আল আকসা রক্ষার লড়াই মুসলিম উম্মাহর



মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী, অতিথি লেখক, ইসলাম
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আল-আকসা মসজিদে জুমা আদায়ে বাধা পেয়ে রাস্তায় নামাজ পড়ছে মুসলমানরা

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আল-আকসা মসজিদে জুমা আদায়ে বাধা পেয়ে রাস্তায় নামাজ পড়ছে মুসলমানরা

  • Font increase
  • Font Decrease

গত সাত দশক ধরে শুধু ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্মম নিপীড়ন চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলন হামাস গাজা উপত্যকার নেতৃত্ব দিচ্ছে। সেখানে রয়েছে ইসলামিক জিহাদ নামের আরেকটি স্বাধীনতাকামী দল। তাদেরও লক্ষ্য, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র। গাজার মুসলমানদে এ দাবীকে নস্যাৎ করে, ইসরায়েল তাদের বসতি স্থাপনে অবৈধভাবে ফিলিস্তিনিদের জমি দখল করছে প্রতিনিয়ত, তাদের কার্যক্রমে বাধা দিলে ইসরায়েল উন্মাদের মতো নির্বিচার হামলা করে মুসলমানদে শহীদ করে এলাকার পর এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে।

সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো, এ বিরোধ থামানোর উদ্যোগ নেওয়ার পরিবর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা বিশ্ব বরাবরের মতোই ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে থাকে। যার পরিণাম ধ্বংস আর রক্তপাত। রক্তাক্ত মধ্যপ্রাচ্য।

দখলদার ইসরায়েল ১৯৪৮ সাল থেকে ফিলিস্তিনিদের ওপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। বিরামহীনভাবে চলছে হামলা-নির্যাতন। প্রতিদিনই কোনো না কোনো ফিলিস্তিনিকে ঘর থেকে বের করে তার ঘর বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারো ভিটেমাটি কারো বা ফসলের জমি কেড়ে নিচ্ছে। তবে এবারের বর্বরোচিত হামলা মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

ফিলিস্তিনের জাতীয় দুর্যোগের ইতিহাস সুদীর্ঘ। একসময় এটা ছিলো রোম সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশ। দশম শতকে আরব ভূগোলবিশারদরা একে বলতেন ফিলিস্তিন। তখন ফিলিস্তিন ছিলো- সিরিয়ার একটি প্রদেশ। পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত ফিলিস্তিন ছিলো- অটোম্যান সাম্রাজ্যের অন্তর্গত। মুসলমান, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের কাছে এটি ছিলো- পবিত্র স্থান। জেরুজালেম, হেবরন, বেথেলহেম ও নাজারেত ছিলো- ফিলিস্তিনের পবিত্র সব নগরী। অটোম্যান সাম্রাজ্যের শেষ সময়ে ফিলিস্তিনের জনসংখ্যা ছিলো ৬ লাখ ৫০ হাজার। তাদের ব্যাপক অংশ ছিলো আরব। এ আরবদের ১০ শতাংশ খ্রিস্টান, বাকিরা মুসলমান। তবে ৭৫ হাজার ইহুদিও ছিলো।

ফিলিস্তিনের আত্মপরিচয়ের উদ্ভব ঘটে দুটি প্রধান রাজনৈতিক ঘটনার ফলে। এর প্রথমটি হলো- এ অঞ্চলে ইউরোপের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক হস্তক্ষেপ। এর ফলে প্রধান প্রধান ইউরোপীয় শক্তি বিশেষ করে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় মধ্যপ্রাচ্য। ফিলিস্তিন লীগ অব নেশনসের ম্যান্ডেটে ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। পাশ্চাত্যের এ আগ্রাসনের ফলে এ অঞ্চলে আরব জাতীয়তাবাদ এবং নিখিল আরব জাতীয়তাবাদের উদ্ভব ঘটে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যে যে মানচিত্র রচিত হয়, সেই মানচিত্রই এই জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রথম সূত্র।

