শান্তির খোঁজে



সাজিদুর রহমান সাজিদ, অতিথি লেখক, ইসলাম
ইসলাম অর্থ শান্তি, ইসলাম মানলে উভয় জাহানে মিলবে শান্তি ও মুক্তি

ইসলাম অর্থ শান্তি, ইসলাম মানলে উভয় জাহানে মিলবে শান্তি ও মুক্তি

  • Font increase
  • Font Decrease

সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ স্বীয় মেহেরবানিতে আমাদেরকে মানব সম্প্রদায়ের মধ্যে মুসলমান হিসেবে জন্ম দান করেছেন। ধর্মসম্প্রদায়ের মধ্যে মুসলমান শ্রেষ্ঠ জাতি এবং ইসলাম আল্লাহর মনোনীত একমাত্র ধর্ম। ইসলাম মানলেই ইহকালে শান্তি এবং পরকালে মুক্তি। যারা ইসলাম মানে না, পরকালে তো শান্তি নেই-ই, ইহকালেও শান্তি নেই।

দুনিয়াতে কাফের-মুশরিকদের আরাম-আয়েশে দিনাতিপাত করতে দেখা যায়, এটা আসলে শান্তি নয়। অশান্তির দাবানল তাদের ভেতরে দাউ দাউ করে জ্বলছে, এটা দেখা যায় না। তাদের বিত্ত-সম্পদ আছে। গাড়ি-বাড়ি আছে। প্রভাব-প্রতিপত্তি আছে। ক্ষমতা-রাজত্ব আছে। আরাম-আয়েশের সবরকম উপকরণ আছে। এগুলোকে কাফের-মুশরিকরা যেভাবে শান্তি মনে করে, কিছু দুনিয়াদার মুসলমানও তাই মনে করে। আর কাফেরদের মত দুনিয়াদার মুসলমানও এর পেছনে প্রাণপাত করে জীবনটা বিলীন করে দেয়। তারা বুঝতে পারে না, এগুলো শান্তি নয়, শান্তির উপকরণ মাত্র। উপকরণ কারও সংগ্রহে থাকলে তা দ্বারা শান্তি লাভ করা অনিবার্য নয়। উপকরণ দ্বারা শান্তি অর্জিত হতে পারে আবার নাও হতে পারে। আমরা দেখি, কেউ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খায়, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে আয়েশি উপকরণের মধ্যে বাস করে। তারপরও সে জটিল রোগে ভোগে। রাতে ওষুধ খেয়েও ঘুম হয় না। টেনশন অশান্তি আর পেরেশানি দূর হয় না। স্ত্রীর কাছে শান্তি পায় না। ছেলে-মেয়েদের কাছে শান্তি পায় না। লোকেরা সম্ভ্রমের নজরে দেখে না। এটা কি কোনো শান্তির জীবন হলো? গোটা দুনিয়ার আসবাব-উপকরণ আর ধন-দৌলত দিয়ে তার কী হবে?

আসল কথা হলো, তাদের কাছে মূল জিনিস অর্থাৎ ইসলাম নেই। ইসলাম অর্থ শান্তি। ইসলাম মানলে উভয় জাহানে মিলে শান্তি ও মুক্তি। আমরা শান্তির ধর্মের অনুসারী। আমরা মুসলমান। কিন্তু সাম্প্রতিককালে আমরা মুসলমানদের অশান্তির মধ্যে জীবন যাপন করতে দেখি। বিপদ-মসিবত ও নানা সঙ্কটে পেরেশান ও ব্যতিব্যস্ত দেখি। দেখি শৌর্য-বীর্যহীন, প্রভাব-প্রতিপত্তিহীন, লাঞ্ছিত, বঞ্চিত অপমানিত জাতি হিসেবে। কিন্তু কেন? এর কারণ কী?

