‘ভালো থেকো মহাকালের মহারাজা!’



বিনোদন ডেস্ক
আবদুর রাজ্জাক

আবদুর রাজ্জাক

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজ্জাক একটা কমন নাম।

এমন মানুষ পাওয়া যাবে না, যার রাজ্জাক নামের বন্ধু, আত্মীয় বা পরিচিত কেউ নাই। রাজ্জাক নামে আমাদের একজন ড্রাইভার ছিল। আবার রাজ্জাক নামের টিচারও ছিলেন। ইউনিভার্সিটিতে রাজ্জাক নামে এক ছাত্রকে দেখতাম রাজনীতিতে খুব অ্যাকটিভ। আবার রাজ্জাক নামের একাধিক বরেণ্য রাজনীতিবিদ আছেন। ‘রাজ্জাক হোসিয়ারি’ ট্যাগ লাগানো গেঞ্জি দেখেছি, মফস্বলের এক শহরে ‘রাজ্জাক সুইটমিট’ মিষ্টির দোকান ছিল। বংশালের আল রাজ্জাক’স হোটেলের কাচ্চি বিরিয়ানি যে খায় নাই, সে নার্ভাস নাইন্টিজে কাচ্চির সেঞ্চুরি মিস করেছে। এই বিজ্ঞাপনের জন্য আল রাজ্জাক’সকে টাকা দিতে হবে না। কারণ, ২০ বছর আগে যখন তাদের কাচ্চির হাফ প্লেট ৪৬ টাকা ছিল, তখন গুলশান থেকে ৭০ টাকা আসা-যাওয়া খরচ দিয়ে সেই ৪৬ টাকার আধা ইঞ্চি লম্বা বাসমতী চালের কাচ্চি খেয়ে এসেছি। রাজ্জাক নামের মানুষগুলো বেশির ভাগ নিজ নিজ ক্ষেত্রে ফেমাস হন। তবে একটা জায়গায় রাজ্জাক নামের তেমন কাউকে পাওয়া যায়নি। রাজ্য শাসনে। ভারতে মুঘল কোনো সম্রাটের নাম রাজ্জাক ছিল না। পারস্যে রাজ্জাক নামের কোনো শাসক দেখা যায়নি। পাকিস্তানে আবদুর রাজ্জাক নামের একজন ক্রিকেটারের দেখা মিললেও এই নামে কোনো মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী পাওয়া যায়নি। অবশেষে রাজ্জাক নামের ‘রাজা’ খুঁজে পাওয়া যায় ঢাকায়। তা আবার খোদ এফডিসিতে। সম্ভবত শাসক হিসেবে বিশ্বে তিনিই একমাত্র রাজ্জাক। শাসন করেছেন ঢাকাই সিনেমা। দুর্দান্ত শাসক। ‘নায়করাজ’ উপাধি নিয়ে বর্ণাঢ্য বিদায় নিয়েছেন এই রাজা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856106405.jpg
নায়করাজ

নায়করাজ হলেও সিনেমায় তাঁর শুরুটা এক পাসিং শট দিয়ে। পাসিং শট মানে এক ঝলক দেখা যাওয়া কথাবিহীন শট। যেমন: কেউ চা দিয়ে গেল বা কেউ সামনে দিয়ে একটু হেসে হেঁটে গেল অথবা কোনো পিয়ন চিঠি দিয়ে চলে গেল। রাজ্জাকও চিঠি দিয়ে চলে যান। তবে পিয়ন হিসেবে না। চিঠি দিয়েছিলেন সেই ছবির নায়িকাকে। নায়কের হয়ে। নায়িকা বাসার সামনের গেটে দাঁড়িয়ে ছিল। রাজ্জাক সাইকেল করে এলেন, নায়কের চিঠি দিলেন, চলে গেলেন। ১৯৬৬ সালে সেটা ছিল ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ ছবি।

বটগাছের বীজ সরষে দানার সমান। সেই সরষে দানার সমান অভিনয় থেকেই হয়েছিলেন বটবৃক্ষ ‘নায়করাজ’।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856148203.jpg
‘আগুন’ ছবির দৃশ্যে রাজ্জাক-শাবানা

