মানষ্যেরা মইরা যায়



আবু মুস্তাফিজ
অলঙ্করণ: আনিসুজ্জামান সোহেল

অলঙ্করণ: আনিসুজ্জামান সোহেল

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশার মা মরল বিষ খাইয়া আর হাফিজার আব্বা মরল নাড়ে প্যাঁছ নাইগা।

তখন চৈত মাস, আসি আসি করিতেছে। পুলাপান পাকড়া গুটার গুয়ায় খড়ছি গাঁইতা আর খড়ছির গুয়ায় মুরগের ফৈড় গাঁইতা আকাশে জোরে ঢেল দেয়। হুঁশ কইরা পাকড়া গুটা আকাশের এত উঁচায় উড়িয়া যায় যে তারে আর দেখা যায় না।

মুরগির বাচ্চার ন্যায় জুড়ায় জুড়ায় চোখ মেলিয়া আকাশ পানে চাইয়া থাকে পুলাপানরা। একটু পরেই মুরগের ফৈড় চড়কির ন্যায় ঘুরিতে ঘুরিতে নিচে নাইমা আসে। বড় মনোহর ভঙ্গিতে।

গোড়ান গ্রামের দুয়ারে দুয়ারে তখন এই খেলা চলে। বাতাসে সইষ্যার ঝাঁঝ, বাড়ি দেয় মাইনষ্যের নাকে মুখে। গিরস্ত বাড়ির দুয়ারভরা ধুবরি আর মাঘী সইষ্যার পালা। হুকা দেওয়া সইষ্যার জ্বালায় খালি পাওয়ে হাঁটন দায়। পুলাপানের নরোম পায়ে বিন্দা পড়ে।

উহঃ কইরা চিক্যার দেয় আজিজ মাস্টরের পুলা রানা। এহনো দুধ ছাড়ে নাই, কিন্তু ছাড়ার কথা আছিল আরো দুই বচ্ছর আগে। কিন্তু মাস্টরের বউর বছর ঘুরতেই আরেক গেদি অওয়ায় লাভ হইছে ড্যাকরার। বইনেরে কেনি মাইরা নিজেই ঝাঁপিয়া পড়ে মাওয়ের নধর বুনিতে।

এতক্ষণ ঘুমিয়াই আছিল, গাড়ি বারিন্দায় ফালিয়া রাখা জলচকিতে। পুলাপানের উলাউলিতে ঘুম ভাঙছে। চোকে দুই ডলা মাইরা দেকে তাগো দুয়ারে পুলাপানের মেলা।

জলচকিথন নাইমা নৈড় দিয়া দুয়ারে নামে। হইষ্যা কাঁটা নরোম পাওর পাতায় ঘাঁই মারে। উহঃ কইরা চিক্যার দেয় ছ্যাড়া। কিন্তু পুলাপানের উলাউলিতে সে চিক্যার হারিয়া যায়।

মাস্টরের পুলাও ট্যাটন কম না, খাড়াইতে নিজেরে সামলিয়া নেয়। ন্যাটা দিয়া বইয়্যা ডাইন পাওডারে বাঁও পাওয়ের উপরে তুইলা বরই কাঁটার ন্যায় সইষ্যার কাঁটা ঝাইড়া ফালাইতে ফালাইতে ফোত ফোত কইরা কাঁন্দে, নাকে হিদ জইম্যা থাকায়।

পুলাপানের উলাউলি কী নইয়া ঠাহর করিতে এট্টু টাইম লাগে রানার। সবার চোখ আকাশমুখী থাকায় সেও চোখ মেলিয়া আকাশ দেখে। একটা না, দুইডা না, ঝাঁকে ঝাঁকে মুরগের ফৈড় চড়কির ন্যায় ঘুরিতে ঘুরিতে নিচে নামিয়া আসিতেছে।

মাস্টরের পুলার জল টলমলা চোকে মুরগের ফৈড়ালা পাকড়া গুটার ছবি আয়নার ন্যায় ফুটিয়া উঠে।

চড়কি মাটিতে গড়াইয়া পড়িলে পুলাপান পাছড়াপাছড়ি করিয়া উহাদের কুড়াইয়া ফির‌্যা ছুঁড়িয়া মারে। উহারা উড়িয়া চলিয়া যায় আকাশে। জোড়ায় জোড়ায় চোখ উহাদের নাই হওয়া দেখে। ফের ফিরা আইলে চড়কির ঘূর্ণিতে ওগো চোকও ঘুরপাক খাইতে থাকে।

একটা চড়কি রানার সামনেই পড়ে। থাফা দিয়া সে তা ধইরা ফেলে। চড়কির মূল মালিক এট্টু দূরে খাঁড়িয়া মালিকানা হারানির আশঙ্কায় পড়ে। মাস্টরের পুলা বইলা কথা। চাইলেই কাইড়া নেওয়া যায় না। তাই দূরে খাঁড়িয়া কারবার দেখে।
চড়কি হাতে পাইয়া রানা সকল ব্যথা ব্যাদ্না ভুইলা লাফ দিয়া খাঁড়ায়। অন্যগো দেখাদেখি সেও উহা ছুঁড়িয়া মারে। কিন্তু চড়কি আকাশে না গিয়া মাথার দুই তিন হাত উপরে উঠিয়াই নামিয়া পড়ে।

ইহা দেকিয়া চড়কির মূল মালিক খিক খিক করিয়া হাসে। আইগিয়া কাছে আইসা রানার হাত থিকা চড়কি নিয়া কহে, ওমনে না, এমনে। কইয়া মূল মালিক চড়কি আকাশে ছুড়িয়া মারে।

কিন্তু মালিকানা হাতছাড়া হইয়া যাওয়ায় রানা এইবার মাটিতে গড়ান দিয়া কান্দন শুরু করে। ব্যাপারটা আগেই বুঝবার পারছিল ছ্যাড়া। তাই নৈড় দিয়া পুলাপানের ভিড়ে ঢুইকা যাইতে দেরি করে না আর।

কিন্তু মাস্টরের পুলার গৈড় পাইরা কান্দনে অন্য পুলাপানও ডরাইয়া যায়। তারা চড়কি খেলা বাদ দিয়া পুব ভাগে পলাইয়া যায়।

পুব ভাগে বিরাট খেড়ের পালা, সেইখানে তারা পাহাড়ে চড়ার আমোদ নিয়া পালার উপরে উঠিতে থাকে। উপরে উঠিয়া লাফ দিয়া নিচে নামে।

