নামাজে মনোযোগ বাড়ানোর কার্যকর উপায়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যেকোনো আমল ও ইবাদত-বন্দেগির সঙ্গে চিন্তা-ভাবনার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাই শারীরিক ইবাদতের পাশাপাশি মনোযোগ ও ধ্যানমগ্ন হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর জন্য দু-দুজন বা এক-একজন করে দাঁড়াও। অতঃপর চিন্তা-ভাবনা করো।’ -সুরা সাবা : ৪৬

ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, ইবাদত-বন্দেগি পালনের সময় চিন্তা করে দেখতে হবে- আমি কতটুকু মনোযোগী হয়ে ইবাদত করছি, ইবাদত সুন্নত মোতাবেক হচ্ছে কি না, কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি হচ্ছে কি না, এটি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হচ্ছে কি না ইত্যাদি।

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জেনে রেখো! আল্লাহ গাফেল (উদাসীন) ও অমনোযোগী মনের দোয়া কবুল করেন না।’ -জামে তিরমিজি : ৩৪৭৯

সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (সা.) বলেন, ‘অমনোযোগী হয়ে সারা রাত নফল নামাজ আদায় করার চেয়ে চিন্তা-ভাবনাসহ দুই রাকাত নামাজ আদায় করা উত্তম।’ -ইহয়াউ উলুমিদ্দিন : ৪/৪২৫

ইবাদতসমূহের মাঝে নামাজ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু নানাবিধ কারণে মানুষ নামাজে গভীরভাবে মনোযোগ দিতে ব্যর্থ হয়। এ প্রেক্ষিতে ইসলামি স্কলাররা বলেন, নামাজে মনোযোগ তখনই আসবে, যখন আমরা বুঝব যে, নামাজে আমরা কি বলছি। যখন আমরা নামাজে বলা দোয়া, তাসবিহ ইত্যাদির অর্থ বুঝব, সেগুলোর তাৎপর্য অনুধাবন করব; তখন মনের মাঝে স্বাভাবিকভাবে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ঘটবে এবং আমাদের নামাজ আরও বেশি সুন্দর ও খাঁটি হবে।

নামাজের সময় আমরা যা বলি, তার অর্থ জানলে নামাজে অন্য চিন্তা মাথায় আসবে না। নামাজের নিয়ত করার পর, নামাজের মধ্যে যেসব তাসবিহ, দোয়া-দরুদ আমরা পড়ি বা বলছি সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

১. নামাজে দাঁড়িয়েই প্রথমে আমরা বলি- আল্লাহু আকবার। অর্থ : আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
২. তারপর সানা পড়ি- সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়াবিহামদিকা ওয়াতা-বারাকাসমুকা ওয়াতায়ালা জাদ্দুকা ওয়ালা ইলাহা গাইরুকা।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি পাক-পবিত্র, তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা, তোমার নাম পবিত্র এবং বরকতময়, তোমার গৌরব অতিউচ্চ, তুমি ছাড়া অন্য কানো উপাস্য নাই।
বস্তুত সানায় আমরা আল্লাহর প্রশংসা করি এবং নিজের জন্য দোয়া করি।

৩. তারপর কেরাত পড়ার শুরুতে আমরা অভিশপ্ত শয়তানের প্রতারণা থেকে আশ্রয় চাই এবং বলি, আঊজু বিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বানির রাজিম। অর্থ : বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

৪. এর পর মহান আল্লাহর পবিত্র নাম দিয়ে আল্লাহর দয়া ও করুণা চাওয়ার মাধ্যমে নামাজ এগিয়ে নিয়ে যাই এবং বলি, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। অর্থ : পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি।

৫. এর পর আমরা সুরা ফাতেহা দিয়ে নামাজ শুরু করি (২ রাকাত, ৪ রাকাত, ফরজ বা সুন্নতের নিয়ম অনুযায়ী নামাজ পড়ি)।

৬. আমরা রুকুতে আল্লাহর উদ্দেশ্যে শরীর অর্ধেক ঝুঁকিয়ে দিয়ে মাথা নুইয়ে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রশংসা করি এবং ক্ষমা চাই- তিন বার বলি, সুবাহানা রাব্বিয়াল আজিম। অর্থ : আমার মহান রবের পবিত্রতা ও প্রশংসা বর্ণনা করছি।

