আন্তরিক তওবার একটি অশ্রুকণা পাপকে মুছে দেয়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আন্তরিক ক্ষমা ভিক্ষার একটি অশ্রুকণা আপনার পাপকে মুছে দিতে পারে, ছবি: সংগৃহীত

আন্তরিক ক্ষমা ভিক্ষার একটি অশ্রুকণা আপনার পাপকে মুছে দিতে পারে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুনিয়ার নানাবিধ সমস্যায় নিরাশ হয়ে আমাদের কতজনই না নিদ্রাহীন রাত অতিবাহিত করি, নানা নেশায় জড়িয়ে যাই। একবারও মনে হয় না, সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘আমাকে ডাকো, আমি সাড়া দেবো।’ আমরা আল্লাহকে ডাকতে পারি না। জানেন এর কারণ কী?

আমাদের হৃদয়মন পৃথিবীর সঙ্গে খুব বেশি মাত্রায় যুক্ত হয়ে গেছে। তাই প্রয়োজনীয় সময়ে আল্লাহর কথা স্মরণ হয় না। উচিৎ ছিলো, এটা মনে করা- দুনিয়ায় আমরা কেবলই ভ্রমণকারী। কোনো কিছুই স্থায়ী হয় না, মানুষের স্মৃতিও না।

ছোট পাপ বলে কিছু নেই
‘ছোট’ পাপ, এটা এমন কিছু না- এমন ভাবনাকে প্রশ্রয় দেবেন না। সাদামাটা মিথ্যা কথা এবং গসিপগুলো প্রায়ই আমাদের পতনের কারণ হয়। অজুহাতের আশ্রয় নেবেন না। কেবল আপনি মুখে মুখে অনুতপ্ত হবেন আর কাজে কোনো পরিবর্তন আসবে না তাতে লাভ হবে না। হৃদয় থেকে অনুশোচনা করুন। এটা অনুভব করুন। আপনি এটি যে আন্তরিকভাবে করছেন তার প্রতিফলন ঘটান।

হৃদয়ের রোগ নিরাময়ের অন্যতম উপায়
আপনি যদি অনুভব করেন যে, শয়তান গতকাল আপনাকে পরাজিত করেছে, আজ তাকে পরাস্ত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। আরও নেক আমল করুন, বেশি বেশি অনুশোচনা করুন এবং সর্বশক্তিমানের সান্নিধ্য লাভ করুন। মনে রাখবেন, প্রার্থনা হলো হৃদয়ের রোগ নিরাময়ের অন্যতম সেরা উপায়। আপনার হৃদয় এবং আত্মার সঙ্গে কথা বলুন। সর্বশক্তিমানের নিকটবর্তী হন। তিনি আপনাকে স্বস্তি দেবেন।

অর্থহীনতায় সময় নষ্ট করবেন না
চারদিকের হইচই শুনে বিভ্রান্ত হবেন না। বিরতি নিন এবং প্রতিচ্ছবি দেখুন। আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার চারপাশের সব অর্থহীনতায় আপনি কতটা সময় নষ্ট করেছেন। আর সেই সঙ্গে আপনি বারবার তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। অতীতপাপের জন্য, সেসব পাপ যার কথা আপনি ভুলে গেছেন অথবা উপেক্ষা করেছেন তার জন্য। করুণাময়ের কাছে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করুন, এ জন্য তিনি যেন আপনাকে শাস্তি না দেন।

পাপহীনতার পথে ফিরে আসুন
এখন যা ঘটছে তাই সর্বোত্তম। এটি আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে। এটি আপনি এ মুহূর্তে উপলব্ধি নাও করতে পারেন, তবে যদি তার ওপর আস্থাবান হন তবে পুরস্কার আপনি পাবেন। আর কখনও ছোট পাপকে ছোট হিসাবে নেবেন না। বিপদটি হলো- এটি করতে করতে তা অভ্যাসে পরিণত হয় এবং একসময় এটাকে স্বাভাবিক মনে হতে থাকবে। পাপকে স্বীকৃতি দিন, আর পাপহীনতার স্বাভাবিক পথে ফিরে আসুন।