এককালে মুসলমানরা প্রভাব-প্রতিপত্তিশালী ছিল। প্রায় পুরো পৃথিবীর শাসক ছিল। কুফরিশক্তি তাদের ভয়ে থরথর করে কাঁপত। তাদের রাজ্যে শান্তি ছিল। ইনসাফ ছিল। পরস্পরে মায়া-মহব্বত ছিল। সাম্যের পরিবেশ সর্বত্র বিরাজমান ছিল। কিন্তু আজ এসব তাদের থেকে সরে গিয়ে ঠাঁই নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। আজ মুসলমানরা নিঃস্ব, রিক্ত। অপাংক্তেয়, উপেক্ষিত। কিন্তু কেন?

আসুন! আমরা এর আসল কারণ খোঁজার চেষ্টা করি আল্লামা ইকবালের ভাষায়। তিনি বলেন, ‘মুসলমানরা পৃথিবীতে একদিন সম্ভ্রান্ত ও সম্মানী হয়েছিল কোরআনকে বুকে আঁকড়ে ধরে। কোরআন আনীত পবিত্র ধর্ম ইসলামের ওপর আমল করে। কিন্তু আজ তারা ধিকৃত উপেক্ষিত লাঞ্ছিত অপমানিত হচ্ছে- কোরআন পরিত্যাগের কারণে। কোরআনে কারিমের ধর্ম ইসলামকে ব্যবহারিক জীবন থেকে বাদ দেওয়ার কারণে।’

আল্লামা ইকবালের মূল্যায়ন শতভাগ সঠিক। আমাদের সম্পর্ক কি কোরআনে কারিমের সঙ্গে আছে? কোরআনের ধর্ম ইসলামের সঙ্গে আছে? আমাদের সন্তানাদিকে সব শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করি; কিন্তু কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা করি না। নামাজ-রোজা, ইবাদত-বন্দেগি শিক্ষা দেই না। পাক-নাপাক, হালাল-হারাম শিক্ষা দেই না। পর্দা-পুশিদা শিক্ষা দেই না। ইসলামি কালচার ও সংস্কৃতি শিক্ষা দেই না। তাহলে ইসলামের ওপর আমল করলাম কিভাবে? ইসলামকে মানলাম কিভাবে? এই যে পরবর্তী প্রজন্ম এভাবে বেড়ে ওঠছে- দেখলে চিনবার কোনো উপায় থাকে না সে মুসলমান না বিধর্মী। নামেও চেনা যায় না সে কোন্ ধর্মের লোক। এজন্য দায়ী কারা? ইসলামের শান্তির পথ পরিত্যাগ করলে ভাগ্যে আর কী জুটবে অশান্তি ছাড়া?

এজন্য দায়ী আমি-আপনি-আমরা সবাই। কাল কিয়ামতে আল্লাহর সামনে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। দায়িত্ব এড়ানোর কোনো চেষ্টা সফল হবে না। আমাদের সন্তানেরা আল্লাহর দরবারে আমাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করবে। আজ গান-বাজনা হয়। মেলা কুস্তিখেলা ও ঘোড়দৌড়ের নামে মদ-জুয়ার আসর বসে। আমরা সমাজের বড়রা এর তত্ত্বাবধান করি, আশ্রয় দেই, সাহায্য-সহযোগিতা করি। পক্ষান্তরে ইসলামের কাজে, ভালো কাজে, জনসেবায়, মাদরাসা-মসজিদের কাজে আমাদের মুষ্ঠি খোলে না। উপরন্তু বিরূপ সমালোচনা করি। তাহলে ভালো ও কল্যাণকর জিনিস, নীতি-নৈতিকতা, ইসলামি মূল্যবোধ ও সুস্থ পরিশীলিত সাংস্কৃতিক আবহ সমাজে গড়ে ওঠবে কিভাবে? নতুন প্রজন্মই বা কী শিখবে? আর যা শিখবে, তাদের সফর কোন দিকে হবে? তাদের এ উচ্ছন্নে যাওয়া- এ বিপথগামিতার জন্য আমরাই দায়ী। কোনোভাবেই এ দায়ভার এড়িয়ে যেতে পারব না। আল্লাহর দরবারে দেবার মত কোনো জবাব থাকবে না। বাঁচব কিভাবে- যে কোনোভাবেই বেঁচে থাকা যায়। কিন্তু মরব কিভাবে, মরণের পর কী হবে- এটাই আসল চিন্তার বিষয়।

