কফি বন্দনা!



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
কফি, ছবি: সংগৃহীত

কফি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সারা বিশ্বে প্রতিদিন কমপক্ষে ১.৬ বিলিয়ন কাপ কফি পান করা হয়, যা অলিম্পিক-সাইজের তিন শ’ সুইমিং পুল ভরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। পাণীয় হিসাবে কফি শুধু মজাদারই নয়, সৌন্দর্যপ্রিয়তা ও শৈল্পিকতারও পরিচায়ক। বিশ্ববরেণ্য লেখক জোনাথন সুইফট মনে করেন, ‘কফি পান ফিলসফিকাল কালচার’।

সম্ভবত এসব কারণেই কফি এখন গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রি। কসমোপলিটন শহরগুলোতে কফিশপের ছড়াছড়ি। ইয়ং জেনারেশনের ক্রেজ হিসাবে পরিগণিত হচ্ছে কফি।

শুধু তাই নয়, কমোডিটি বা পণ্য হিসাবে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানের অধিকার লাভ করেছে কফি। অর্থাৎ বিশ্বের মানুষের দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্যের তালিকায় রন্ধন তেলের প্রথম স্থানটির পরেই রয়েছে কফির জায়গা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309590456.jpeg

১২০০ বছর আগেও মানুষ শরীর-মন চাঙ্গা করার অতুলনীয় পাণীয় কফির কথা জানতো না। কঠোর পরিশ্রমের পর ঝিমিয়ে কাটতো তাদের দিন ও রাত। অকস্মাৎ আফ্রিকার প্রত্যন্ত জনপদের এক তৃণভূমিতে ঘটলো অভূতপূর্ব একটি ঘটনা।

খালিদ নামের একজন আরব ইথিওপিয়ার তৃণভূমিতে ছাগল-মেষ চড়ানোর সময় এক অদ্ভূত বিষয় খেয়াল করলেন। আফ্রিকার এই নতুন জায়গাটি সদ্য-মুসলিম আরবদের অধীনে এসেছে। ইসলামের বাণী নিয়ে আরবরা তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিজয় কেতন উড়াচ্ছে।

নতুন দেশের অনেক কিছুই অজানা-অচেনা। খালিদ দেখলেন একটি বিশেষ ধরনের গাছের পাতা ও ফল খেয়ে তার পশুদল অনেক বেশি উৎফুল্ল ও চনমনে। জাম বা বেরি আকারের ফলটি চারণভূমির যেদিকে আছে, সেখানকার ছাগল-মেষগুলোকে দলের অন্য পশুদের চেয়ে অনেক তরতাজা ও স্বতঃস্ফূর্ত দেখাচ্ছে।

খালিদ এই গাছটির নাম দিলেন আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া। আরবি থেকে অনুবাদে এর নামই কফি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309612719.jpeg

নামের এই বৈচিত্র্য প্রসঙ্গে মনে রাখা ভালো যে, ইংরেজি ভাষা যেমন ইংল্যান্ড, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ায় একসেন্ট বা উচ্চারণ বদলিয়েছে, আরবি ভাষাও মূল আরব জাহান ও উত্তর আফ্রিকায় খানিক বদলে গেছে। যেমন, গাদ্দাফি। তাকে কাদ্দাফিও বলা হয়। গাম্বিয়া/জাম্বিয়া, ক্বাওয়া/গাওয়া, নাগিব/নাজিব, খলিল/কাহলিল ইত্যাদি একই শব্দের ভিন্ন উচ্চারণ মাত্র।

অচিরেই দেখা গেলো, আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া নামের গাছের জাম-সদৃশ্য শক্ত ফলটি ইয়েমেনেও পাওয়া যাচ্ছে এবং সেখানকার সুফি সম্প্রদায়ের তপস্যারত মুসলিমরা তা জ্বালিয়ে পান করছেন। নিজেকে সজাগ, সচল ও ক্রিয়াশীল রাখার ক্ষেত্রে কঠোর ব্রতচারী সুফিদেরকে শারীরিক ও মানসিক শক্তি যোগাচ্ছে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া তথা কফি।