৭. তারপর রুকু থেকে উঠে আমরা বলি- সামিআল্লাহু লিমান হামিদা। অর্থ : আল্লাহ সেই ব্যক্তির কথা কবুল করেন, যে তার প্রশংসা করে।
তারপর পরই আমরা আবার আল্লাহর প্রশংসা করে বলি, রাব্বানা ওয়ালাকাল হামদ। অর্থ : হে আল্লাহ! যাবতীয় প্রশংসা কেবল তোমারই।

৮. তারপর আমরা সমস্ত শরীর নুইয়ে, মাথা মাটিতে লুটিয়ে দিয়ে আল্লাহর নিকট সিজদা দেই। তিনবার বলি- সুবহানা রাব্বিয়াল আলা। অর্থ : আমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

৯. দুই সিজদার মাঝখানে বলি- আল্লাহুম্মাগ ফিরলি, ওয়ারহামনি, ওয়াহদিনি, ওয়াআফিনি, ওয়ারঝুকনি।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি আমায় মাফ কর, আমাকে রহম কর, আমাকে হেদায়েত দান কর, আমাকে শান্তি দান কর এবং আমাকে রিজিক দাও।

১০. এভাবে নামাজ শেষে কিংবা মধ্য (২ রাকাত, ৪ রাকাত) বৈঠক আর শেষ বৈঠকে তাশাহহুদে আল্লাহর প্রশংসা করি। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি দরুদ পেশ করে নিজেদের জন্য দোয়া করি, দোয়া মাসুরা পড়ি।

তাশাহহুদ : আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্ সালাওয়াতু, ওয়াত্ তাইয়্যিবাতু। আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আসসালামু আলাইনা ওয়াআলা ইবাদিল্লাহিস্ সালিহিন। আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আননা মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়ারাসুলুহু।

অর্থ : সব সম্মান আল্লাহর জন্য, সব সালাত আল্লাহর জন্য এবং সব ভালো কথা ও কাজসমূহ আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার প্রতি শান্তি, আল্লাহর রহমত ও তার বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের ওপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর বান্দা এবং তার রাসুল।

দরূদ : আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়ালা আলি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়ালা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ, আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়ালা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইবরাহিমা ওয়ালা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি নবী মুহাম্মদ (সা.) ও তার বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপভাবে আপনি হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তার বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ করেছিলেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। 

দোয়া মাসুরা : আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসি- জুলমান কাসিরা, ওয়ালা ইয়াগ ফিরূজ-জুনুবা ইল্লা আন্তা ফাগফিরলি মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা ওয়ারহামনি ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আমার ওপর অত্যাধিক অন্যায় করেছি, গোনাহ করেছি এবং তুমি ব্যতীত পাপ ক্ষমা করার কেউ নেই। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। ক্ষমা একমাত্র তোমার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। আমার প্রতি রহম কর। নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীল দয়ালু।

১১. দুই দিকে (কাঁধের দিকে) সালাম দিয়ে আমরা নামাজ শেষ করি।

১২. নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করি।

   

রেকর্ড সংখ্যক হজযাত্রীর প্রত্যাশা, ভয় কঠোর আইন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিগত ৫৫ বছরের ইতিহাসে ২০১২ সালে সর্বাধিক ৩১ লাখ ৬১ হাজার ৫৭৩ জন মানুষ পবিত্র হজ পালন করেন। যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হজ ছিল। অন্যদিকে করোনা মহামারির পর ২০২৩ সালে হজপালন করেছিলেন ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫ জন পুরুষ ও নারী। যার মধ্যে বিদেশির সংখ্যা ১৬ লাখ ৬০ হাজার ৯১৫ ও সৌদি আরবের হাজির সংখ্যা ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৩০ জন। এবার এখনও ঘোষণা দেওয়া হয়নি, তবে রেকর্ড সংখ্যক হজযাত্রী হজ পালন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সৌদির জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ১৪ জুন থেকে শুরু হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা। তবে চন্দ্রোদয় সাপেক্ষে হজের আনুষ্ঠানিকতা একদিন এগোতে বা পেছাতে পারে। চলতি ২০২৪ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ হজ করতে সৌদিতে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর দেশটির অভ্যন্তরে এ বছর হজ করতে পারেন অন্তত ১০ লাখ মানুষ। এই ৩০ লাখ মানুষকে যথাযথ পরিষেবা প্রদানের চূড়ান্ত প্রস্তুতির পর্যায় পার করছে সৌদির বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা সংস্থা।

