বিশ্ব রক্তদাতা দিবস: প্রয়োজন সচেতনতা বৃদ্ধি

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেস্পন্ডেন্ট/ লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রক্তদাতা দিবস।

রক্তদাতা দিবস।

ক্যালেন্ডারে আজকের তারিখটি হলো ১৪ জুন। আলাদাভাবে তারিখের কথা উল্লেখ করার কারণ, আজ হলো ‘বিশ্ব রক্তদাতা দিবস’ তথা World Blood Donor Day(WBDD). ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই দিনটিতে রক্তদানের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে রক্তদাতাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) দ্বারা চিহ্নিত আটটি অফিশিয়াল ‘গ্লোবাল পাবলিক হেলথ’ ক্যাম্পেনিং এর মাঝে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস একটি।  

বিজ্ঞাপন

দিনটি কেন এতোটা গুরুত্বপূর্ণ? কারণ রক্তদাতাদের সহযোগিতার জন্যেই আজ পুরো বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি মানুষ সুস্থভাবে বেঁচে আছেন। মাত্র দশ মিনিটের একটি কাজ, অথচ যার প্রয়োজনীয়তা ও চাহিদা অসীম।

সকলের মাঝে রক্তদান সম্পর্কে জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যেই পালন করা হয় এই দিনটি। আজকের ফিচারে তুলে ধরা হলো রক্তদানের ফলে শারীরিক উপকারিতাসহ কিছু প্রয়োজনীয় ব্যাপার।

বিজ্ঞাপন

শারীরিক সুস্থতা সমূহ:

হৃদস্বাস্থ্য ভালো রাখে

নিয়মিত রক্তদানের ফলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভবনা ৮৮ শতাংস ও স্ট্রোকের সম্ভবনা ৩৩ শতাংস পর্যন্ত কমে যায়। এছাড়া রক্তদানের ফলে ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকে বলে হৃদরোগ দেখা দেবার ঝুঁকি কমে যায় অনেকটা।

অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভালোমতো কাজ করে

রক্তদানের ফলে হৃদপিন্ড ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে অঙ্গ সঠিকভাবে ও সুন্দরভাবে কাজ করতে পারে।

নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে

রক্তদানের ফলে হারানো কোষ দ্রুত প্রতিস্থাপনের জন্য শরীর কাজ শুরু করে দেয়। এতে নতুন ও স্বাস্থ্যকর ব্লাড সেল তৈরি হয় এবং স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।

আয়রনের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে

হেমোক্রোমাটোসিস (Hemochromatosis) হলো এমন একটি শারীরিক কন্ডিশন, যেখানে শরীর অতিরিক্ত আয়রন শোষণ করে থাকে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তবে রক্তদানের মাধ্যমে এই কন্ডিশনকে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ক্যালোরি বার্ন করতে সাহায্য করে

নিয়মিত রক্তদানের অভ্যাস করলে শারীরিক সুস্থতা ও ফিটনেস বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও রক্তদানের মাধ্যমে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ সর্বোচ্চ ৬৫০ ক্যালোরি পর্যন্ত বার্ন করতে পারে। যার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব হয়।

অন্যান্য সুবিধা সমূহ:

বিনামূল্যে মেডিকেল চেকআপ

রক্তদানের পূর্বে বেশকিছু মেডিকেল পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয় রক্তদাতাকে। যার মাধ্যমে চিহ্নিত ও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়- রক্তদাতার কোন ধরণের সুপ্ত শারীরিক সমস্যা আছে কিনা এবং তিনি রক্তদানের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত কিনা। যে কারণে রক্তদানের মাধ্যমে মেডিকেল চেকআপটাও হয়ে যায় একদম বিনামূল্যে।

মন ভালো করতে অনবদ্য

রক্তদানের ফলে একজন আশঙ্কাজনক রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়। কাউকে সাহায্য করার মতো, বিশেষ করে কারোর জীবন বাঁচানোর মতো প্রশান্তিদায়ক অনুভুতি অন্য কিছুতেই নেই।

রক্তদান নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা সমূহ:

রক্তদান কষ্টকর

অনেকেই রক্তদান করতে ভয় পান কারণ তারা ভাবেন এটা খুবই কষ্টকর কাজ। নিশ্চয় সবাইকে কোন না কোন সময় রক্ত পরীক্ষা করাতে হয়েছে অসুস্থতার জন্য। রক্তদান কিন্তু তার চেয়ে খুব একটা ব্যতিক্রম নয়। প্রতিটি ক্লিনিক ও হাসপাতালের দায়িত্বরত ডাক্তার ও নার্সরা রক্ত নেওয়ার ব্যাপারে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন। তাই এই বিষয়ে ভয় পাওয়াটা অমূলক।

রক্তদানের পর অসুস্থতা

উপরোক্ত পয়েন্টগুলো পড়ার পর নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, এটা কতখানি ভ্রান্ত ধারণা। রক্তদানের ফলে শরীর সুস্থ হয়ে ওঠে, অসুস্থ নয়। অনেকেই ভুলবশত রক্তদানের পরপরই হাঁটাচলা শুরু করেন। ফলে মাথা ঘোরানো ভাব দেখা দিয়ে থাকে। তাই প্রতিবার রক্তদানের পর অবশ্যই মিনিট দশেক শুয়ে থাকতে হবে এবং জ্যুস অথবা স্যালাইন পান করতে হবে।