নেতাদের কারণেই দীর্ঘায়িত হচ্ছে খালেদার কারাবাস



শিহাবুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় মোট ১৭ বছরের সাজা মাথায় নিয়ে বিগত ১৫ মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

এ দুই মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে আরও ৩৫টি মামলা। এর মধ্যে চারটিতে জামিন পাননি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ফলে মুক্তি মিলছে না তার।

বিএনপি নেতাদের সঠিক নেতৃত্বের অভাব ও কৌশল নির্ধারণ না করে পথ চলাতেই খালেদা জিয়ার কারাভোগ দীর্ঘায়িত হচ্ছে বলে মনে করেন খোদ দলের অনেক নেতা ও রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

বিএনপির অনেক নেতা ও আইনজীবী মনে করেন, খালেদা জিয়া জামিন পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে কারাগারে আটকে রেখেছে। অপরদিকে, রাজপথে কঠোর আন্দোলন না করায় খালেদা জিয়ার জামিন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। একই সঙ্গে নিম্ন ও উচ্চ আদালতের ওপর সরকার সরাসরি প্রভাব ফেলছে। এ অবস্থায় আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব নয়, যদি সরকারের সদিচ্ছা না থাকে।

খালেদা জিয়া কারান্তরীণ হওয়ার পর জ্বালাও-পোড়াও, হরতাল, অবরোধের মতো কঠোর কোনো আন্দোলনের পথে যায়নি দলটি। মানববন্ধন, অনশন, প্রতিবাদী সমাবেশ বা জনসভার মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ খালেদার মুক্তির দাবি। যা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন বিএনপির সিনিয়র অনেক নেতাই।

মাস খানেক আগে রাজনীতির মাঠে গুঞ্জন ছিল, খালেদা জিয়ার মুক্তির সমঝোতায় বিএনপির নির্বাচিতদের সংসদে পাঠিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ মনে করেন, সে ক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি করতে পারেনি বিএনপি। সংসদে যাওয়ার আগে যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করে শর্ত সাপেক্ষে বিএনপি নেতারা সংসদে যেতেন, তাহলে খালেদা জিয়ার জামিনে সরকার বাধা দিত না।

রাজনীতি বিশ্লেষক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে বিএনপিতে খুব বেশি উদ্বিগ্নতা আছে বলে আমার মনে হয় না। সংসদে যাওয়া নিয়েও তারা ঠিক মতো খেলতে পারল না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করার পর শর্ত সাপেক্ষে সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটাও করা হয়নি। যেভাবে খালেদা জিয়ার প্রতি মানুষের সমর্থন রয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়ালেও লোক ছুটে আসত। কারণ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়া। তার মুক্তির প্রশ্নে বিএনপির নেতৃত্ব আরও ডায়নামিক, শক্তিশালী ও গতিশীল হওয়া দরকার ছিল।

খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে না পারার দায় বিএনপির নেতাদেরই-এ মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি মনে করেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে কোনো আন্দোলনই গড়ে তুলতে পারেনি তাদের দল। ফলে খালেদা জিয়ার কারাভোগ দীর্ঘ হচ্ছে।

তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের নেত্রীর জন্য যে মুভমেন্ট (আন্দোলন) দরকার, তা তো আমরা করিনি। তাহলে এ দায় কি বিএনপির নেতৃত্বের দিকে যায় না?

প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি বা আমরা তো এ দায় থেকে মুক্ত না। সবাই মিলেই, এখানে এককভাবে কারো ওপরে দোষ চাপিয়ে লাভ নেই। আমাদের নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য ফার্মগেট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত মশাল হাতে মিছিল করেছেন। সেই নেত্রীর জন্য যে আন্দোলন করা দরকার, সেটা আমরা করিনি। আর আমাদের শুধু মুখের কথায় বা কান্নাকাটিতে সরকার তাকে ছেড়ে দেবে, এটা আমরা ভাবি কীভাবে? নেত্রীকে মুক্ত করার জন্য আমরা প্রতিদিনই শপথ নিচ্ছি, কিন্তু সেই শপথ আমরাই ভঙ্গ করি, রক্ষা করি না। রক্ত দেব বলি, কিন্তু কেউ রক্ত দিয়েছে?

খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বের করতে না পারার দায় বিএনপির বর্তমান নেতৃত্বের ওপরই দিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনিও ভেবেছিলেন, বিএনপি সংসদে গেলে সরকার খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে নমনীয় হবে। কিন্তু সেটা হয়নি। অন্যদিকে, খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে আন্দোলনের ডাকও দেয়নি বিএনপি। রাজপথে বিএনপির কঠোর আন্দোলন না থাকা এবং সরকারের বাধা থাকায় খালেদা জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন বলে মনে করেন তিনি।

Khaleda Jia
আদালতে খালেদা জিয়া, ফাইল ফটো

 

