দুর্বৃত্তের হামলায় বিএনপির ১৪ নেতাকর্মী আহত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ফরিদপুর, বার্তা২৪.কম
আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন বিএনপির এক নেতা, ছবি: বার্তা২৪

আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন বিএনপির এক নেতা, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ফরিদপুরে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে ফুল দিতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক ও যুবদলের নেতাকর্মীরা। এ হামলায় দলটির ১৪ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালের দিকে শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল (৪৫) গুরুতর আহত হয়েছেন। তার মাথায় দুটি বড় আকারের জখম হয়েছে বলে জানা যায়। বেলা সাড়ে ১০টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জুলফিকারকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এছাড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা (৬২), জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একে কিবরিয়া স্বপন (৫৫), জেলা বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক দিলদার হোসেন (৪৭), পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি লিটন বিশ্বাস (২৯), ছাত্রদল সরকারি ইয়াছিন কলেজের সাবেক এজিএস আল আমীন তুষার (৩১), জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান সেন্টু (৩৪), কোষাধ্যক্ষ ইলিয়াস হোসেন মোল্লা (৩৬), শ্রমিক দলের বিল্লাল তালুকদার (৩২) সহ আরও পাঁচজন নেতাকর্মী এ হামলায় আহত হয়েছেন।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ জানান, সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তারা স্বেচ্ছাসেবক দলের ব্যানারে মিছিল সহযোগে শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। সেখান থেকে ফেরার পথে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সদস্যরা অতর্কিতে তাদের ওপর হামলা চালায়। স্বেচ্ছাসেবক দলের ওই মিছিলে ছিলেন জেলা বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক দিলদার হোসেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/26/1553600289803.jpg

ঘটনার বিবরণ দিয়ে দিলদার হোসেন জানান, সকালে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে ফেরার পথে জামান সাহেবের পেট্রোল পাম্পের সামনে এলে ৭/৮ জন যুবক প্রথমে তাদের ব্যানার দিয়ে কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এরপর পেছন থেকে হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে, বিএনপির আরেকটি অংশ একে কিবরিয়ার নেতৃত্বে শহরের গোয়ালচামট এলাকার হাজরাতলার মোড়ে হামলার শিকার হয়। এখানে লাঠি ও হকিস্টিক দিয়ে কিবরিয়াসহ কয়েকজনকে আহত করা হয়। তারা শহীদ বেদিতে ফুল দিতে পারেনি।

হামলার মুখে যুবদলের একটি মিছিল শহীদ বেদিতে ফুল না দিয়ে ফেরার পথে পূর্ব খাবাসপুর জোড়া সেতুর নিকট হামলার শিকার হয়। এখানে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদাররেছ আলীসহ কয়েকজন আহত হন।

জেলা বিএনপির ব্যানারে সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি অংশ ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে জড়ো হয়ে শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছিলেন। হামলার মুখে তারাও দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

হামলায় আহতরা জানান, রক্তাক্ত অবস্থায় তারা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল এবং বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। অস্ত্রধারীদের হামলার পর তারা এখন গ্রেফতার আতঙ্কে আত্মগোপনে রয়েছেন।

এদিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা ও জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একেএম কিবরিয়া স্বপন আহত অবস্থায় বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আহত ফরিদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা জানান, ১২ থেকে ১৪ জন একটি দল অতর্কিত ভাবে কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দিয়ে হামলা চালায়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'আহত অবস্থায় আমাদের নেতাকর্মীরা কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে সাহস পাচ্ছে না। আমরা এই হামালার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করছি।'

ফরিদপুর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম নাসিম বলেন, 'শহীদ বেদির নিকটে ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এলাকায় হামলার শিকার হয়ে বিএনপির তিন নেতা ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। স্লোগান ও পাল্টা স্লোগান দেওয়া নিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি।'

   

৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারী ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের অধীনে অন্যান্য সেক্টর কমান্ডারদের মতোই ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারী ছিলেন জিয়াউর রহমান। অথচ পরিতাপের বিষয়, সেই বিএনপি মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ দিবস ১৭ এপ্রিল পালন করে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে অনুষ্ঠানরত নবম 'আওয়ার ওশান কনফারেন্সে' যোগদানরত পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩০ মিনিটে 'নভোটেল এথেন্স' হোটেল বলরুমে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের যে ভাষণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেই ৭ মার্চও বিএনপি পালন করে না। এ থেকেই স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধে বিএনপি কতটুকু বিশ্বাস করে তা প্রমাণ হয়।

মুজিবনগর দিবস স্মরণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার বৈদ্যনাথতলা অর্থাৎ বর্তমান মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণের আগের মধ্যরাতে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের কলকাতা প্রেসক্লাবে সমবেত হতে বলা হয়। গোপনীয়তার মধ্যে তাদেরকে পরদিন সকালে মুজিবনগরে পৌঁছানো হয় যেখান থেকে তারা সংবাদ পরিবেশন করেন।