ফিলিস্তিনি জাতীয়তাবাদের বিকাশের পেছনে যে সাংস্কৃতিক কারণটি কাজ করেছে সেটি হল ইহুদিবাদী আন্দোলন। এ আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ শাসনের সহায়তায় ইহুদিদের জন্য একটি জাতীয় আবাসভূমি সৃষ্টি করা। ফিলিস্তিনে অটোম্যান সাম্রাজ্যের আমল থেকেই ক্ষুদ্র আকারে ইহুদি বসতি শুরু হয়েছিলো। কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের আবাসভূমি নীতির আশ্রয়ে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের অভিবাসন, বসতি স্থাপন এবং জমি দখল সহজতর হয়। ইহুদিবাদের লক্ষ্য হিসেবে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের আবাসভূমি স্থাপনের নীতি গ্রহণ করা হয়। ফলে আরব জনগণের আশা-আকাঙ্খা পদদলিত হয়। অভিবাসনের ফলে ফিলিস্তিনে ১৯২২ সালে ইহুদির সংখ্যা ১১ শতাংশ থেকে ১৯৪৪ সালে এসে ৩০ শতাংশে উন্নীত হয়। তখন ফিলিস্তিনের জনসংখ্যা ছিলো ১৭ লাখ ৩৯ হাজার ৬২৪। এসব কারণে ফিলিস্তিনে আরব জাতীয়তাবাদের অভ্যুদয় অনিবার্য হয়ে ওঠে।

১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে দুটি পৃথক ইহুদি ও আরব রাষ্ট্রে ভাগ করার চেষ্টা করে। কিন্তু আরবরা এ উদ্যোগের বিরোধিতা করে। এর ফলে ইহুদি ও আরবদের মধ্যে যুদ্ধের সূচনা হয়। ব্রিটিশরা ফিলিস্তিন থেকে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু ইহুদিরা গায়ের জোরে জাতিসংঘ নির্দেশিত এলাকার বাইরেও তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। ১৯৪৮-১৯৪৯-এর যুদ্ধে নবগঠিত ইসরায়েল রাষ্ট্র ফিলিস্তিন বাহিনী এবং প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলোর সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করে। রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিন মুছে যায়।

ইসরায়েলের বোমায় দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকা এভাবেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়

 

ইসরায়েল বিরাট এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করে। জর্দান পশ্চিম তীরের ওপর এবং মিসর গাজা অঞ্চলের ওপর দখল প্রতিষ্ঠা করে। ফিলিস্তিনের আরব জনগণের মধ্যে ৭ লাখ মানুষ যুদ্ধ থেকে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে। তাদের নিজ আবাসভূমিতে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এদের মধ্যে কেউ কেউ বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্তভাবে পশ্চিম তীর, গাজা এবং পার্শ্ববর্তী আরব দেশগুলোয়- বিশেষ করে লেবানন, সিরিয়া ও জর্দানে আশ্রয় গ্রহণ করে। খোদ ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ১৯৫০ সালে ১ লাখ ৬০ হাজার ফিলিস্তিনি থেকে গিয়েছিল।

১৯৬৭ সালে ছয় দিনের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর মসজিদুল আকসাসহ পুরো জেরুজালেম ইসরায়েল দখল করে নেয়। আন্তর্জাতিক আইনে অধিকৃত ভূমি হিসেবে বিবেচিত হলেও ইসরায়েল শহরটিকে একীভূত করে নেয় এবং অখণ্ড জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে। বিভিন্ন সময় শহরটিতে থাকা ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে ইসরায়েল ইহুদিদের শহরে আবাসনের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।

এরপর যুদ্ধ ও কূটনীতির মাধ্যমে ফিলিস্তিনিরা নিজস্ব অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। এর সামান্য সাফল্য হলো- গাজা ও পশ্চিম তীরে প্যালেস্টাইন স্টেট অথোরিটি প্রতিষ্ঠা। তাছাড়া মসজিদে আকসাকে মুসলমানদের পবিত্র স্থান হিসেবে ঘোষণা করেছে ইউনেস্কো। ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর পাস করা এক প্রস্তাবনায় বলা হয়, জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদের ওপর ইসরায়েলের কোনো অধিকার নেই, আল আকসা মুসলমানদের পবিত্র স্থান।

হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী একটি জাতিকে কীভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া যায়, তাদের গৃহহারা করা যায়, তাদের পরিচয় মুছে দেওয়ার জঘন্য চেষ্টা করা হয়, ফিলিস্তিন তার এক অন্ধকারাচ্ছন্ন দৃষ্টান্ত। ফিলিস্তিনিদের জীবন হারাতে হয়েছে নিজ দেশে এবং প্রবাসী হিসেবে অন্যদেশে। যেমন জর্দানের শাতিলা ক্যাম্পে তাদের রীতিমতো জবাই করা হয়েছে। যারা জবাই করেছে, তারাও আরব ও মুসলিম। একবিংশ শতাব্দীতে ইতিহাসের ট্রাজেডি যদি কোথাও থাকে তা আছে ফিলিস্তিনে।

ফিলিস্তিনিরা রক্ত দিচ্ছে। কোনো রক্তই বৃথা যায় না। আজ হোক কাল হোক, ফিলিস্তিনের বিজয় হবে- ইনশাআল্লাহ। সাম্প্রদায়িক ইহুদিবাদের মৃত্যু ঘটবেই। তবে ভুলে গেলে চলবে না মুসলমানদের প্রথম কেবলা মসজিদে আকসা রক্ষার এই সংগ্রাম শুধু ফিলিস্তিনিদের একার সংগ্রাম না, এই সংগ্রাম গোটা মুসলিম উম্মাহর সংগ্রাম।

লেখক : আলেম, প্রাবন্ধিক ও কলেজ শিক্ষক

   

অপরূপ প্রকৃতির মাঝে দৃষ্টিনন্দন এক মসজিদ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, শ্রীমঙ্গল, ছবি : সংগৃহীত

জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, শ্রীমঙ্গল, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সবুজ বনানী, পাহাড় আর চা বাগানের অপরূপ দৃশ্য মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলকে পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচয় করিয়েছে। পর্যটকদের আনাগোনা থাকে এখানে। শ্রীমঙ্গলে অনেকেই দেখতে আসনে পাহাড়ের মাঝে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ।

শ্রীমঙ্গলের গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টের বিপরীত পাশের রাস্তা দিয়ে সামনে দিকে গেলেই দেখা মিলবে মসজিদটির। জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদের প্রবেশদ্বার পেরিয়ে প্রথমে খাতায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এর পর সুযোগ মিলবে তা পরিদর্শনের।

শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ, নেই কোনো কোলাহল। দূর থেকে দেখা যায়, সবুজের মাঝে সিঁড়ির লাল আর সাদা রঙের মিশ্রণ। শতাধিক সিঁড়ি। এই সিঁড়ি বেয়েই আপনাকে ওপরে ওঠতে হবে। চারদিকে সবুজ পাহাড়ঘেরা নৈসর্গিক পরিবেশ। রয়েছে সারি সারি চা বাগান। গুনে গুনে ১৫০ সিঁড়ি পাড়ি দিয়ে তবেই পৌঁছতে হবে মসজিদে।

জান্নাতুল ফেরদৌস নামে পরিচিত মসজিদটির নাম ‘মসজিদুল আউলিয়া খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.)। ‘মসজিদটি নিয়ে মানুষের আকর্ষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে, এর স্থাপত্যশৈলী আর অবস্থান।

প্রায় ১৯ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হয় জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদটি। সমতল থেকে প্রায় ৭০-৮০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মসজিদটি। চারপাশে রয়েছে, নানা রকমের গাছগাছালি। আছে লেবু ও আনারস বাগান। সবুজের সমারোহ চমৎকার পরিবেশ তৈরি হয়েছে মসজিদ ঘিরে। চারদিকে ঝিঁঝি পোকার ডাক আর নাম না-জানা পাখিদের কিচিরমিচির এক অন্যরকম পরিবেশের তৈরি করেছে।

খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.) ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত এই মসজিদটিতে প্রায় ৮০০ লোক একসঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের সৌন্দর্যবর্ধনে এর চারপাশে লাগানো হয়েছে নানা জাতের ফুলগাছ। এর গঠনশৈলীও চমৎকার। তুর্কি স্থাপত্যের আদলে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক ঝাড়বাতি, যা আনা হয় সুদূর চীন থেকে।

মসজিদের সামনের অংশ

দর্শনীয় এই মসজিদটি নির্মাণ করেন খাজা টিপু সুলতান। টিপু সুলতান ছিলেন খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.)-এর সাহেবজাদা। এই খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.) আবার ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক সুফি-সাধক খাজা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরীর (রহ.) উত্তরসূরি।

