বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন দমনে প্রস্তুত আ.লীগ
ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে সরকারের সাথে আলোচনা করলেও ভেতরে ভেতরে নির্বাচন বানচালে বিএনপি আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। আর ওই আন্দোলনে বিএনপির পাশে থাকবে জামায়াত। যদিও ইতোমধ্যে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা মনে করছেন, বিএনপি যদি জামায়াতকে সাথে নিয়ে অবরোধ-হরতালের মতো কর্মসূচি দেয় তবে তা কঠোরভাবে দমন করতে প্রস্তুত আছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, আন্দোলনের নামে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করলে কঠোরভাবে তা দমন করা হবে। সংলাপে বসার আগেই দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সভা করে সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, সংলাপের পাশাপাশি আন্দোলনের কথা বলে ঐক্যফ্রন্ট দ্বিমুখীতার পরিচয় দিচ্ছে। তারা মূলত নির্বাচন চান না, বিশেষ করে বিএনপি। আন্দোলনের নামে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পায়তারা করছে তারা। ২০১৩ সালের মতো সহিংসতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত চক্র। তবে সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১ নভেম্বর সংলাপে বসার আগে বিএনপির নেতারা সংলাপ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে। আবার সংলাপ থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পর ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও পরবর্তীতে অসন্তুষ্টির কথা জানান। এরপরই সংলাপের পাশাপাশি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ঘোষণা দেয় বিএনপি-জামায়াত জোট। ফলে বিএনপি কালক্ষেপণের মাধ্যমে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বার্তা২৪.কম'কে বলেন, 'অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক ও অযৌক্তিক দাবি নিয়ে দেশে যদি কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করা হয়, দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করা হয়, তাহলে সেটা কঠোর হাতে দমন করা হবে।'
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা থেকে গত ১ নভেম্বর দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা বিশেষ সভা করে।
সভা সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াত চক্রের পাশাপাশি বিদেশি ষড়যন্ত্রও যুক্ত হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে নেতাকর্মীদের সর্তক ও সজাগ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। এমনকি আন্দোলনের নামে সহিংসতা-নাশকতা করলে তাদের প্রতিহত করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবল উল আলম হানিফ বার্তা২৪.কম'কে বলেন, ‘সংলাপ আর আন্দোলন দু'টো একসঙ্গে চলে না। তাদের যেকোনো একটা পথ বেছে নিতে হবে। তবে সংলাপের মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। দুই নৌকায় পা দিয়ে কখনও সফলতা আসবে না। এটাতে জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। বিএনপি আদৌ নির্বাচন চাইছে না। তারা সময়ক্ষেপণ করে নির্বাচন বানচাল ষড়যন্ত্রের লিপ্ত আছে।’
তিনি আরো বলেন, 'দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যা করণীয় সেটা তারা করবেন। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও মাঠে থাকবেন।'