রাজ্জাক ধূমকেতুর মতো নজরে আসেন ‘রংবাজ’ ছবি দিয়ে। ‘রংবাজ’ ছবি সুপারহিট হওয়ার কারণ ছিল অনেক। তখন ঢাকায় মহল্লাভিত্তিক একক রংবাজি ছিল কমন কালচার। প্রতিটি পাড়ায় একজন বা দুজন স্বীকৃত রংবাজ ছিল। তাদের সবাই ভয় পেয়ে চলত। বয়সে তরুণ এই রংবাজদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না। নিজগুণে রংবাজ। গুণ বললাম, কারণ তাদের বেশ কিছু গুণ ছিল। তারা মারামারিতে সিদ্ধহস্ত হলেও নীতিমান ছিল। তারা রংবাজি করত খারাপ মানুষের বিরুদ্ধে। চাঁদাবাজি করত না। অন্যায় দেখলে রুখে দাঁড়াত। দোষের মধ্যে ছিল ফ্যান্টাসি মার্কা মারামারি আর ড্রিংকট্রিংক করে সবার সামনে মাতলামি করা। সাধারণত পরিচিত ভদ্র পরিবারেরই হতো এই রংবাজরা। ভদ্র পরিবারের বখে যাওয়া ছেলে। তাদের খুব একটা প্রেম করতে দেখা যেত না। পাড়ার নম্রশম্র মেয়েরা এদের ভয় পেত। কিন্তু বেশির ভাগ রংবাজই পাড়ার সেরা সুন্দরী মেয়েটার ওয়ান সাইডেড প্রেমে পড়ে থাকত।

এ রকম একজন রংবাজ ছিলেন আমাদের আজিমপুরের খালেদ ভাই। আমি তখন অনেক ছোট। সন্ধ্যায় দেখি, আজিমপুর রোডের দুধারে সব দোকানদার বেরিয়ে এসে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে মিটিমিটি হাসছে। আর পুরো রোডের এমাথা-ওমাথা খালেদ ভাই মাতলামি করে চলেছে। কেউ তাকে থামাতে সাহস করছে না। তার বড় ভাই ছিলেন খুব ডাকসাইটে। নাম মিয়া ভাই। কেউ খবর দিয়েছে। মিয়া ভাই ঐতিহ্যবাহী ঢাকাইয়া সাদা লুঙ্গি পরে এসে গুরুগম্ভীরভাবে খালেদ ভাইকে বাসায় যেতে বললেন। বড় ভাইয়ের আদেশ সম্মান করে বাসায় চলে গেলেন মাতাল খালেদ ভাই। রংবাজের ওপর এক নেগেটিভ ছাপ পড়ল আমার মনে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856207896.jpg
রাজ্জাক

কিন্তু ভুল ভেঙে গেল পরদিন। চাচাতো বোন পড়ে ইডেন কলেজে। বাসার গেটে এসে রিকশাভাড়া দেওয়ার পর রিকশাওয়ালা ভাড়া নিয়ে তর্ক শুরু করে বাজে ভাষায়। পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন খালেদ ভাই। শাট করে দাঁড়ালেন। আমার বোনকে বললেন, ‘আপা, আপনে বাসায় যান।’ আপা চলে গেলেন। খালেদ ভাই রিকশাটা খুঁটির সঙ্গে বাঁধলেন। রিকশাওয়ালাকে শুধু বললেন, ‘তুই মহিলা মাইনসের লগে খারাপ কথা কইসোশ ক্যান?’ শুরু হলো রিকশাওয়ালার ওপর চায়নিজ কুংফু! ব্রুস লি দেখলে হয়তো কিছু শট শুধরে দিতেন। বাবা গো, মা গো বলে মাফ চাইল রিকশাওয়ালা। থামলেন খালেদ ভাই। রিকশাওয়ালাকে পাশে বসিয়ে কেক-ফান্টা খাওয়ালেন। বোঝালেন, মেয়েদের সম্মান করতে হয়। তারপর রিকশাওয়ালার হাতে ২০ টাকা দিয়ে বিদায় করলেন। সেদিন ওর আর রিকশা না চালালেও চলবে।

