পাট ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে বহুমুখীকরণে বাধা কোথায়?



আরিফুল ইসলাম মিঠু, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ইনফোগ্রাফিক্স: মামুনুর রশীদ, বার্তা২৪.কম

ইনফোগ্রাফিক্স: মামুনুর রশীদ, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘদিন ধরেই রফতানিমুখী পণ্যকে বহুমুখীকরণ করার চেষ্টা করে আসছে বাংলাদেশ। তবে তৈরি পোশাক (আরএমজি) শিল্প থেকে কোনভাবে বেরিয়ে আসতে পারছে না দেশটি ।

বাংলাদেশের সর্বশেষ রফতানি নীতিতে ১৮টি অগ্রাধিকার খাত এবং ১৪টি খাতকে ‘থার্স্ট সেক্টর’ (উদীয়মান খাত) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

রফতানি নীতিতে বলা হয়েছে, রফতানিকারকরা কম সুদের হারে ঋণ পাবেন, আয়করের ওপর ছাড়, বন্ডেড গুদাম সুবিধা এবং নতুন বাজার, বাজারের পণ্যগুলি খুঁজে বের করতে এবং এফডিআই (ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট) বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১১.৫২ শতাংশ প্রবদ্ধি অর্জনের জন্য ৭২ বিলিয়ন ডলারের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। পণ্য রফতানির জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৬২ বিলিয়ন ডলার এবং সেবাখাতের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ১০ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৪.৫৫  বিলিয়ন ডলার এবং প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল ৫.৮৮ শতাংশ।

অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে, বাংলাদেশ ৩৭,২০২.৬৩ মিলিয়ন ডলারের আরএমজি পণ্য এবং ৭৯৪.১৯ মিলিয়ন ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং ৬৫৯.৫৪ মিলিয়ন ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করেছে। আর এতে আরএমজি খাতের অবদান ৮৫.৪২ শতাংশ।

২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশের রফতানি হয়েছে, মোট ৩০,১৮৬.৬২ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে আরএমজি খাত ২৪,৪৯১.৮৮ ডলার, ৭৪৫.৬৩ মিলিয়ন ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং ৮২৪.৪৯  মিলিয়ন ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করেছে। এক্ষেত্রে আরএমজি খাতের অবদান ছিল ৮১.১৩ শতাংশ।

পাট পাটজাত পণ্য

শীর্ষস্থানীয় পাট পণ্য রফতানিকারকদের একজন, ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল করিম মুন্না বলেন, পাটজাত পণ্য বহুমুখীকরণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কাঁচামাল পাওয়া।

ভারতে পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণের জন্য একশ’রও বেশি পাটের সুতা রয়েছে। তারা এ সুতা দিয়ে মানসম্পন্ন পণ্য তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে মাত্র চার থেকে পাঁচ ধরনের পাটজাত সুতা রয়েছে এবং এ সুতা তেমন একটা মানসম্পন্ন নয়।

তিনি বলেন, ‘কাঁচামাল আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণেরণের বলছি, কিন্তু আমাদের কাছে এই ধরনের পণ্য তৈরির কাঁচামাল নেই।’

সমস্যার উত্তরণ প্রসঙ্গে রাশেদুল করিম মুন্না জানান, পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণের জন্য বিশেষায়িত পাটকল স্থাপন করতে হবে, যা শুধু সুতাই তৈরি করবে না, রঙ এবং লেমিনেশন করার সুবিধাও দেবে, যাতে উদ্যোক্তারা উন্নতমানের পণ্য তৈরি করতে পারেন।

এ জন্য বাংলাদেশের ‘জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার’, আমাদের পণ্য ডিজাইনে সহায়তা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং পণ্যের মান উন্নয়নে দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

এ সেন্টার আমাদের পণ্য বিক্রির জন্য স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও একটা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ‘ভারতের জাতীয় পাট বোর্ড’ ঠিক এই কাজটিই করে থাকে।

বাংলাদেশের জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার প্রকল্প সহায়তা দিয়ে চলে বলে ভারতের জাতীয় পাট বোর্ডের মতো ভূমিকা রাখতে পারে না। সীমিত তহবিল দিয়ে এ কাজ করা সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ ৮৫ শতাংশ কাঁচা পাট বা সুতা বিদেশে রফতানি করে।

পিছিয়ে চামড়াজাত পণ্য

বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- এলজিডব্লিউ সার্টিফিকেট।

বুড়িগঙ্গা নদী বাঁচাতে হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে অনেক কারখানাতেই ‘কমন এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (সিইটিপি- সাধারণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট) স্থাপন করা হয়নি। কোনো কোনো কারখানায় ইটিপি বন্ধ রাখা হয়, অর্থ বাঁচাতে। ফলে এখানকার ট্যানারি শিল্প এখনো পানি ও পরিবেশকে দূষিত করে চলেছে।