কিছুদিন পরেই দেখা গেলো, মধ্যরাতের তাহাজ্জুদ নামাজের আগে-পরে কিংবা যিকর বা ধ্যানের সময়ে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া পান করে শক্তি ও উদ্যম পাওয়া যাচ্ছে। পঞ্চদশ শতাব্দীর মধ্যে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া হজ্জপালনকারী, পর্যটক, বণিক, ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের আরব ও আফ্রিকা ছাড়িয়ে পৌছে যায় পারস্য ও তুর্কিস্তানের অন্যান্য মুসলিম জনপদে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309647784.jpeg

অচিরেই মুসলিম বিশ্বের জনপ্রিয় পাণীয় রূপে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া-এর একচ্ছত্র আধিপত্য ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মধ্যযুগের পপুলার বেভারেজ বলতে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া ছাড়া আর কিছুই ছিল না।

মিশর ও উত্তর আফ্রিকা দিয়ে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া ইউরোপে প্রবেশ করে। যোদ্ধা ও বণিকরা রাস্তাটি খুলে দেয় ইউরোপীয়দের কাছে।

১৬৪৫ সালে ইউরোপের প্রথম কফিশপ চালু হয় ভিয়েনা শহরে। পাসকোয় রোসি নামে একজন তুর্কি ১৬৫০ সর্বপ্রথম কফি নিয়ে যায় বিলাতে। তিনি জর্জইয়ার্ড, ল্যাম্ববার্ড স্ট্রিট, লন্ডন ঠিকানায় একটি কফিশপ শুরু করেন।

আট বছর পর জনপ্রিয়তা বাড়ায় লয়েডে আরেকটি কফিশপ চালু হয়। ১৭০০ সালে ‘এডওয়ার্ড লয়েড কফি হাউস’ নামের একটি চেইনশপ চালু হয়। এখনো যাদের অসংখ্য শাখা রয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309676660.jpeg

কফি তৈরির আদি ধরণটি মুসলিম প্রবর্তিত, যাতে কফির পাউডার, পানি ও চিনি একসঙ্গে জ্বাল দিয়ে না ছেঁকেই পরিবেশন করা হয়। কষা স্বাদ ও কড়া গন্ধের এই কফি ট্র্যাডিশনাল কফিপ্রেমীদের কাছে অদ্যাবধি প্রিয়।

যদিও কয়েক বছর পর কফি তৈরির নিয়ম ও শৈলীতে কিছুটা পরিবর্তন আসে, যার নাম ক্যাপাচিনো। তার পেছনেও রয়েছে অভিনব কাহিনী।

১৬৮৩ সালে ভিয়েনার মার্কো ডি এভিয়ানো নামের একজন খ্রিস্টান প্রিস্ট বা ধর্মযাজক তুর্কিদের বিরুদ্ধে লড়ছিলেন। তখন ইউরোপের পূর্বাঞ্চল ছিল তুর্কি শাসনাধীন। তিনি তুর্কি-আরবদের মতো করে তৈরি কড়া কফি পানের বদলে ক্রিম ও মধু দিয়ে একটু নরম ও সুমিষ্ট কফির রন্ধনশৈলী উপস্থাপন করেন। কালো কফির রঙও বদলে বাদামী রঙ ধারণ করলো আর স্বাদও হলো অনেক সহনীয়।

এখন বিশ্বের দেশে দেশে নানা রকমের কফি দেখতে পাওয়া গেলেও কড়া ও সহনীয় ধরন দুটিই প্রধান। চা আবিষ্কারের এবং কোমল পাণীয় আসার আগে কফি যে দাপট ও প্রাধান্য অর্জন করেছিল, তা এতো শত বছরের ব্যবধানে মোটেও কমে নি। ফলে বিশ্বের এক নম্বর পাণীয় এখনো কফি এবং বিশ্বের দ্বিতীয় প্রধান ভোগ্যপণ্যের স্থান কফির দখলে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309865244.jpeg

মজার ব্যাপার হলো, বর্তমানে কফি উৎপাদনে লাতিন আমেরিকা সমগ্র বিশ্বের নেতৃত্ব দিলেও কফি পানের উদ্ভাবক ও বিস্তারক হিসাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন আরব-মুসলিমরা। মুসলিমরা কফিকে একটি বৈশ্বিক পাণীয়তে পরিণত করেছেন এবং নিজেরা শ্রেষ্ঠতম কফিপ্রেমী হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন।