অনুমতি ছাড়া হজ করলে জেল-জরিমানা
অবৈধ উপায়ে হজপালন রোধে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সৌদি আরব। এ বছর অনুমতি ছাড়া হজ করলে বা হজবিষয়ক কোনো নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল (দুই লাখ ৯২ হাজার ৭৯৪ টাকা) জরিমানা ধার্য করেছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

আরব নিউজের খবরে বলা হয়, সৌদি আরবের নাগরিক, বাসিন্দা ও দর্শনার্থীদের কেউ মসজিদে হারামের আশপাশের এলাকা, হজের স্থান, আল-রুসাইফা এলাকার হারামাইন স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্ধারিত সময়ে হজবিষয়ক নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ধরা পড়লে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে।

আগামী ২-২০ জুন হজ মৌসুমে নির্দেশনা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে এ জরিমানা প্রযোজ্য হবে। এ সময়ে নিয়ম লঙ্ঘনকারী বাসিন্দাদের তাদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং সৌদি আরবে পুনরায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে। তা ছাড়া এ নির্দেশনা বারবার লঙ্ঘন করলে পুনরায় ১০ হাজার সৌদি রিয়াল (২ লাখ ৯২ হাজার ৭৯৪ টাকা) জরিমানা করা হবে।

সৌদি বার্তা সংস্থা আরও জানায়, বিনা অনুমতিতে হজ করে হজবিষয়ক নির্দেশনা লঙ্ঘনকারীদের পরিবহন করে ধরা পড়লে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল (১৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯৭২ টাকা) জরিমানা করা হবে এবং ব্যবহৃত গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হবে।

তা ছাড়া পরিবহন করা মানুষের সংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জরিমানার পরিমাণ আরও বাড়বে। আর নির্দেশনা লঙ্ঘনকারী প্রবাসী হলে সাজাভোগের পর তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

নুসুক কার্ড ছাড়া মিনা-আরাফা ও মুজদালিফায় প্রবেশ নিষিদ্ধ
সৌদি আরবে হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবার প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য ‘নুসুক’ স্মার্ট কার্ড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হজযাত্রী অথবা হজ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কিংবা শ্রমিক যারাই মাশায়েরে মুকাদ্দাসায় (মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাত) প্রবেশ করতে চান, সবার জন্যই তা বাধ্যতামূলক।

মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স এবং ফেইসবুক পেজে ধারাবাহিক পোস্টে বলেছে যে, ‘নুসুক’ স্মার্ট কার্ড নিয়মিত এবং অনিয়মিত হজযাত্রীদের মাঝে পার্থক্য করতে পারে। সুতরাং যার কাছে কার্ডটি থাকবে না, তার পক্ষে মাশায়েরে মুকাদ্দাসায় (মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাত) প্রবেশ করা সম্ভব হবে না।

গত সপ্তাহে, সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় ‘নুসুক’ স্মার্ট কার্ডের উভয় সংস্করণ মুদ্রিত ও ডিজিটাল কপি উদ্বোধন করেছে। মুদ্রিত কপি হজযাত্রী বহন করবে এবং ফোনের ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটাল কার্ডের কোড স্ক্যান করে তাতে প্রবেশ করা যাবে।

হজ সম্পর্কে সৌদি আরবের বিভিন্ন নির্দেশনা

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, কার্ডটিতে অনেকগুলো পরিষেবা রয়েছে, যা হজযাত্রীদের জন্য তাদের হজের কার্যাবলী পালন করা সহজ করবে। কারণ এটি তাদের সহজভাবে চলাফেরা করতে এবং দলবদ্ধভাবে হজ কার্যক্রম সম্পাদনের সময়-সূচির ব্যাপারে নির্দেশনা-সতর্কতাবলী প্রাপ্তিতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে তারা তাদের জন্য প্রদত্ত যাবতীয় সেবা-পরিষেবার মান মূল্যায়ন এবং অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন।