কোনো দ্বিধা নয়, তওবা করুন
আপনার আন্তরিক ক্ষমা ভিক্ষার একটি অশ্রুকণা আপনার পাপকে মুছে দিতে পারে। সর্বশক্তিমান ক্ষমা করতে ভালোবাসেন! দ্বিধা করবেন না, অনুতাপ প্রকাশ করুন। পাপের হাজার আনন্দবিন্দুকে আন্তরিক অনুতাপের একটি অশ্রুবিন্দু সর্বশক্তিমানের কৃপায় মুছে দিতে পারে।

আমরা কাঁদি, তিনি শুনেন। আমরা আহত হই, তিনি নিরাময় করেন। আমরা ডাকি, তিনি জবাব দেন। আমরা অনুতাপ করি, তিনি ক্ষমা করেন। সবকিছুর জন্য, সব সময় সর্বশক্তিমানের কাছেই চান, তার কাছেই প্রার্থনা করুন।

মানুষের কাছে অভিযোগ নয়
আপনার যেকোনো সমস্যা সম্পর্কে সবার কাছে অভিযোগ করাকে অভ্যাসে পরিণত করবেন না। বেশিরভাগই এ জন্য কিছু করার কথা ভাবে না। সর্বশক্তিমানের সঙ্গে কথা বলুন, সবকিছুতে নিয়ন্ত্রণ তার। তিনি আপনার পাপের পরিমাণ কত বেশি তা নিয়ে পরোয়া করেন না। আপনি কতটা এ জন্য অনুতপ্ত হচ্ছেন, সেটি দেখেন তিনি। আপনার পাপ যেন আপনাকে হতাশ না করে!

কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি বলুন, সত্যিই কি তোমরা সেই মহাপ্রভুকে অস্বীকার করছ! যিনি পৃথিবীকে মাত্র দুদিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তার অংশীদার নির্ধারণ করছ? তিনি তো সমস্ত জগতের প্রতিপালক। যিনি পৃথিবীতে তার উপরাংশে পাহাড় স্থাপন করেছেন এবং জমিনের ভিতরাংশ বরকতপূর্ণ করেছেন আর ভূগর্ভে সুষমরূপে খাদ্যদ্রব্য মজুদ করেছেন মাত্র চার দিনে। সব যাচনাকারীর জন্য সমানভাবে। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করলেন আর তা ছিল ধোঁয়াশাচ্ছন্ন।’ -সুরা ফুসিসলাত : ৯-১১

হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়াকে মহব্বত করল সে তার পরকালকে ক্ষতিগ্রস্ত করল। আর যে ব্যক্তি পরকালকে মহব্বত করল সে তার দুনিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করল। সুতরাং তোমরা অস্থায়ী বস্তুর ওপর চিরস্থায়ী বস্তুকে প্রাধান্য দাও।’ -মুসনাদে আহমাদ

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমতে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন একটি কাজের নির্দেশ দিন যা করলে আল্লাহ আমাকে ভালোবাসবেন এবং মানুষেরাও আমাকে ভালোবাসবে। তিনি বললেন, দুনিয়া ত্যাগ করো, আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন এবং মানুষের কাছে যা আছে, তার প্রতি লালসা করো না, তবে লোকেরা তোমাকে ভালোবাসবে। -জামে তিরমিজি

   

বরিশালে ঈদের প্রধান জামাত সকাল ৮টায়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল নগরীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে নগরীর হেমায়েতউদ্দিন ঈদগাহ ময়দানে। সকাল আটটায় এ জামাত হবে বলে জানিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আহসানউদ্দিন রোমেল। 

তিনি জানান, প্রধান জামাতে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়াও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল অব. জাহিদ ফারুক শামীম এমপি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায় করবেন বলে জানিয়েছেন তার একান্ত সহকারী। 

হেমায়েত উদ্দিন ঈদগা ময়দানে ঈদের জামাতে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া বরিশাল নগরীর জামে কসাই মসজিদ, এবায়দুল্লাহ ও বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদে দুইটি করে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

;

জেনে নিন হজের পাঁচ দিনের ধারাবাহিক কাজ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মিনার উদ্দেশে হাজিদের যাত্রা শুরু, ছবি: সংগৃহীত

