একজন নতুন উদ্যোক্তার কী কী প্রয়োজন?



সোহেলী জান্নাত,পিএইচডি গবেষক, ইউজিসি
একজন নতুন উদ্যোক্তার কী কী প্রয়োজন?

একজন নতুন উদ্যোক্তার কী কী প্রয়োজন?

  • Font increase
  • Font Decrease

আপনি যদি নতুন করে ব্যবসায় নামতে চান, কিংবা ঢিমেতালে চলতে থাকা পুরাতন ব্যবসাকে নতুন করে ঝালিয়ে নিতে চান তবে কতিপয় দিকে আপনাকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

সঠিক মাত্রার আত্মবিশ্বাস
আত্মবিশ্বাসী মানুষ সফল হয়, এ কথা আমরা সবাই জানি, কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস মানুষকে বিভ্রান্ত করে ফেলে, আত্মবিশ্বাস তখন অহংকারের পর্য়ায়ে চলে যায়। আবার দুর্বল আত্মবিশ্বাসী মানুষকে কেউ পছন্দ করে না, ভরসা করে না। বাস্তবতার অভিজ্ঞতায় দেখবেন সংসারে বাবা বা বড় ভাই শ্রেণির মানুষের কথা অনেকসময় ভুল হলেও আমরা হাসিমুখে মেনে নেই! বিপদে আপদে তাদেরই ভরসা করি। কারণ তারা ভুল কথাটাও আত্মবিশ্বাস থেকে বলেন। অনেক পরিবারে মায়েরাও আত্মবিশ্বাসী হয়ে পরিবার মেইনটেইন করেন। ব্যবসা যেহেতু অনেকটা নির্ভর করে পারসোনাল ব্রান্ডিং এর উপর, আপনাকে ভরসা করলে আপনার পন্যও কিনতে পারবে ক্রেতা নির্ভাবনায়। আত্মবিশ্বাসই প্রথম ধাপ যেটা আপনাকে ব্যবসার ক্ষেত্রে পজেটিভ ভাইভ দিবে। একটা গল্প বলি।

আমার এক ছাত্র গেছে করপোরেট অফিসে ভাইভা দিতে। তো, প্রয়োজনীয় একাডেমিক বিষয় জিজ্ঞাসা করার পর একজন নিয়োগকর্তা হুট করেই জিজ্ঞাসা করে বসলেনঃ
আচ্ছা বলেন তো, এই জগৎটা কার বশ?
ছাত্রটি প্রথমে মনে মনে বিভ্রান্ত হল, ভাবলো কার কথা বলি... কার কথা বলি... মহা মুশকিল তো! পরে উত্তর খুঁজে না পেয়ে সময়ক্ষেপণের জন্য যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রশ্নকারীর প্রশ্নটাই রিপিট করলোঃ
জগৎ টা কার বশ!

সঙ্গে সঙ্গে তুমুল হাততালি সবার! পারফেক্ট বলেছেন। আপনাকেই আমাদের করপোরেট অফিসে চাই! আসলেই এ পৃথিবীটা টাকার কাছে বশ! ছাত্র এবার মেলালো...
ও তাইতো! প্রশ্নটাই উত্তর!
জগৎ টা কার বশ?
জগৎ টাকার বশ!

নেতিবাচকতাকে ইতিবাচকতায় পরিণত করা
চলার পথে এমন হরহামেশাই ঘটে, যে আমরা না চাইতেও ভুল করে ফেলি! ভুল মানুষকে বিশ্বাস করি, ভুল জিনিস নির্বাচন করে ফেলি। এরপরে আবার নিজেরাই হতাশায় ভুগে সেই সামান্য করে ফেলা ভুলটুকুকে বাড়িয়ে দীর্ঘ করে ফেলি। থামুন! আপনি মানুষ, যন্ত্র নয়! আপনার আবেগ আছে, মন আছে! ভুল করেছেন বলেই আপনি মানুষ! ভুল করেছেন ভাল কথা। এবার সেই ভুলটাকে কীভাবে সঠিক করা যায় সেটি নিয়ে আপনাকে মাথা খাটাতে হবে, এবং দ্রুত সেই ভুলকে কর্ম দিয়ে বুদ্ধি দিয়ে সাফল্যে পরিবর্তন করতে হবে। এক্ষেত্রেও একটি উদাহরণ দেই। এক সাংবাদিক গেছে গ্রামের এক স্কুলে জেএসসিতে এ প্লাস পাওয়া ছাত্ররা আসলেই মেধাবী কি না, সেটি যাচাই করতে। তার আসল উদ্দেশ্য ছিল এ প্লাস পাওয়া ছাত্রদের হেও করা, ছোট করা। সে কারণে সে ইচ্ছে করেই এমন প্রশ্ন করছে যেন ছাত্ররা ভুল উত্তর করে এবং সে এটা মজা করে তা প্রচার করতে পারে। এরকম করে করে এক ছাত্রকে সে প্রশ্ন করল আচ্ছা বলতো দেশের বর্তমান জনসংখ্যা কত? ছেলেটি জানতো উত্তর ১৬ কোটি। কিন্তু মুখ ফস্কে বেড়িয়ে গেলো.. ৩২ কোটি!
সাংবাদিকতো হেসেই খুন! সে যা চাচ্ছিল তাই হয়েছে। ছাত্রটি ভুল করেছে!