দিলজাহান বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ভূঁইয়া জানান, এখন শুধু চীন তাদের কাছ থেকে চামড়া কেনে। তারা একটি পণ্য এক ডলার ১০ সেন্ট থেকে এক ডলার ২০ সেন্টে কেনে। তারা সাত বছর আগে একই পণ্য ২ ডলার ২০ সেন্টে বিক্রি করতেন।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘চীন ছাড়া আমাদের কাছ থেকে অন্য কোনো দেশ কাঁচা চামড়া কিনতে আসে না। এর কারণ হিসেবে অন্য দেশগুলোর বক্তব্য, এজন্য আমাদের এলডব্লিউজি সনদ লাগবে। কিন্তু এ সনদ পেতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সনদ লাগবে। এ সদন ছাড়া তারা আমাদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া কিনবে না।’

এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি ) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, প্রতিটি সেক্টরে নিজস্ব সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তার সঙ্গে তারা যে কাঠামোতে কাজ করে সেখানেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যদিও আরএমজি সেক্টর ৪০ বছরের পুরনো একটি শিল্প। তারপরেও এখাতে প্রণোদনা দিতে হয়। এটি এখন পক্ষপাতমূলক হয়ে গেছে। তারা এখনো বন্ডেড সুবিধা ভোগ করে’।

‘আরএমজি উদ্যোক্তারা নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করতে পারলেও অন্য শিল্পখাতের উদ্যোক্তারা তা করতে পারেননি। ফলে, অন্যান্য খাতের উদ্যোক্তারা দুর্বলই থেকে যাচ্ছেন।’- বলে মনে করেন তৌফিকুল ইসলাম খান।

তিনি এটাও স্মরণ করে দেন, ‘আরএমজি উদ্যোক্তারা যখনই কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন, তখনই তারা ঐক্যবদ্ধভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছেন। অন্য সেক্টরের স্টেকহোল্ডাররা তা করতে পারেননি। ফলস্বরূপ, নীতিনির্ধারণ সবসময় যারা বেশি প্রভাবশালী, তাদের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। চামড়া শিল্পের সমস্যা হচ্ছে, কমপ্লায়েন্স সমস্যা। এটি এই খাতের একটি সুনির্দিষ্ট সমস্যা। এইখান থেকে উন্নীত হতে হবে।’

কৌশলগত প্রচেষ্টার উপর জোর দিয়ে সিপিডি’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান জানান, সরকার রফতানিখাতকে 'থ্রাস্ট সেক্টর’ ঘোষণা করেছে। এসব পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য আমাদের কৌশলগত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রয়োজন।

   

ঢাকায় বসছে ২৪তম রিনিউয়েবল এনার্জি কনফারেন্স



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে শুরু হচ্ছে ২৪তম ন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি কনফারেন্স অ্যান্ড গ্রিন এক্সপো-২০২৪। দুই দিনব্যাপী ওই আয়োজনে প্রদশর্নীর পাশাপাশি থাকছে ৪টি টেকনিক্যাল সেমিনার।

বুধবার (২২ মে) সকাল ১০টায় উদ্বোধনী সেশনে থাকছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আর সমাপনীতে থাকছেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। পৃথক দু’টি সেশনে যোগ দেবেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি।

আয়োজকরা বলেছেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির যেমন সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বাংলাদেশ ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করার কথা বলেছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে এ খাতে ২৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। সে কারণে এবারের আয়োজনে বিনিয়োগকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এনার্জি এবং গ্রিনটেক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ওই এক্সপো সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। আয়োজনে সহযোগী হিসেবে রয়েছেন ইউএসএআইডি, স্রেডা, ইডকল, ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ ও বিএসআরইএ।

