ঊর্ধ্বমুখী পুঁজিবাজারে লেনদেন বাড়ল ১৪২ কোটি টাকা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা চতুর্থ কার্যদিবসের মতো দেশের শেয়ার বাজারে উত্থান হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সব মূল্য সূচকই সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে বৃদ্ধি পেয়েছে। শেয়ারদর বেড়েছে শতাধিক কোম্পানির। একই সঙ্গে এদিন প্রায় ৫০০ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাত বদল হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, সোমবার (৪ ডিসেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক 'ডিএসইএক্স' ১২ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। চার কার্যদিবসের উত্থানের সূচকটিতে যোগ হয়েছে প্রায় ২৬ পয়েন্ট। আজ লেনদেন শেষে সুচকটি স্থির হয়েছে ৬২৪৪ পয়েন্টে।

প্রধান সূচকের সঙ্গে ডিএসইর ওপর ২ চাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাছাই করা কোম্পানিগুলোর সূচক 'ডিএস ৩০' ৫ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। শরিয়াভিত্তিক কোম্পানিগুলোর সূচক 'ডিএসই এস' বেড়েছে ১ দশমিক ৯২ পয়েন্ট।

সব মূল্য সূচকের উত্থানের দিনে ডিএসইতে লেনদেনেও কিছুটা গতি ফিরেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ৩২৫ প্রতিষ্ঠানের ১২ কোটি ৩৫ লাখ ৩১ হাজার ৬৬০টি শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। এসব শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৪৯১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে (রোববার) ৩৪৯ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। অর্থাৎ একদিনের ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজারের লেনদেন বেড়েছে ১৪২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।

সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৬৯টির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। দর কমেছে ৪৯টির। বিপরীতে ১০৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।

আজ ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড। একদিনে কোম্পানিটির ২৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা মূল্যের ৯১ লাখ ২৬ হাজার ৩৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বিনিয়োগকারীদের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল বাংলাদেশ অটো কার্স লিমিটেডের শেয়ারের প্রতি। ফলে কোম্পানিটির শেয়ারদর একদিনে ১৩ টাকা ১০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেড়েছে। অপরদিকে সর্বোচ্চ দর হারানো জুট স্পিনার্স লিমিটেডের শেয়ারদর কমেছে ১৩ টাকা ৫০ পয়সা বা ৪ দশমিক ১৩ শতাংশ।

এদিকে দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক 'সিএএসপিআই' আজ ৩০ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্সচেঞ্জটিতে ২১৫ কোম্পানির ১৭ কোটি ৫৭ লাখ ১৪ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর কমেছে ২৯টির, বেড়েছে ৬১টির। বিপরীতে ১২৫ কোম্পানির শেয়ারদর সোমবার অপরিবর্তিত ছিল।

   

ডাক বিভাগকে সাড়ে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব দিল নগদ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সঙ্গে রাজস্ব ভাগাভাগি করেছে। ২০২৩ সালের আয় থেকে ৫ কোটি ৫১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৮ টাকার রাজস্ব ডাক বিভাগকে বুঝিয়ে দিয়েছে নগদ।

বাংলাদেশ সচিবালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে নগদ কর্তৃপক্ষ ডাক বিভাগের প্রাপ্য রাজস্বের চেক হস্তান্তর করে। অনুষ্ঠানে নগদ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী তানভীর এ মিশুকের কাছ থেকে চেক গ্রহণ করেন ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) তরুণ কান্তি সিকদার। এ সময় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং নগদ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলমসহ দুই প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নগদ লিমিটেড ও ডাক বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, নগদের সেবা থেকে মোট আয়ের ৫১ শতাংশ রাজস্ব পায় বাংলাদেশ ডাক বিভাগ, বাকি ৪৯ শতাংশ রাজস্ব পায় নগদ লিমিটেড। এর আগে ২০২০ সালে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা, ২০২১ সালে ৩ কোটি ৩১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭৭ টাকা এবং ২০২২ সালে ৪ কোটি ৫০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা রাজস্ব ডাক বিভাগকে বুঝিয়ে দিয়েছে নগদ লিমিটেড।

