শিক্ষা না ব্যবসা, কোন পথে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়? [পর্ব ২]
অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার চেয়ে ব্যবসার বিষয়টি প্রাধান্য পাওয়ায় শিক্ষার মানের ওপর ভয়ংকর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে মঞ্জুরি কমিশনের প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কতিপয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা স্নাতকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। উচ্চশিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটলেও প্রত্যাশিত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়েও রয়েছে কমিশনের প্রশ্ন। বিশেষ করে কোর্স শিক্ষকই একমাত্র প্রশ্নপত্র প্রণেতা এবং উত্তরপত্র মূল্যায়নকারী হওয়ায় এই পদ্ধতির স্বচ্ছতা নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ প্রণয়ন করা হলেও তা মানছে হাতেগোণা দু’একটি বিশ্ববিদ্যালয়। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে চালাচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে অন্যান্যের মধ্যে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি জরুরি তা হলো, দক্ষ শিক্ষক, ন্যূনতম মান সম্পন্ন শিক্ষার্থী, আধুনিক সিলেবাস, কার্যকর শিক্ষাদান পদ্ধতি, উপযুক্ত অবকাঠামো ও ন্যূনতম স্বায়ত্বশাসন। অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ই এ শর্তসমূহ পূরণ করতে পারছে না। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড, আর শিক্ষক শিক্ষার মেরুদণ্ড। কিন্তু বেশিরভাগ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পার্টটাইম বা অতিথি শিক্ষক হিসাবে এনে ক্লাস করানো হচ্ছে। কিন্তু পাবলিক ও বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়ায় তারা অনেক ক্ষেত্রেই সময় দিতে পারছেন না। ইউজিসির নির্দেশনায় একজন শিক্ষকের দুটির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করা নিষিদ্ধ থাকলেও তাদের অনেকেই দুইয়ের বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন শিক্ষকের শ্রীমূখও ইউজিসি গঠিত কমিটি দর্শন করেছেন যিনি একই সঙ্গে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র পড়িয়ে দিব্যি আছেন। কমিটি এমন তথ্যও পেয়েছেন যে, একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সব মিলিয়ে শিক্ষক আছেন মাত্র ৫ জন। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসিতে যে প্রতিবেদন পাঠায় সেখানে প্রত্যেক বিভাগে ৪ জন করে পূর্ণকালীন শিক্ষক দেখায়, যাদের মধ্যে একজন বাদে সবাই কাগুজে পূর্ণকালীন শিক্ষক। বাস্তবে খণ্ডকালীন। কোনও কোনও প্রতিষ্ঠানে আবার পূর্ণকালীনরা সংখ্যালঘু। কারণ, ওইসব প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন শিক্ষকের সংখ্যা পূর্ণকালীনের চেয়ে বেশি। অভিযোগ আছে, মুনাফালোভী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দুইযুগ পথচলার পরও খণ্ডকালীন নির্ভর থেকেছে মুনাফা বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই। এরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উচ্চহারে টিউশন ফি নিলেও কম বেতনে ধার করা খণ্ডকালীন কিংবা তরুণ পূর্ণকালীন শিক্ষক দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে তাদের আয় বৃদ্ধি ধরে রাখতে। মান উন্নত দেখানোর জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অবৈধভাবে বিভিন্ন শিক্ষকের নাম ব্যবহার করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে শিক্ষকদের না জানিয়েই তাদের সিভি ব্যবহার করে। কাগজে-কলমে পূর্ণকালীন শিক্ষকের কোটা পূরণ করা হলেও বাস্তবে শিক্ষক থাকে না এমন উদাহরণও পাওয়া গেছে।