আসুন আমরা চিন্তা করি। ইসলামসম্মত জীবন নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করি। আখেরাতে জবাবদিহিতার ভয় হৃদয়ে সঞ্চার করি। একই সঙ্গে সন্তান-সন্ততি, পরিবার-পরিজন ও সমাজ-সংসারকে নিয়ে ইসলাম শেখার জন্য তৎপর হই। ইসলামের ওপর মজবুতির সঙ্গে আমল করি। পরিবার ও ঘর-সংসারে ইসলামের হাওয়া ও ভাবধারা চালু করি। সন্তানাদিকে প্রয়োজনীয় ধর্মীয় শিক্ষা দান করি। মানুষ বানানোর মেহনত করি। এভাবে সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হলে, ইনশাআল্লাহ সেই হারানো সুদিন আবারও ফিরে আসবে।

 

 

   

১২ হাজার ৬৪৯ হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৬৪৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ও সৌদি এয়ারলাইনসের ৩২টি ফ্লাইটে করে তারা সৌদি আরবে গেছেন।

হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ সম্পর্কিত পোর্টাল।

পোর্টালের তথ্যমতে, ৩২টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ৭টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

এর আগে, গত ৯ মে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৪১৫ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মাধ্যমেই চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শেষ হবে ১০ জুন।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;

১১ হাজার ১৬৭ হজযাত্রী ভিসার অপেক্ষায়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজযাত্রায় বাংলাদেশি হজযাত্রীরা, ছবি: সংগৃহীত

হজযাত্রায় বাংলাদেশি হজযাত্রীরা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের ভিসার জন্য আবেদনের শেষ হয়েছে ১১ মে (শনিবার)। তবে এখনও ১১ হাজার ১৬৭ জনের ভিসা হয়নি। সৌদি সরকার যদি সময় না বাড়ায় তবে এসব হজযাত্রীদের চলতি বছর হজে যাওয়া অনিশ্চয়তায় পড়বে।

হজ অফিসের সর্বশেষ তথ্য বলছে, রোববার (১২ মে) দুপুর পর্যন্ত মোট ভিসা পেয়েছেন ৭২ হাজার ১৩৮ জন। ২৫৯ জনের ভিসা প্রিন্টের অপেক্ষায় রয়েছে। সে হিসেবে এখনও ভিসা পাননি ১১ হাজার ১৬৭ জন।

জানা গেছে, যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভিসা পায়নি, তাদের জন্য নতুন করে ভিসার আবেদন করা হয়েছে। এখনও ভিসা অনলাইন সিস্টেম চালু আছে। বাকিদের ভিসা দুয়েক দিনের মধ্যে হয়ে যাবে।

ভিসার জন্য আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম জানান, সময় বাড়ানো হবে কি না তা রোববার বা সোমবারই জানা যাবে। তবে হজ ভিসা সিস্টেম চালু আছে এবং ভিসা ইস্যু চলমান আছে।

এদিকে তৃতীয় দফায় ভিসা আবেদনের সময় বাড়ানোর জন্য সৌদি সরকারকে চিঠি দিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।

এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু: আ: হামিদ জমাদ্দার জানান, হজযাত্রীদের ভিসা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। সব হজযাত্রীর ভিসা হওয়ার বিষয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা সৌদি সরকারের উমরা ও হজ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি, ভিসা আবেদনের সময় বাড়বে।

মু: আ: হামিদ জমাদ্দার জানান, বেশিরভাগ হজযাত্রী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করতে যায়। এজেন্সিগুলো বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও তারা সৌদিতে বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত তা মন্ত্রণালয়ের ওপর এসে বর্তায়।