মসজিদটির প্রাঙ্গণে আছে দুটি গেস্টহাউস এবং একটি চিকিৎসাকেন্দ্র। এই চিকিৎসাকেন্দ্রে সপ্তাহের ছয় দিন গরিব মানুষদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া এখানে আছে একটা হেলিপ্যাড। গেস্টহাউসটি মূলত ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের পরিবারের সদস্যদের বিশ্রামের জন্য ব্যবহৃত হয়।

মসজিদের পাশেই রাখা হয়েছে কবরস্থানের জায়গা। শ্রীমঙ্গলে আগত পর্যটকরা একবার হলেও এখানে এসে ঘুরে যায়। এ ছাড়া প্রতিবছর ২৪ নভেম্বর এ মসজিদ ঘিরে আয়োজন করা হয় বার্ষিক ওরস মাহফিলের।

এই সিঁড়ি বেয়েই আপনাকে ওপরে ওঠতে হবে

জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদটি দেখতে প্রথমে আপনাকে আসতে হবে শ্রীমঙ্গল শহরে। গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টের বিপরীত পাশের রাস্তা দিয়ে আসতে হয় এখানে। সিলেট শহর থেকে কিংবা গ্র্যান্ড সুলতানের সামনে থেকে সিএনজি বা ইজিবাইক রিজার্ভ করে যেতে পারেন। শহর থেকে যাওয়া-আসা ভাড়া প্রায় তিন থেকে চারশ টাকা। গ্র্যান্ড সুলতানের সামনে থেকে গেলে ভাড়া কিছু কম পড়বে। অটোরিকশা দিয়েও যেতে পারেন। চারপাশের মনোরম পরিবেশ দেখতে দেখতে পৌঁছতে পারবেন।

;

পরনিন্দার পাপ থেকে বাঁচতে যা করবেন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
যে উপস্থিত নেই, তাকে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই, ছবি : সংগৃহীত

যে উপস্থিত নেই, তাকে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘গিবত’ শব্দের আভিধানিক অর্থ পরনিন্দা করা, কুৎসা রটানো, পেছনে সমালোচনা করা, পরচর্চা করা, দোষারোপ করা, কারও অনুপস্থিতিতে তার দোষ অন্যের সামনে তুলে ধরা।

শরিয়তে গিবত হারাম ও কবিরা গোনাহ। হাদিসের বর্ণনা, ‘যারা অগ্র-পশ্চাতে অন্যের দোষ বলে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে ধ্বংসের দুঃসংবাদ।’ -সহিহ মুসলিম

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর তোমরা অন্যের দোষ খুঁজে বেড়াবে না।’ -সুরা হুজুরাত : ১২

‘দুর্ভোগ তাদের জন্য, যারা পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে।...অবশ্যই তারা হুতামাতে (জাহান্নামে) নিক্ষিপ্ত হবে। তুমি কি জানো হুতামা কী? তা আল্লাহর প্রজ্বলিত অগ্নি, যা হৃদয়কে গ্রাস করবে। নিশ্চয় বেষ্টন করে রাখবে, দীর্ঘায়িত স্তম্ভসমূহে।’ -সুরা হুমাজা : ১-৯

গিবত এমনই ভয়াবহ পাপ। এটা থেকে বেঁচে থাকা মুমিন-মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। গিবত থেকে বাঁচার কিছু উপায় হলো-

১. কারও বিষয়ে হুটহাট করে কিছু না বলা। ভেবে-চিন্তে কথা বলা। যতটুকু সম্ভব কম কথা বলাই ভালো, কারণ- চুপ থাকাও একটা ইবাদত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে; নচেৎ চুপ থাকে।’ -সহিহ বোখারি : ৬০১৮

২. যে উপস্থিত নেই, তাকে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। সুতরাং বন্ধু-বান্ধব কিংবা কাছের কোনো আত্মীয়ের অনুপস্থিতিতে তাদের নামে ভালো কথাও না বলা। কারণ ভালো কথা বলা ফাঁকে শয়তান আপনাকে দিয়ে কখন যে গিবত করিয়ে নেবে; সেটা আপনি টেরই পাবেন না।

৩. অতি প্রয়োজন ছাড়া লোকসমাগম এড়িয়ে চলা। কেননা যেখানে মানুষ বেশি থাকে সেখানে গিবতও বেশি হয়।