এ রকম রংবাজদের নিজেদের এলাকায় দেখে দেখে অভ্যস্ত ছিল মানুষ। কিন্তু সিনেমার পর্দায় দেখেনি। ‘রংবাজ’ মুভি তাই দৃষ্টি কাড়ল দর্শকের। একজন বখে যাওয়া রংবাজ নায়ক? তা আবার প্রেম করবে? নাচবে-গাবে? ফাইট করবে? গেল সিনেমা হলে। আর গিয়েই দেখা পেল এক বিরল প্রতিভার। নাম রাজ্জাক। দেখতে স্মার্ট, গুড লুকিং। মারপিট করে ফাটাফাটি। গান গায় খুব সুইট স্টাইলে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856229635.jpg
তখনকার রাজ্জাক

আমার ছোট ভাইয়ের তখন মুখে আধো আধো বোল এসেছে। বাসার ক্যাসেট প্লেয়ারে ‘রংবাজ’ ছবির হিট গান ‘এই পথে পথে, আমি একা চলি’ গানটি প্রায়ই বাজে। গানটি মাতাল হয়েই রাজ্জাক গেয়েছেন মুভিতে। গানের আগে কিছু মাতলামির কথা আছে। ছোট ভাইয়ের সেই কথাগুলো মুখস্থ হয়ে গেল। সবাই তাকে বলতে বললে সে গড় গড় করে বলে, ‘আরেত্থালা (আরেশ শালা), কে আওয়া (কে বাবা?), পথ লেলে আথো (পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছো?), কী বললে? থাইত তলবে (ফাইট করবে?), আমি ন্যাম্পোত আওয়া (আমি ল্যাম্পপোস্ট বাবা), আমাতে মাপ তলে দাও (আমাকে মাফ করে দাও), হু হু হু হা হা হা (হাসি)!’

এই হাসির পর রাজ্জাক আর পেছনে তাকাননি। রাজ্জাক মানেই সুপারহিট ছবি। বর্তমান বলিউডে যেমন সব নায়িকা বলেন, আমির খানের সঙ্গে তাঁরা একটি দৃশ্যে অভিনয় করতেও রাজি, তখন ঢাকার নায়িকারা মুখে না বললেও সবাই জুটি বেঁধেছিলেন এই ভয়াবহ জনপ্রিয় নায়কের সঙ্গে। রাজ্জাক-সুচন্দা, রাজ্জাক-কবরী, রাজ্জাক-শাবানা, রাজ্জাক-ববিতা, সব জুটির সব ছবিই হিট! হিটের আরেক অর্থ, তাপ। এই তাপের মধ্যে আরেকটু উত্তাপ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন রাজ্জাক-কবরী। পর্দার বাইরেও তাঁদের ইমোশনাল সম্পর্ক তখন টিনেজারদের নাড়া দিয়েছিল। একসঙ্গে হলেই স্কুল-কলেজের মেয়েরা রাজ্জাক-কবরী নিয়ে ফিসফাস-ফুসফাস করত। সেটাকে স্রেফ স্ক্যান্ডাল বলে আমরা হয়তো উড়িয়ে দিতে পারতাম, কিন্তু পরে দীর্ঘ সময় মান-অভিমানজনিত বিচ্ছেদ তাঁদের ইমোশনের গভীরতা প্রমাণে যথেষ্ট। উচ্ছল বয়সে এক-আধটু এ রকম হতেই পারে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856268725.jpg
রাজ্জাকের পরিবার

শুধু পর্দায় না, ব্যক্তিজীবনেও পাক্কা নায়ক ছিলেন এই নায়করাজ। তাঁর একটি ঘটনা। আরেক মহানায়ক উত্তমকুমারের মেহমান হয়ে গেছেন কলকাতায়। কলকাতা শহরে একা চলছেন। হঠাৎ তাঁর পকেট মেরে এক পকেটমার চলে যাচ্ছে। পকেটমার তো আর ঢাকার রাজ্জাক চেনে না। দিলেন ধাওয়া রাজ্জাক। কলকাতার রাস্তায় মানুষ জলজ্যান্ত লাইভ দেখতে লাগল ভয়ানক বেগে এক স্মার্ট তরুণ আরেক উষ্কখুষ্ক যুবককে ধাওয়া দিচ্ছে! যেন ভিলেনকে তাড়া করছে নায়ক। ধরেও ফেললেন। দিলেন ঢিসুম ঢুসুম। উদ্ধার করলেন মার যাওয়া টাকা। সোপর্দ করলেন পুলিশের কাছে। নিজের পরিচয় দিলেন। লোকজন তাঁর পরিচয় জেনে মহাখুশি। ঢাকাইয়া পোলা, কোটি টাকা তোলা!

