মঞ্চ, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রের গুণী অভিনেত্রী সুষমা সরকার। বেছে বেছে ভালো গল্প ও চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি অভিনয় শুরু করেন মেধাবী নির্মাতা তুহিন হোসেনের পরিচালনায় মাছরাঙা টেলিভিশনের ধারাবাহিক নাটক ‘ক্যাম্পাস’-এ। এরইমধ্যে ধারাবাহিকটি সময়ের অন্যতম আলোচিত নাটকের তকমা পেয়েছে।
আগামী ১৩ মে নাটকটি ১০০ পর্ব অতিক্রম করবে। দর্শকের চাহিদার কথা মাথায় রেখে কাস্টিং ও গল্পে আসছে নতুন নতুন চমক। ১০০ পর্বের পর থেকে গল্পের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে যুক্ত হবে সালহা খানম নাদিয়া, সাজু খাদেমসহ আরো অনেকে।
নাটকটি ১০০ পর্ব পর্যন্ত পৌঁছানোর আনন্দ উদযাপনের জন্য আজ (১১ মে) রাতে নাটকের অভিনেতা, অভিনেত্রী ও কলাকুশলীদের নিয়ে এক আড্ডার আয়োজন করা হয়েছে।
নির্মাতা তুহিন হোসেন জানান, ‘নাটকটি দর্শকমহলে দারুন সাড়া ফেলেছে। গত বছর ১৭ ডিসেম্বর নাটকটি সম্প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকে শোবিজসহ সর্বমহলের দর্শকের কাছে নাটকটি আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে।’
পরিচালকের ভাষ্যমতে, ক্যাম্পাসের গল্পটি সর্বশ্রেনীর দর্শককে ভাবাবে। আর সে কারণেই এই গ্রহনযোগ্যতা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।
সুষমা সরকার বলেন, ‘আমি ধারাবাহিকে অভিনয় করতে গেলে খুব বাচ-বিচার করি। কারণ ধারাবাহিকে অভিনয় করলে সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিন পর্দায় উপস্থিত থাকতে হয়। তা দর্শকের চোখে পড়েই যায় কোন না কোন সময়। কাজটি যদি ভালো না হয় তাহলে সুনাম নষ্ট হওয়ার ভয়ও তাই বেশি। তাছাড়া আজকাল ধারাবাহিক নাটকের ধারাবাহিকতা থাকে না। সেদিক থেকে ‘ক্যাম্পাস’-এ কাজ করাটা আমার জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত। নির্মাতা খুব সুন্দরভাবে গল্পটি টেনে নিয়ে যাচ্ছেন।’
এ ধারাবাহিকে সুষমার চরিত্রটিও বেশ মজার। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আবেদনময়ী শিক্ষিকার ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে। খানিকটা বলিউডের ‘ম্যায় হু না’ সিনেমার সুস্মিতা সেনের চরিত্রের মতো। শিক্ষকরা তো বটেই, ছাত্ররাও তার প্রেমে পাগল। ছাত্রের ভূমিকায় পাভেল আর শিক্ষিকার ভূমিকায় সুষমার রসায়ন পছন্দ করেছে দর্শক।
নাটকটিতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, চাষী আলম, আহসান হাবিব নাসিম, মিহি আহসান, শিবলী নোমান, নাইমা আলম মাহা, ফরহাদ বাবু ও আরো অনেকে। নাটকটি চিত্রায়িত হয়েছে রাজাশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী ও ঢাকার বিভিন্ন নয়নাভিরাম স্থানে। নাটকটি রচনা করেছেন আওরঙ্গজেব।
সোহেল আরমানের সিনেমায় ইরফান সাজ্জাদ, আইশা ও সোহেল মন্ডল
বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বিনোদন
সোহেল আরমান প্রায় তিন দশক ধরে শোবিজে কাজ করছেন। একাধারে তিনি নাট্যকার, পরিচালক, গীতিকার ও অভিনেতা। ২০১৫ সালে দেশ সেরা নায়ক শাকিব খান ও আফসানা আরা বিন্দুকে জুটি করে নির্মাণ করেন ক্যারিয়ারের প্রথম চলচ্চিত্র ‘এই তো প্রেম’। মুক্তিযুদ্ধের গল্পে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্রটি সেসময় দর্শকমহলে বেশ সাড়া ফেলে। সিনেমাটির ‘হৃদয়ে আমার বাংলাদেশ’ ও ‘আমি তোমার মনের ভিতর’ শিরোনামের গান দুটি আজও মানুষের মুখে মুখে। দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘ভ্রমর’র বাকি থাকা ৪০ শতাংশ কাজ অচিরেই শেষ করতে চান এই নির্মাতা।
মাঝে বড় পর্দায় নির্মাণে বিরতি থাকলেও শিগগিরই ক্যারিয়ারের তৃতীয় চলচ্চিত্রের নির্মাণ কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন সোহেল আরমান। সিনেমার নাম ‘সংবাদ’। এতে অভিনয় করবেন এ সময়ের দর্শকপ্রিয় তিন অভিনয়শিল্পী ইরফান সাজ্জাদ, আইশা খান ও সোহেল মন্ডল। আগামী সপ্তাহে সিনেমাটির মহরতের মাধ্যমে বিস্তারিত জানাবেন ছবি সংশ্লিষ্টরা।