ছাত্রটি বুঝল টিভিতে লাইভ সম্প্রচারে এমন ভুল সত্যি তার স্কুলকে বিপদে ফেলতে পারে! যেটা স্কুলের জন্য, তার নিজের জন্য ভয়ানক নেতিবাচক প্রভাব এনে দেবে! তখন সে দ্রুত বুদ্ধি করে ডেকে বললোঃ

ভাই! দাঁড়ান! আগে শুনবেন না ৩২ কোটি কেন বললাম?
: তুমি জান না তাই বলেছো! সোজা হিসেব!
: হা হা! আসলে ভাই আপনিই সমকালীন তথ্য রাখেন না! আগে হয়তো ছিল ১৬ কোটি। কিন্তু এ বছর থেকে দেখেন সরকার দলীয় নেতারা বলে যাচ্ছেন, "আমাদের সাথে দেশের ১৬ কোটি জনগণ আছে!" আবার বিরোধী দলও বলে যাচ্ছে "আমাদের সাথে দেশের ১৬ কোটি জনগণ আছে!" এখন এই খ্যাতিমানরা নিশ্চয়ই মিথ্যুক নন! এরাই দেশবরেণ্য নেতা, এরাই মন্ত্রী! এদের উভয়ের কথা সত্যি হলে দেশের জনগণ অবশ্যই ৩২ কোটি!

সাংবাদিকের তো আক্কেলগুড়ুম! বাপরে কত মেধাবী এই স্কুলের বাচ্চারা! সহজেই নেতিবাচকতা বদলে ইতিবাচকতায় পরিনত হলো!

সঠিক পণ্য নির্বাচন, সঠিক ইনভেস্টমেন্ট
আপনি একটি ব্যবসায় নামার আগে আপনাকে প্রথম যে দুটি বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে, সেটি হল আপনার পণ্যের উৎস সহজ এবং আপনার হাতের কাছে এভেইলেবেল কি না সেটা দেখা, এবং সে পন্যের বাজারে চাহিদা কেমন। সহজ কথায় বললে বাজার রেকি করা। পন্যের উৎসের ক্ষেত্রে যদি আপনি অরিজিনাল উৎস থেকে সরাসরি ক্রয় করতে পারেন তবে কম মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন। আপনার কষ্টও কম হবে এক্ষেত্রে। যেমন বাগেরহাটের কথাই বলি। বাগেরহাটের ইউনিক জিনিস, পান সুপরি, চিংড়ি, নারকেল তেল। এবার উদ্যোক্তা যদি এ এলাকার হয় তবে তার উচিৎ হবে পন্য নির্বাচনে এগুলোকে বেশি প্রায়োরিটি দেয়া। এখানে সে সহজেই অরিজিনাল উৎস থেকে কমে জিনিশ কিনে বাজারে কমে দিতে পারবে। যেটা ঢাকা বা অন্যজেলার একজন উদ্যোক্তা পারবে না। কেননা চিংডি বা তেল কিনতে তাকে বাগেরহাটে নিজে আসতে হবে যেটাতে পরিশ্রম অধিক হবে, আর ব্রোকার বা মধ্যস্বত্তভোগীর মাধ্যমে কিনলে দাম বেশি পরবে, ফলে তুলনামূলক কমে বাজারে ছাড়তে পারবে না!। তার ব্যবসায় প্রসার ঘটানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।

তাই পণ্য চুজের ব্যাপারে এদিকে প্রথম নজর দিতে হবে।

এবার যে পণ্য আপনি কিনবেন বা উৎপাদন করবেন, সেটার মারকেট ভ্যালু আছে কি না যাচাই করা। একটা সত্য ঘটনার উদাহরণ দেব এক্ষেত্রঃ