৪. আপনার কাছে কেউ গিবত করলে তাকে থামিয়ে দেবেন। সম্ভব হলে বুঝিয়ে বলবেন। কারণ গিবত করা ও গিবত শোনা উভয়টাই হারাম।

নিজেও যখন কথা বলতে বলতে গিবত করে ফেলবেন এবং খেয়াল হবে যে, আরে আমি তো গিবত করে ফেলেছি; সঙ্গে সঙ্গে থেমে যাবেন এবং তওবা করবেন।

৫. অমুক কেমন জানি পোশাক পরে, অমুকের রান্না ভালো না, অমুক মোটা, অমুক কালো, দেখতে একদম ভালো না ইত্যাদি- এ ধরনের কথাও গিবত। তাই এ জাতীয় কথা বা মন্তব্য থেকে বিরত থাকা।

৬. অমুক এই এই কাজগুলো ভালো করেনি। অমুকের এই-এই স্বভাব ভালো না। অমুকের নামে এই-এই বদনাম আছে। ওমুক আমার এই-এই ক্ষতি করছে। এগুলো বলার অর্থ হলো যে, মানুষের দোষ নিয়ে কথা বলা; যেটা গিবতের অন্তর্ভুক্ত।

৭. এর পরও যদি গিবত হয়ে যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আস্তাগফিরুল্লাহ অথবা দুই রাকাত নফল নামাজ পরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নেওয়া।

কাউকে নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা আমরা আল্লাহর কাছে বলা। পারলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া। মানুষের কাছে এগুলো নিয়ে আলোচনা করে উল্টো নিজের গোনাহ কামানো কোনো বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না। অন্যের দোষ ঢেকে রাখলে আল্লাহতায়ালাও এ কারণে আমার-আপনার দোষ ঢেকে রাখবেন- ইনশাআল্লাহ!

মনে রাখবেন, গিবত আমাদের নেক আমলগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। আল্লাহতায়ালা সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করুন। আমিন।

;

পথচারীদের ঠাণ্ডা শরবত দিচ্ছে মারকাজুল কোরআন পরিবার



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পথচারীদের ঠাণ্ডা শরবত দিচ্ছে মারকাজুল কোরআন পরিবার, ছবি : সংগৃহীত

পথচারীদের ঠাণ্ডা শরবত দিচ্ছে মারকাজুল কোরআন পরিবার, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলমান তীব্র দাবদাহে রাজধানীর পিপাসার্ত মানুষের মাঝে টানা চার দিন ধরে সুপেয় ঠাণ্ডা শরবত (লাল চিনি, বিট লবণ, লেবু এবং এসএমসির ম্যাংগো ও অরেঞ্জ ফ্লেবার মিশ্রিত) বিতরণ করছে মারকাজুল কোরআন শিক্ষা পরিবার।

রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যাণ্ড, মিরপুর বাংলা কলেজের সামনে এবং মিরপুর ১ ও ১০-এর বিভিন্ন পয়েণ্টে শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর পর ধারাবাহিকভাবে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিদিন ১ হাজার ৫ শ’ লিটার শরবত বিতরণ করা হচ্ছে।

মে দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিকে সামনে রেখে মারকাজুল কোরআন শিক্ষা পরিবার বুধবার (১ মে) মিরপুর ঈদগাঁহ ময়দান ও টিএসসির মোড়ে শরবত বিতরণ করবে।

পথচারীদের মাঝে ঠাণ্ডা শরবত বিতরণের বিষয়ে মারকাজুল কোরআন শিক্ষা পরিবারের সভাপতি ও মানবসেবায় সাড়া জাগানো প্রতিষ্ঠান তাকওয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান গাজী ইয়াকুব বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঢাকাসহ সমগ্র দেশবাসী এখন প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে অবস্থান করছেন। এমন সময় আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তীব্র গরমে আমাদের আশপাশে অবস্থান করা শ্রমজীবী মেহনতি মানুষদের ভুলে গেলে চলবে না। তাই তাদের উদ্দেশ্যেই মূলত এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘গরমের তীব্রতা বেশি থাকলে সামনে আরও বেশ কিছুদিন এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