এর আগে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ভিসা আবেদন সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরপর তা ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তারপরও প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় ভিসা আবেদনের সময় বাড়িয়ে ১১ মে করা হয়।

১১ মের মধ্যে ভিসা কার্যক্রম শেষ করতে না পারলে এর দায়ভার সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে নিতে হবে বলে আগেই সতর্ক করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তারপরও ভিসা আবেদনের সময় বাড়াতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও হজ এজেন্সিগুলো সৌদি আরবের মক্কা মদিনায় বাড়ি ভাড়া করতে গাফিলতি করেছে। কম রেটে বাড়ি ভাড়া করার জন্য শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে।

এছাড়া এজেন্সিগুলোর বাড়ি ভাড়ার জন্য নির্ধারিত প্রতিনিধি মোনাজ্জেমদের ভিসা আটকে দেয় সৌদি সরকার। সেই ভিসার জট খুলতে দেরি হওয়ায় অনেক ইচ্ছা থাকার পরও বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি। এতে হজযাত্রীদের ভিসা আবেদন করতে পারেনি এজেন্সিগুলো। কারণ হজ ভিসা আবেদনের পূবশর্ত হলো, সৌদিতে হজযাত্রীর বিপরীতে বাড়ি বাড়ার চুক্তি থাকতে হবে। বাড়ি ভাড়া না করলে ভিসার জন্য আবেদন করা যায় না।

এদিকে হজ অফিস সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ২১২ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৫৬২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে ৮০ হাজার ৬৯৫ জনসহ মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট ৯ মে শুরু হয়। ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;

অমুসলিমরাও হালাল খাদ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
এফবিসিসিআইয়ের মতিঝিল কার্যালয়ে হালাল ফুড বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা, ছবি: সংগৃহীত

এফবিসিসিআইয়ের মতিঝিল কার্যালয়ে হালাল ফুড বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হালাল খাদ্যের বৈশ্বিক বাজারে বড় সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। তবে সেজন্য খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণের প্রতিটি ধাপে কমপ্লায়েন্স ইকো-সিস্টেম গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে, বিশ্বব্যাপী হালাল খাদ্যের বাজারে নিজেদের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে ইকো-সিস্টেম উন্নয়নের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রোববার (১২ মে) এফবিসিসিআইয়ের মতিঝিল কার্যালয়ে হালাল ফুড বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি সভায় এ বিষয় উঠে আসে। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন ইউসুফ। কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফবিসিসিআইর পরিচালক মুনতাকিম আশরাফ টিটু।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, মানবস্বাস্থ্যের জন্য হালাল খাদ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি অনুধাবন করে মুসলিমদের পাশাপাশি সারা বিশ্বে অমুসলিমরাও হালাল খাদ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু দেশ হালাল খাদ্যের বৈশ্বিক বাজারে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করেছে। এই বাজারে বাংলাদেশেরও অপার সম্ভাবনা রয়েছে। খাদ্যসহ হালাল শিল্পের উন্নয়নে দেশে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা হওয়া জরুরি বলেন জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

বিএসটিআই এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই দুটি প্রতিষ্ঠান দেশে বর্তমানে হালাল সার্টিফিকেট প্রদান করছে। সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া সহজ করা, গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে হালাল সনদ প্রদানের জন্য সুনির্দিষ্ট একটি কর্তৃপক্ষ গড়ে তোলার ওপর জোর দেন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী। এ সময় হালাল শিল্পের উন্নয়নে কমিটির সদস্যদের সুনির্দিষ্ট পরামর্শ লিখিত আকারে জমা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এফবিসিসিআই সেসব পরামর্শ বিশ্লেষণ করে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে উপস্থাপন ও তা বাস্তবায়নে কাজ করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, হালাল ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সবার আগে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে নিরাপদ এবং গুণগত খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য উৎপাদনকারী, বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান, সরকারসহ এই খাতের বড় অংশীজনদের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। এ সময় বিএসটিআই এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে হালাল সার্টিফিকেট প্রাপ্তির প্রক্রিয়া সহজ করাসহ সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং হালাল শিল্পের জন্য নীতি সুবিধা আহ্বান করেন কমিটির সদস্যরা। পাশাপাশি হালাল শিল্পের জন্য দক্ষ জনবল গড়ে তোলা, অর্থায়ন সুবিধা, গবেষণা ও উদ্ভাবন এবং সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতার গুরুত্ব তুলে ধরেন তারা।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন-অর-রশিদ, মো. নিয়াজ আলী চিশতি, সৈয়দ মো. বখতিয়ার, এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর, স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রমুখ।