কিশোরগঞ্জের এক প্রান্তিক চাষী একবার ধান বাদ দিয়ে পাট উৎপাদন করেছিল প্রচুর! সে অনুমান করেছিল বাজারে যেহেতু পাটের খুব চাহিদা, আদমজী জুটমিলের লোক এসে সহজেই তার পাট উচ্চমূল্যে কিনে নেবে। সে স্বপ্ন দেখতে লাগলো পাট বিক্রি করে লাখপতি হবার। অত:পর কঠোর পরিশ্রমে পাট চাষ করে পুরো প্রক্রিয়া শেষে সে যখন বাজারে পাট তুলল, কেউ তার পাট কিনতে এল না! পর পর সাতদিন বাজারে তোলার পরও যখন তার পাট বিক্রি হলো না, তখন সে ভাবলো ঘটনা কী! মিলের লোক কেন আসে না!

এবার সে মিলের অবস্থা যাচাই করতে দু টাকা দিয়ে ট্রেনের টিকেট কেটে নারায়ণগঞ্জ এলো আদমজী জুটমিলে। এসে দেখলো জুট মিল সে বছরের শুরুতেই বন্ধ হয়ে গেছে! পাট কেনাতো দূরের কথা এখানকার শ্রমিকরা হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে দেদারছে নেশাগ্রস্ত হয়ে পরছে!

লোকটি এবার তুমল লসে পরে আর দেনার কথা ভেবে উৎপাদিত পাটে আগুন দিয়ে নিজেই তাতে ঝাঁপিয়ে পড়ল! সে সময়ের বড় বড় পত্রিকায় সে নিউজ ছাপা হয়েছিলো।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভিসি অধ্যাপক মীজান স্যার এক পলিসি মেকিং সংক্রান্ত সভায় এই ঘটনা তুলে ধরে প্রশ্ন তুলেছিলেন এই চাষীর মৃত্যুর জন্য আসলে কে দায়ী ?

দায়ী মূলত চাষী নিজে! কেননা সে পাট চাষের সিদ্ধান্ত নেবার আগে আদমজী জুট মিলে খোঁজ নেয় নি, পাট বিক্রি হবে কি না! তার দু হাজার টাকা পাটে ইনভেস্ট করার আগে দু টাকা দিয়ে রেলে চেপে নারায়ণগঞ্জ আসা উচিৎ ছিল, পাট চলবে কি না যাচাই করার জন্য! সে যদি আগে এখানে আসতো তবে নিশ্চিতভাবে বুঝে যেত এখানে এখন পাটের প্রয়োজন নেই! হতাশায় ভোগা শ্রমিকদের প্রয়োজন সস্তা নেশাদ্রব্য! ফলে সে ফিরে গিয়ে বরং তামাক বা গাজা পাতা চাষে ইনভেস্ট করতো! এবং সেটি বিক্রয় করে অধিক মুনাফা পেতে পারতো।

আর ইনভেস্টমেন্টের সঠিক পরিমাণ কী হওয়া উচিৎ এ সংক্রান্ত একটি মজার গল্প বলে লেখা শেষ করবো। শিক্ষক ক্লাসে বিটলুকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ

বিটলু বলতো আমাদের দেশের সরকার মেয়েদের শিক্ষায় বেশি ইনভেস্ট করে ছেলেদের জন্য করে না কেন?

বিটলুর বিটকেলে উত্তরঃ স্যার সরকার ভাল করেই জানে, মেয়েরা স্কুলে আসলে ছেলেগুলি এমনিতেই আসবে! অযথা পয়সা খরচ করে লাভ কী!

শিক্ষকঃ তবেরে! ছেচড়া বাদর ছেলে!

হা হা। আপনিই ভাল বুঝবেন আপনি কত টাকা কোন খাতে মার্কেটে ঢাললে সঠিক সময়ে জাল ফেলে তুলে নিতে পারবেন! বিচক্ষণতা এক্ষেত্রে বেশি প্রয়োজন।

পরিশেষে, স্বপ্ন দেখুন। সঠিক পদক্ষেপে সে স্বপ্নের বীজকে ফুলে ফলে সুশোভিত বৃক্ষে পরিণত করুন।
শুভকামনা সবার জন্য।

 লেখক: সোহেলী জান্নাত

 পিএইচডি গবেষক, ইউজিসি ও
 সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ,   জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

   

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৪৭৯৯৮১ জন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৪৭৯৯৮১ জন

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৪৭৯৯৮১ জন

  • Font increase
  • Font Decrease

১৮তম বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনের (এনটিআরসিএ) প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে স্কুল পর্যায়ে দুই লাখ ২১ হাজার ৬৫২ জন, স্কুল-২ পর্যায়ে ২৯ হাজার ৫১৬ জন এবং কলেজ পর্যায়ে দুই লাখ ২৮ হাজার ৬৮১৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। আর সর্বমোট উত্তীর্ণ হয়েছেন ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ জন।

বুধবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ মার্চ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন এর স্কুল, স্কুল পর্যায়-২ ও কলেজ পর্যায়ের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৩৩ জন। এর মধ্যে পাস করেছেন ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ জন। পাসের গড় হার ৩৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। 

পরীক্ষার ফলাফল http://ntrca.teletalk.com.bd/result/ লিংকের মাধ্যমে জানা যাবে। এছাড়াও উত্তীর্ণদের মোবাইলে এসএমএস'র মাধ্যমেও ফলাফল জানিয়ে দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন এর স্কুল, স্কুল পর্যায়-২ এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সকাল সাড়ে নয়টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত দেশের ৮ বিভাগের ২৪ জেলা শহরে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

একই দিন বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত কলেজ পর্যায়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ।

জানা যায়, ২ নভেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে ১৮ তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এতে প্রায় ১৯ লাখ চাকুরীপ্রার্থী আবেদন করেন।

;

প্রাথমিকের দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫৪৫৬



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রাথমিকের দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ

প্রাথমিকের দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন পাঁচ হাজার ৪৫৬ জন।

বুধবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপের ২২ জেলায় (খুলনা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগ) লিখিত পরীক্ষায় ২০ হাজার ৬৪৭ জন উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এসব প্রার্থী পরবর্তীতে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।

প্রকাশিত ফলাফল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট www.dpe.govt.bd এ পাওয়া যাবে। 

উল্লেখ্য, প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে এবারই প্রথম আবেদন ও নিয়োগ পরীক্ষা ধাপে ধাপে নেওয়া হচ্ছে। গুচ্ছভিত্তিক এ নিয়োগে তিন ধাপে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষাও আলাদাভাবে নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রথম ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়েছে।

;

দরিদ্র মানুষের পাশে থাকতে চাই সবসময় : আবির হাসান



ক্যারিয়ার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আবির হাসান, ছবি: সংগৃহীত

আবির হাসান, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দরিদ্র কৃষক-গৃহিণী দম্পতির কোল আলো করে জন্ম নেন আবির হাসান। কে জানতো এই আবির হাসানই একদিন সেনাবাহিনীর অফিসার হয়ে এলাকার নাম উজ্জ্বল করবেন। এমনটাই করে দেখিয়েছেন পাবনার চাটমোহর এলাকার সন্তান আবির হাসান।

চাটমোহর এলাকার আবির হাসান ছিলেন ছোটবেলা থেকেই দুরন্ত। ইচ্ছে ছিল একদিন অনেক বড় হবেন, কিন্তু বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় দারিদ্রতা। তবে দারিদ্রতা যে সফলতার রাস্তার বাঁধা হতে পারে না, সেটা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন আবির।

বাবার সঙ্গে লাঙ্গল নিয়ে মাঠে চাষ করেছেন আবার ঠিকই লেখাপড়াও করেছেন। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছেলে সে। তার মনের বাসনায় ছিল পরিবারের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন। পরিবারের সবার ছোট ছেলেটাই এখন আর্মি অফিসার।

যদিও প্রথমে সেনাবাহিনীতে চাকরি করার ইচ্ছে ছিল না তার, তবুও পরিবারের চাওয়ায় যুক্ত হোন সেনাবাহিনীতে। তার পর থেকে কঠোর পরিশ্রম আর মেধা সৃজন দিয়ে নিজেকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন আবির হাসান।

গ্রাম থেকে নবম শ্রেণি পাশ করে মনিপুর স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি হোন, সেখান ভালো ফলাফল করে। গ্রাজুয়েশনের জন্য ভর্তি হোন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল (বিউপি)। সেখান থেকে স্নাতক পাশ করেন। আমেরিকান কমান্ডো ট্রেনিংও করেছেন আবির।

দরিদ্র পরিবার থেকে বেড়ে উঠার কারণে দারিদ্রতা কাছ থেকেছেন আবির। তাই দরিদ্র মানুষের পাশে থাকেন সবসময় আবির। মানুষের দুঃখ কষ্টের সঙ্গী হতে চেষ্টা করেন। যেমন তিনি নিয়েছেন নিজ পরিবারের দায়িত্ব, তেমনি গরীব পরিবারের দায়িত্বও নিজ হাতে নিয়েছেন তিনি।

আবির হাসান বলেন, দারিদ্রতাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। আল্লাহর রহমতে এখন আমি সফল। আমি দরিদ্র মানুষেরদের মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই।