বহু দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পেজে হজ ব্যবস্থাপনায় সেবা প্রদানের নামে ভূয়া বিজ্ঞপ্তিদাতা জাল হজ এজেন্সিগুলোর খপ্পরে না পড়ার জন্য মন্ত্রণালয় পুনঃরায় সতর্ক করেছে।

মন্ত্রণালয় আরও গুরুত্বারোপ করেছে যে, কেবলমাত্র সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যু করা হজ ভিসা লাভের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন দেশের হজ অফিসগুলোর মাধ্যমে কিংবা হজ মিশন নেই- এমন দেশগুলোতে ‘নুসুক হজ’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হজব্রত পালন করার জন্য আসা যাবে।

হাজিরা পাবেন ২২ বোতল করে জমজম
সৌদি আরবের একটি কোম্পানি জানিয়েছে, আসন্ন হজ মৌসুমে হাজিদের মধ্যে তারা জমজম পানির চার কোটি বোতল বিতরণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। আল জামেজিমাহ নামের এই কোম্পানিটির বোর্ড মেম্বার ইয়াসের সুসু বলেছেন, এ বছর প্রত্যেক হাজির জন্য ২২ বোতল পানি বরাদ্দ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, হাজিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে সেগুলো দেওয়ার জন্য একটি ডিজিটাল পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন তারা।

যার মধ্যে রয়েছে একটি বারকোড সেবা। যেটি বোতলের ওপর প্রদর্শিত থাকবে। এটির মাধ্যমে পানির অর্ডার এবং সেগুলো সরবরাহ করা হবে। এক্ষেত্রে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা হবে বলে বার্তাসংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সিকে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা। হাজিদের মধ্যে এসব পানির বোতল যেন সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা যায় সেজন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ বিভিন্ন কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের মূল কার্যক্রম হবে মক্কা শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চল ও মক্কার প্রবেশ ও বের হওয়ার পয়েন্টগুলোতে।

;

মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ

ভিসা হয়নি ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্প থেকে হজযাত্রায় বাংলাদেশি হজযাত্রীরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্প থেকে হজযাত্রায় বাংলাদেশি হজযাত্রীরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের ভিসা করার জন্য দ্বিতীয় দফায় আবেদনের জন্য বাড়ানো সময় শেষ হচ্ছে শনিবার (১১ মে)। কিন্তু এখনও ভিসা হয়নি ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বুলেটিনে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৮৯৯ হজযাত্রীর ভিসা হয়েছে।

বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন। সেই হিসাবে এখনও ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

তবে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সি আশা করছে, আজকের মধ্যেই বেশিরভাগ হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়ে যাবে। অল্প কিছু বাকি থাকলেও দুই-একদিনের মধ্যে তা করার সময় পাওয়া যাবে। তাই ভিসা জটিলতায় কেউ হজে যেতে পারবেন না- এমনটি হওয়ার সুযোগ নেই।

এর আগে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ভিসা সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরপর ৭ মে পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ভিসা আবেদনের সময় বাড়িয়ে ১১ মে করা হয়। এ সময়ের মধ্যে হজযাত্রীর ভিসা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে বলে জানিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

চলতি হজ মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার ৫৬২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে ৮০ হাজার ৬৯৫ জনসহ মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন। ইতোমধ্যে হজযাত্রার ফ্লাইট শুরু হয়েছে এবং ৫ হাজার ১৮২ জন হজযাত্রী সৌদি আরব গমন করেছেন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৪ সনের পবিত্র হজ ১৬ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এবার বেসরকারি হজযাত্রীরা ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত ২৫৯টি হজ এজেন্সির মাধ্যমে হজের কার্যক্রম সম্পন্ন করছেন। হজযাত্রীদের সৌদি আরব যাত্রার শেষ ফ্লাইট ১০ জুন আর প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন।

;

ফুল, খেজুর ও উপহার দিয়ে হজযাত্রীদের বরণ করছে সৌদি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ফুল, খেজুর ও উপহার দিয়ে হজযাত্রীদের বরণ করছে সৌদি আরব, ছবি: সংগৃহীত