;

৭৯ বছর পর জুমার নামাজ হলো যে মসজিদে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কারিয়া মসজিদে ৭৯ বছর পর জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হলো, ছবি: সংগৃহীত

কারিয়া মসজিদে ৭৯ বছর পর জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হলো, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ ৭৯ বছর পর পবিত্র জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হলো তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত ঐতিহাসিক কারিয়া মসজিদে। গত শুক্রবার (১৯ মে) মসজিদটিতে অনুষ্ঠিত জুমার নামাজে অসংখ্য মুসল্লি অংশ নেন। এর আগে ৬ মে পুনঃনির্মাণের পর মসজিদটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান।

২০২০ সালের আগস্টে দীর্ঘ দিন জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত ঐতিহাসিক মসজিদটিকে পুরনো রূপে নিয়ে আসার ঘোষণা দেন এরদোগান। এরপর শুরু হয় এর পুনঃনির্মাণের কাজ। অবশেষে চার বছর পর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ায় ফের এটি মুসল্লিদের জন্য খুলে দেওয়া হলো।

চতুর্থ শতাব্দীর শুরুর দিকে কারিয়া স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয় একটি চার্চ হিসেবে। পরে উসমানিয়া শাসক সুলতান দ্বিতীয় বায়জিদের শাসনামলে প্রধান উজির আতিক আলি পাশার নির্দেশে এটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়।

এরপর চার শতাব্দীরও অধিক সময় এটি মসজিদ হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। কিন্তু উসমানিয়া খেলাফত বিলুপ্তির পর আয়া সোফিয়ার মতো এটিকেও ১৯৪৮ সালে জাদুঘর বানিয়ে ফেলে তৎকালীন ইসলামবিরোধী তুর্কি সরকার।

দীর্ঘ দিন পর গত শুক্রবার মসজিদটিতে জুমার নামাজ আদায় করতে পেরে বেশ উল্লসিত মুসল্লিরা। এদিন তারা তাকবির ধ্বনিতে মসজিদ ও এর প্রাঙ্গণ আন্দোলিত করে তোলেন। মসজিদের অভ্যন্তর, সামনের চত্বর ও আশপাশের সড়কগুলোও মুসল্লিদের সমাগমে মুখরিত হয়ে ওঠে।

শুধু এই মসজিদ নয়, ক্ষমতায় আসার পর থেকে এরদোগান বন্ধ থাকা ও জাদুঘরে রূপান্তর করা অনেক মসজিদ পুনরায় চালু করেন। এর মধ্যে আয়া সোফিয়া অন্যতম। এরদোগানের উপস্থিতিতে সেখানে ৮৬ বছর পর নামাজ শুরু হয়।

পুরনো মসজিদ উদ্ধার ছাড়া তিন বেশ কিছু নতুন মসজিদ নির্মাণ করেন। তুরস্কের তাশামালিজা মসজিদ এর অন্যতম। আয়তনগত দিক বিবেচনায় এশীয় ও ইউরোপ অঞ্চলে এটিকে বলা হচ্ছে- সর্ববৃহৎ মসজিদ। বিগত প্রায় এক শতাব্দীতে আধুনিক তুরস্ক প্রতিষ্ঠার পর এটিই তুরস্ক নির্মিত সর্ববৃহৎ মসজিদ।

;