নতুন এই খেলায় আমোদ আরো বেশি। তুমুল উত্তেজনা লইয়া পুলাপান পালার উপরে ওঠে এবং লাফ দিয়া নিচে নামিয়া পড়ে।

মাস্টরের পুলার গড়াগড়ি পাইড়া কান্দনটাই সার হয়, কেউ তারে ধরেও না, চড়কিও আনিয়া দেয় না। ফলে তার কান্দনডা আর জমে না। তাই কান্দন ভুইলা এক ফাঁকে চাইয়া দেখে তাগো দুয়ারে আর কেউ নাই। পুবভাগ থিকা উলাউলির আওয়াজ ভাসিয়া আসে।

কান্দন ভুইলা সে পুবভাগে দৌড় মারে। যাইয়া দেখে পুলাপান খেড়ের পালার মাথায় উঠিয়া লাফ দিয়া নিচে নামিয়া পড়িতেছে।

এই খেলাও তার মনে ধরে। সেও খেড়ের পালার পাহাড়ে উঠতে যায়। খেড়গুলারে চুলের মুঠির মতো ধইরা ধইরা ধীরে ধীরে উপরে উঠতে থাকতে থাকে। কিন্তু কিছু দূর উঠিয়াই চুলের মুঠি ছাড়িয়া দিলেই ছর ছর কইরা নিচে নাইমা আসে।

এ এক মজার খেলা। একবার ওঠা, আরেকবার নামা। বেশ কয়েকবার চেষ্টার পর রানাও পালার মাথায় উইঠা পড়ে। উইঠা তার দুনিয়াডারে কেমন ছোট ছোট লাগে। আকাশটা য্যান মাথার একটু উপরেই। এক লাফের জায়গায় দুই তিন লাফ দিলেই ধরা যাইব তারে।

পুব ভাগের চৌরি ঘরের চাল দেখা যায়। চালে শুইয়া আছে বরই গাছ, তার অসংখ্য ডাইলপালা, পাকা পাকা বরই। যা নিচ থিকা দেখা যায় না। শিমগাছ, তার বেগুনীফুলগুলা।

মাস্টরের পুলা চারপাশটা একটু একটু দেখতে থাকে, কিন্তু পারে না বেশিক্ষণ। পুলাপান হুড়াহুড়ি লাগাইয়া দেয়, তারা উপরে উইঠা জাম্প দিয়া নিচে নাইমা যায়।

দেখাদেখি মাস্টরের পোলাও জাম্পের প্রস্তুতি নেয়। ওয়ান টু থিরি। যেনবা অনন্তকাল শূন্যে থাকিয়া মুরগের ফৈড়ের ন্যায় মাটিতে গোত্তা খায়।

আর তখনই সে টের পায় তার বাঁও হাতটা বাঁইকা গেছে। কী এক অভাবিত বোধ তারে ঘিরিয়া ধরে, তার নিঃশ্বাস বন্ধ হইয়া আসে।

ম্যালাক্ষণ বাদে যখন সে নিশ্বাস নিতে পারে, তখন তার আর্তচিৎকারে পুব ভাগ হইতে মেহেদীর নানী ছুটিয়া আসে। কিছুদিন আগেই সে তার মেয়ে ও নাতি নাতকোরদিগকে দেখিতে দূরপাশা হইতে গোড়ান আসিয়াছে।

মেহেদীর নানী রানার বুক দুইয়া দিতে থাকে, সুরা পড়িতে পড়িতে। নিঃশ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক হইয়া আসিলে রানার চিৎকার বাড়িয়া চলে।

নানু আমার নানু কী হইছে আপনের? বলিয়া মেহেদীর নানী রানার বাঁও হাত দেখিয়া চমক্যা উঠে। সে হাতটারে সোজা করিতে চায় কিন্তু পারে না, উপরন্তু উহা ফুলিয়া উঠিতে থাকে।

শুনিয়া আজিজ মাস্টর স্কুল হইতে ছুটিয়া আসে। আইসা দেখে পুত্রর বাঁও হাত ফুলিয়া ঢোল হইয়া গেছে। তাহারে জলচৌকিতে শুয়াইয়া মাথায় পানি ঢালিতেছে, তার চাচাত ভাই হুমায়ুনের শ্বাশুড়ি, মেহেদীর নানী। উৎসাহী পুলাপান গোল হইয়া তাহাই দেখিতেছে, কোনোরূপ গোল না করিয়া।

আজিজ মাস্টর সময় নষ্ট না করিয়া একখানা বাঁশ কাটিয়া বাতি বানাইয়া তাহা দিয়া পুত্রর হাত যথাসম্ভব শক্ত করিয়া বাঁধিয়া দেয়।

সন্ধ্যায় অফিসথন রানার আম্মা আসিয়া আরেক দাবার চিকরাচিকরি শুরু করে। আব্বা আপনের কী হইছে? কী হইছে আপনের? আমার সোনা আব্বা, আপনে কিসের নিগ্যা খেড়ের পালায় উঠছিলেন? বইলা হাউমাউ কইরা কান্দে।

আজিজ মাস্টর জলচৌকিতে বইসা থাকে, গ্রামের লোকেরা তারে ঘিরিয়া থাকে, নানা কথা জিগাশ করে। সে কিছুর জব দেয়, কিছুর দেয় না। গ্রামের লোকেরা তার থমভাব বুঝিয়া নিজেরাও থম মারিয়া থাকে। কেহবা আবার নিজেরা নিজেরা প্যাচালে মগ্ন হইয়া পড়ে।

সারা রাইত কোনোভাবে কাটতে না কাটতেই সক্কাল বেলা তিনজনে ম্যালা করে মির্জাপুরে, কুমুদিনী হাসপাতালে।

হাসপাতালে ম্যালা মানুষ, সবাই অপরিচিত। তারই মাঝে একটা লোকে আজিজ মাস্টররে ডাকে, দুলা ভাই কেমুন আছেন?

আজিজ মাস্টর আইগিয়া যায়, আপনে এইখানে?

রানার আম্মা রানারে কয়, হাফিজার আব্বা।

হাফিজার আব্বা কয়, আমার ওসুক, ডাক্টারেরা কইছে, নাড়ে প্যাঁচ নাগছে।

আজিজ মাস্টর আহারে কইয়া সহমর্মিতা প্রকাশ করে।

হাফিজার আব্বা আরো জিগায়, আমনে এনু কিসের নিগা আইছেন?