বড় পর্দায় বিরতি কেন জানতে চাইলে ‘এই তো প্রেম’খ্যাত নির্মাতা বলেন, ‘আমি কখনো সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তা করে কাজ করি না। প্রয়োজনে কাজ কম করব তবে, দর্শক মনে গেঁথে যাবে এমন কিছু করার চেষ্টা থাকে সবসময়। আশা করছি, দর্শক দারুণ কিছু পেতে যাচ্ছেন।’
সিনেমার গল্প প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গল্পটা অনেক পুরনো, ১৮৭২ সালের। সে সময়ের জমিদার বাড়ির একটি হারানো গল্পে এটি নির্মিত হবে। তবে প্রেমের নয়, একটা গ্রামের গল্প। জমিদার বাড়ির চুরি যাওয়া গল্প যেটা পেয়েছি এক সাংবাদিকের মাধ্যমে। আপাতত এটুকুই। বাকিটুকু খুব শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করে জানাব।’
ইরফান সাজ্জাদ বলেন, ‘অনেক দিন পর নতুন সিনেমায় যুক্ত হয়েছি। একেবারে নতুন একটি চরিত্রে দেখা যাবে আমাকে। জমিদারদের শাসন ও শোষণ তুলে ধরা হলেও এ সময়ের দর্শকদের কথা চিন্তা করে নির্মাণ করা হবে সিনেমাটি। গল্পটি আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে। চ্যালেঞ্জিং একটি চরিত্র। আশা করছি, সবার পছন্দ হবে।’
আইশা খান বলেন, ‘আমি খুবই এক্সাইটেড সোহেল আরমান ভাইয়ের নির্দেশনায় কাজ করব। কারণ তিনি এরইমধ্যে নির্মাতা হিসেবে নিজেকে চিনিয়েছেন। আশা করি, তার নির্মাণের মধ্যে দিয়ে দর্শক ভালো কিছু পেতে যাচ্ছে। আর আমার চরিত্রে চমক আছে, যা সিনেমাটি মুক্তি পেলে দর্শক দেখতে পারবে।’
সোহেল মন্ডল বলেন, ‘এটি একটি সম্পর্কের গল্প। এর আগে এ ধরনের চরিত্রে কাজ করিনি। সোহেল আরমান ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। এই মুহূর্তে চরিত্র নিয়ে কিছু বলা যাবে না। এটা দর্শকদের জন্য চমক থাকবে।’
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রায় পাঁচ শতাধিকেরও বেশি নাটক নির্মাণ করেছেন সোহেল আরমান। ভয়েস টুডের ব্যানারে নির্মিতব্য সিনেমাটির গল্প লেখার পাশাপাশি প্রযোজনা করছেন এন এ খোকন। সিনেমাটির চিত্রনাট্য করেছেন সোহেল আরমান নিজেই। আগামী ১ জুন শুরু হয়ে ১৩ জুন পর্যন্ত প্রথম লটের শুটিং চলবে বলে জানান নির্মাতা। একই মাসের ২১ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত একটানা কাজ করে শেষ হবে সিনেমার পুরো দৃশ্য ধারণ।
‘তুফান’র টিজার প্রকাশ করে রীতিমতো চমক লাগিয়ে দিয়েছেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান। দেড় মিনিটের সেই ঝলক মাত্র এক দিনেই কোটি ভিউয়ের রেকর্ড গড়েছিল। দর্শক-সমালোচক সকলে নির্বিবাদে বলছিলেন, এমন বিধ্বংসী অবতারে ঢালিউড নবাবকে আগে দেখা যায়নি।
উচ্ছ্বাস নিয়ে ‘তুফান’র টিজার শেয়ার করেছেন সংশ্লিষ্ট সকলেই। কেবল একজন ছিলেন নির্বিকার। তিনি ছবির নায়িকা মিমি চক্রবর্তী। তার নীরবতা দেখে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, নায়িকা কি টিমের ওপর অভিমান করেছেন?
অনেকের ধারণা, ‘তুফান’র প্রথম পোস্টারে কেবল শাকিব খানকে দেখানো হয়েছে। এরপর প্রথম টিজারেও নায়িকাদের রাখা হয়েছে বঞ্চিত, আড়ালে। সে কারণেই হয়ত অভিমান করেছেন মিমি। যদিও আরেক নায়িকা মাসুমা রহমান নাবিলা পেশাদার ভূমিকাই পালন করছেন শুরু থেকে। অবশেষে গত ৯ মে মিমি ‘তুফান’র টিজার শেয়ার করেন নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে।
শেষমেশ সামনে এলেন ‘তুফান’-এর মিমি। আজ (১১ মে) সকালে উন্মুক্ত করা পোস্টারে দেখা যায়, সাদা শার্ট আর কালো ব্লেজারে শাকিব খান। তার লম্বা চুল, মুখভর্তি ছোট দাড়ি, মলিন চাহনি। অন্যদিকে তার বুকে হাত রেখে প্রেমিকার ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে মিমি; পরনে মেরুন ঝলমলে টপ। পোস্টারের ক্যাপশনে মিমি লিখেছেন, ‘বড় পর্দায় আসছে তুফান। এই নিন অফিসিয়াল তুফানি পোস্টার।’
অন্যদিকে একই পোস্টার শেয়ার দিয়ে শাকিব খান লিখেছেন, “বড় পর্দায় ‘তুফান’ আনতে চলেছে এই জুটি!”
