জমকালো এক আয়োজনের মধ্যে দিয়ে সিনেমাটির ঘোষণা দেয়া হয়।

প্রযোজক আদনান আল রাজীব আর মেহজাবীন খুব ভালো বন্ধু!

মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, ‘জন্মদিনে সিনেমার ঘোষণাতা আমার জন্য খুব স্পেশাল। এই সিনেমায় দর্শক ভিন্ন এক মেহজাবীনকে দেখতে পাবে। এমন একটা টিমের সাথে কাজ করতে পেরে নিজেকে সত্যিই ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’

প্রথমেই মঞ্চে আসেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও নুসরাত ইমরোজ তিশা দম্পতি। মেহজাবীনকে নিয়ে দেন মজার কিছু তথ্য। তিশা বলেন, ‘মেহজাবীন তার জেনারেশনের সবচেয়ে পাওয়ারফুল অভিনেত্রী। সে একইসঙ্গে দারুণ গোছানো একজন মানুষ। সে আমার বোনের মতো, কারণ আমার কোন আপন বোন নেই।’

এরপর মঞ্চে আসেন আশফাক নিপুন ও এলিটা করিম দম্পতি। তারাও জানান মেহজাবীনকে নিয়ে মজার কিছু তথ্য। আশফাক নিপুন বলনে, ‘মেহজাবীন অভিনয়ে নিজেকে যেভাবে গড়েছেন সেটা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।’

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও নুসরাত ইমরোজ তিশা দম্পতি

ফ্রেম পার সেকেন্ড-এর প্রযোজক আদনান আল রাজীব বলেন, ‘‘প্রিয় মালতী’র গল্পটা একদম ইউনিক। এই গল্পটা শঙ্খ (পরিচালক) যখন আমাদের সাথে শেয়ার করে তখনই সবাই পছন্দ করি। এমন গল্প আমরা কখনও দেখিনি। সেই সাথে মেহজাবীন এই সিনেমার সাথে যুক্ত হওয়াতে এই সিনেমায় অন্য একটা মাত্রা যোগ হয়েছে।’

চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘এই সিনেমার সাথে থাকতে পারাটা আমার জন্য খুব ইমোশনের। কাছের মানুষজন নিয়ে একটা সিনেমা নির্মাণ করার আনন্দটা ভাষার প্রকাশ করার না। গুণী পরিচালক, গুনী অভিনেত্রীসহ দুর্দান্ত একটা টিম এই সিনেমার সাথে যুক্ত হয়েছে। সিনেমা হলে দর্শকের কাছ পর্যন্ত পৌঁছানোটা এখন আমাদের অপেক্ষা।’

পরিচালক শঙ্খ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ফিল্ম মেকিংটা আমার কাছে সব সময় কষ্টের কাজ মনে হয়। তবে ‘প্রিয় মালতী’ কাজটা আমার জন্য একদম সহজ করে দিয়েছে দুই প্রযোজক। আমি শুধু নির্মাণ ও গল্প নিয়েই ভেবেছি। সেই সাথে যাদেরকে কাস্ট হিসেবে চিন্তা করেছি তাদেরকে সাথে পেয়েছি।’

আশফাক নিপুন ও এলিটা করিম দম্পতি

মেহজাবীন এর সাথে এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন নাদের চৌধুরী, শাহজাহান সম্রাট, রিজভী রিজুসহ আরও অনেকে। গত বছরের সেপ্টম্বর-অক্টোবরের দিকে হয়েছে এই সিনেমার শ্যুট। ঢাকা-বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারণ করা হয়েছে দৃশ্য।

সিনেমা ঘোষণার পাশাপাশি কেক কেটেও উদযাপন করা হয় মেহজাবীনের জন্মদিন। এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নুসরাত ইমরোজ তিশা,আশফাক নিপুন, এলিটা করিম, মোস্তফা মন্ওয়ার, জেফার রহমান, রাকা নওশীন নাওয়ার সহ আরও অনেকে। সেই সাথে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিকবৃন্দ, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফিল্মি ফিচার, ফ্রেম পার সেকেন্ড ও চরকির সদস্যরা।

সিনেমা ঘোষণার পাশাপাশি কেক কেটেও উদযাপন করা হয় মেহজাবীনের জন্মদিন

 

;