খবরটা সেই সময়ের পত্রিকায় এসেছিল।

রাজ্জাকের প্রধান আকর্ষণ ছিল তাঁর রোমান্টিক চেহারা আর এক্সপ্রেশনে। সে সুযোগ নিলেন পরিচালক। বাংলাদেশে প্রথম চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করালেন। তাঁর ‘চুমু পার্টনার’ ছিলেন ববিতা। ‘অনন্ত প্রেম’ ছবিতে। যদিও সেন্সর বোর্ড মূল চুম্বনের ওপর রোলার স্টিম চালিয়ে ছ্যাড়াব্যাড়া করে দিয়েছিলেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856298005.jpg
নায়ক বয়সে

যদিও অরিজিন্যাল কোঁকড়ানো ছোট ছোট চুলে রাজ্জাককে মানাতো বেশ, তবুও দুই ধরনের চুলে অভিনয় করতেন নায়করাজ। চরিত্রের প্রয়োজনে। পরচুলায়ও তাঁকে সমান ভালো লেগেছে। সম্ভবত এ দেশে এখন পর্যন্ত রাজ্জাকই একমাত্র সুপারস্টার, যাঁর কোনো ছবি ফ্লপ হয়নি। পোশাকি ছবি কম করেছেন, কিন্তু সেগুলোও হয়েছে হিট। রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন করে তা থেকে ভালো কিছু করতে চেয়েছিলেন। লক্ষ্মী তাঁর স্ত্রীর নাম। দুজনের নাম মিলিয়েই রাজলক্ষ্মী। বউকে অসম্ভব ভালোবাসতেন।

একজন সুপারস্টার সেই দেশের একজন অনুসরণীয় পারসোনালিটি। রাজ্জাক তা মেনে চলেছেন। পারিবারিক বন্ধন ও মূল্যবোধ কড়াকড়ি মেনেছেন। তার প্রতিফলন দেখা গেছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও। নিরহংকারী ছিলেন। একজন নায়করাজই তো হন নিরহংকারী। শেষ জীবনের কয়েকটি টিভি সাক্ষাতে চেপে রাখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু অলক্ষ্যে বেরিয়ে গেছে তাঁর গুমরে গুমরে হতাশার বেদনা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856328652.jpg
একটি ছবির দৃশ্যে

উন্নত দেশ লিভিং লিজেন্ডদের বিভিন্ন ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে উপস্থিতি ঘটিয়ে তাদের প্রতিভাকে কাজে লাগায়। প্রতিভা ছাড়া লিজেন্ড হয় না। আর এই অভিজ্ঞ প্রতিভাদের কাছ থেকে উদ্দীপিত হয়ে জন্ম নেয় নতুন সব প্রতিভা। পাশের দেশেই মিঠুন চক্রবর্তী বা অমিতাভ বচ্চনরা এখনো তাঁদের প্রতিভা ছড়াচ্ছেন। প্রতিভা ছাড়া কি একজন ‘নায়করাজ’ বা ‘মহানায়ক’ হয়ে যাওয়া যায়? কখনোই না। সেটা তিনিও জানতেন।

হয়তো না-বলা একরাশ বেদনা নিয়েই গত বছর এই দিনে আমাদের ছেড়ে না-ফেরার দেশে চলে গেছেন আমাদের অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়করাজ রাজ্জাক। এই দেশ বহু দশক মিস করবে তাঁকে। আমাদের সময় এসেছে গুণ জানার, গুণী চেনার, গুণের কদর করার। গুণীদের কখনো অবসর হয় না। ভুললে চলবে না, যে দেশ গুণের কদর করে না, সে দেশে গুণী জন্ম নেয় না।

ভালো থেকো মহাকালের মহারাজা!