গ্রিনটেক ফাউন্ডেশনের সিইও অ্যান্ড এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর লুৎফর রহমান, ২৪তম আসরের সামনে থাকছে বিনিয়োগের বিষয়গুলো। সরকারের নীতিনির্ধারক, ব্যাংককার, বিনিয়োগকারী, উন্নয়ন সহযোগী, সরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং শিল্পমালিকরা অংশ নেবেন। আয়োজনের মধ্যমে উদ্যোক্তা, সরকার ও অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরও নিবিড় সংযোগ তৈরি হবে বলে আশা করি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এনার্জির ডিরেক্টর ড. এসএম নাফিজ সামস বলেন, আমরা ২২ বছর ধরে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছি, সেগুলো এখানে তুলে ধরা হবে। ব্যাংকগুলো এখানে অর্থায়ন করবে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট শাখার লোকজনের নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কোনো ধারণা না থাকলে বিষয়টি জটিল। তেমনি সাংবাদিক এবং যারা এই সেক্টরকে লিড দিতে সহায়তা করবে তাদের ডিপ্লোমা করার ব্যবস্থা থাকা উচিত। ডিপ্লোমা করতে যেহেতু বিজ্ঞান বিভাগের পড়াশুনার বিষয় থাকে, এখানে বিষয়টি ভিন্নভাবে প্লানিং করা উচিত।

বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশন (বিএসআরইএ) সভাপতি নুরুল আক্তার বলেন, আমাদের দেশে জায়গা কম, সেইভাবে বিনিয়োগ করতে হবে। ২০৪০ সালে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ৪০ শতাংশ করতে চায়, এখন ৫ শতাংশের নিচে। শুধু গার্মেন্টসের ছাদে ৫ হাজার মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে। এখানে বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই, কেপেক্স মডেলে অর্থায়নের জন্য ইডকলসহ অনেকে রেডি রয়েছে। পরিবেশ এবং ভবিষ্যতের জন্যই নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যাওয়া উচিত। আমাদের অনেকগুলো সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের এলওআই দেওয়া হয়েছে, যার সক্ষমতা ১০ হাজার মেগাওয়াটের ওপরে। কিন্তু জমি সংস্থানের অভাবে আটকে আছে। উৎপাদনের পাশাপাশি আমাদের ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া জরুরি। যথাসময়ে সুইচ অফ করলে ২ শতাংশ ব্যবহার কমে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সৌর বিদ্যুতের যন্ত্রপাতির বড় একটি অংশ অ্যালুমিনিয়াম এগুলো পুনরায় ব্যবহারযোগ্য, আবার রয়েছে প্লাস্টিক সেগুলোও পুনঃব্যবহারযোগ্য। কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো নিয়ে গবেষণা চলছে। ইলেকট্রনিক বর্জ্য নিয়ে কাজ করছে।

মিট দ্য প্রেস আয়োজনে অন্যদের মধ্যে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ চেয়ারম্যান মো. শামীম জাহাঙ্গীর, গ্রিনটেক ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা আব্দুল কাউয়ুম মোহাম্মদ কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন।

;

রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০২১ পাচ্ছে ২০ শিল্পপ্রতিষ্ঠান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্পখাতে অবদানের স্বীকৃতি প্রদান, প্রণোদনা সৃষ্টি, সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করা এবং বেসরকারিখাতে শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৬ ক্যাটাগরির ২০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০২১’ প্রদান করবে শিল্প মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক/প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ প্রদান করা হবে।

মঙ্গলবার (২১ মে) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ফয়সল হাসানের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ ও এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম।

শিল্প-প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী ৬ (ছয়) ক্যাটাগরির মোট ২০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান/উদ্যোক্তাকে এই পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ৬টি, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, ক্ষুদ্রশিল্প ক্যাটাগরিতে ৪টি, মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, কুটিরশিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি এবং হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে ১টি।

বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে সম্মিলিতভাবে ১ম হয়েছে ৩টি প্রতিষ্ঠান, যথাক্রমে ইকোটেক্স লি., প্রাণ ডেইরি লি. ও মীর আক্তার হোসেন লি., ২য় হয়েছে স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি., যৌথভাবে ৩য় হয়েছে স্নোটেক্স আউটারওয়্যার লি. ও স্কয়ার টয়লেট্রিজ লি.।

মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে ১ম হয়েছে বেঙ্গল পলি অ্যান্ড পেপার স্যাক লি., ২য় হয়েছে বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লি. এবং ৩য় হয়েছে এপিএস অ্যাপারেলস লি.।

ক্ষুদ্রশিল্প ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে ১ম হয়েছে দ্য রিলায়েবল বিল্ডার্স ও কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্ট কোম্পানি লি., ২য় হয়েছে রংপুর ফাউন্ড্রি লি. এবং ৩য় হয়েছে গুনজে ইউনাইটেড লি.।

মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে ১ম হয়েছে ফারিহা গ্রীন মুড লেদারস লি., ২য় হয়েছে এ.বি.এম. ওয়াটার কোম্পানি এবং ৩য় হয়েছে ডীপলেড ল্যাবরেটরিজ লি.।

কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে ১ম হয়েছে ব্লু-স্টার এগ্রো প্রোডাক্ট অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, ২য় হয়েছে প্রীতি বিউটি পার্লার এবং ৩য় হয়েছে লেহাজ সালমা যুব মহিলা কল্যাণ সংস্থা।

হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে শুধমাত্র ১টি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছে বিজ সলুশনস লি.।

উল্লেখ্য, শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার প্রদান সংক্রান্ত নির্দেশনাবলি-২০১৩’ অনুযায়ী ২০১৪ সালে ১ম বারের মতো ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার’ প্রদান শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এই বছর ৭ম বারের মতো ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার- ২০২১’ প্রদান করা হচ্ছে।

‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার প্রদান নীতিমালা- ২০২০’-এ রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্য, ক্ষেত্র নির্ধারণ, পুরস্কার প্রাপকের সংখ্যা নির্ধারণ ও বিবেচনাসূত্র, আবেদনপত্র আহ্বান, মনোনয়ন যোগ্যতা, প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুতকরণ কমিটি, আবেদনপত্র মূল্যায়ন কমিটি এবং মনোনয়ন চূড়ান্তকরণ কমিটির গঠন ও কার্যপরিধি ইত্যাদি বর্ণিত আছে।

রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান/ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) পুরস্কার প্রাপ্তির পরবর্তী একবছর বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে এবং সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন।

;

এফবিসিসিআই-এর সভা

রফতানি বহুমুখীকরণে অগ্রাধিকারভিত্তিক খাত চিহ্নিত করার তাগিদ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রফতানি বহুমুখীকরণ ও বাজার সম্প্রসারণকে বেগবান করতে সম্ভাবনাময় খাতগুলোর তালিকা তৈরির তাগিদ দিয়েছেন শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী।

এদের মধ্যে সম্ভাবনাখাতগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক বাজারে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (মে ২০) বিকেলে এফবিসিসিআই-এর মতিঝিল কার্যালয়ে আয়োজিত রফতানিবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির দ্বিতীয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মো. আমিন হেলালী।

এফবিসিসিআই-এর হেড অব পিআর অ্যান্ড কমিউনিকেশনস, তানজিদ বসুনিয়া সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, সভায় সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআই-এর সাবেক পরিচালক মেহেদী আলী। কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ এবং এফবিসিসিআই-এর পরিচালক সালমা হোসেন এ্যাশ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এফবিসিসিআই-এর সিনিয়র সহসভাপতি বলেন, তৈরি পোশাক ছাড়াও আমাদের দেশে অনেক শিল্পখাত ভালো করছে। প্রাথমিকভাবে আমাদের নির্ধারণ করতে হবে কোন খাতগুলো রফতানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সুনির্দিষ্ট তালিকা তৈরি করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের সুযোগ করে দিতে হবে।

মো. আমিন হেলালী আরো বলেন, নিজেদের প্রচেষ্টায় ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন বাজারে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন। সরকারি ও বেসরকারিখাতের সমন্বয় জোরদার এবং সরকারের সহযোগিতা নিয়ে সমন্বিতভাবে অগ্রসর হওয়ার সময় এসেছে।

এসময় ভারতের সেভেন সিস্টার্স, চীন, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, নেপালসহ প্রতিবেশী দেশ এবং সম্ভাবনাময় অন্যান্য বাজারে পণ্য রফতানির বাধা চিহ্নিতকরণ ও সমাধান খুঁজে বের করতে কমিটির সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান মো. আমিন হেলালী।

আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে- রফতানিকারকদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যবসার ব্যয় সংকোচন এবং গবেষণা ও উন্নয়নের পরামর্শ দেন এফবিসিসিআই-এর পরিচালক এবং বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান।

কমিটির চেয়ারম্যান মেহেদী আলী জানান, কমিটির উদ্যোগে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে রফতানি মেলার আয়োজন করা হবে। সেই সঙ্গে রফতানি বহুমুখীকরণ এবং বাজার সম্প্রসারণ বিষয়ে একাধিক সেমিনারও অনুষ্ঠিত হবে।

খাতভিত্তিক সমস্যাগুলো রফতানিবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটিতে লিখিত আকারে জমা দিতে সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ সালমা হোসেন এ্যাশ।

মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে রফতানি বৃদ্ধিতে বন্দরগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, কার্গো বিমানের ভাড়ায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, দেশে উৎপাদিত পণ্যের মান উন্নয়ন, বিভিন্ন বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের মানোন্নয়ন, প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যবসায় ব্যয় হ্রাস প্রভৃতি বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন কমিটির সদস্যরা।