অনাড়ম্বর এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল সেবা হিসেবে নগদের ভূয়সী প্রশংসা করেন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি মনে করেন, এই মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের কারণে দেশ ডিজিটালাইজেশন থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে অনেকটাই অগ্রগামী হচ্ছে। এ ছাড়া খুব দ্রুতই যাত্রা শুরু করতে যাওয়া নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, নগদ ডিজিটাল ব্যাংক দেশকে ক্যাশলেস সোসাইটিতে পরিণত করার দিকে এগিয়ে নেবে।

চেক হস্তান্তর শেষে নগদ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘আমরা সবসময়ই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে থাকি। আমরা ডাক বিভাগের ডিজিটাল সেবা হিসেবে যাত্রা শুরু করেছি। সে জন্য চুক্তি অনুযায়ী ডাক বিভাগের সঙ্গে রাজস্ব ভাগাভাগি করি আমরা। আশা করি, আমাদের পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ আরও দীর্ঘায়িত হবে এবং আরও অনেক দুয়ার উন্মোচন হবে।’

২০১৯ সালের মার্চে যাত্রার পর থেকেই সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে নগদ। পিছিয়ে পড়া মানুষকে অর্থনৈতিক অন্তৰ্ভুক্তিতে এনে দেশের ডিজিটাল আর্থিক খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এখন দেশের অন্যতম শীর্ষ এই মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সাড়ে ৯ কোটির ওপরে। প্রতিষ্ঠানটি এখন গড়ে দৈনিক এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা লেনদেন করে থাকে।

নগদ দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য স্মার্ট ফোনের জন্য ই-কেওয়াইসি ও বাটন ফোনের জন্য *১৬৭# সেবা উদ্ভাবন করে। পাশাপাশি সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট চার্জসহ অত্যাধুনিক সব সেবার মধ্য দিয়ে আর্থিক খাতে পরিবর্তন ঘটিয়েছে নগদ। এর পাশাপাশি নগদ অত্যাধুনিক সাইবার নিরাপত্তার মাধ্যমে গ্রাহকের তথ্য ও অর্থের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করছে।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা উপবৃত্তি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা তহবিল, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বিভিন্ন সহায়তা ও ভাতার টাকা অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে উপকারভোগীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে নগদ। সবমিলিয়ে ২৭টি মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিতরণের দায়িত্ব পালন করছে এই প্রতিষ্ঠানটি।

;

সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে বৈদেশিক ঋণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে একদিনের ব্যবধানে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় গত মার্চে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে ৪২০ কোটি ডলার।

গত বৃহস্পতিবার টাকার অবমূল্যায়নের আগে ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে এর পরিমাণ ছিল ৪৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা। গত বৃহস্পতিবার থেকে ১১৮ টাকা হিসাবে ঋণ বেড়েছে ৪৯ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ঋণ বেড়েছে ৩ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা।

এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে সুদের হার বাড়ায় বাড়তি অর্থ পরিশোধ করতে হবে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। সুদের টাকা যোগ করলে মোট অঙ্ক দাঁড়ায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।

সূত্র জানায়, বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নিয়ে তা দেশীয় মুদ্রায় রূপান্তর করে উদ্যোক্তা ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। ঋণ ফেরত দেওয়ার সময় স্থানীয় মুদ্রাকে বৈদেশিক মুদ্রায় রূপান্তর করতে হয়। ওই সময়ে বাজারে প্রচলিত ডলারের দামে বৈদেশিক মুদ্রা কিনতে হয়। এ কারণে ডলারের দাম বাড়লে বৈদেশিক ঋণ টাকার হিসাবে বেড়ে যায়।

এর মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে সুদের হার বাড়লে ঋণের অঙ্কও বাড়ে। কারণ, ঋণ পরিশোধের সময় প্রচলিত বিনিময় হার ও সুদহারে ঋণ পরিশোধের শর্ত থাকে। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বেশি থাকলে ঋণের ঝুঁকি আরও বেশি বাড়ে। বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বেশি। এ কারণে ঋণ পরিশোধের চাপও বেশি। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী রয়েছে।