ফুল, খেজুর ও উপহার দিয়ে হজযাত্রীদের বরণ করছে সৌদি আরব, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্থানসহ বেশ কয়েকটি দেশের হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) হজপালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবের জেদ্দায় পৌঁছালে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ফুল দিয়ে স্বাগত ও উপহার দিয়ে বরণ করে নেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ। এর আগে বিভিন্ন দেশের প্রথম ফ্লাইটের হজযাত্রীদের ফুল, খেজুর, জমজমের পানি ও উপহার দিয়ে বরণ করে নেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ।

গালফ নিউজের খবরে জানানো হয়েছে, কয়েকটি স্থল বন্দর, নৌ বন্দর এবং দেশটির ছয়টি শহরের প্রধান ছয়টি বিমানবন্দর দিয়ে হজযাত্রীরা সৌদি আরব প্রবেশ করতে পারবেন। তবে বেশিরভাগ হজযাত্রী জেদ্দা কিংবা মদিনা বিমান বন্দর দিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করছেন বলে জানিয়েছে দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল বিভাগ।

খবরে বলা হয়, এ বছর সৌদি আরবের জেদ্দা, মদিনা, তায়েফ, রিয়াদ, ইয়ানবু, দাম্মামসহ মোট ছয়টি শহরের বিমানবন্দরে হাজিদের বরণ করা হবে। তা হলো- জেদ্দার কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মদিনার প্রিন্স মোহাম্মদ বিন আবদুল আজিজ বিমানবন্দর, তায়েফ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, রিয়াদের কিং খালেদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইয়ানবু শহরের প্রিন্স আবদুল মুহসিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং দাম্মামের কিং ফাহাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

সৌদি আরবের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৪ সালের পবিত্র হজ মৌসুমে সাত হাজার সাত শ ফ্লাইটে ৩৪ লাখ আসন বরাদ্দ করা হয়েছে।

সৌদির বিমানবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মাতারাত হল্ডিং কোম্পানি জানিয়েছে, সৌদি আরবের ছয়টি বিমানবন্দরের ১৩টি টার্মিনালে হজযাত্রীদের বরণ করা হবে।

বিমানবন্দরের ২১ হাজার কর্মকর্তা হাজিদের প্রয়োজনীয় সেবা দেবেন। তা ছাড়া হজযাত্রীদের জন্য সবগুলো বিমানবন্দরে ‘পেসেঞ্জার উইদাউট এ ব্যাগ’ পরিষেবা চালু থাকবে। আর যাত্রীরা নিজ বাসস্থান থেকে ফ্লাইটের সময়ের ২৪ ঘণ্টা আগেই লাগেজ পাঠাতে পারবে।

এদিকে সৌদি মালিকানাধীন বিমান সংস্থা সৌদিয়া জানিয়েছে, এবারের হজ মৌসুমে সারাবিশ্ব থেকে যাত্রীদের পরিবহনে ১২ লাখের বেশি আসনের ১৫০টি বিমান বরাদ্দ করা হয়েছে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ থেকে এবার ৮৫ হাজার ২৫৭ জন বাংলাদেশি হজ পালন করতে পারবেন। তাদের মধ্যে চার হাজার ৫৬২ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮০ হাজার ৬৯৫ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজপালন করবেন।

;

শুক্রবার থেকে জিলকদ মাস শুরু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
শুক্রবার থেকে জিলকদ মাস শুরু হবে, ছবি: সংগৃহীত

শুক্রবার থেকে জিলকদ মাস শুরু হবে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের আকাশে ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র জিলকদ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। শুক্রবার (১০ মে) থেকে জিলকদ মাস গণনা শুরু হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার।

জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র জিলকদ মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সকল জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়সমূহ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, বৃহস্পতিবার (৯ মে) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে জিলকদ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। এমতাবস্থায়, শুক্রবার (১০ মে) থেকে ১৪৪৫ হিজরি সালের পবিত্র জিলকদ মাস গণনা শুরু হবে।

সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মহা. বশিরুল আলম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া, সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. আবদুল জলিল, বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসনের ওয়াকফ প্রশাসক আবু সালেহ মো. মহিউদ্দিন খাঁ, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান, ঢাকা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আমিনুর রহমান, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি রুহুল আমীন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সহকারী পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ মুহাম্মাদ আবদুর রশীদ, লালবাগ শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি আদনান মুহাম্মাদ সানী, চকবাজার শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি শেখ নাঈম রেজওয়ান, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফিত মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

;