ফলে আরব জাহানের যে কোনও দেশে বা শহরে কফির মৌতাত এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। পবিত্র মক্কার বায়তুল্লাহ এবং মদিনা নগরীর মসজিদে নববীতে নামাজের শেষে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া দিয়ে ঐতিহ্যবাহী আরব আতিথিয়তা করার রেওয়াজ এখনো চলছে।

আরব দেশে যে কোনও গৃহে মেহমান আসার সঙ্গে সঙ্গে খেজুর আর আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া মেহমানের সামনে চলে আসে। তার পেছনে আসে অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য। বস্তুত আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া ছাড়া আরব জাহানের আপ্যায়ন অসম্পূর্ণ।

অপরাপর আরব ও অনারব মুসলিম দেশেও আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া তথা কফি অপ্রতিরোধ্য গতিতে জনতুষ্টি লাভ করে চলেছে। তবে আরব সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে গণ্য করা হয় কফিকে। বিশ্বে যত কফি পান করা হয়, তার সিংহভাগই আরবে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309899440.jpeg

বৃহত্তর আরব জাহানের সর্ব-পশ্চিম প্রান্ত মরক্কোর ফেজ বা রাবাত শহর থেকে পূর্ব প্রান্তের পার্শিয়ান গাল্ফ কিংবা আরব সাগর তীরের ইয়েমেনের এডেন বন্দর পর্যন্ত কফির জয়জয়াকার। পশ্চিম ও মধ্য এশিয়ায় কাবাব আর রুটির পাশে কফির ছোট ছোট কাপ খাদ্য সংস্কৃতির অপরিহার্য অঙ্গ। যে কফির ঢেউ আরও পূর্বে পাকিস্তান-ভারত-বাংলাদেশ ছাড়িয়ে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত।

আড্ডা, আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের লীলাভূমি কায়রোর ক্যাফেগুলো কফি ছাড়া অচল। নীল নদের তীরের খোলামেলা দোকানগুলোতে রয়েছে কফির ছড়াছড়ি। নোবেল বিজয়ী মিশরীয় লেখক নাগিব/নাজিব মাহফুজের লেখার বার বার এসেছে কফির কথা।

কফির কথা এসেছেন তুর্কি নোবেল বিজয়ী লেখক ওরহাম পামুকের লেখাতেও। বসফরাস প্রণালীর পাশে ইউরোপ ও এশিয়া এসে মিশেছে যে অনিন্দ্য ভূগোলে, সেই ইস্তাম্বুলের নাগরিক জীবনে কফি মিশে আছে প্রাত্যহিক জীবনের অঙ্গ হয়ে।

পানের অভ্যাসের সঙ্গে বিচিত্র-বিভিন্ন পেয়ালায় পরিবেশিত কফি ইসলামী শিল্প ও রুচির বিকাশেও পালন করেছে অনন্য ভূমিকা। ইসলামিক মৃৎশিল্প সঞ্জীবিত হয়েছে কফির স্পর্শে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309957396.jpeg

কফি পান, চর্চা ও বিকাশের পাশাপাশি আরব মুসলিমরা একে সাহিত্য ও গবেষণার বিষয়েও পরিণত করেছেন। সর্বপ্রাচীন কফি বিষয়ক গ্রন্থের প্রণেতাও একজন মুসলিম। তার নাম শেখ আবু আল কাদির। ১৫৮৮ সালে তিনি কফি বিষয়ক একটি গবেষণা গ্রন্থ প্রণয়ন করেন, যাতে এর এনসাইক্লোপেডিক সকল তথ্যই রয়েছে। এখন পর্যন্ত এটিই হচ্ছে কফি নিয়ে লেখা পৃথিবীর সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রাচীন বই।

ঋপদী কফি গবেষক শেখ আবু আল কাদির অনেক তথ্য ও বিবরণের সঙ্গে সঙ্গে একটি চসৎকার অনুভূতির কথাও বলেছেন। তার সেই উক্তি এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে। তিনি জানাচ্ছেন: ‘Coffee is the common man’s gold, and like gold it brings to every person the feeling of luxury and nobility’. 

সত্যিই, প্রকৃত কফি পানের ক্ষেত্রে যে স্বাদের মজা আর অনুভূতির ছোঁয়া পাওয়া যায়, তা অতুলনীয়, অপূর্ব ও অতি মহার্ঘ্য।

আরও পড়ুন: পৃথিবী বিখ্যাত পাঁচ ব্যয়বহুল কফি!