মিনার উদ্দেশে হাজিদের যাত্রা শুরু, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের নানা প্রান্তের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছেন পবিত্র মক্কায়। তীব্র গরম উপেক্ষা করেই এ বছরের হজের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

স্থানীয় সময় আগামীকাল শুক্রবার (১৪ জুন) মিনার উদ্দেশে যাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা। আগামী মঙ্গলবার জামারায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনের হজের কার্যক্রম।

আরাফাতের ময়দানে জাবালে রহমত, দোয়া কবুলের জায়গা

পবিত্র হজ পালনের জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে হজযাত্রীরা সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এবার বিশ্বের ১৮০টির বেশি দেশের প্রায় ২০ লাখ মুসল্লি হজ পালন করবেন।

শুক্রবার থেকে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। তবে হজযাত্রীর সংখ্যা বিবেচনায় সৌদি মুয়াল্লিমরা বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাতেই হজযাত্রীদের তাঁবুর শহর মিনায় নেওয়া শুরু করবেন। এশার নামাজের পর মক্কার নিজ নিজ আবাসন থেকে ইহরামের কাপড় পরে মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন হাজীরা। এ সময় গুঞ্জরিত হবে তালবিয়া- ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নালহামদা ওয়াননি-মাতা লাকা ওয়াল মূলক, লা শারিকা লাক।’

হজযাত্রীদের জন্য হজের পাঁচ দিনের ধারাবাহিক কাজগুলো বর্ণনা করা হলো-

প্রথম দিন [মিনার উদ্দেশে যাত্রা]
৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত এ পাঁচ দিনকে হজের দিন বলা হয়। আপনি যদি তামাত্তু হজ পালনকারী হয়ে থাকেন তাহলে আগের মতো আবার ইহরাম বেঁধে নিন। তারপর এভাবে ইহরামের নিয়ত করুন- ‘হে আল্লাহ! আমি তামাত্তু হজ করতে ইচ্ছা করেছি, আপনি এ হজ আমার জন্য সহজ করে দিন এবং আমার পক্ষ থেকে কবুল করুন।’

নিয়তের সঙ্গে সঙ্গে তিনবার তালবিয়া উচ্চস্বরে পড়ুন। (মহিলারা নিচু স্বরে পড়ুন)। যারা কিরান বা ইফরাদ হজ পালন করার নিয়ত করেছেন, তারা তো আগে থেকেই ইহরামের অবস্থায় আছেন, কাজেই নতুন করে ইহরাম বাঁধতে হবে না। ৮ জিলহজ সকালে ইহরাম বাঁধা অবস্থায় মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন। আজকের জোহর, আসর, মাগরিব, এশা এবং ৯ জিলহজের ফজরের নামাজ মিনায় আদায় করা এবং রাতে মিনায় অবস্থান করা সুন্নত।

মসজিদে নামিরা, এই মসজিদ থেকে হজের খুতবা দেওয়া হয়

দ্বিতীয় দিন [আরাফাতের ময়দানে অবস্থান]

হজের দ্বিতীয় দিন ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থান ফরজ। ফজরের নামাজ মিনায় পড়ে আরাফাতের ময়দানের দিকে রওনা করতে হয়। প্রয়োজনে ফজরের আগে রাতেও আরাফাতের উদ্দেশে রওনা করা যাবে। আরাফাতের ময়দানে দুপুর ১২টার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করতে হবে। আরাফাতের ময়দানে দোয়া কবুল হয়। সুতরাং এ সময় সবাইকে দোয়ায় মগ্ন থাকা উচিত। আরাফাতের ময়দানে জাবালে রহমতের কাছাকাছি অবস্থান করা ভালো। জোহর এবং আসরের নামাজ মসজিদে নামিরায় জামাতের সঙ্গে নির্দিষ্ট শর্তানুসারে আদায় করা উত্তম। তবে ওই জামাতে শরিক হওয়া সম্ভব না হলে যথাসময়ে জোহরের ওয়াক্তে জোহর এবং আসরের ওয়াক্তে আসর নিজ নিজ তাঁবুতে আজান-ইকামতসহকারে জামাতের সঙ্গে পড়ুন।