আর কইয়েন না, আপনের ভাইগনার হাত ভাঙছে। কইয়া আজিজ মাস্টর তাড়াহুড়া করে, আসি তাইলে? যাওয়ার সুমে দেখা করুমনে।

ঠিকাছে দুলাভাই, কইয়া হাফিজার আব্বা খালি গতরে নিস্পৃহ দৃষ্টিতে বসিয়া থাকে। তার নাড়ের প্যাঁচ ছোটার আশায়।

অপারেশন থিয়েটারে আজিজ মাস্টরের পুলা কেউরে কাছে ঘেঁষপার দেয় না। প্রথমে নাত্তি মারে নার্সরে। পরে এক শিক্ষানবিস ডাক্টার তারে ধরবার আইলে তারেও নাত্তি মাইরা বসে। ডাক্টার পিছিয়া যাওয়ায় নাত্তিডা অল্পের নিগা নাগে না।

এমতাবস্থায় ডাক্টার নার্সেরা একজন আরেকজনের মুখি তাকাবুকি করে। তখন মূল সার্জন হাতে একটা ফোরসেপ তুলিয়া লয় আর মুখ দিয়া চুক চুক শব্দ করিয়া মাস্টরের পুলার দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

ছুরিমুখি তাকাইয়াই মাস্টরের পুলার হাতপাও ছোড়াছুড়ি বন্ধ হইয়া যায়, ডরাইয়া স্থির হইয়া পড়ে। আর এই সুযোগে কেউ একজন তার মুখে ক্লোরোফর্মের মাস্কটা লাগাইয়া দেয়।

মাস্টরের পুলা অন্য পৃথিবীতে চলিয়া যায়, যে পৃথিবীতে পাকড়া গোটা মুরগের ফৈর হইয়া উড়িয়া চলে।

রানাও মুরগের ফৈড়ের ন্যায় উড়তে উড়তে এক আকাশ হইতে আরেক আকাশে যাইতে থাহে। তারপর একটা গভীর জঙ্গলে নামিয়া পড়ে। জঙ্গলের ভিতর দিয়া যাইতে যাইতে হঠাৎ একটা সুরঙ্গ দেখিতে পায়।

এই সময় কে যানি তারে ডাকে, আব্বা ওঠেন ওঠেন... আপনের হাত ভালো হইয়া গেছে।

রানার উঠতে ইচ্ছা করে না। সে সুড়ঙ্গের ভিতরেই থাকিতে চায়। কিন্তু আজিজ মাস্টর ছাড়ে না, আব্বা দেখেন দেখেন, আপনের নিগা কতডি চলকেট আনছি।

চলকেট নাকি আজিজ মাস্টরের ধাক্কাধাক্কি রানারে সুড়ঙ্গ হইতে টানিয়া আনে। উঠিয়া দেখে সে একখানা স্ট্রেচারে শুইয়া আছে। তার বাঁও হাতে প্লাস্টার করা, খালি গা। তার শরম করে।

রানার মা তার এক হাতে জামাটা পরায়, বাঁও হাত গজ দিয়া গলার সাথে ঝুলাইনা।

রানারে কোলে লইয়া আজিজ মাস্টর হাসপাতাল থিকা বাইরয়। নিচতালায় আইসা হাফিজার আব্বার নগে ফের দেখা হয়।

দুলাভাই আমার নিগা দুয়া কইরেন। ছলছল চোখে চাইয়া থাকে হাফিজার আব্বা। তার ফর্শা শইল শুকাইয়া দড়ি হইয়া গেছে পরাই।

হাসপাতালের সামনে শিশু গাছ, কৃষ্ণচূড়ারা ছায়া বিছাইয়া রাখাইয়া আছে। আজিজ মাস্টর রিকশা নেয়। তাহাদে পুলা আর বউরে লইয়া ম্যালা করে মির্জাপুর বাসট্যান্ডে। রানার বাঁও হাত ঝুইলা থাকে বুকের কাছে।

গাড়ি ঘোড়ার ন্যায় দৌড়ায়। চৈত মাসের গরমে যাত্রীরা বাসাত না থাকায় জুবজুবিয়া ঘামে। কাটবডি বাসের নগে রাস্তার গাছেরাও দৌড়ায়।

পাকুল্যা বাজারে আইসা গাড়ি থামে। আজিজ মাস্টার নাইমা পড়ে, স্ত্রী পুত্রসহ।
তাহাদে বিাজার থিক্যা এক সের গুল্লা কিনে, রসগুল্লা। বউরে কয়, খাবা?

বউ কয়, না, থাইগ্গাছে। বাইত্তে যাইয়া খামুনি।

পুত্ররে জিগাশ করে, আব্বা আমনে একটা খাবেন?

রানার সুড়ঙ্গের ধ্যান্দাটা এখনো ছাড়ে নাই, খুন খুন কইরা কান্দে।

ফলে আজিজ মাস্টর নিজেই কয়, এহ বাইত্তে তো আইসা পড়ছি, আবর কান্দন কিসের?

রানা তেমু খুন খুন কইরা কান্দে। তার আম্মা তারে কোলে নিয়া বসে। আর কানে কানে কয়, কাইলকা নানীগইত্তে যামু। কান্দে নাছে।

নানীর বাড়ি যাওনের কথা শুইনা রানার চোখের সুড়ঙ্গে ঝিলিক মারে। তার খুন খুন কান্দন বন্ধ হইতে থাকে।

নানীগইত্তে যাইয়া শোনে হাফিজার আব্বা মইরা গেছে। পরের দিন তার লাশ আসে, তালাইয়ে মোড়া।

বিশার মাও আরো সপ্তাহানি আগেই মইরা গেছে।

রানা তার আম্মার কোলে বইসা দুধ খায়, না ভাঙ্গা হাত দিয়া বুনি ছানতে ছানতে। রানার আম্মার উঁকুণ বাইছা দেয় বিশার চাচতো বোইন সালেহা।

হইছিল কী, বিষ খাইল যে? রানার আম্মা জিগাশ করে।

প্যাট বাজছিল।

এল্লা! কস কী? ওই বুইড়া বেঠির!

হ, ওইডাই তো কইতাছে মাইনষ্যে।

তা ক্যারা বাজাইছিল?

চারাবাড়ির এক ছ্যারা। কামলা দিবার আইছিল ওগো বাইত্তে। এর মধ্যেই ঘটনা ঘইটা গেছে। বিশা রাইতে উইঠা বাঁশছুফে হাগবার যাইয়া মাওরে ওই ছ্যারার নগে দেখছে।

তারবাদে?