একই সঙ্গে ডলারের দামও বাড়ছে। বর্তমানে নিট রিজার্ভ ১৮৪৮ কোটি ডলার। ২০২১ সালের আগস্টে তা বেড়ে সর্বোচ্চ গ্রস রিজার্ভ ৪৬০৮ কোটি ডলারে উঠেছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকর প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে মোট বৈদেশিক ঋণ ছিল ৯ হাজার ৬৫২ কোটি ডলার। ওই সময়ে ডলারের দাম ছিল ১০৩ টাকা। ঋণের পরিমাণ ছিল ৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ৬৪ কোটি ডলার। ওই সময়ে ডলারের দাম ছিল ১১০ টাকা। এতে ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১১ লাখ ৭ হাজার কোটি টাকা।

আলোচ্য সময়ে ঋণ বেড়েছে ৪১২ কোটি ডলার। গত মার্চে তা আরও বেড়ে ঋণ স্থিতি দাঁড়ায় ১০ হাজার ৭২ কোটি ডলারে। ফলে গত ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ঋণ বেড়েছে ৪২০ কোটি ডলার। গত ডিসেম্বর থেকে বুধবার পর্যন্ত ডলারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ১১০ টাকা। এ হিসাবে ঋণ বেড়েছে ৪৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

গত বৃহস্পতিবার থেকে ডলারের দাম বেড়ে ১১৮ টাকা হয়। এতে একদিনের ব্যবধানে ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা।

এদিকে বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ঋণের সুদের হারও বেড়েছে। করোনার আগে লন্ডন ইন্টার ব্যাংক অফার রেটে (লাইবর) ডলারে ছয় মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হার ছিল দেড় থেকে ২ শতাংশ। এর সঙ্গে আড়াই থেকে ৩ শতাংশ যোগ করে ঋণের সুদ নির্ধারিত হতো। এ হিসাবে সুদের হার পড়ত ৪ থেকে ৫ শতাংশ।

বর্তমানে লাইবর রেট বেড়ে ডলারে ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত সিকিউরড ওভারনাইট ফিন্যান্সি রেট (সোফর) ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশে উঠেছে। এর সঙ্গে আড়াই শতাংশ যোগ করলে সুদের হার দাঁড়ায় ডলারে ৮ দশমিক ২১ শতাংশ । তিন শতাংশ যোগ করলে সুদের হার আরও বেশি পড়ে। ফলে ঋণের সুদের হার বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে ঋণের স্তিতি বাড়ছে।

এছাড়া ঋণ পরিশোধ মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ানোর ফলে বাড়তি সুদের পাশাপাশি দণ্ড সুদও দিতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে এর বিপরীতে দণ্ড সুদসহ চড়া সুদ দিতে হয়।

গত বছর স্বল্পমেয়াদি ঋণের সুদ পরিশোধ করা হয়েছিল ৯৩ কোটি ডলার। ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে ১০ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। চলতি বছরে পরিশোধ করতে হবে ১১৩ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৫০ কোটি ডলার ইতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। আরও ৬৩ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে। সাময়িক হিসাবে ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে ৬৯৩০ কোটি টাকা। ১১৮ টাকা হিসাবে ৭৪৩৪ কোটি টাকা। বেশি পরিশোধ করতে হবে ৫০৪ কোটি টাকা।

করোনার সময় থেকে ব্যবসায়িক মন্দার কারণে ঋণের কিস্তি পরিশোধের মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে। ফলে ঋণের অঙ্কও বেড়েছে। এর মধ্যে ঋণ পরিশোধ বাড়লেও ঋণের স্থিতি গত বছরের মার্চে কিছুটা কমলেও এখন আবার বেড়ে গেছে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে সরকারি খাতে বিদেশি ঋণ ছিল ৭ হাজার ২২১ কোটি ডলার। গত মার্চে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৯৮১ কোটি ডলার। বেড়েছে ৭৬০ কোটি ডলার। ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে ঋণের পরিমাণ ৮৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ১১৮ টাকা হিসাবে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৮৯ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এ খাতে ঋণ বাড়ছে ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা।

সরকারি খাতের বেশির ভাগ ঋণই দীর্ঘমেয়াদি। যে কারণে এগুলো দীর্ঘ সময় নিয়ে পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। এতে ঝুঁকির মাত্রা কম। কিন্তু বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বেশি। এগুলো ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়। সুদহারও বেশি। যে কারণে এগুলোতে ঝুঁকি বেশি। এসব ঋণই বেশি স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বেশি মাত্রায় পরিশোধও হচ্ছে।

বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের স্থিতি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ছিল ২৪৩১ কোটি ডলার। গত মার্চে তা কমে দাঁড়ায় ২০৯৫ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে ঋণ কমেছে ৩৩৬ কোটি ডলার। ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে ঋণ কমেছে ৩৬ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। ১১৮ টাকা হিসাবে কমেছে ৩৯ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা। টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ঋণ কমার মাত্রা বেড়েছে ২ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা।

বেসরকারি খাতের ঋণের মধ্যে আমদানি খাতের ঋণই বেশি। এর মধ্যে ট্রেড ক্রেডিট ও বৈদেশিক এলসির দায় বাড়ছে। যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।

অন্যান্য খাতে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ঋণ ছিল ১১৪২ কোটি ডলার। গত মার্চে তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১১৭৮ কোটি ডলার। ঋণ বেড়েছে ৩৬ কোটি ডলার। ডলারের দাম ১১০ টাকা হিসাবে ঋণ বেড়েছে ৩৯৬০ কোটি টাকা। ১১৮ টাকা হিসাবে বেড়েছে ৪২৪৯ কোটি টাকা। টাকার অবমূল্যায়নজনিত কারণে ঋণ বেড়েছে ২৮৮ কোটি টাকা।

;

মহাপরিকল্পনায় জাইকার সহায়তা চান বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিদ্যুতের চাহিদা অনুসারে এলাকাভিত্তিক বিনিয়োগের মহাপরিকল্পনা করতে জাইকার সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশে অঞ্চলভিত্তিক শিল্পায়ন হচ্ছে, চাহিদার ধরণ ভিন্ন, যোগান প্রক্রিয়াও ভিন্নতর।

রোববার (১২ মে) সচিবালয়ে জাইকার আভ্যন্তরীণ উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. তাৎসুফুমি ইয়ামাগাতার নেতৃত্বে ১২ সদস্যের কমিটির সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাতারবাড়িতে ফেজ-২ না হওয়ার এ জায়গায় বিকল্প কোন জ্বালানির বিদ্যুৎকেন্দ্র করলে অধিক লাভজনক এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন করলেও সম্ভাব্য গ্রাহক কারা হবে তা বিবেচনার সময় এসেছে। সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র করার কিছু প্রস্তাব এসেছে। এলএনজি টার্মিনাল করার বিষয়ে আলোচনা অনেক এগিয়েছে।

তিনি বলেন, অব্যাহত উন্নয়নের জন্য জ্বালানি চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই দ্রুত ল্যান্ড বেজড এলএনজি টার্মিনাল করা প্রয়োজন।

জাইকার আভ্যন্তরীণ উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি বলেছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উন্নয়ন হচ্ছে, যা সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য ভালো। চট্টগ্রামে কোরিয়ান ইপিজেড এবং মিডি এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তে পারে।

উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও জাপান এক্সট্রানাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইয়ুমি মুরায়ামা বলেন, ঢাকার উজ্জ্বল্য দেখে আমি মোহিত। এ সময় শিল্পায়নের বৈচিত্রময়তা ও বিনিয়োগের পরিবেশ, জ্বালানি হাব, মিডি এলাকার কার্বন নিঃসরণ কমানোর কৌশল ও মিডি এলাকায় শিল্পায়নের কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়।

অন্যদের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব তানিয়া খান, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, জাইকা সদর দফতরের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিভাগের উপ-মহাপরিচালক জন সাওতম, জাইকা বাংলাদেশ অফিসের প্রধান প্রতিনিধি তোমোহাইদ ইচিগুচি, টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য ও সহকারী অধ্যাপক ড. ফুমিহিকো সেটা ও মিডি নীতি উপদেষ্টা কোজি তাকামাতসু উপস্থিত ছিলেন।

;

পাবলিক প্রকিউরমেন্টে সমান সুযোগের জন্য অন্যায্য ধারাগুলো অপসারণ উচিত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
পাবলিক প্রকিউরমেন্টে সমান সুযোগের জন্য অন্যায্য ধারাগুলো অপসারণ উচিত