কানে লড়বে আদনানের স্বল্পদৈর্ঘ্য ‘র‌্যাডিক্যালস’



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
আদনান আল রাজীব ও  ‘র‌্যাডিক্যালস’-এর পোস্টার

আদনান আল রাজীব ও ‘র‌্যাডিক্যালস’-এর পোস্টার

  • Font increase
  • Font Decrease

এক যুগ ধরে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন নির্মাণে অনবদ্য দক্ষতা দেখিয়ে আসছেন আদনান আল রাজীব। অল্প বিস্তর যে সব ফিকশন নির্মাণ করেছেন, সেগুলোও দর্শকের দারুণ সাড়া পেয়েছে। এখন তিনি কোক স্টুডিও বাংলা সিজন থ্রি’র সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এই সিজনের গানগুলোর ভিডিও নির্মাণের দায়িত্ব পড়েছে তার কাঁধে। এরইমধ্যে প্রথম গান ‘তাঁতি’ নির্মাণ করে কুড়িয়েছেন প্রশংসা।

এবার আদনানের কর্মযজ্ঞ পেরলো দেশের গণ্ডি। তাও কান চলচ্চিত্র উৎসবের মতো প্রখ্যাত আঙিনায়! কানের সমান্তরাল বিভাগ ‘ক্রিটিকস উইক’-এর ৬৩তম আসরে প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হলো আদনান আল রাজীব প্রযোজিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘র‌্যাডিক্যালস’। এটি আদনানের সঙ্গে সহ-প্রযোজনা করেছেন বাংলাদেশের আরেক নির্মাতা তানভীর হোসেন। ফলে কানসৈকতে আবারও লাল-সবুজ পতাকার প্রতিনিধিরা আমন্ত্রণ পেলেন। আগামী মাসে এই আয়োজনে দুই জনই অংশ নিতে যাবেন।

আদনান আল রাজীব

‘র‌্যাডিক্যালস’ মূলত ফিলিপাইনের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা করেছেন আরভিন বেলারমিনো। প্রযোজনায় ক্রিস্টিন ডে লিয়ন। আদনান আল রাজীব ও তানভীর হোসেনের সঙ্গে এটি সহ-প্রযোজনা করেছেন ডমিনিক ওয়েলিনস্কি।

কান উৎসবের সমান্তরাল বিভাগে নির্বাচিত হওয়াটা সম্মানের হিসেবে দেখছেন আদনান আল রাজীব। তিনি বলেন, ‘এই অনুভূতি বলে বোঝানোর মতো নয়। একজন প্রযোজক কিংবা নির্মাতা হিসেবে এটা অনেক বড় অর্জনের মতো। যদিও সামনে আরও অনেকটা পথ আমরা হাঁটতে চাই ছবিটি নিয়ে। যেটার শুরু মাত্র হলো।’

 ‘র‌্যাডিক্যালস’-এর দৃশ্য

ফিলিপাইনের সংস্কৃতি মোরগ-নাচের একটি প্রতিযোগিতাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘র‌্যাডিক্যালস’। এর নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা সেই দেশেরই। এতে ঢাকার দুই তরুণের ভূমিকা মূলত কী? জানতে চাইলে আদনান আল রাজীব বলেন, ‘আমাদের ভূমিকা অনেক। ছবিটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবটা জুড়েই ছিলাম আমরা। মূলত নির্মাতার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমরা শুরু থেকে এখনও এগিয়ে চলেছি। শুটিং শেষের পর নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীদের কাজ শেষ। আর আমাদের মূল কাজ শুরু সেখান থেকেই। যার শুরুটা হচ্ছে কান-এর মতো বিশ্বের সবচেয়ে বড় উৎসব থেকে, সেটাই হচ্ছে আমাদের বড় অর্জন। তবে আমাদের পরিকল্পনা আরও অনেকদূর। দেখা যাক কানে কতটা মান রাখতে পারি।’

আদনান আল রাজীব

কান উৎসবের আরেক সমান্তরাল বিভাগ ডিরেক্টর’স ফোর্টনাইটে ২০০২ সালে তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’ নির্বাচিত ও পুরস্কৃত হয়। এর অনেক বছর পর ২০২১ সালে আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে জায়গা করে নেয়। এটি দেখানো হয় আঁ সাঁর্তে রিগা বিভাগে।

;