রাতে মুজদালিফায় অবস্থান
মিনা ও আরাফাতের মাঝখানে অবস্থিত ময়দানের নাম মুজদালিফা। এখানে ১০ জিলহজ রাত (৯ জিলহজ দিবাগত রাত) অতিবাহিত করা হাজিদের জন্য জরুরি। মুজদালিফায় পৌঁছে এশার ওয়াক্ত হলে এক আজান ও এক ইকামতে প্রথমে মাগরিবের ফরজ তারপর এশার ফরজ পড়ুন এরপর মাগরিবের ও এশার সুন্নত এবং বিতর পড়ুন। মাগরিব ও এশার নামাজ পড়ার পর সুবহে সাদিক পর্যন্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা সুন্নতে মোয়াক্কাদা। সুবহে সাদেক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত অবস্থান ওয়াজিব। এখান থেকে জামারায় মারার জন্য পাথর সংগ্রহ করুন।

তৃতীয় দিন [পাথর নিক্ষেপ, কোরবানি, চুল মুণ্ডন ও তাওয়াফ]
হজের তৃতীয় দিন ১০ জিলহজ মিনায় পৌঁছার পর এ দিনের চারটি কাজ ধারাবাহিকভাবে পালন করতে হবে-

পাথর নিক্ষেপ করা : এই দিনের প্রথম কাজ হলো জামারায় আকাবায় (বড় জামারা) গিয়ে সাতটি পাথর নিক্ষেপ করা (ওয়াজিব)। পাথর নিক্ষেপের নিয়ম হচ্ছে-পাথর নিক্ষেপের সময় মিনাকে ডান দিকে রেখে দাঁড়ান। তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা পাথর ধরে নিক্ষেপ করুন। প্রথম পাথর নিক্ষেপের আগমুহূর্ত থেকে তালবিয়া পড়া বন্ধ করে দিতে হবে। পাথর নিক্ষেপের সময় বলুন : বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার।

আরাফাতের ময়দানে হাজিরা

কোরবানি করা : এই দিনের দ্বিতীয় কাজ হলো- দমে শোকর বা হজের শোকরিয়াস্বরূপ কোরবানি করা (ওয়াজিব)। নিজ হাতে করুন কিংবা কাউকে পাঠান; কিন্তু জবাই হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হোন।

চুল মুণ্ডন বা কর্তন করা : এই দিনের তৃতীয় কাজ হলো হলক বা কসর করা। (চুল মুণ্ডন বা কর্তন) এটি ওয়াজিব। কোরবানি করার পর পুরো মাথার চুল মুণ্ডন করে ফেলুন। মুণ্ডনকারীদের জন্য নবী কারিম (সা.) তিনবার দোয়া করেছেন। তাই এতে ফজিলত বেশি।

তাওয়াফে জিয়ারত : এ দিনের চতুর্থ কাজ হলো তাওয়াফে জিয়ারত (ফরজ)। এটা হজের শেষ রুকন। মিনায় উপরোক্ত কাজগুলো সেরে হাজিরা মক্কা শরিফ গিয়ে তাওয়াফ-ই-জিয়ারত করবেন। ১০ তারিখে সম্ভব না হলে ১১ বা ১২ তারিখের সূর্যাস্তের আগে অবশ্যই এ তাওয়াফ করতে হবে। যারা মক্কা থেকে ৮ জিলহজ আসার আগে একটি নফল তাওয়াফের সঙ্গে সায়ী করে আসেনি তাওয়াফে জিয়ারতে তাদের অবশ্যই সায়ী করতে হবে। তাওয়াফে জিয়ারতের কোনো বদলা নেই, এ তাওয়াফ করতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

চতুর্থ দিন [মিনায় রাতযাপন এবং পাথর নিক্ষেপ]
১১ জিলহজ মিনায় রাতযাপন সুন্নত। এদিন মিনায় তিন শয়তানকে পাথর মারা ওয়াজিব। দুপুরের পর প্রথমে জামারায়ে সুগরা, (মসজিদে খাইফের সন্নিকটে) অতঃপর জামারায়ে উসতা, সর্বশেষ জামারায়ে আকাবায় ৭টি করে মোট ২১টি পাথর নিক্ষেপ করতে হবে। প্রত্যেকটি পাথর নিক্ষেপের সময় তাকবির বলবেন।