আবির হাসান সবসময় নিজেকে একজন আর্দশবান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তার প্রত্যাশা আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

;

গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ, পাশের হার ৩৬.৩৩ শতাংশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের ২৪টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য অনুষ্ঠিত গুচ্ছভুক্ত জিএসটির ‘বি’ ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

এ পরীক্ষায় পাসের হার ৩৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। শিক্ষার্থীরা আজ রাত ১১ টা ৫৯ মিনিটের আগেই জিএসটির ওয়েবসাইটে ঢুকে তাদের ফলাফল জানতে পারবেন।

রোববার (৫ মে) দুপুরে জিএসটি সমন্বিত ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালযয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেনের কাছে টেকনিক্যাল কমিটির পক্ষ থেকে ‘বি’ ইউনিটের ফলাফল তুলে দেওয়া হয়।

বিকেলে জিএসটি সমন্বিত ভর্তি কমিটির সভায় উপস্থাপনের পর তা প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ঘোষিত ফলাফলে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ সেশনে প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য এবছর ‘বি’ ইউনিটে ৯৪ হাজার ৬৩১ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করে। এর মধ্যে ৮৫ হাজার ৫৪৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তার মধ্যে ৩১ হাজার ৮১ জন শিক্ষার্থী ৩০ নম্বরের উপরে পেয়ে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করেছেন। যার হিসাবে পাসের হার ৩৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

এছাড়া বিভিন্ন কারণে শূন্য দশমিক ০৩ শতাংশ তথা ২৩ জন শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র বাতিল হয়েছে। ‘বি’ ইউনিটের গতবার পাসের হার ছিল ৫৬ দশমিক ৩২ শতাংশ। শিক্ষার্থীরা আজ রাত ১১ টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে জিএসটির ওয়েবসাইট (https://gstadmission.ac.bd/) থেকে ফলাফল জানতে পারবেন।

ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ‘বি’ ইউনিটে সর্বোচ্চ ৭৬ দশমিক ২৫ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন রুকাইয়া ফেরদৌস লামিয়া। কৃতিত্বপূর্ণ এ শিক্ষার্থী ঢাকার বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থী।

এছাড়া ৭৫ নম্বরের উপরে ১ জন, ৭০ নম্বরের ওপরে ৭ জন, ৬৫ নম্বরের উপরে ৪৯ জন, ৬০ নম্বরের উপরে ২১৯ জন, ৫৫ নম্বরের উপরে ৭৮৩ জন, ৫০ নম্বরের উপরে ২৪২৫ জন, ৪৫ নম্বরের উপরে ৫৮৩০ জন, ৪০ নম্বরের উপরে ১১৬৪৬ জন, ৩৫ নম্বরের উপরে ২০১৩২ জন এবং ৩০ নম্বরের উপরে ৩১০৮৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ‘বি’ ইউনিটভুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ৪ হাজার ৫১৫টি আসন রয়েছে।

‘বি’ ইউনিটের ফলাফল প্রকাশের সময় অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, থাকা-খাওয়াসহ বিভিন্ন দুর্দশা লাঘবে চতুর্থবারের মতো তিনটি ইউনিটে জিএসটি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত ৩ মে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে পরীক্ষা সম্পন্ন করায় গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ যারা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্তরের সামরিক-বেসমারিক, আধা-সামরিক, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

ফলাফল প্রকাশের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসিম আখতার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুরের অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দিন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান, টেকনিক্যাল উপ-কমিটির অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. খাদেমুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব প্রমুখ।

এদিকে গুচ্ছভুক্ত ‘এ’ ইউনিটের আর্কিটেকচার (ড্রয়িং) পরীক্ষার ফলাফলও ঘোষণা করা হয়েছে। পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ড্রয়িং (ব্যবহারিক) পরীক্ষার মোট নম্বরের ৩০ শতাংশকে পাস হিসেবে বিবেচনা করে ৮৭৭ জনকে উত্তীর্ণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। পাসকৃত শিক্ষার্থীরাও আজ রাত ১১টা ৫৯ মিনিটের আগেই জিএসটির ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের ফলাফল দেখতে পাবেন। গুচ্ছভুক্ত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্কিটেকচারে ভর্তির জন্য মোট ১৬৫টি আসন রয়েছে।

উল্লেখ্য, আগামী ১০ মে ‘সি’ ইউনিটে বাণিজ্য বিভাগ থেকে আবেদনকৃত শিক্ষার্থীদের বেলা ১১টা-১২টা পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা পূর্বেই কেন্দ্রে পৌঁছানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

;