[লিখেছেন শায়ের খান]

আরও পড়ুনঃ

ভক্তরা সত্যিকারের নায়লা নাঈমকে খুঁজে পেয়েছেন

অ্যালেন শুভ্র’র বাড়ি ফেরা

‘যতদিন বেঁচে থাকবো, এফডিসিতে কোরবানি দেবো’

   

ড. হাফিজের লেখা ' আমরা মুক্তি সেনা'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ড. হাফিজের লেখা ' আমরা মুক্তি সেনা'

ড. হাফিজের লেখা ' আমরা মুক্তি সেনা'

  • Font increase
  • Font Decrease

 

মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে ড. হাফিজ রহমানের লেখা দেশাত্মবোধক গান 'আমরা মুক্তি সেনা' রিলিজ হয়েছে। বিখ্যাত সুরকার মিল্টন খন্দকারের সুরে গানটি গেয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মনির খান ও সহশিল্পীবৃন্দ।

এমকে মিউজিক ২৪ এর ব্যানারে গানটি গত ২৬ মার্চ তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়েছে। গানটির মিউজিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন রফিকুল আজাদ খোকন।

'আমরা মুক্তি সেনা' গানটি রিলিজের দুই দিনের মধ্যেই হাজার হাজার ভিউজ হয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ড. হাফিজ রহমান বলেন,' মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে একটি গান লেখার ইচ্ছে ছিলো। ২৫ মার্চ। পৃথিবীর ইতিহাসের এক কাল রাত্রি। ১৯৭১ সালের এই রাতে নিরীহ নিরপরাধ ঘুমন্ত বাঙালি জনগোষ্ঠীর ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্মম নৃশংসতা চালায় । তাই আমার লেখা গানটি সেই রাতেই রিলিজ করার পরিকল্পনা করেছিলাম। অবশেষে বাস্তবে রূপায়িত হলো সেই অভিপ্রায়।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিখ্যাত সুরকার মিল্টন খন্দকার বলেন, "গানটির কথা খুবই সুন্দর ছিলো। সুর করেছি। কণ্ঠশিল্পীবৃন্দ সুন্দর কণ্ঠ দিয়েছেন। গানটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অক্ষয় হয়ে থাকবে।"

;

জন্মদিনে চমকে দিলেন শাকিব খান



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
‘তুফান’-এ শাকিব খানের নতুন লুক

‘তুফান’-এ শাকিব খানের নতুন লুক

  • Font increase
  • Font Decrease

রীতিমতো ‘তুফানি’ কায়দায় প্রকাশিত হলো ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের আরও একটি নতুন সিনেমার পোস্টার। অভিনেতার জন্মদিন উপলক্ষে আজ বিকেলে প্রকাশিত হয় সিনেমার পোস্টার।

দ্রুত শাকিবের নতুন লুক ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। লুফে নিয়েছেন ভক্তরা। লম্বা কোঁকড়ানো চুলে সাদা রোদচশমা, গলায় লকেট পরে সোফায় বসে আছেন হিরো! পাশেই মেশিনগান! আর পোস্টার দেখেই বোঝা যাচ্ছে, ভয়ানক রূপে পর্দায় হাজির হতে যাচ্ছেন শাকিব খান। নতুন সিনেমা আর জন্মদিনের অগ্রিম শুভেচ্ছায় ভেসে যাচ্ছেন জনপ্রিয় নায়ক।

শাকিব খানের জন্মদিন উপলক্ষ্যে প্রকাশিত হয়েছে ‘তুফান’-এর নতুন পোস্টার

অবশ্য মঙ্গলবার থেকেই বিশেষ ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটি ঝোড়ো তুফানের পূর্বাভাস দেন পরিচালক রায়হান রাফী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে সবাইকে নিরাপদে থাকার পরামর্শও দেন পরিচালক। এরপর বুধবার বিকেলেই প্রকাশ করেন ‘তুফান’-এর ফার্স্ট অফিশিয়াল লুক। এই পোস্টার আসবে বলেই দুদিন ধরে নানা নাটকীয় আভাস দিচ্ছিলেন পরিচালক।