আরও পড়ুন: কতটা উপকারী প্রিয় পানীয় কফি?

   

রেকর্ড ভাঙবে তাপমাত্রা, জেনে নিন গরম থেকে রক্ষার উপায়!



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
রেকর্ড ভাঙবে তাপমাত্রা, জেনে নিন গরম থেকে রক্ষার উপায়!

রেকর্ড ভাঙবে তাপমাত্রা, জেনে নিন গরম থেকে রক্ষার উপায়!

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের শুরু থেকেই আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাচ্ছে এবার তাপমাত্রা আগের সব রেকর্ড ভাঙবে। ইতোমধ্যেই তাঁর প্রভাব দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে দেশবাসীর বেহাল দশা। কোন না কোন কাজে সকলকেই বাড়ির বাইরে যেতেই হচ্ছে। তাই বাইরের গেলে নিজেকে রোদ থেকে রক্ষা করতে হবে।  জেনে নিই, যেভাবে এই গরমেও নিজেকে গরম থেকে রক্ষা করবেন-

পানি: নিজেকে সুস্থ রাখতে পানির কোন বিকল্প নেই। রোগ থেকে বাঁচতে হোক অথবা নিজেকে সুস্থ রাখতে, সবসময় পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। প্রচণ্ড তাপে নিজেকে রক্ষা করতে চাইলে কোন ভাবেই পানি পান করা বাদ দেওয়া যাবে না। তেষ্টা না পেলেও পানি পান করতে হবে। দিনে অন্তত ৮ গ্লাস বা তারও বেশি পানি পান করুন।

এছাড়াও, প্রতিবার বাইরে যাওয়ার সময় অবশ্যই পানি সাথে রাখা প্রয়োজন। বিকল্প হিসেবে পানিসমৃদ্ধ ফল বা সবজি খেতে পারেন। যেমন- আপেল, তরমুজ, শসা, আপেল, পেয়ারা ইত্যাাদি।

পোশাক: বাইরে গেলে রোদের সরাসরি সংস্পর্শে আসার কারণে গরম অনেক বেশি লাগে। তাই বাইরে যাওয়ার সময় ঢিলাঢালা পোশাক পরা উচিত। এছাড়াও,কম ওজনের কাপড় ব্যবহার ক্রুন। যেমন, সুতি বা লিনেন। এছাড়াও, হাল্কা রঙের পোশাক বাছাই করা উচিত। কেননা, গাঢ় রঙ তাপ বেশি শোষণ করে বিধায় গরম বেশি লাগে।

রোদ আড়াল করা: যখন বাইরে যাবেন, নিজেকে যথাসম্ভব ছায়ায় রাখুন। সঙ্গে ছাতা রাখুন, যেন ত্বক রোদের সংস্পর্শে না আসে। 

গোসল: গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। এতে ফ্রেশ লাগে, তাছাড়া অনেক্ষ্ণ শরীর থাকে।

গাছ: বাড়িতে থাকলে তুলনামূলকভাবে গরম কম লাগে। তবে ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে চাইলে বাড়িতে বেশি করে গাছ লাগান। গাছ থাকলে পরিবেষ প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা হয়।

তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

;

গরমে চুলের যত্ন নিন ঘরে বসেই



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে চলছে তীব্র তাপদাহ। গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই গরমে মাথা ঘেমে চুল ভেজা থাকায় অনেকেই বিরক্ত থাকেন। ঘামে ভিজে চুলের অবস্থাও নাজেহাল হয়ে যায়। অনেক সময় চুলপড়া বেড়ে যায় গরমে। তাই চুলের বাড়তি যত্ন দরকার হয় এই মৌসুমে।

অনেকেই চুলের যত্ন নিতে নিয়মিত পার্লারে যান। এতে করে সময় এবং অর্থ দুই ব্যয় হয়। অনেকের সময় সুযোগ হয়ে ওঠে না নানা ব্যস্ততায়। তাই সময় এবং টাকা বাঁচিয়ে চুলের যত্ন নিন ঘরে বসেই। 

কীভাবে চুলের যত্ন নেবেন চলুন তা জেনে নিই:

