বিএনপি’কে আন্দোলনের পরামর্শ দিয়ে লাভ নেই: ডা. জাফরুল্লাহ
বিএনপিকে এখন আন্দোলনের পরামর্শ দিয়ে কোনো লাভ নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বুদ্ধিজীবী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে আমি বিএনপিকে একাধিকবার মাঠে আন্দোলনে নামার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। তারা কোনো পরামর্শই শোনেনি। রাজপথে নেমে আন্দোলন করার মতো লোকবল থাকলেও তারা আর রাস্তায় নামতে চায় না’
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে রোববার বার্তা২৪.কম’কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘সামনে যেহেতু তফসিল ঘোষণা করা হবে তাই এখনই বিএনপি’র মাঠে নামা উচিত।’
তিনি আরো বলেন, ‘জামায়াত ইসলামীকে না ছাড়ার কোনো কারণ নেই। সারাদেশে তাদের কয়েক শতাংশ ভোট আছে, এটা সত্য। কিন্তু আমি সব ধরনের ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের বিপক্ষে।’
এছাড়া বিএনপি সরকার পতনের যে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘বিএনপির এখনকার আন্দোলন কিছুতেই সরকার পতনের আন্দোলন হতে পারে না। সংবিধান অনুযায়ী তাদের সময় শেষ। এখন তাদের পতন ঘটাবে কী করে। এ ধরনের কথা বলার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কখনও খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাইনি। আমরা বলেছি, আইন অনুযায়ী সুষ্ঠু বিচার হোক, ন্যায্য বিচার করা হোক। তবে জামিন পাওয়া একটা অধিকার, খালেদা জিয়াকে অন্তত জামিন দেওয়া উচিত। নয়তো দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আমি চাই, দেশে যাতে আর কোনো গণ্ডগোল না হোক।’
জাতীয় ঐক্যে আওয়ামী লীগের থাকা জরুরি উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘শান্তির বাংলাদেশ গড়তে হলে সবাইকে নিয়ে ঐক্য গড়তে হবে। আওয়ামী লীগের মতো এতো বড় দল ছাড়া জাতীয় ঐক্য হয় কী করে? তবে ঐক্য করতে হলে আলোচনা করতে হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ তো আলোচনাই করতে চায় না। দেশের উন্নয়নের জন্য জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। জামায়াত ইসলামী ছাড়া সবাই জাতীয় ঐক্যে আমন্ত্রিত। শেখ হাসিনা যদিও আলোচনায় বসতে চান তার দলের নেতারা আলোচনায় আসতেই চান না।’
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বঙ্গবন্ধুর কথা শুনতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে অত্যন্ত সম্মান করি। কারণ তিনি বলেছেন, প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন না। তিনিও সুষ্ঠু নির্বাচন চান। আর সেই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে অবশ্যই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা মানতে হবে। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু যে প্রথম নির্বাচন করেছিলেন তখন তিনি জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমান সবচেয়ে বড় নেতা। কিন্তু অন্যদের অস্বীকার করা যাবে না। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা অস্বীকরা করা যাবে না। এছাড়া মাওলানা ভাষানীকেও অস্বীকার করা যাবে না।’
জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে এই বুদ্ধিজীবী বলেন, ‘জনগণের হাতে বিচার তুলে দেওয়াই ঐক্য পক্রিয়ার একমাত্র কারণ। এটা করতে পারলেই দেশে শান্তি আসবে। এজন্য আমাদের নতুন ধরনের চিন্তা-ভাবনা দরকার। পরিবর্তনটা যাতে শান্তিপূর্ণ হয় সেজন্যই ঐক্য প্রক্রিয়া দরকার। জাতিকে বেঁচে থাকতে হলে সবাইকে এক হয়ে ঐক্য প্রক্রিয়া সফল করতে হবে। ঐক্য প্রক্রিয়া সফল হলে সব দুর্নীতি বন্ধ হবে। মুক্তির স্বাধীনতা সফল করতে হলে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।’