তারবাদে আর কী? পুলায় মায়ের নগে রাগ কইরা ঘরে দিছে ঝাঁপ, আর খুলে না। বিশার মাও দুয়ারে খাড়িয়া কান্দে। কিন্তু পুলায় আর ঝাঁপ খুলে না যে খুলেই না।

হুম।

ছ্যাড়ারই বা দুষ কী? কয়দিন পরে করব বিয়া, মার এই কীত্তিকলাপ কি সইয়া পারে?

তাতো ঠিকই।

হেই রাইতেই বিষ খায় বিশার মাও। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই শ্যাষ। পরে ডাক্তাররা কয়, হ্যার প্যাটে বাচ্চা আছে, এক মাসের।

আহারে।

রানা দুধ খাইতে খাইতে সুড়ঙ্গের ভিতর দিয়া হাঁটতে হাঁটতে মুরগের ফৈড়ের ন্যায় আকাশে উড়িতে থাকে।

   

শ্রীপুরের কাওরাইদে নজরুল উৎসব শনিবার



ডেস্ক রিপোর্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ কালি নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘ভাগ হয়নিকো নজরুল’ শীর্ষক নজরুল উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে শনিবার। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের আয়োজনে এবং নেতাজী সুভাষ-কাজী নজরুল স্যোশাল অ্যান্ড কালচারাল ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এর সহযোগিতায় এই উৎসবে সেমিনার, আবৃত্তি ও সঙ্গীতানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জাতীয় কবির বর্ণাঢ্য জীবন ও সাহিত্যকে তুলে ধরা হবে।

নেতাজী সুভাষ-কাজী নজরুল স্যোশাল অ্যান্ড কালচারাল ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এর অন্যতম ট্রাস্টি আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী বীরপ্রতীক জানান, আয়োজনের শুরুতে শনিবার দুপুর ২টায় সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সুনীল কান্তি দে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষক ড. সাইম রানা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস ও ছায়ানট (কলকাতা)’র সভাপতি সোমঋতা মল্লিক।

তিনি আরও জানান, বিকেলে আয়োজনে নজরুলের জাগরণী কবিতা ও গান পরিবেশন করবেন দেশের বরেণ্য শিল্পীরা। আবৃত্তি করবেন-টিটো মুন্সী ও সীমা ইসলাম। নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শিল্পী ফেরদৌস আরা, সালাউদ্দিন আহমেদসহ অনেকে। সমাপনী পর্বে প্রধান অতিথি থাকবেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে থাকবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার।

‘দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে নজরুল চর্চা বেগবান করতে এই উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। এবছর কবি নজরুলের ১২৫তম জন্মবর্ষ। এই বছরটি নজরুলচর্চার জন্য খুবই সবিশেষ। উৎসবে দুই দেশের বিশিষ্ট লেখক ও গবেষকদের লেখা নিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে সাময়িকী। সাম্য, মানবতা ও জাগরণের যে বাণী কবি সৃষ্টি করে গেছেন, সমকালীন ক্ষয়িষ্ণু সমাজের জন্য তা আলোকবর্তিকা। প্রত্যন্ত অঞ্চলে নজরুলের এই আলোকবর্তিকা ছড়িয়ে দিতেই আমাদের এই প্রচেষ্টা’-বলেন আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী বীরপ্রতীক। 

;

শিশু নজরুল



এ এফ এম হায়াতুল্লাহ
কাজী নজরুল ইসলাম। ছবিটি বাংলা একাডেমি প্রকাশিত নজরুল রচনাবলী থেকে সংগৃহীত

কাজী নজরুল ইসলাম। ছবিটি বাংলা একাডেমি প্রকাশিত নজরুল রচনাবলী থেকে সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী দেশ ভারত। এটি বাংলাদেশের তুলনায় আয়তনের দিক দিয়ে বহুগুণ বড় একটি দেশ। বহুজাতির বহু মানুষের বাস সে দেশে। ঐ দেশ অনেকগুলো প্রদেশে বিভক্ত। এই প্রদেশগুলোকে বাংলা ভাষায় রাজ্য বলে অভিহিত করা হয়। এই ভারতবর্ষের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত তদানীন্তন বাংলা প্রদেশের পূর্বাঞ্চল আজ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। আর পশ্চিমাঞ্চল ‘পশ্চিম বঙ্গ’ নামে ভারতের অন্তর্গত রয়ে গেছে।

এই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান জেলার অধীন আসানসোল মহকুমার অন্তর্গত জামুরিয়া থানার অন্তর্ভুক্ত চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৫ মে এবং ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ই জ্যৈষ্ঠ তারিখে জন্মলাভের পর একটি শিশুর কাজী নজরুল ইসলাম নাম রাখেন যে পিতা তার নাম কাজী ফকির আহমদ। আর যে মায়ের কোলে তিনি জন্মান তার নাম জাহেদা খাতুন। এই শিশুটির জন্মের আগে এই পিতামাতার আর-ও ৪ জন সন্তান জন্মের সময়ই মারা গিয়েছিল। শুধু তাদের প্রথম সন্তান কাজী সাহেবজানের বয়স তখন ১০ বছর। অর্থাৎ কাজী নজরুলের সর্বজ্যেষ্ঠ বড় ভাই শিশু কাজী নজরুলের চাইতে ১০ বছরের বড় ছিলেন। নজরুলের পর তার আর-ও একজন ভাই ও বোনের জন্ম হয়েছিল। ভাইটির নাম ছিল কাজী আলী হোসেন এবং বোনটির নাম ছিল উম্মে কুলসুম।

শিশু নজরুলের পিতা কাজী ফকির আহমদ বই-পুস্তক পড়তে পারতেন। তিনি স্থানীয় মসজিদ ও মাজারের সেবা করতেন। রাজ্য শাসকগণ কর্তৃক বিচারকাজে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ অর্থাৎ বিচারকগণ উন্নত চরিত্রের অধিকারী হতেন। মুসলমান সমাজ থেকে বিচারকাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কাজী বলা হত। মুসলমান সমাজে কাজীগণ অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে গণ্য হতেন। নজরুল ইসলাম এইরূপ সম্মানিত পরিবারে জন্মপ্রাপ্ত এক শিশু। তাই জন্মের পর ক্রমশ বেড়ে উঠার পর্যায়ে তিনি পারিবারিকসূত্রেই ভাল-মন্দের পার্থক্য করার এবং হিংসা-বিদ্বেষমুক্ত হয়ে সকলকে সমভাবে ভালবাসার গুণাবলি অর্জন করেন।