পাবলিক প্রকিউরমেন্টে সমান সুযোগের জন্য অন্যায্য ধারাগুলো অপসারণ উচিত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট-চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপরচুনিটিজ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (১২ মে) এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। 

সেমিনারে বক্তারা বলেন, সরকারকে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রক্রিয়ায় দেশি-বিদেশি সব প্রতিষ্ঠানের জন্য সমান খেলার ক্ষেত্র নিশ্চিত করতে স্থানীয় কোম্পানিগুলোর জন্য বৈষম্যমূলক কর কাঠামো অপসারণ করা উচিত।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মোঃ শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, বর্তমান সরকার প্রাথমিক পর্যায়ের ক্রয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ইলেকট্রনিক সরকারি ক্রয় চালু করেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে উচ্চ নৈতিকতার মানুষ প্রয়োজন। তিনি স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে সভায় আসা সুপারিশ, অভিযোগ এবং দাবিগুলি বিবেচনায় নেওয়ার জন্য সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

মনোনীত আলোচক হিসেবে বক্তৃতাকালে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটির (বিপিপিএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ শোহেলার রহমান চৌধুরী বলেন, তারা দেশে শতভাগ ক্রয় ব্যবস্থাকে ই-জিপি পদ্ধতিতে আনতে চান।

তিনি বলেন, বিপিপিএ ক্রয় সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করে ক্রমাগত সংশোধন করছে। প্রতিকার সহজতর করার জন্য বিদ্যমান তিন-পদক্ষেপের অভিযোগের সমাধানকে এক ধাপে নামিয়ে আনা হবে।

অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড প্রকিউরমেন্ট স্পেশালিস্ট ড. জাফরুল ইসলাম ‘গভর্নেন্স অ্যান্ড কম্পিটিটিভনেস ইন পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্র্যাকটিস: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ক্রয় প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘাত একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয়। "সিওআই সরকারী কর্মকর্তা এবং চুক্তি বা পরামর্শ শিল্পের মধ্যে সম্ভাব্য অনানুষ্ঠানিক বা অপ্রকাশিত সম্পর্কের থেকে উদ্ভূত হয়। সরকারী কর্মকর্তা বা তাদের পরিবারের সদস্যরা সংস্থায় একই ক্রয় প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন এমন উদাহরণ রয়েছে। তিনি বিপিপিএকে কোনো আইন বা নিয়ম প্রণয়নের আগে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ করার আহ্বান জানান।

আইবিএফবির উপদেষ্টা ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মাদ আবদুল মজিদ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্পদ ও সময়ের অপচয় কমাতে আর্থিক বছরে সংস্কার আনার সুপারিশ করেন। তিনি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি বিদ্যমান বৈষম্যমূলক কর কাঠামোর পরিবর্তে দেশি-বিদেশি কোম্পানির ওপর সমান কর আরোপের ওপর জোর দেন।

আইবিএফবির ভাইস প্রেসিডেন্ট এম এস সিদ্দিকী সরকারকে পাবলিক আমদানিসহ সব পর্যায়ে অভিন্ন কর আরোপের আহ্বান জানান। তিনি ক্রয় প্রক্রিয়ায় দীর্ঘমেয়াদে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রতিযোগিতামূলক হওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী কাজের পুরস্কার প্রদান প্রক্রিয়ায় সমতা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির (বিএসিআই) উপদেষ্টা প্রকৌশলী এসএম খোরশেদ আলম পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রক্রিয়ায় সর্বনিম্ন দরদাতাকে পুরস্কার দেওয়ার ধারা বাতিল করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিডের পরিমাণের পরিবর্তে ক্রয়ের সম্ভাব্য পুরস্কারপ্রাপ্তের ক্ষমতা বিবেচনা করা উচিত।

এছাড়াও সেমিনারে ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ফর ট্রান্সফরমার অ্যান্ড সুইচগিয়ারের (ম্যাটিএস) সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী রবিউল আলম প্রকল্পের পুরস্কার প্রক্রিয়ায় স্থানীয় কোম্পানিগুলোর অসঙ্গতি দূর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইবিএফবি সভাপতি হুমায়ুন রশীদ।

;