পঞ্চম দিন [মিনায় রাতযাপন এবং পাথর নিক্ষেপ]
১২ জিলহজেও আগের দিনের মতো তিন জামারায় পাথর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব। অনেকেই ১২ জিলহজ তাড়াতাড়ি মক্কায় ফিরে যাওয়ার জন্য সূর্য মাথার ওপর ওঠার আগেই পাথর নিক্ষেপ করে ফেলেন, অথচ এরূপ করা নাজায়েজ। মনে রাখতে হবে, সূর্য মাথার ওপর থেকে কিছুটা ঢলে যাওয়ার পর পাথর নিক্ষেপ করতে পারবেন। ১২ জিলহজ পাথর নিক্ষেপ করে মক্কায় ফিরে যাওয়া জায়েজ, তবে ১৩ জিলহজ পাথর নিক্ষেপ করে তারপর মক্কায় ফিরে যাওয়া উত্তম। ১২ জিলহজ পাথর নিক্ষেপ করে মক্কায় ফিরতে চাইলে সূর্যাস্তের আগেই মিনা থেকে বের হয়ে যাবেন। সূর্যাস্তের পর ফিরা মাকরুহ।

মক্কায় পৌঁছার পর বিদায়ী তাওয়াফ ছাড়া হজের আর কোনো জরুরি কাজ বাকি নেই। হজ আদায়ের তাওফিকদানের জন্য আল্লাহ পাকের শোকর, নফল তাওয়াফ, উমরা ও অন্যান্য ইবাদত করতে থাকুন।

বিদায়ি তাওয়াফ
মক্কা শরিফ থেকে বিদায়ের আগে বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব) করুন। মাকামে ইবরাহিমে দুরাকাত নামাজ পড়ে মূলতাযাম, কাবার দরজা ও হাতিমে দোয়া করুন; জমজমের পানি পান করেও দোয়া করুন এবং বিয়োগ-বিরহের বেদনা দিয়ে কাবা ঘর থেকে বিদায় নিন। তাওয়াফে বিদা না করলে দম দিতে হবে।

;

‘ছাতা নয় চা দরকার’ মিশরীয় হজযাত্রীর অদ্ভুত দাবি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মিশরীয় হাজি চা পেয়ে বেশ খুশি হন, ছবি: সংগৃহীত

মিশরীয় হাজি চা পেয়ে বেশ খুশি হন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা হজের ফরজ আমল। আরাফাতের ময়দানে হাজিরা নির্দিষ্ট তাঁবুতে অবস্থান করে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকেন। সেখানে সৌদি মুয়াল্লিমের পক্ষ থেকে হজযাত্রী খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

এ ছাড়া সৌদি আরব কর্তৃপক্ষসহ তালিকাভুক্ত বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে পানীয়, খাবার, ফল-মূল, ছাতা, জুতাসহ বিভিন্ন কিছু উপহার হিসেবে দিয়ে থাকেন।

হজযাত্রীদের সেবায় প্রচুর স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকে। এক স্বেচ্ছাসেবক গত হজের স্মৃতিচারণের সময় বলেন, গতবার এক হাজির চা পানের তৃষ্ণা আমাকে অবাক করেছে।

আরব নিউজকে তিনি বলেন, আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের সময় একজন মিশরীয় হজযাত্রীর চা পানের জন্য অস্থির ও বিচলিত হয়ে পড়েন। আমি ভাবছিলাম, তিনি হয়ত অতিরিক্ত রোদে কাতর হয়ে গেছেন, তাই রোদ থেকে রক্ষার জন্য হাজিকে একটি ছাতা দিতে চাই। কিন্তু তিনি তা নিতে অস্বীকার করে বলেন, ‘ছাতা নয়, চা চাই।’