হিট স্ট্রোকের মারাত্মক এই অবস্থায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্পটে ক্লান্ত তৃষ্ণার্ত পথচারীদের বিনামূল্যে এমন উদ্যোগে ভীষণ খুশি সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় বেরিয়ে সবার প্রাণ যখন উষ্ঠাগত, তখন পথচারীদের ডেকে ডেকে শরবত করাচ্ছেন আলেম-উলামা ও মাদরাসার ছাত্ররা। এর চেয়ে বড় মানবিক কাজ আর হতে পারে না।

;

শ্রমিক-মালিকের সম্পর্ক হবে ভাই ভাই



মাওলানা ফখরুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে মে দিবস গুরুত্বসহকারে পালিত হয়, ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে মে দিবস গুরুত্বসহকারে পালিত হয়, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শ্রমজীবী মানুষের প্রেরণা ও আবেগের দিন পয়লা মে। ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমের ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মাহুতি দান করেছিলেন শ্রমিকরা। তাদের রক্তাক্ত স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৮৯০ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে মে দিবস গুরুত্বসহকারে পালিত হয়। মে দিবস এলেই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে ঘর্মাক্ত মেহনতি মানুষের প্রতিচ্ছবি। আর এই মেহনতি মানুষের অধিকারের প্রশ্নটিও সঙ্গে সঙ্গে উঠে আসে এই ঐতিহাসিক দিনে।

সময়ের পরিবর্তনে মে দিবস এখন সারা দুনিয়ায় সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে। মে দিবসের ঐতিহাসিক প্রেরণায় কল-কারখানা, অফিস-আদালতসহ সব কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকরা এখন উজ্জীবিত। যে উদ্দেশ্যে শ্রমিকেরা আন্দোলন করে জীবন দিয়েছিলেন সেই কাঙ্ক্ষিত কাজের সময়সূচি এখন প্রায় কর্মক্ষেত্রে অনুসৃত হচ্ছে। তবে মজুরি নির্ধারণের ব্যাপারে নানা আপত্তি রয়েছে। তারপরও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শ্রমিকদের মধ্যে হতাশা যে নেই তা বলা যাবে না।

এমন কথাও বড় করে বলার উপায় নেই যে, ১৮৮৬ সালের পর দীর্ঘ একশত আটত্রিশ বছর পর শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি মিলেছে; শ্রমিক তার অধিকার সত্যিকারার্থে ফিরে পেয়েছে এবং তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত মজুরি নিশ্চিত করতে পেরেছে। কর্মক্ষেত্রে ৮ ঘণ্টা শ্রমের প্রতিষ্ঠা হয়েছে, কিন্তু এখনও শ্রমিক নিপীড়ন থামেনি এবং শ্রমিকের প্রকৃত মর্যাদা ও শ্রমের মূল্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অহরহ শ্রমিক বিক্ষোভ থেকে সহজেই এটা অনুধাবন করা যায়।

সুতরাং অনেকটা জোড় গলায় বলা যায় যে, দুনিয়ার কোথাও শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক, শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি এবং তাদের বাঁচার উন্নত পরিবেশ এখনও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তবে এ ক্ষেত্রে একমাত্র ইসলামই শ্রমিকের মর্যাদা ও অধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এখন থেকে দেড় হাজার বছর আগে।

নবী মুহাম্মদ (সা.) শ্রমিকের মেহনতের কষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন। সে জন্য তিনি যে ঐশ্বরিক বিধান চালু করেছিলেন, তাতে শ্রমিক ও শ্রমের মহিমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তার অমোঘ বাণী জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আজও সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে অতুলনীয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শ্রমিক ও মালিকের সম্পর্ককে ভাই ভাই উল্লেখ করে তিনি তাদের অধিকার ও পাওনার ব্যাপারে যে উক্তি করেছিলেন তা অসাধারণ।

নবী কারিম (সা) বলেছেন, ‘মজুর-শ্রমিক ও ভৃত্যদের যথারীতি থাকা ও পোশাক দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘যারা তোমাদের কাজ করছে তারা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন।’ -সহিহ বোখারি