পাশাপাশি নতুন বাজার অনুসন্ধান এবং স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্য বিদেশি ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরতে এফবিসিসিআই-এর এক্সপোর্টবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটিকে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান বক্তারা।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই্-এর পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন-অর-রশীদ, মো. আবুল হাশেম, এফবিসিসিআই-এর মহাসচিব মো. আলমগীর, কমিটির কো-চেয়ারম্যান এবং সদস্যবৃন্দ প্রমুখ।

;

তিন বছরেই সফল ইউনিকর্ন স্টার্টআপ নগদ: পলক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যাত্রা শুরুর মাত্র তিন বছরের মধ্যেই দেশের সফলতম স্টার্টআপ ইউনিকর্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল আর্থিক সেবা নগদ নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। একইসঙ্গে ডাক বিভাগের নীতিগত সমর্থন নিয়ে গত চার বছরে তারা সরকারকে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা আয়ের ভাগ দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর নবনির্বাচিত পরিচালক বোর্ডের অভিষেক অনুষ্ঠানে সোমবার (২০ মে) এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, নগদ আমাদের ডাক বিভাগের একটি অংশীদার। ডাক বিভাগের ইনফাস্ট্রাকচার, ওয়ার্ক ফোর্স, পলিসি সাপোর্ট নিয়ে তারা নিজেরা যেমন মাত্র তিন বছরের মধ্যে একটা সফল স্টার্টআপ ইউনিকর্ন হয়েছে, অন্যদিকে সরকারকে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা রেভিনিউ শেয়ার করেছে।

এর আগে অপর এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ নিয়ে উৎসাহিত করার কারণে ডাক বিভাগের সঙ্গে নগদের অংশীদারত্বের ভিত্তিতে গ্রাহকদের যেমন সুলভ মূল্যে সেবা দেওয়া গেছে, ক্যাশলেস সমাজ ও ক্যাশলেস অর্থনীতি গড়ার দিকে এগিয়ে যাওয়া গেছে; অপরদিকে ডাক বিভাগেরও আয় হচ্ছে।

সর্বশেষ বছরেও নগদ অংশীদারত্বের চুক্তি অনুসারে ডাক বিভাগকে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার ওপরে আয় শেয়ার করে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

নগদের উত্থানে ডাক বিভাগ ও ব্যক্তি জুনাইদ আহমেদ পলকের ভূমিকার উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুক বলেন, ডাক বিভাগ শুরু থেকে আমাদের সমর্থন দিয়ে আসছে। আর পলক ভাই আমাদের জন্মলগ্ন থেকে আমাদের পাশে আছেন। সবসময় কোনো সমস্যায় আমরা ওনার সাহায্য চাইলে, উনি সেটা দ্রুত সমাধান করেন।

নগদ ডিজিটাল ব্যাংক চালু হলে বেসিসের সকল সদস্যদের জন্য বিশেষ ঋণ সুবিধার কথা উল্লেখ করে নগদের প্রধান নির্বাহী তানভীর এ মিশুক বলেন, বেসিস আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি জগতের নীতি নির্ধারণে ভ‚মিকা রাখে। আমি তাদের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি অনুরোধ করব সময়ের প্রয়োজন অনুযায়ী তারা যেন পলিসি আপডেটে ভ‚মিকা রাখেন। আমিও কথা দিচ্ছি, বেসিসের সব উদ্যোক্তার জন্য জামানতবিহীন ঋণের ব্যবস্থা করবে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক।

ডাক বিভাগের সঙ্গে নগদের চুক্তি অনুসারে, আয়ের ৫১ শতাংশ পায় ডাক বিভাগ। সে অনুসারে ২০২০ সালে নগদ ডাক বিভাগকে দিয়েছিল এক কোটি ১২ লাখ টাকা। নগদের সেবার যতো প্রসার হচ্ছে, সেবার কলেবর এবং গ্রাহক যত বাড়ছে ততোই আয় যোগ হচ্ছে ডাক বিভাগের ঘরেও। ২০২১ সালে নগদের কাছ থেকে ডাক বিভাগ পেয়েছে তিন কোটি ৩২ লাখ টাকা। ২০২২ সালে ৪ কোটি ৫০ লাখ এবং সর্বশেষ ২০২৩ সালের আয় থেকে ডাক বিভাগ পেয়েছে ৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় নগদের। আর প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেই ২০২৩ সালে দেশের দ্রুততম স্টার্টআপ কোম্পানি হিসেবে স্বীকৃতি পায় নগদ।

সোমবার বেসিসের অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম এবং বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।

;