এ সময় গ্রিস প্রবাসী বাংলাদেশিদের আইনানুগ ও পরিশ্রমী জীবনের জন্য নিজের ও গ্রিক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশংসার কথা জানিয়ে এই সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে ও সবাইকে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে আহবান জানান মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সমবেতদের হর্ষধ্বনির মধ্যে তিনি জানান, গ্রিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সাথে বৈঠকে জানিয়েছেন যে গ্রিস আরও ৬টি দেশে দূতাবাস খোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

গ্রিস আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ ত্রিশটিরও বেশি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

গ্রিস আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মান্নান মাতুব্বরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো: বাবুল হাওলাদারের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য এফেয়ার্স মোহাম্মদ খালেদ, বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস নেতৃবৃন্দের মধ্যে গোলাম মওলা, হাজী আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুল খালেক মাতুব্বর, আহসান উল্লাহ হাসান, শেখ আল আমিন, আব্দুল কুদ্দুস মাতুব্বর, রায়হান খান, মিজানুর রহমান আলফা প্রমুখ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

;

হাতীবান্ধায় উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা জামাত নেতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধায় ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে বৈধতা পেয়েছেন ৪ জন। পরে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বৈধতা পাওয়া জামাত নেতা হাবিবুর রহমান সাতা।

বুধবার (১৭এপ্রিল) বিকালে জামাত নেতা হাবিবুর রহমান সাতা তার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন গত সোমবার ১৫এপ্রিল স্বামী-স্ত্রীসহ ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। বুধবার মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে পাটিকাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল আলম সাদাত এর মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করে জেলা নির্বাচন অফিসার এবং পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে ৮ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ৩ জন প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা করে।

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাচন অফিসার রাসেদ খান সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মুজিবুল আলম সাদাত এর মনোনয়ন অবৈধ হওয়ায় এবং জামাত নেতা হাবিবুর রহমান সাতা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় এখন ৩ পদে মোট ১৪ প্রার্থী থাকলেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লিয়াকত হোসেন বাচ্চু ও শাহানা ফেরদৌসী সিমা।

;

ক্ষমতা দখলের পর আ.লীগ ইতিহাসও দখল করেছে: আমীর খসরু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী লীগ এখন ইতিহাসকেও দখল করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা তাদের মনগড়া ইতিহাসকে বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে। বিচার বিভাগকে হাত করে তাদের মনগড়া ইতিহাস ব্যাখ্যা করছে। রাজনীতিবিদরা ইতিহাসবিদ হলে তা আর ইতিহাস হয় না, হয় প্রপাগান্ডা।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে ১০ এপ্রিলকে প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণার দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন আমীর খসরু।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক বাদ দিলেও আওয়ামী লীগ সরকার ভোট চুরির প্রকল্প থেকে সরে আসেনি। ভোট চুরি প্রকল্প তাদের ক্ষমতার উৎস। নৌকা নিয়ে জনগণের সামনে যাওয়ার সাহস সরকারের আর নেই। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ৯৫ শতাংশ মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায়নি। ভোট বলে আর কিছু নেই।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে বিএনপিকে ভাঙার সবরকম চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু বিএনপির ঐক্য অটুট আছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা, জেল সব কিছু করে অপদস্থ করা হয়েছে, তবুও ঐক্য ভাঙতে পারেনি।

;

রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন

সমঝোতা বৈঠকে সাদা কাগজে ৯ প্রার্থীর সই নিলেন এমপি: সমালোচনার ঝড়



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সমঝোতা বৈঠক ডেকে তিন কোটি টাকার বিনিময় করিয়ে ৯ প্রার্থী থেকে একক প্রার্থী করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে রামগঞ্জ স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে।

লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এ ঘটনার পর ব্যাপক সমালোচনার কবলে পড়েছেন তিনি।

রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৫ জন চেয়ারম্যান ও ৪ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিয়ে এমন একটি সমঝোতা বৈঠকে মধ্যস্থতা করে ব্যাপক সমালোচনার কবলে পড়েছেন ওই সংসদ সদস্য। অভিযোগ পাওয়া গেছে, সাদা কাগজে প্রার্থীদের সই নিয়ে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে খোদ সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের বড় ভাই চেয়ারম্যান প্রার্থী আখতার হোসেন খান নির্বাচনে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে একাধিক প্রার্থী ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন।

এর আগে রামগঞ্জ শহরে জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে রোববার (১৪ এপ্রিল) রাতে টানা ৭ ঘণ্টা এ বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

যদিও এমপি-মন্ত্রীরা যেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, প্রভাব বিস্তার না করেন, সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একাধিকবার নির্দেশ ও বিবৃতি দিয়েছেন।