রাসুলুল্লাহ (সা.) শ্রমিককে আপনজনের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের আপনজন ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করো, তাদের সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করবে।’ একই কথা নবী কারিম (সা.) আরেক হাদিসে উল্লেখ করেছেন এভাবে, ‘তোমরা অধীনস্থদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে এবং তাদেরকে কোনোরকম কষ্ট দেবে না। তোমরা কি জানো না, তাদেরও তোমাদের মতো একটি হৃদয় আছে। ব্যথাদানে তারা দুঃখিত হয় এবং কষ্টবোধ করে। আরাম ও শান্তি প্রদান করলে সন্তুষ্ট হয়। তোমাদের কী হয়েছে যে, তোমরা তাদের প্রতি আন্তরিকতা প্রদর্শন করো না।’ -সহিহ বোখারি

শ্রমিকরাও মানুষ। তাদের শক্তি-সামর্থ্য ও মানবিক অধিকারের প্রতি লক্ষ রাখার বিষয়টি উল্লেখ করতে গিয়ে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘মজুরদের সাধ্যের অতীত কোনো কাজ করতে তাদের বাধ্য করবে না। অগত্যা যদি তা করাতে হয় তবে নিজে সাহায্য করো।’ -সহিহ বোখারি

শ্রমিকের প্রতি মালিক যাতে সহনশীল থাকে এবং তার ভুলত্রুটি ক্ষমার মতো মহৎ মনের অধিকারী হয়, সেটা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়ে আল্লাহর নবী (সা.) হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘মজুর চাকরদের অপরাধ অসংখ্যবার ক্ষমা করা মহত্ত্বের লক্ষণ।’ নবী কারিম (সা.) আরও বলেছেন, ‘অসদাচরণকারী মালিক বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না।’

শ্রমিকের মজুরি আদায়ের ব্যাপারে নবী কারিম (সা.)-এর অতি পরিচিত এবং বিখ্যাত একটি উক্তি সবার জানা। তিনি বলেছেন, ‘মজুরকে তার গায়ের ঘাম শুকাবার আগেই মজুরি পরিশোধ করে দাও।’ শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নবী কারিম (সা.)-এর এই বাণী শ্রমিকের মর্যাদার বিষয়টিকে আরও বেশি মহীয়ান করেছে।

এভাবে ইসলাম শ্রমিকের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার যে নিশ্চয়তা দিয়েছে, তা দুনিয়ার আর কোনো মতবাদ বা দর্শন দেয়নি। আধুনিক বিশ্বের পুঁজিবাদী ও সমাজবাদী রাষ্ট্র দর্শনের কোনোটাই শ্রমিকের প্রকৃত অধিকার ও মর্যাদার ন্যূনতম সমাধান দিতে পারেনি। ফলে এখনও শ্রমিক-মজুররা নিষ্পেষিত হচ্ছে। মালিকের অসদাচরণ, কম শ্রমমূল্য প্রদান, অনপযুক্ত কর্ম পরিবেশ প্রদানসহ নানা বৈষম্য শ্রমিকের দুর্দশা ও মানবেতর জীবনযাপনের কারণ হয়ে আছে।

মে দিবসের প্রাক্কালে আমরা বলতে চাই, নানা আয়োজনে প্রতি বছর শ্রমিক দিবস পালন করার মধ্যে শ্রমিকের প্রকৃত মুক্তি নেই। যে অধিকারের জন্য শ্রমিকরা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন শিকাগোর রাজপথে, তা বাস্তবে এখনও অর্জিত হয়নি। আজও শ্রমিকেরা পায়নি তাদের কাজের উন্নত পরিবেশ, পায়নি ভালোভাবে বেঁচে থাকার মতো মজুরি কাঠামো এবং স্বাভাবিক ও কাঙ্ক্ষিত জীবনের নিশ্চয়তা। মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে শ্রমিকের প্রতি মালিকের সহনশীল মনোভাব থাকতে হবে। শ্রমিকের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার আলোকে তাকে কাজ দিতে হবে। শ্রমিককে মানুষের মতো বেঁচে থাকার জন্য তার মজুরি সেভাবে নির্ধারণ করতে হবে।

মালিককে অবশ্যই এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, তার নিজের স্বজনরা যে রকম জীবনযাপন করবে, তার অধীনস্থ শ্রমিকরাও সে রকম জীবনের নিশ্চয়তা পাবে। মালিক-শ্রমিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তিতে ইসলাম যে শ্রমনীতি ঘোষণা করেছে, তাকে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা গেলে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা অবশ্যই সুরক্ষিত হবে- ইনশাআল্লাহ।

;