ওই স্বেচ্ছাসেবক বলেন, তাকে কেমন যেনো উদভ্রান্ত ও বিচলিত দেখাচ্ছিল। আমরা ভাবলাম, তিনি সূর্যের তাপের কারণে ক্লান্ত, তাই তাকে ঠাণ্ডা পানি ও ছাতা উপহার দিতে চাই। তিনি ছাতাটি ফিরিয়ে দেন।

তখন আমার সঙ্গী অপর এক স্বেচ্ছাসেবক তাকে বলেন, এই গরমে চা দিয়ে কী করবেন? এ বিষয়ে হাজি বলেন, ‘আমাকে গরম তাড়াতে চা দাও, আমার ছাতা লাগবে না, চা লাগবে।’

হাজির প্রবল ইচ্ছা ও চাওয়া দেখে স্বেচ্ছাসেবকরা তাকে চা খাওয়ালে তিনি খুশি হয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য দোয়া করেন, ‘আমার অনুরোধ পূরণ হয়েছে, আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।’

;

শরিকানা কোরবানি শুদ্ধ হওয়ার শর্তসমূহ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরবানির পশু হিসেবে গরু অত্যন্ত জনপ্রিয়, ছবি: সংগৃহীত

কোরবানির পশু হিসেবে গরু অত্যন্ত জনপ্রিয়, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শরিকানা কোরবানির প্রথা বেশ পুরোনো। অর্থাৎ একটি গরু-মহিষ বা উট কয়েকজনে মিলে কোরবানি করা। এটা শুধু ভারতীয় উপমহাদেশ নয় প্রায় সব দেশেই বেশ জনপ্রিয় একটি রীতি। তবে শরিকানা কোরবানির ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার। না হলে কোরবানি নষ্ট হয়ে যাবে। বিষয়গুলো হলো-

শরিকদের কারও পুরো বা অধিকাংশ উপার্জন যদি হারাম হয়, তাহলে কারও কোরবানি সহিহ হবে না।

যদি কেউ গরু, মহিষ বা উট একা কোরবানি দেওয়ার নিয়তে কেনে আর সে ধনী হয় তাহলে ইচ্ছা করলে অন্যকে শরিক করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে একা কোরবানি করাই শ্রেয়। শরিক করলে ওই টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম।

গরু, মহিষ ও উট- এই তিন প্রকার পশুর একেকটিতে সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি পর্যন্ত শরিক হয়ে কোরবানি করতে পারবে। শরিকদের সংখ্যা জোড় হোক বা বেজোড় তাতে কোনো সমস্যা নেই।

তবে কোরবানির জন্য শর্ত হলো- কারও অংশ যেন এক-সপ্তমাংশের চেয়ে কম না হয়। প্রত্যেক শরিককেই কোরবানি অথবা আকিকার মতো কোনো ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্যলাভের নিয়ত করতে হবে।

যদি শরিকদের একজনও গোশত খাওয়ার নিয়ত করে, তবে কারো নিয়ত দুরস্ত হবে না। অনুরূপভাবে যদি কোনো শরিকের অংশ সপ্তমাংশের কম হয়, তবে সবার কোরবানিই নষ্ট হয়ে যাবে। -ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : ৫/৩০৪

যদি গরু কেনার আগে অংশীদাররা সবাই মিলে কেনে, তবে তা জায়েজ। আর যদি কেউ একা কোরবানি করার জন্য একটা গরু কেনে এবং মনে মনে ইচ্ছা রাখে পরে আরো লোককে অংশীদার করবে, তবে তা-ও জায়েজ আছে।

তবে যদি ব্যক্তি এমন হয়, যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয় এবং তিনি কেনার সময়ও অন্যদের শরিক করার নিয়ত করেননি, তবে অন্য কাউকে নতুন করে অংশীদার করা যাবে না। এককভাবে কোরবানি করতে হবে। আর ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব হলে অন্যদের শরিক করতে পারবে। তবে এমনটি করা অনুচিত।

কোরবানি গরু, মহিষ ও উটে আকিকার নিয়তে শরিক হতে পারবে। এতে কোরবানি ও আকিকা দুটোই সহিহ হবে। -রদ্দুল মুহতার : ৬/৩৬২

;