মানসম্মত শিক্ষার জন্য ভালো মানের শিক্ষার্থী চাই। অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সময় নামকাওয়াস্তে একটা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে থাকে। একটি ক্লাশে যদি ৯০% ছাত্র থাকে খারাপ মানের, আর ৫-১০% থাকে ভালো, তাহলে এমনটা কিছুতেই হবে না যে, সেখানে মাত্র ৫-১০% শিক্ষার্থী পাশ করবে, আর বাকীরা সবাই ফেল করবে। অনেক খারাপ মানের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য উচ্চ গ্রেড এবং পাশের হারকে ব্যবহার করে থাকে বলে হামেশাই অভিযোগ শুনা যায়। ৯০-৯৫% খারাপ ছাত্রকে পাশ করানোর জন্য শিক্ষককে অবশ্যই শিক্ষার মান টেনে নীচে নামিয়ে আনতে হবে। এর ফলে যে ৫-১০% ভালো ছাত্র সেখানে ভর্তি হয়েছে তারাও মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে, যদিও ভালো গ্রেড পাবে। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি মাস্টার্স ডিগ্রীতে পড়া শিক্ষার্থী ইংরেজি রিডিং পড়তে পারে না। দুই সেমিষ্টার আইন পড়ার পরে ইংরেজিতে ল’ বানান লিখতে দেখেছি Low. ইংরেজি বোঝা দূরে থাক এমনকি সাবজেক্ট এর নামও শুদ্ধ করে উচ্চারণ করতে পারে না। বাংলায় গুছিয়ে দুই মিনিট কোন বিষয়ে কথা বলতে পারে না। অথচ তাকে ভর্তি করা হয়েছে। ইংরেজি মাধ্যমে পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। অনেক শিক্ষকের কাছে শুনেছি ইংরেজি সাহিত্যের ক্লাশ বাংলায় নেয়া ছাড়া শিক্ষার্থীরা বোঝে না। বিজ্ঞানের বিষয় পড়তে এসেছে অথচ অংকের সাধারণ জ্ঞানও নেই। ১/১ কিংবা ১/০ এর মান কত বোঝে না, মাইনাস ৬ ও মাইনাস ৮ সমান মাইনাস ১৪ কিভাবে হতে পারে এ জ্ঞানও নেই। আমাদের ইংরেজির জ্ঞান উচ্চশিক্ষা গ্রহণের উপযোগি না হওয়া সত্ত্বেও সকল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি হওয়ায় তাকে ইংরেজিতেই পড়তে হবে যেখানে শিক্ষার্থীরা বাংলায়ই বুঝতে পারছে না।
এসএসসিতে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ‘আমি জিপিএ ৫ পেয়েছি’ এর ইংরেজি অনুবাদ করতে গিয়ে ‘আই আ্যাম জিপিএ ফাইভ’ বলায় এত সমালোচনা হচ্ছে অথচ হাতেগোণা কয়েকটি বাদ দিলে অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইংরেজির অবস্থা কি তা বিবেচনা করে দেখেছি কি? কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ইংরেজি লেখা উত্তরপত্র যদি আপনি দেখেন মুর্ছা যাবেন। ভয়ংকর ইংরেজির কারণে অনেক সহকর্মী আমাকে পরামর্শ দেন ভাষার দিকে না তাকিয়ে ভাবের দিকে তাকিয়ে নম্বর দিতে। আমি তাদের বলি, ঐ গরুটি আমার বাবার এর ইংরেজি যদি হয় ‘দ্যাট কাউ ইজ মাই ফাদার’, তাহলে এখানে ভাব কোথায়, পুরোটাইতো ‘অভাব’। আমি শত শত উত্তরপত্র দেখেছি যেখানে ২-৩ ঘন্টার পরীক্ষায় উত্তরপত্রে একটি বাক্যও শুদ্ধ নয়। মঞ্জুরী কমিশন বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ও উত্তরপত্রের নমুনা সংগ্রহ করে মাঝে মাঝে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তাদের মান পরীক্ষণ করে দেখতে পারেন। শিক্ষা এখন এমন হয়ে গিয়েছে যে, ভর্তি হলাম সার্টিফিকেট প্রাপ্তি আমার অধিকার, আর প্রদান বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব। সার্টিফিকেট নামে একটুকরা কাগজই এখন সব। এদের ডিগ্রী থাকা, না থাকা সমান। অনেক সদ্য গ্রাজুয়েট আমি প্রতিদিন দেখছি, তাদের ভাষা এবং বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানে রীতিমতো আতঙ্কিত হবার মতো। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় যতবার নিয়োগ বোর্ডে বসেছি ততবারই নিয়োগকর্তাগণ কানে কানে বলে দিয়েছেন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের মনোনয়ন না দিতে। অবশ্য না বললেও তাদের পাফরম্যান্সের কারণেই মনোনয়ন করা যেতো না। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন উপাচার্য আমাকে বলেছেন শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা গ্র্যাজুয়েটরা অনেক প্রশ্নের উত্তরে বলে এগুলো পড়ানো হয় নি। আমি তাঁদের বলেছি এটি কেবল মানের প্রশ্ন নয়। বছরে তিনটি সেমিস্টার পরিচালনা করায় ক্লাশ টেস্ট/ফার্স্ট-টার্ম, মিড-টার্ম ও ফাইনাল-টার্ম পরীক্ষাসহ ৩২-৩৬ ঘন্টায় কোর্স সমাপ্ত করতে হয়। এত অপ্রতুল সময়ের মধ্যে কোনভাবেই মানসম্মত শিক্ষার জন্য প্রণীত সিলেবাস শেষ করা সম্ভব নয়। তাই ‘পিক এ্যান্ড চুজ’ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়।