ব্যস্ত সময়ে আমরা অনেকেই চুলে তেল নেই না। আর গরমে তেল না নিলে চুল আরও রুক্ষ হয়ে যায়। তাই নিয়ম করে সপ্তাহে অন্ততপক্ষে দু’দিন চুলে তেল দিতে হবে। চুলের গোড়া মজবুত করতে ‘হট অয়েল ট্রিটমেন্ট’ নিতে পারেন বাড়িতেই।

অনেকের অভ্যাস আছে তোয়ালে দিয়ে চুল পেঁচিয়ে মাথার ওপর তুলে রাখার। এই অভ্যেস থাকলে ত্যাগ করুন। কারণ এতে চুল পড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। এর থেকে ভালো হয় পুরোনো ও নরম টি-শার্ট দিয়ে আলতো হাতে চেপে চেপে চুলের পানি শুকিয়ে নিন। চুল শুকিয়ে এলে মোটা দাঁড়ার চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াবেন। সেক্ষেত্রে প্লাস্টিক না বরং ব্যবহার করুন কাঠের চিরুনি ।

কাজুবাদামের হেয়ার ওয়েল তেল, মধু আর দইয়ের প্যাক চুলের রুক্ষতা দূর করতে বিশেষ কার্যকর। লেবুর রস আর ডিমের কুসুম মিশিয়ে নিয়েও লাগাতে পারেন। এই প্যাক ফিরিয়ে আনতে পারে চুলের হারানো জেল্লা।

;

গরমে সুস্থ থাকতে যেসব খাবার খাবেন



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। এ সময় শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ঘাম হয়ে বের হয়। এতে শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে শরীরে ক্লান্ত লাগে। তাই শরীর সুস্থ রাখতে আপনাকে খেতে হবে পানি ও পানিযুক্ত খাবার।

গরমে কী ধরনের খাবার শরীরের জন্য ভালো চলুন তা জেনে নিই–

পানি

পূর্ণবয়স্ক একজন নারীর দিনে অন্তত ২.৫-৩ লিটার, পূর্ণবয়স্ক একজন পুরুষের ৩-৩.৫ লিটার সুপেয় পানি পান করা উচিত। তবে কিডনি রোগীদের অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে পানির পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।

গরমে লেবু বা ফলের শরবত খাওয়া খুবই উপকারী। ডাবের পানিও খুব দারুণ কার্যকর। এসব পানীয় খুব সহজেই শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করবে। ডাবের পানি ও ফলের শরবত খেলে পানির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় খনিজ লবণের চাহিদাও পূরণ হবে।

সবজি
কাঁচা পেঁপে, পটল, ধুন্দল, শসা, চিচিঙ্গা, গাজর, লাউ, পেঁপে, পালংশাক, টমেটো, শসায় পানির পরিমাণ বেশি থাকে। পানিশূন্যতা দূর করতে এই খাবারগুলো অবশ্যই খাবার তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া পাতলা করে রান্না করা টক ডাল, শজনে ডাল শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।


মৌসুমি ফল

পানিশূন্যতা দূর করার জন্য কাঁচা আম খুবই ভালো। কাঁচা আমে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। এ ছাড়া ভিটামিন সি ও ম্যাগনেশিয়ামও আছে, যা শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। তরমুজ শরীর ঠান্ডা করতে সাহায্য করে। এতে আছে ভিটামিন ও খনিজ লবণ, যা এই গরমে শরীরের জন্য দরকার।

বাঙ্গি খুবই পুষ্টিকর একটি ফল, যা খুবই সহজলভ্য এবং দামেও তুলনামূলক সস্তা। শরীর ঠান্ডা রাখতে বাঙ্গির তুলনা নেই।

আখের রস

আখের রস শরীরকে ঠান্ডা রাখতে খুবই কার্যকরী। আখের রসের সঙ্গে বিট লবণ, পুদিনাপাতা এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেলে এর স্বাদও বাড়ে, পুষ্টিগুণও বাড়ে।

বেলের শরবত

বেলের শরবত পাকস্থলী ঠান্ডা রাখতে খুব কার্যকর। বেলে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, প্রোটিন, রিবোফ্লাভিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১ এবং বি২, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফাইবার।


পুদিনার শরবত

শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখতে এবং সতেজ অনুভূতির জন্য পুদিনার শরবত অতুলনীয়।

জিরা পানি
নোনতা স্বাদযুক্ত এই পানীয় হজমে সাহায্য করে। তবে ডায়াবেটিস রোগীরা শরবতে আলাদা করে চিনি বা মধু অ্যাড করবেন না।