যদিও তুফানি বেগে উড়তে হলে অপেক্ষা করতে হবে আসছে কোরবানির ঈদ পর্যন্ত। তখনই সিনেমাটি মুক্তির কথা রয়েছে। তবে এত দ্রুত সিনেমাটির পোস্টার প্রকাশের পেছনেও আছে বিশেষ কারণ, তা হলো শাকিব খানের জন্মদিন। তারকার বিশেষ দিন উপলক্ষে আর দেরি করেনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এবং পরিচালক।

‘তুফান’-এ শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয় করবেন কলকাতার মিমি চক্রবর্তী ও বাংলাদেশের নাবিলা

তুফানের যৌথ প্রযোজনা করছে বাংলাদেশের চরকি, আলফা আই আর ভারত থেকে যুক্ত হচ্ছে এসভিএফ। জানা গেছে, ছবিতে শাকিব খান ছাড়াও থাকছেন পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী আর বাংলাদেশের ‘আয়নাবাজি’ অভিনেত্রী নাবিলা। ‘তুফান’-এর ভিলেন হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা যিশু সেনগুপ্তর নামও শোনা যাচ্ছে।

;

নতুন সিনেমায় ভিন্ন আঙ্গিকে আসাদুজ্জামান নূর



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আসাদুজ্জামান নূর

আসাদুজ্জামান নূর

  • Font increase
  • Font Decrease

মাঝে সব ধরনের অভিনয় থেকেই দূরে ছিলেন প্রখ্যাত অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর। এরপর একটু একটু করে শুরু করেন মঞ্চ ও টিভি নাটকে। তবে চলচ্চিত্রে কাজ করছিলেন না।

এরপর এক এক করে বেশ কয়েকটি নতুন সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন এই তারকা। এবার পাওয়া গেল নূরের নতুন আরেকটি ছবির খবর। তবে এবার আর অভিনয় নয়। একটু ভিন্নভাবে যুক্ত হওয়া ছবিটির সঙ্গে।

ভাষা আন্দোলনের আগেভাগের গল্প নিয়ে নির্মিত হচ্ছে চলচ্চিত্র ‘যাপিত জীবন’। সেই ছবিতে যুক্ত হলেন আসাদুজ্জামান নূর। ছবির একটি অংশের জন্য কবিতা আবৃত্তি করলেন তিনি। শনিবার দুপুরে রাজধানীর একটি স্টুডিওতে তার কণ্ঠে কবিতাটি রেকর্ডিং হয়। ছবির পরিচালক হাবিবুল ইসলাম হাবিব জানান, ছবি শেষ হবে আসাদুজ্জামান নূরের কণ্ঠে আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর ‘কোনো এক মাকে’ কবিতাটির পাঠের মধ্য দিয়ে।

পরিচালক বলেন, ‘এ অংশ ছবির জন্য খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে কবিতাটি খুবই প্রাসঙ্গিক। ছবি শেষ হচ্ছে, নেপথ্যে কবিতাটি শোনা যাচ্ছে। গল্পের সঙ্গে চমৎকারভাবে কবিতাটির কথা, মর্ম মিলে যায়। আমার বিশ্বাস, ওই সময় প্রেক্ষাগৃহে দারুণ একটি পরিবেশ তৈরি হবে দর্শকের মাঝে।’

কবিতাটি আবৃত্তির জন্য আসাদুজ্জামান নূরকে নেওয়া প্রসঙ্গে হাবিব আরও বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই নূর ভাইয়ের আবৃত্তি শুনে আসছি। তার আবৃত্তির ভঙ্গি দারুণ। আর ছবির এই জায়গায় তার কণ্ঠ ভালো মানিয়ে যায়। এ ছাড়া এই ছবিতে অনেক গুণীজন যুক্ত আছেন। আরেক গুণী মানুষ হিসেবে নূর ভাইকে চেয়েছি।’