মানবজাতির ইতিহাসে যে-সমস্ত মহাপুরুষ বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছেন তাদের অধিকাংশই শৈশব থেকে নানারূপ দুঃখ-কষ্টে পতিত হয়ে সেগুলো জয় করে মহত্ত্ব অর্জন করেছেন। তাদের কেউই একদিনে বড় হয়ে যাননি কিংবা বেড়ে-ও উঠেন নি। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) জন্মানোর আগেই পিতাকে হারিয়েছিলেন। মাত্র ছয় বছর বয়সে হারিয়েছিলেন জন্মদাত্রী মাকেও। নজরুল তার পিতাকে হারান নয় বছর বয়সে ১৯০৮ সালে। পিতা তাকে গ্রামের মক্তবে পড়াশোনা করতে পাঠিয়েছিলেন। তখনকার দিনে পড়াশোনা করার জন্যে সরকারি ব্যবস্থা ছিলনা। বাংলাদেশের তখন জন্ম হয়নি।

বিশেষ ভঙ্গিমায় হাবিলদার নজরুল

নজরুলের জন্মভূমি বাংলা প্রদেশ ভারতবর্ষের একটি রাজ্য যা ছিল বিদেশী ব্রিটিশ শাসনাধীন তথা পরাধীন। ব্রিটিশ শাসকরা এদেশের সাধারণ মানুষ তথা প্রজাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করেনি। কারণ শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ সচেতন হয়ে উঠে-তাদের আত্মসম্মানবোধ জাগ্রত হয়-তারা পরাধীন থাকতে চায় না-স্বাধীনতার প্রত্যাশী হয়। বিদেশী শাসক ব্রিটিশরা সাধারণ মানুষের জন্য শিক্ষা উন্মুক্ত না করায় জনসাধারণ সম্মিলিতভাবে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করত। সেই প্রতিষ্ঠানে প্রধানত মাতৃভাষা ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করা হত। এইসব প্রতিষ্ঠান মক্তব নামে পরিচিত হত। এগুলো পরিচালনার ব্যয় অর্থাৎ শিক্ষকদের বেতন মক্তব প্রতিষ্ঠারাই দান, সাহায্য ও অনুদান সংগ্রহ করার মাধ্যমে নির্বাহ করতেন। গ্রামীণ একটি মক্তবে নজরুলের পাঠগ্রহণ শুরু। তিনি ছিলেন অসাধারণ মেধাবী। তাঁর স্মৃতিশক্তি ছিল প্রখর।

একবার কিছু শোনে ও দেখেই তিনি তা মনে রাখতে পারতেন। কিন্তু শিশুসুলভ সকল প্রকার চঞ্চলতা-ও তাঁর ছিল। পিতৃবিয়োগের পর সেই চঞ্চলতার যেন ছেদ পড়ল। তার মেধাগুণে তিনি হয়ে উঠলেন শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে সেই মক্তবেরই শিক্ষক। একজন শিশু শিক্ষক। এক শিশু পড়াতে লাগলেন অন্য শিশুকে। উদ্দেশ্য নিজের অর্জিত জ্ঞান ও বিদ্যা অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া। নিজেকে অন্যের মধ্যে বিলিয়ে দেয়া। কিছু দেয়ার মাধ্যমে আনন্দ লাভ-যে আনন্দ মহৎ।

তার ভেতরে ছিল এক ভবঘুরে মন। মক্তব ছেড়ে ভর্তি হলেন উচ্চ বিদ্যালয়ে-মাথরুন নবীন চন্দ্র ইনস্টিটিউশনে। স্থিত হলেন না সেখানে। গ্রামীণ নিসর্গ, প্রকৃতি, ঋতুচক্র যেমন তার মনকে প্রভাবিত করে, অজানাকে জানার এবং অচেনাকে চেনার নিরন্তর কৌতূহল-ও তাকে আন্দোলিত করে। ঘরছাড়া স্বভাবের এই শিশু অন্য সকল মানুষের জীবন ও সংগ্রামের রহস্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়। ঘর তাকে বাঁধতে পারে না। বিশাল আকাশকেই তার মনে হয় তার মাথার ওপরে খাঁচার মত উপুড় হয়ে তাকে আটকে রেখেছে। তাই তিনি মনে মনে ‘ভূলোক, গোলোক ও দ্যুলোক’ ছাড়াতে চাইতেন কেবলÑনিজেকে মুক্ত করতে চাইতেন। মনের আহ্বানে সাড়া দিতেন, গান শোনাতেন, শুনে শুনে গাইতেন।

তারই পরিক্রমায় গ্রামীণ লোক-নাট্য ‘লেটো’ গানের দলে যোগ দিলেন। সেখানেও তার দলপতি উস্তাদ শেখ চকোর গোদা ও বাসুদেব তাকে সেরাদের ‘সেরা’ বলে স্বীকৃতি দিলেন। তিনি শুধু লেটোর দলে গানই গাইলেন না। গানের পালা রচনা করলেন। ‘ মেঘনাদ বধ’, ‘হাতেম তাই’ ‘চাষার সঙ’, ‘আকবর বাদশা’ প্রভৃতি পালা রচনা করতে যেয়ে হিন্দু পুরাণ রামায়ণ, মহাভারত, গীতা, বেদ যেমন পড়লেন, তেমনি পড়লেন কোরান-হাদিস, ইতিহাস-কাব্য প্রভৃতি। মক্তব-বিদ্যালয় ছেড়ে হয়ে গেলেন প্রকৃতির ছাত্র।

কিন্তু আগুন যে ছাই চাপা থাকে না। প্রতিভার আগুনের শিখা দেখে ফেললেন পুলিশের এক দারোগা, যিনি নিজেও কাজী বংশের সন্তান, রফিজুল্লাহ। চাকরি করেন আসানসোলে। কিন্তু তার জন্মস্থান ময়মনসিংহ জেলা। নি:সন্তান রফিজুল্লাহ মায়ায় পড়ে গেলেন শিশু নজরুলের। নিয়ে এলেন জন্মস্থান ময়মনসিংহে। ভ্রাতুষ্পুত্রের সাথে ভর্তি করে দিলেন দরিরামপুর হাই স্কুলে। কেমন ছিলেন তিনি এখানে ? জন্মভিটা চুরুলিয়া থেকে কয়েকশত কিলোমিটার দূরে-মাতৃআঁচল ছিন্ন পিতৃহীন শিশু! সহপাঠীরা কেউ লিখে রাখেন নি।