প্রকাশের পর থেকে দ্বৈত পোস্টারটি সাড়াও পাচ্ছে বেশ। মাত্র এক ঘণ্টায় শাকিব-মিমির ফেসবুক পেজ মিলিয়ে এর রিঅ্যাকশন সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫০ হাজার! অর্থাৎ দর্শকের মাঝে ‘তুফান’র ঝড় অব্যাহত থাকছে নতুন এই পোস্টারেও।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় বড় বাজেটে নির্মিত হচ্ছে ‘তুফান’। এরইমধ্যে ছবির সিংহভাগ শুটিং শেষ হয়ে গেছে বলে জানালেন নির্মাতা রাফী। ছবিটি প্রযোজনা করছে ঢাকার আলফা আই, চরকি ও কলকাতার এসভিএফ।
আত্মপ্রকাশের অল্প সময়ের মধ্যেই স্বকীয় বৈশিষ্ট্য দিয়ে পরিচিতি গড়ে তুলতে সক্ষম হয় তরুণ প্রজন্মের ব্যান্ড ‘অড সিগনেচার’। বিশেষ করে ব্যান্ডটির গায়ক ও গিটারিস্ট আহসান তানভীর পিয়ালের কণ্ঠে ‘আমার দেহখান’ গানটি বিশেষ শ্রোতাপ্রিয়তা অর্জন করে। কিন্তু এই উঠতি সময়েই ব্যান্ডটি খেলো বিশাল ধাক্কা। সড়ক দুর্ঘটনার কবলে গোটা ব্যান্ডের সদস্যরা। নিহত হয়েছেন ভোকালিস্ট পিয়াল।
খবরটি ব্যান্ডের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, “সিলেট যাওয়ার পথে নরসিংদী পাচদোনা ড্রিম হলিডে পার্কের সামনে ‘অড সিগনেচার’র গাড়ি মারাত্মক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। এতে ব্যান্ডের সকল সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হয়। ড্রাইভার সালাম আর ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য আহাসান তানভীর পিয়াল এই দুর্ঘটনায় নিহত হন। বাকিদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।”
জানা গেছে, শনিবার (১১ মে) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ‘অড সিগনেচার’র মাইক্রোবাসের সঙ্গে হানিফ পরিবহণের একটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান পিয়াল (২৩) ও সালাম (৪৩)। নরসিংদী ইটাখোলা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস হোসেনও বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। মাইক্রোবাসে থাকা ‘অড সিগনেচার’র বাকি তিন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। তারা এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে দুর্ঘটনা ও পিয়ালের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশের মিউজিক আঙিনায়। ভক্ত-শ্রোতা থেকে শুরু করে শিল্পীরাও শোকে স্তব্ধ। ‘শিরোনামহীন’র ভোকাল শেখ ইশতিয়াক বলেছেন, ‘কোনোভাবেই মানতে পারছি না!’।
২০১৭ সালে আত্মপ্রকাশ করেছিল ‘অড সিগনেচার’। অল্প সময়ের মধ্যেই তরুণ প্রজন্মের কাছে ব্যান্ডটি গ্রহণযোগ্যতা পায়। তাদের ‘আমার দেহখান’ গানটি অন্তর্জালে বিপুল জনপ্রিয়। এছাড়া ‘প্রস্তাব’, ‘দুঃস্বপ্ন’, ‘মন্দ’ শিরোনামের গানগুলোও সাড়া পেয়েছে।
প্রসঙ্গক্রমে আরেকটি ঘটনা মনে করিয়ে দেওয়া। ২০০৫ সালের ২০ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছিল সেই সময়ের তুমুল জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘ব্ল্যাক’। পথেই সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন তাহসান-জন-জাহানেরা। এতে তাদের সতীর্থ সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার ইমরান আহমেদ চৌধুরী মুবিন মারা যান এবং গুরুতর আহত হন বেজ গিটারিস্ট মিরাজ ও ড্রামার টনি। সেই ঘটনার পরই মূলত ‘ব্ল্যাক’র ছন্দপতন হয়। সদস্যরা দলছুট হয়ে একক শিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
দীর্ঘ দুই দশক পর শনিবার (১০ মে) রাতে ফের ‘ব্ল্যাক’র চিরচেনা সদস্যরা একত্রে মঞ্চে উঠেছেন, পারফর্ম করেছেন। সেই রাতেই কিনা আরেকটি ব্যান্ড দুর্ঘটনার কবলে, বাংলার পথে!