সমঝোতা বৈঠকে অংশ নেওয়া ১০ জন নেতা বার্তা২৪.কমের কাছে অভিযোগ করেছেন, একক প্রার্থীর করার স্বার্থে সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খান সেখানে উপস্থিত ৯ প্রার্থীর কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নেন। এসময় পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদসহ ৬ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর সেখানে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বক্তব্য শোনা হয়।

তখন নির্বাচনে ৩ কোটি টাকা খরচ করবেন বলে জানালে দেলোয়ার হোসেন দেওয়ান বাচ্চুকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন খান রোববার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রামগঞ্জ শহরে জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে দলের সিনিয়র নেতা ও উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের বৈঠক ডাকেন। এতে বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। রাত ৮ টার দিকে এমপি সেখানে আসেন।

একক প্রার্থীর করার স্বার্থে সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খান সেখানে উপস্থিত ৯ প্রার্থীর কাছ থেকে আগে সাদা কাগজে সই নেন। একপর্যায়ে যারা প্রার্থী নন এমন ৬ জন নেতাকে তিনি প্রার্থী নির্বাচনের দায়িত্ব দেন। এরা হলেন, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সাত্তার, বেলাল আহমেদ, এম এ মমিন পাটওয়ারী, সফি উল্যা, শামছুদ্দিন, সফিক মিয়া।

পরে সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা একে একে প্রার্থীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা নিয়ে কথা বলেন। কে কত টাকা ব্যয় করতে পারবেন, তা নিয়ে চলে খোলামেলা আলোচনা। সে সময় চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দেওয়ান বাচ্চু উপজেলা নির্বাচনে ৩ কোটি টাকা ব্যয় করবেন জানালে তাকে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।

সেখানে চেয়ারম্যান প্রার্থী আ ক ম রুহুল আমিন, শহিদ উল্যা, নুরুল ইসলাম, তাহসান আহমেদ রাসেলও উপস্থিত ছিলেন। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রাকিবুল হাসান মাসুদ, মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ভূঁইয়া, সুরাইয়া আক্তার শিউলীও সভায় ছিলেন। রাত ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত টানা এ সভা চলে।

প্রসঙ্গত, ওই সভায় চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আরাফাতকে ডাকা হয়নি।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল বার্তা২৪.কমের কাছে অভিযোগ করে বলেন, সংসদ সদস্য সাদা কাগজে আমাদের ৫ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সই নিয়েছেন। এটি দলীয় নির্বাচনি নির্দেশনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নির্বাচন করলে কত টাকা খরচ করতে পারবো তারা জানতে চাইলে আমি দেড় কোটি টাকার কথা বলেছি।

সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের বড় ভাই মো. আখতার হোসেন খান বলেন, আনোয়ার হোসেন নির্বাচনের প্রার্থিতা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। আমিও তাকে সতর্ক করে দিয়েছি। কিন্তু তার লোকজনের হুমকির মুখে আমি এলাকায় যেতে পারছি না।

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান মাসুদ বলেন, বৈঠকে ৩ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর সই নেওয়া হয়েছে। সেখানে নির্বাচন থেকে বিরত থাকার জন্য বুঝিয়ে আমাকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য বলেছেন। আমি প্রত্যাখ্যান করেছি। পরীক্ষিত সাবেক ৩ ছাত্র নেতার প্রার্থী থাকার পরও সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খান পদ, পদবিহীন টাকাওয়ালা একজনকে কথিত সমর্থন দিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পৌর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র ৩ নেতা জানান, নির্বাচন করার জন্য দল সবার জন্য উম্মুক্ত করে দিয়েছে। সংসদ সদস্য নির্বাচনে নিজের প্রভাব বিস্তারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে তিনি টাকার বিনিময়ে একক প্রার্থী ঘোষণা করছেন। এতে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে।

সংসদ সদস্যের বক্তব্য জানতে আনোয়ার হোসেন খানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে সংসদ সদস্যের স্থানীয় সমন্বয়কারী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ বলেন, নির্বাচনে কার কী অবস্থান, কার কী আর্থিক অবস্থা, প্রার্থীদের সক্ষমতাকে নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রাথমিক অলোচনা হয়েছে। এটি দলের আনুষ্ঠানিক কোনো সভা ছিল না। নিজেদের মধ্যে ঘরোয়া আলোচনা হয়েছে। কাউকে চাপিয়ে দেওয়া বা বাধ্য করা হয়নি।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু এমপি বলেন, চেয়ারম্যান পদের দাম ৩ কোটি টাকা উঠেছে, রামগঞ্জের কয়েকজন আমাকে এ কথা জানিয়েছেন। এবার একক প্রার্থী ঘোষণা, সমর্থক দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আনোয়ার খান দলের নির্দেশনা ভঙ্গ করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে বিষয়টি জানাবো আমি।

রামগঞ্জে দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে উপজেলা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।

;