১৯১১ সনে ময়মনসিংহে আনীত হয়ে থাকলে পেরিয়ে গেছে একশত তের বছর। সহপাঠীদের কেউ বেঁচেও নেই। কিন্তু বেঁচে আছে নানারূপ গল্প ও কল্পনা। বড় বড় মানুষদের নিয়ে এমনই হয়। তাদেরকে কেন্দ্র করে অনেক কাহিনী তৈরী করা হয়। মানুষ জীবনের গল্প শুনতে ভালবাসে। তাই জীবন নিয়ে গল্প তৈরী হয় কিন্তু তা জীবনের অংশ না-ও হতে পারে। কেউ বলেন নজরুল ময়মনসিংহের ত্রিশালে এক বছর ছিলেন, কেউ বলেন দেড় বছর, কেউবা দু’বছর। প্রথমে ছিলেন কাজী রফিজুল্লাহ’র বাড়ি। এরপরে ছিলেন ত্রিশালের নামাপাড়ায় বিচুতিয়া বেপারির বাড়ি। এই দু’বাড়িতে থাকা নিয়ে অবশ্য কোন বিতর্ক নেই। কিন্তু তর্ক আছে তার প্রস্থান নিয়ে।

কেউ বলেন তিনি স্কুল-শিক্ষকের কাছে সুবিচার না পেয়ে, কেউ বলেন অভিমান করে চলে গিয়েছিলেন। তবে তিনি কাউকে না বলেই চলে গিয়েছিলেন এটাই প্রতিষ্ঠিত মত। কিন্তু গেলেন কোথায় ? সেই জন্মস্থানে। তবে এবার চুরুলিয়া থেকে বেশ দূরে রাণীগঞ্জের শিহাড়সোল সরকারি স্কুলে সরকারি বৃত্তি নিয়ে ভর্তি হলেন অষ্টম শ্রেণিতে। ১৯১৫ সন। পড়াশোনা করলেন ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। দশম শ্রেণি পর্যন্ত একটানা। নজরুলের চঞ্চলমতি, ঘরছাড়া ও ভবঘুরে স্বভাবের জন্যে যেন বেমানান। প্রতিটি ক্লাসে প্রথম হলেন।

মেধাবী বলেই নিয়মিত মাসিক ৭ টাকা বৃত্তি পেতেন। ঐ সময়ের হিসাবে মাসিক ৭ টাকা অনেক টাকা। মাসিক ৩ থেকে ৪ টাকায় সকল প্রকার থাকা-খাওয়ার ব্যয় মিটিয়ে অনায়সে চলা যেত। দশম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে এন্ট্রান্স বা মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার কথা। সে প্রস্তুতি চলছে। নিচ্ছেন-ও। হঠাৎ ব্রিটিশ শাসকদল কর্তৃক যুদ্ধযাত্রার ডাক। কিন্তু প্রলোভন দেখানো হলো যে ব্রিটিশরা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জিততে পারলে ভারতবর্ষকে মুক্ত করে দিয়ে যাবে। জন্মাবধি স্বাধীনতা ও মুক্তি-প্রত্যাশীর হৃদয়ে নাড়া দিল। তিনি সাড়া দেবেন কিনা দোদুল্যমান। কিন্তু কপট ব্রিটিশ জাতি বাঙালিকে উত্তোজিত করার নিমিত্ত অপবাদ ছড়ালো যে বাঙালিরা ভীরু।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকার কবিভবনে নজরুল

তারা লড়তে, সংগ্রাম করতে, যুদ্ধে যেতে ভয় পায়। স্বল্পকাল পরের (১৯১৭ সালের মাত্র চার বছর পর লিখিত হয়েছিল ‘বিদ্রোহী’ কবিতা ১৯২১ সনে) বিদ্রোহী কবির রক্ত ক্ষোভে নেচে উঠলো। কে রুখে তার মুক্তির আকাক্সক্ষা! বাঙালি সেনাদের নিয়ে গঠিত ৪৯ নং বাঙালি পল্টনে নাম লিখিয়ে বাস্তব যুদ্ধযাত্রা করলেন। গন্তব্য করাচি। ১৯১৭-১৯১৯ সাল অব্দি কঠোর সৈনিক জীবন। সুকঠিন নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যেই সাধারণ সৈনিক থেকে হাবিলদার পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার পাশাপাশি আরবি-ফার্সি সাহিত্যে অধ্যয়নসহ সঙ্গীতে ব্যুৎপত্তি অর্জনের জন্য মহাকালের এক অবিস্মরণীয় কবি-শিল্পী হিসেবে নিজেকে নির্মাণের ক্ষেত্রে করাচির জীবনই ছিল এক সাজঘর। যুদ্ধযাত্রার পূর্ব পর্যন্ত নজরুল শিশু। কিন্তু যুদ্ধফেরত নজরুল এক পরিপূর্ণ তরুণ ও চিরকালীন শিল্পী-যার মন ও মানস শিশুর মত আজীবন নিষ্পাপ।

লেখক: নির্বাহী পরিচালক, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট 

;

বরাক উপত্যকার ভাষা আন্দোলন: পূর্ণ স্বীকৃতি কতদূর?



প্রদীপ কুমার দত্ত
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আমরা বাংলাদেশে ভাষা আন্দোলন বলতেই বুঝি বৃটিশ শাসন পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানে ১৯৪৮-এ শুরু হওয়া এবং বায়ান্নর অমর ভাষা শহীদদের আত্মদানের মাধ্যমে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে। একুশে ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর ভাষা আন্দোলনের জন্য একটি দিক নির্দেশক দিন। সেই আন্দোলনের সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয় পূর্ব বাংলার বাঙ্গালীরা। পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে দানা বাঁধে স্বাধিকার অর্জনের আন্দোলন। বহু আন্দোলন, সংগ্রাম ও সর্বোপরি মহান মুক্তিযুদ্ধের অবর্ণনীয় কষ্ট আর সমুদ্রসম আত্মত্যাগ এবং অসীম বীরত্বের ফলশ্রুতিতে আমরা পাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