খন্দকার মাহবুব হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, কেউ যদি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হন, তারপরও তাকে জামিন দেওয়া হয়। অথচ খালাদা জিয়ার সাত বছরের সাজায় জামিন মিলছে না। আমরা একটি মামলায় জামিন নিলে আরেকটি সামনে নিয়ে আসা হয়। আমরা জজ কোর্টে জামিন নিলে তারা (সরকার পক্ষ) হাইকোর্টে যায়, হাইকোর্ট জামিন দিলে, তারা আপিল বিভাগে যায় জামিন বাতিল করার জন্য। এভাবে খালদা জিয়ার জামিন দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে যে কোনো কারণেই হোক আমাদের (বিএনপি নেতাদের) যা করণীয় ছিল, তা করতে পারিনি। রাজপথে আন্দোলন করা দরকার ছিল, সেটা করতেও বিএনপি ব্যর্থ হয়েছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির যেসব নেতা বিজয়ী হয়েছেন তাদের সংসদে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে কোনো বার্তা ছিল কি না জানতে চাইলে সিনিয়র এই আইনজীবী বলেন, আমরা ধারণা করেছিলাম যে সমঝোতার ভিত্তিতে সংসদে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি ভিন্ন চিত্র। সংসদে যাওয়ার পর হাইকোর্টে আমরা খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন করেছিলাম, সেটার কাগজ আনা ও আপিলের শুনানির জন্য দুই মাস পর তারিখ দেওয়া হয়েছে। এতে আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, যারা সংসদে গিয়েছেন তারা ব্যক্তি স্বার্থে গিয়েছেন। কোনো রাজনৈতিক সমঝোতা হয়েছে বলে মনে করি না।

 

   

উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের স্বজনদের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্দেশনায় মন্ত্রী-সাংসদদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদক। এতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার কথা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাওয়া মন্ত্রী ও সাংসদদের স্বজনদের তালিকা করারও নির্দেশনা দেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন প্রভাব মুক্ত রাখার যে কঠোর নির্দেশনা তা সবাইকে তিনি অবগত করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বৈঠকে আমাদের সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রী-সাংসদদের সন্তান, ভাই বা নিকটাত্বীয়রা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী যেনো না হয় তা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমাদের জানিয়েছেন।

;

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বারিধারায় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কার্যালয়ে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ অংশ নেন। ব্রিটিশ হাইকমিশন বাংলাদেশের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়, বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন সারাহ কুক।

এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, দুপুরের দিকে বৈঠক হয়েছে বলে আমি জানি। তবে, বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু জানা নেই।

;

জামিন না দেওয়া প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মিথ্যা মামলায় দলের নেতাকর্মীদের সাজা প্রদান ও জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোকে আওয়ামী সরকার তাদের প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে পরিণত করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিএনপি নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, মাকসুদ হোসেন এবং সদস্য মোহাম্মদ আরিফ হাসানকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ কয়েকজন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি ও প্রহসনমূলক নির্বাচনের পর দখলদার আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক জোরালোভাবে শুরু হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর অবর্ণনীয় জুলুম—নির্যাতন। ডামি আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিরোধী দল ও মতের মানুষদের ঘায়েল করতে লাগামহীন গতিতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দায়েরের মাধ্যমে আদালতকে দিয়ে ফরমায়েশি সাজা দিচ্ছে। জামিন নামঞ্জুর করে কারান্তরীণ করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

;

গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই বিএনপির: ওবায়দুল কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতবৃন্দ লাগাতারভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি একথা বলেন।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, একদিকে তারা অগুন-সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করছে অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিরোধীদল দমনের মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টে বিএনপি লাগাতারভাবে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে গণতন্ত্র ও নির্বাচন বানচালের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছিল বিএনপি।

তিনি বলেন, ইতোপূর্বে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি-জামাত অপশক্তি সারাদেশে ভয়াবহ অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে শত শত নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। তাদের এই ভয়াবহ সম্মিলিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের কথা বলে। সরকার বেপরোয়াভাবে কাউকে কারাগারে পাঠাচ্ছে না। বরং সন্ত্রাস ও সহিংসতার অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা আইন ও আদালতের মুখোমুখি হচ্ছে এবং জামিনে মুক্তিও পাচ্ছে। তবে যারা নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে- জনগণের জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি করেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে সেসব সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদারদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা ও মহামান্য আদালত যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

বিএনপি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সে কারণে বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের মিথ্যা অভিযোগ তুলে সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ বিরোধী দল দমনে বিশ্বাস করে না। তবে সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় নেই, সে যে দলেরই হোক না কেন সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বর্হিভূত বক্তব্য প্রদান করছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে বদ্ধপরিকর। জনগণের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করতে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচন গুরুত্ব অপরিসীম। অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি বরাবরের ন্যায় নির্বাচন ও দেশের গণতন্ত্র বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। সে কারণে জনগণও তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচন বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকেও কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করতে হয়েছে। তাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিচ্ছে না। দল ও দলের বাইরে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি যাতে নির্বাচিত হয় সেটাই আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা করে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতৃবৃন্দ যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কঠোর সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে সারাদেশে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের জনগণ যখন নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে বিএনপি নেতারা তখন বরাবরের ন্যায় দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করতে চায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে নিরন্তন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।

বিবৃতিতে তিনি বিএনপির গণতন্ত্রবিরোধী অপতৎপরতা সম্পর্কে সকলকে সচেতন ও সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের জন্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

;