আসাদুজ্জামান নূর

জানালেন, বেশ কিছুদিন আগে কাজটির জন্য আসাদুজ্জামান নূরকে অনুরোধ করেছিলেন তিনি। বলেন, ‘বিষয়টি বুঝিয়ে নূর ভাইকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। শুনেই রাজি হন তিনি। নানা ব্যস্ততায় কাজটি করে দিতে সময় পাচ্ছিলেন না। আজ সময় বের করে কাজটি করে দিলেন তিনি। আমি মনে করি, নূর ভাইয়ের কারণে আমার ছবির মান আরও বেড়ে গেল।’

২০২১-২২ বছরের সরকারের অনুদানের ছবি এটি। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে এর শুটিং শুরু হয়।

পরিচালক আরও জানিয়েছেন, পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ প্রায় শেষের পথে। আগামী সপ্তাহের শুরু দিকে প্রিভিউয়ের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে। চলতি বছরই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির কথা আছে ছবিটির। সেলিনা হোসেনের গল্প থেকে যৌথভাবে এটি চিত্রনাট্য করেছেন অনিমেষ আইচ ও ইশতিয়াক আহমেদ।

এতে অভিনয় করেছেন আফজাল হোসেন, গাজী রাকায়েত, রোকেয়া প্রাচী, আজাদ আবুল কালাম, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, ডলি জহুর, ইমতিয়াজ বর্ষণ, আশনা হাবিব ভাবনা, সমাপ্তি, মৌসুমি হামিদ প্রমুখ।

;

কলকাতার ‘পট্ট নাট্য মেলায়’ পদাতিকের ‘গুনজান বিবির পালা’



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
‘গুনজান বিবির পালা’ নাটকের দৃশ্য

‘গুনজান বিবির পালা’ নাটকের দৃশ্য

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতার ‘পট্ট নাট্য মেলা’য় আমন্ত্রন পেয়েছে বাংলাদেশের মঞ্চ নাটকের দল পদাতিক নাট্য সংসদ টিএসসি। আগামীকাল ২৯ মার্চ কলকাতার অনুচিন্তন আর্ট সেন্টারে প্রদর্শিত হবে পদাতিকের ৪১ তম প্রযোজনা ‘গুনজান বিবির পালা’। এই শো উপলক্ষ্যে পদাতিক নাট্য সংসদেও ২২ সদস্য এখন কলকাতায়। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন সায়িক সিদ্দিকী।

নাটকে অনেকটা অংশ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পালা গানের আঙ্গিকে করা। যে পালা বসে গ্রামের আসরে, বয়াতিদের এক শৈল্পিক নাট্য বয়ানে। শুধু পালাগান নয়, নাটকটিতে কাওয়ালি, পুঁথিসহ আরও অনেক লোকজ দিক তুলে ধরা হয়েছে।

যার প্রেক্ষাপট একটি থিয়েটার দল। বিভিন্ন সমস্যার মধ্য যাদের পথচলা দীর্ঘদিনের। সেই দলের প্রধান নাটকের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করতে রাজী। দলটির একটি নাটক ‘পালা’ আকারে মঞ্চায়ন করা হবে, যা সাত ভাই চ¤পা অবলম্বনে ‘গুনজান বিবির পালা’ নামে দর্শকদের কাছে মঞ্চায়িত হবে। অর্থাৎ নাটকের মধ্যে আরেক নাটক দেখা যায় এই প্রযোজনায়।

‘গুনজান বিবির পালা’ নাটকের দৃশ্য

এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মমিনুল হক দীপু, মশিউর রহমান, শামছি আরা সায়েকা, আমানুজ্জামান, রাবেয়া, নুরুন্নাহার পাপিয়া, শাখাওয়াত হোসেন শিমুল, জয়, সালমান শুভ, আবু নাসেম লিমন, মোঃ ইমরান খাঁন, শরীফুল ইসলাম, জিতু, পলাশ, জিয়া, জেনি, সৃজা, নাজমা ও শ্রেষ্ঠা।

মঞ্চ-সঞ্জীব কুমার দে, আলো- অতিকুল ইসলাম জয়, পোশাক, দ্রব্য ও কোরিওগ্রাফিÑ সাঈদা শামছি আরা, সঙ্গীত- হুমায়ন আজম রেওয়াজ, প্রযোজনা অধীকর্তাÑ সৈয়দ ইশতিয়াক হোসাইন টিটো।

;