এর বহু পরে, বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে, বাংলাদেশী কানাডা প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও আবদুস সালাম এর নেতৃত্বে পৃথবীর বিভিন্ন ভাষাভাষীদের নিয়ে মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভার্স অফ দি ওয়ার্ল্ড গঠিত হয় কানাডার ভ্যাংকুভারে। এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগ ও নিরলস প্রচেষ্টা এবং বাংলাদেশ সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় দিনটি বিশ্বসভায় আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত। এই দিনের জাতিসংঘ ঘোষিত অঙ্গিকার বিশ্বের প্রতিটি ভাষাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করা এবং বিদ্যমান প্রায় ৭০০০ ভাষার একটিকে ও আর হারিয়ে যেতে না দেয়া। ইতিমধ্যে আধিপত্যবাদের কারণে ও সচেতন মহলের সচেতনতার অভাবে বহু ভাষা, সাথে সাথে তাদের সংস্কৃতি, পুরাতত্ত্ব ও ইতিহাস পৃথিবীর বুক থেকে মুছে গেছে।

কাজেই আমাদের বুঝতে হবে, ভাষা আন্দোলনের স্বর্ণখচিত ইতিহাস ও সাফল্যের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও কেবলমাত্র বাংলাদেশের ((তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের) বাঙ্গালীরাই ভাষার জন্য সংগ্রাম করা ও প্রাণ দেয়া একমাত্র জাতিগোষ্ঠী নই। অর্ধ সহস্রাব্দের আগে স্পেনীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি দক্ষিণ আমেরিকার মায়া,আজটেক,ইনকা নামের তৎকালীন উন্নত সভ্যতার জাতিসমূহকে জেনোসাইডের মাধ্যমে ধ্বংস করে দিয়েছে।প্রতি মায়া লোকালয়ে একটি করে পাঠাগার ছিল। এইরকম দশ হাজার লোকালয়ের পাঠাগারের সব বই তারা ধ্বংস করে দেয়। আজকের দিনে মাত্র আদি মায়া ভাষার তিনখানা বই (মেক্সিকো সিটি,মাদ্রিদ ও ড্রেসডেনে) সংরক্ষিত আছে। যুদ্ধ করেও মায়ানরা পাঠাগারগুলো বাঁচাতে পারেন নি। সাথ সাথে ক্রমে ধ্বংস হয়ে যায় তাঁদের সংস্কৃতি ও জাতিসত্তা।

বাংলাভাষী জনগণের ভাষার মর্যাদা রক্ষায় উল্লেখ্যোগ্য অবদান রয়েছে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির সাঁওতাল পরগণার অন্তর্গত মানভূমের বাঙ্গালীদের। বহু বছর সংগ্রাম,রক্ত ও জীবনের মূল্যে তাঁরা তাঁদের দাবি অনেকটা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এরপর বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় আন্দোলনের সূচনা আসামের কাছাড়ে।বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ বিসর্জন দেয়া প্রথম মহিলা শহীদ কমলা ভট্টাচার্য সহ এগার তরুন প্রাণ ঝড়ে পড়েছে এই আন্দোলনে।

১৯৬১-তে আসামের বরাক উপত্যকার বাঙালি জনগণ তাদের মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে আন্দোলনে শামিল হয়। যদিও বরাকের সিংহভাগ জনগণ বাংলা ভাষায় কথা বলেন,তবুও ১৯৬১-তে অহমিয়াকে আসামের একমাত্র রাজ্যভাষা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। ফুসে ওঠেন বরাকের বাঙ্গালীরা।বাংলাভাষা বরাক উপত্যকার অন্যতম সরকারি ভাষার মর্যাদা পায়।

মানভূম ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস দীর্ঘ। সাঁওতাল পরগণার মানভূম জেলা বাঙালি অধ্যুষিত হলেও তা দীর্ঘকাল বিহারের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভারতের স্বাধীনতার পর সেখানে হিন্দি প্রচলনের কড়াকড়িতে বাংলা ভাষাভাষীরা চাপের মুখে পড়েন। মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁরা। ১৯৪৮ থেকে দীর্ঘ আট বছর চলা এই আন্দোলনের সাফল্যে ১৯৫৬ এর ১ নভেম্বর মানভূমের বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয় পুরুলিয়া জেলা। বিহার থেকে নিয়ে পুরুলিয়াকে যুক্ত করা হয় পশ্চিমবঙ্গের সাথে। তাঁদের মাতৃভাষা বাংলা ব্যবহারের দ্বার উন্মুক্ত হয় তাঁদের সামনে।

এবারে আবার ফিরি ১৯ মে'র ইতিহাসে। আসামের বরাক উপত্যকা আদিকাল থেকেই বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল। একসময় এই এলাকার অধিকাংশ ডিমাসা জনগোষ্ঠীর কাছাড় রাজত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ডিমাসা রাজন্যবর্গ ও বাংলাভাষার পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। কালক্রমে ব্রিটিশরা ভারত বিভাগ করে চলে গেলে আসাম প্রদেশের একাংশ সিলেট পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হয়। সিলেটের একাংশ ও ডিমাসা পার্বত্য ও সমতল অঞ্চল নিয়ে কাছাড় জেলা গঠিত হয়। এই জেলা বর্তমানে বিভক্ত হয়ে কাছাড়,হাইলাকান্দি,করিমগঞ্জ ও উত্তর কাছাড় পার্বত্য জেলা (ডিমা হাসাও)এই চার নতুন জেলায় রূপ নিয়েছে।

১৯৪৭ এ দেশবিভাগের পর থেকেই বরাক উপত্যকার কাছাড় জেলার অধিবাসীরা বৈষম্যের শিকার হতে থাকেন। আসাম অহমিয়াদের জন্য এবং বাঙ্গালীরা সেখানে বহিরাগত এমন বক্তব্য ও ওঠে। এখনও সেই প্রবণতা বিদ্যমান। জাতীয়তাবাদের জোয়ারে এক শ্রেণির রাজনীতিবিদরাও গা ভাসান। বঙ্গাল খেদা আন্দোলনও গড়ে ওঠে একসময়ে। সরকারিভাবে সেসব আন্দোলন ও সহিংসতা দমন হলেও পরবর্তী কালে সময়ে সময়ে এই জাতীয় সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে।