শিক্ষার্থীদের গ্রহণ করার সামর্থ বিবেচনায় অনেক কিছু বাদ দিয়েই পড়াতে হয়। নর্থ-আমেরিকান বিশ্বদ্যিালয়ের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশে যে ট্রাইমেস্টার সিস্টেম চালু করা হয়েছে তা বিকৃত করা হয়েছে। কেননা সেখানে তিনটি পূর্ণ সেমিস্টার নেই। তদুপরি সেমিস্টারের মাঝখানে সব মিলিয়ে ৯ সপ্তাহ ছুটি রয়েছে যা শিক্ষক-শিক্ষার্থীর একাডেমিক উন্নয়নে ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করে। মঞ্জুরি কমিশন বছরে ২টি সেমিস্টার পরিচালনার বাধ্যতামূলক নির্দেশনা জারি করলেও বাণিজ্যিকভাবে অলাভজনক হওয়ায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের নির্দেশনা মানছে না। প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় এবং যোগ্য শিক্ষার্থীর যোগান কম হওয়ায় অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীর যোগ্যতা বিচার না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ চালাতে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় বাড়াতে পুরোপুরি অযোগ্যকেও ভর্তি করাচ্ছেন। এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের পরপরই বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ভর্তি কার্যক্রম শুরুর প্রাক্কালে বিশেষ করে সনদ ব্যবসায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী সংগ্রহের জন্য পণ্য বিপণন প্রক্রিয়ার ন্যায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মসজিদ, মার্কেটের প্রবেশপথে লিফলেট বিতরণ, পোস্টারিং ল্যপটপ-ট্যাব ফ্রি অফারসহ দেশব্যাপী নানা কায়দায় প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দেয়। উল্লেখ্য, এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রচেষ্ঠা চালাচ্ছেন। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হতে সতর্কতামূলক গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সরকার বিভিন্ন সময় ব্যবস্থাও নিয়েছিলো, কিন্তু ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা প্রদানের স্থান নয়, এটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। ক্লাসরুমে, কমনরুমে, লাইব্রেরিতে, আবাসিক হলে, খেলার মাঠে, বিতর্কে, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হৃদয়কে প্রসারিত করার শিক্ষা গ্রহণ করতে হয় এখানে। নেতৃত্ব তৈরি, আদর্শবান, হৃদয়বান ও মননশীল মানুষ তৈরির জন্য ভৌত অবকাঠামো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরই নেই স্থায়ী বা নিজস্ব ক্যাম্পাস, নেই শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন ও পরিবহন ব্যবস্থা, নেই খেলার মাঠ, সেমিনার রুম, কমন রুম, নেই পর্যাপ্ত লাইব্রেরি ও চিত্তবিনোদনের জায়গা, নেই গবেষণাধর্মী জার্নাল প্রকাশেরও আয়োজন। তাহলে কিভাবে তৈরি হবে যোগ্য ও দক্ষ গ্র্যাজুয়েট?
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো তুলে ধরার উদ্দেশ্যে এই নয় যে, এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অবদান সর্বজনবিদিত। শিক্ষা বিস্তারে মানুষকে আলোকিত করে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বেসরকারি অংশীদারত্ব সকলেরই কাম্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতির নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর টি.ডব্লিউ শোজ বলেছেন, বিশ্বের যত কাজে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগের খাত হলো শিক্ষা। আত্নসমালোচনা ও ত্রুটি-বিচ্যুতির কথা একারণেই বলা যাতে এসব ত্রুটি-বিচ্যুতি কাটিয়ে ওঠার জন্য যুগপৎ সরকার ও বেসরকারি মহল তাদের করণীয় সম্পর্কে সজাগ হন। ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো চিহ্নিত করা গেলে, শোধরানো অসম্ভব কিছু নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা কর্মসূচি বিশ্লেষণ করা, মূল্যায়ন করা এখন সময়ের দাবি। অন্যথায়, এখান থেকে পাশ করা গ্র্যাজুয়েটদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ না হয়ে ভয়ংকর অভিশাপ হয়ে ওঠতে পারে। একজন অসম্পূর্ণ, অপ্রস্তুত সনদদারী গ্র্যাজুয়েট তার মেধা দ্বারা নিয়োগলাভে ব্যর্থ হয়ে জীবন-জবিকার প্রয়োজনে ন্যায়-অন্যায়, সততা-অসততার মাঝে আপোস করতে কিংবা হতাশাগ্রস্ত ও বেপরোয়া হয়ে মাদক, জঙ্গীবাদসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারেন এ আশংকা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এভাবে কিছু শিক্ষা ব্যবসায়ীর হাতে আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস হতে দেয়া যায় না।
আরও পড়ুন: শিক্ষা না ব্যবসা, কোন পথে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়? [পর্ব ১]
লেখক: অধ্যাপক, আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
ই-মেইল: [email protected]