উদ্বোধনের অপেক্ষায় আওয়ামীলীগের নবনির্মিত কার্যালয় ভবন
ঢাকা: আধুনিক স্থাপত্য শৈলীর আদলে দেশ ও দলের ইতিহাস খচিত বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে নবর্নিমিত কার্যালয় ভবনে শনিবার উঠতে যাচ্ছে দেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
শনিবার ২৩ জুন দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ১০ তলা ভবনটি উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন রোজ গার্ডেনে যাত্রা শুরুর পর পুরান ঢাকা, পুরানা পল্টন ও সার্কিট হাউস রোড এলাকায় কয়েকবার অফিস পাল্টায় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর ঠিকানা হয় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ।
চারতলা পুরনো ভবন থেকে কার্যক্রম চালানো কঠিন হওয়ায় ২০১১ সালে পরিকল্পনা হয় নতুন ভবন নির্মাণের। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পর ২০১৬ সালে নকশায় অনুমোদন দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই পুরনো স্থাপনা ভাঙা শুরু হয়। রাজধানীর গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের ১০ তলা আধুনিক কার্যালয়টির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয় ওই বছরের সেপ্টেম্বরে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে আওয়ামী লীগের নতুন ভবন উদ্বোধন দলের নেতাকর্মীদের বাড়তি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। এক ছাদের নিচে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা বসে দলের কার্যক্রম চালাতে পারব।
আট কাঠা জায়গার উপর নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে কার্যালয়টি।ভবনটির প্রথম থেকে তৃতীয়তলা পর্যন্ত প্রতিটি ফ্লোর ৪ হাজার ১০০ বর্গফুট। চতুর্থতলা থেকে উপরের সব ক’টি ৩ হাজার ১০০ বর্গফুটের। পুরো কার্যালয়টি থাকবে ওয়াইফাই জোনের আওতায় বলে জানিয়েছে দলীয় নেতারা।
এই কার্যালয় ভবনে ছয় বা সাততলা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অফিস থাকবে।
ভবনের সামনের দিকে স্টিলের বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’। পাশেই দলীয় প্রতীক নৌকা। সবার উপরে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। এরপর রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের ম্যুরাল। দুই পাশ কাঁচ দিয়ে ঘেরা।
সামনের পুরো দেয়ালজুড়ে দলের সাইনবোর্ডসহ দলীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’, চার মূলনীতি খোদাই করে লেখা। এ ভবনের সামনে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে স্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য রাখা হয়েছে সুপরিসর কক্ষ। দলের সভাপতির কক্ষের সঙ্গে রয়েছে বিশ্রামাগার ও নামাজের জায়গা। এছাড়া ডিজিটাল লাইব্রেরি, ভিআইপি লাউঞ্জ, সাংবাদিক লাউঞ্জ, ডরমিটরি ও ক্যান্টিন থাকছে। দুই পাশ কাঁচ দিয়ে ঘেরা। এছাড়াও দুটি স্বতন্ত্র কার পার্কিং, একাধিক লিফট, সিঁড়ি, অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে।
শুক্রবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের প্রধানকার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন এবং পায়রা ও বেলুন ওড়ানো শেষে দলীয় প্রধান কার্যালয়ের নতুন ভবনের ফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।