স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সীমাহীন ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে সারাদেশের ১০ জেলায় অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার কারণে কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাকে হাতেনাতে ধরাসহ শাস্তিস্বরূপ তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করেছে দুদক।

সোমবার (২১ জানুয়ারি) এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয় এক সংবাদ সম্মেলন করেন দুদক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী।

তিনি বলেন, 'দেশের স্বাস্থ্যসেবা এরকম সীমাহীন দুর্নীতির কবলে পড়বে সেটা মানুষ ভাবতে পারে না। আমি অনুরোধ করব যারা সেবার মন নিয়ে আসবেন শুধুমাত্র তারাই এখানে যুক্ত থাকবেন।'

তিনি আরও বলেন, 'স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকদের নৈতিক অবক্ষয় চরম রূপ নিয়েছে। আপাতত কাউকে গ্রেফতার না করলেও পরবর্তী সময়ে এমন হলে গ্রেফতার এবং চাকরি হারাতে হবে।'

সোমবারের অভিযানে যাদেরকে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে পাওয়া যায় নি, তাদেরকে চিঠি দেবে দুদক। ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট মুগদা জেনারেল হাসপাতালে অভিযান চলাকালে ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন হাসপাতালে চার বেয়ারার আবু মুসা ভূঁইয়া। তাকে তাৎক্ষণিক ভাবে বরখাস্ত করা হয়।

এছাড়াও সারাদেশে অভিযান চলাকালে দুদক দেখতে পায় ঢাকার ভেতরে চিকিৎসকের অনুপস্থিতির হার ৪০ শতাংশ এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসকের উপস্থিতির হার ৬১ শতাংশ।

সারাদেশে যেসব হাসপাতালে অভিযান চালানো হয়েছে, রংপুরের পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, দিনাজপুর সদর হাসপাতাল, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মুক্তাগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাবনা সদর হাসপাতাল ও আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

ঢাকায় অভিযান চালানো হাসপাতালগুলো হলো মহানগর এর কর্মচারী হাসপাতাল ফুলবাড়িয়া নাজিরা বাজার মা ও শিশু সদন, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল।

দুদক ডিজি জানান, রংপুরের পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮জন ডাক্তার ডিউটিতে থাকার কথা পাওয়া গেছে মাত্র ২ জনকে। রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯ জনের মধ্যে ৩ জন, দিনাজপুর সদর হাসপাতালে ২৪ জনের মধ্যে ৮ জন, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ১৫ জনের মধ্য মাত্র ৬ জন, মুক্তাগাছায় ১০ জনের মধ্যে ৮ জন, কুমারখালীতে ৮ জনের মধ্য ৫ জন পাওয়া গেছে।

পাবনা সদর হাসপাতালে ৩৫ জন অনুপস্থিত, আটঘরিয়ায় ৪জন, ঢাকা মহানগরের কর্মচারী কল্যাণ হাসপাতালে ১১ জন অনুপস্থিত পাওয়া গেছে।