যা খাবেন না

অনেক কার্বনেটেড বেভারেজ আমরা গরমের সময় প্রচুর খেয়ে থাকি, যা ঠিক না। এই পানীয়গুলো শরীরকে সাময়িক চাঙা করলেও এর কোনো পুষ্টিগুণ নেই, বরং শরীরকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ঝাল, বাইরের খোলা শরবত, বাইরের খাবার, ভাজাপোড়া এ সময় যতটা পারেন এড়িয়ে চলুন। পাতলা ঝোল ঝোল খাবার খাওয়া এ সময় সবচেয়ে ভালো।

 

;

হুপিং কাশিতে আক্রান্ত, মেনে চলুন এই বিষয়গুলো!



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হুপিং কাশিতেন আক্রান্ত শিশু / ছবি:সংগৃহীত

হুপিং কাশিতেন আক্রান্ত শিশু / ছবি:সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হুপিং কাশি খুবই গুরুতর একটি রোগ। বোর্ডেটেলা পারটুসিস ব্যাকটেরিয়ার কারণে এই রোগ হয়। খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ব্যাকটেরিয়া। মূলত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ মানুষের শ্বাসনালীতে আক্রমণ করার ফলে হয়। হুপিং কাশির প্রাথমিক উপসর্গ হলো কাশির সাথে শ্বাসকষ্ট। ইদানিং বেশ কয়েকটি দেশে হুপিং কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়তে দেখা যায়। গত বছরের তুলনায় এই বছর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা প্রায় ২০ গুণ বেশি। তাই হুপিং কাশির ক্ষেত্রে সতর্কতা বাড়াতে হবে।

সতর্কতা বাড়ানোর আগে অবশ্যই রোগের উপসর্গ সম্পর্কে জানতে হবে। এছাড়াও সংক্রমণ শিথিল করার উদ্দেশ্যে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। জেনে নিই হুপিং কাশিতে আক্রান্ত হলে কি করতে হবে-

১. টিকা: যেকোনো রোগের প্রতিরোধের প্রাথমিক পদক্ষেপ হলো টিকাগ্রহণ। বেশির ভাগ রোগের জন্যই প্রতিরোধমূলক টিকা রয়েছে। শিশুদের ছোট থেকেই বাধ্যতামূলক কিছু টিকাদান করা হয়। সাধারণত ২ মাস বয়স থেকে শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু করা হয়।

২. স্বাস্থ্যবিধি: ছোট থেকেই সকলের পরিষ্কার করে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অনুশীলন করতে হবে। বাড়ি বড়দের উচিত সাবান পানিতে দিয়ে হাত ধোয়ার জন্য শিশুদের উৎসাহিত করা। বিশেষ করের বাইরে থেকে ফেরত আসার পর, হাঁচি-কাশির পরে বা নোংরা কিছু ধরার পর। এছাড়া টয়লেট থেকে এসে এবং অবশ্যই খাওয়ার আগে হাত ধুতে হবে। এছাড়াও কাপ, চামচ, গ্লাস বা মগ ইত্যাদি জিনিস ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহার করাই ভালো।   

৩. নাক-মুখ ঢাকা: শুধু হুপিং কাশি নয়, বেশিরভাগ ছোঁয়াচে রোগই হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। তাই অবশ্যই হাঁচি বা কাশি আসলে সবসময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা উচিত। অথবা কোনো কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে নিন যেন জীবাণু না ছড়াতে পারে। হাতের কাছে কিছুই না পেলে কনুই দিয়ে মুখ ঢেকে নিন। হাঁচি এবং কাশির সময় ‍মুখ ঢেকে নিলে রোগ ছড়ানো অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব।

৪. বাড়িতে থাকা: হুপিং কাশিতে আক্রান্ত হওয়া নিশ্চিত হলে ঘর থেকে বাইরে যাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। একেবারেই বের না হলে আরও ভালো। অত্যাধিক সংক্রমণ ঝুঁকি থাকার কারণে অন্যদেরও উচিত আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাথে দূরত্ব বজায় রাখা।

৫. চিকিৎসা: আক্রান্ত নিশ্চিত হওয়ার পর অতি দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তাছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসাও গ্রহণ করতে হবে। 

;