আসাম রাজ্য বিধান সভায় ভারতের স্বাধীনতার পর পর সদস্যরা বাংলা, হিন্দি বা ইংরেজিতে বক্তব্য রাখতে পারতেন।প্রথম আঘাত এলো ভাষার উপর। অহমিয়াকে একমাত্র রাজ্যভাষা ঘোষণা, শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে চালুর চেষ্টা এবং বিধানসভায় বাংলায় বক্তব্য রাখার অধিকার ক্ষুণ্ণ করে আইন চালুর বিরুদ্ধে আসামের বাঙ্গালী জনগণ দল-মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। আসাম রাজ্য সরকার কোনও গ্রহণযোগ্য সমাধানের পথে গেলেন না। তাঁরা অহমিয়া জাতীয়তাবাদ এর সংকীর্ণ মানসিকতার নেতাদের প্রাধান্য দেয়ার নীতি গ্রহণ করেন। বাঙ্গালীরাও সংগঠিত হতে থাকেন।

অনুমান করা যায় আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ বাহান্নর ঢাকার ভাষা আন্দোলন ও মানভূমের ভাষা আন্দোলনের সাফল্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।১৯৬০ সালের শেষে আসাম বিধান সভায় ভাষা বিল পাশ হয়। কফিনে শেষ পেরেক ঠোকা হয়ে গেলো। বাঙ্গালীরা ফুঁসে উঠলেন। লাগাতার আন্দোলন চলতে থাকলো।সত্যাগ্রহ,অসহযোগ, হরতাল, রেল রোখো,সংকল্প দিবস, ইত্যাকার অহিংস আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠল বরাক উপত্যকা। এই আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৯৬১ সালের ১৯মে তারিখে বরাকের কেন্দ্রবিন্দু শিলচরের রেলস্টেশনে ভোর থেকে আন্দোলনকারী সত্যাগ্রহীরা জড়ো হয়। হাজার হাজার ছাত্র যুবা জনতা রেলস্টেশন প্রাঙ্গন ও রেললাইনের উপর অবস্থান নেয়। তাঁদের সরাতে না পেরে সরকার নির্মম দমননীতির আশ্রয় নেয়। পুলিশ বাহিনী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ শুরু করে। নিহত হন পৃথিবীর প্রথম মহিলা ভাষা শহীদ কমলা ভট্টাচার্য সহ মোট ১১ জন ছাত্র যুবা। তাঁরাই একাদশ ভাষা শহীদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

তাঁদের আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি। বরাক উপত্যকায় বাংলা ভাষা দ্বিতীয় রাজ্যভাষার মর্যাদা পায়। শিলচর রেলস্টেশনের সামনে স্থাপিত হয় শহীদদের প্রতিকৃতি সম্বলিত শহীদ মিনার। যার পথ ধরে পরবর্তী কালে ছড়িয়ে পড়ে একই আকৃতির শহীদ মিনার সমগ্র বরাক উপত্যকায়। শিলচর রেলস্টেশনের নাম পাল্টে জনতা ভাষা শহীদ রেল স্টশন নাম রেখেছেন। যদিও পূর্ণ সরকারি স্বীকৃতি এখনও তার মেলেনি।

বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় একাদশ শহীদ সহ আন্দোলনকারীদের আত্মত্যাগ ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। কিন্তু সব এলাকার বাঙ্গালিরা কি এই ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখেন? উত্তরটি ‘না’ সূচক। আমাদের কর্তব্য তাঁদের আত্মত্যাগের কাহিনী সকলকে জানানোর উদ্যোগ নেয়া যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম তাঁদের সংগ্রামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হতে শেখে। বরাক উপত্যকার একাদশ ভাষা শহীদ অমর রহে। বাংলা সহ সকল মাতৃভাষার অধিকার ও মর্যাদা সমুন্নত থাকুক।

এখনও সেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন এমন অনেকেই বেঁচে আছেন। বেঁচে আছেন নেতৃত্ব দেয়াদের মধ্যে অনেকে। সাথে সাথে প্রত্যক্ষদর্শীদের ও সন্ধান পাওয়া এখনও কষ্টকর নয়। তবে সামনের সিকি শতাব্দীর মধ্যে প্রাকৃতিক নিয়মেই তাঁরা আর আমাদের মাঝে থাকবেন না। এখনই প্রকৃষ্ট সময় তাঁদের সাক্ষাৎকার রেকর্ড করে রাখার। পর্যাপ্ত গবেষণা হওয়া প্রয়োজন সেই আন্দোলন,তার কুশীলব এবং শহীদ পরিবার সমূহের বিষয়ে। বীরের সন্মান উপযুক্ত ভাবে হওয়া প্রয়োজন। বাংলা ভাষার এবং বাংলা ভাষাভাষী জনগণের মর্যাদা বিশ্বব্যাপী সমুন্নত রাখার জন্য আমাদের এখনও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। আরও অনেক বীরের আমাদের প্রয়োজন। যে মাটিতে বীরের যথাযোগ্য সন্মান নেই, সে মাটিতে বীর জন্মায় না।

লেখক: প্রাবন্ধিক ও পরিব্রাজক

;

রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার পাচ্ছেন ১৫ কবি-সাহিত্যিক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার’ ২০২২ ও ২০২৩ ঘোষণা করা হয়েছে। পাঁচ ক্যাটাগরিতে ১৫ জন কবি ও সাহিত্যিককে এই পুরস্কার দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক অনুষ্ঠানে পুরস্কার মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের জ্যৈষ্ঠ সদস্য কবি আসাদ মান্নান।

তিনি জানান, ২০২২ সালে কবিতায় পুরস্কার পেয়েছেন- শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক ও রিশাদ হুদা। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে মালিক মো. রাজ্জাক। এছাড়া প্রবন্ধে বিলু কবীর, শিশুসাহিত্যে আনজীর লিটন, অনুবাদে ইউসুফ রেজা এবং কথাসাহিত্য জুলফিয়া ইসলাম।

আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে, কবি খুরশীদ আনোয়ারকে।

কবি আসাদ মান্নান জানান, ২০২৩ সালে কবিতায় মিনার মনসুর ও মারুফুল ইসলাম পুরস্কার পাচ্ছেন। প্রবন্ধে আসাদুল্লাহ, কথাসাহিত্যে জয়শ্রী দাশ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ে নাজমা বেগম নাজু, শিশুসাহিত্য আমীরুল ইসলাম এবং অনুবাদে মেক্সিকো প্রবাসী আনিসুজ্জামান।

আগামী ১৯ মে পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি-সাহিত্যিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দেওয়া হবে। পুরস্কার ঘোষণা কমিটির প্রধান ছিলেন কবি শ্যামসুন্দর শিকদার। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা।

;