আল্লাহর সন্তুষ্টির অন্যতম মাধ্যম জাকাত



এইচ. এম. মুশফিকুর রহমান, অতিথি লেখক, ইসলাম
আল্লাহর সন্তুষ্টির অন্যতম মাধ্যম জাকাত, ছবি: সংগৃহীত

আল্লাহর সন্তুষ্টির অন্যতম মাধ্যম জাকাত, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাকাত ইসলামের প্রধান আর্থিক ইবাদত। সুষম সমাজ গঠনের লক্ষ্যে এটি আল্লাহ প্রদত্ত ইসলামি অর্থব্যবস্থার মূলভিত্তি ও ইসলামের মৌল স্তম্ভের উল্লেখযোগ্য একটি। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হলো নামাজ ও জাকাত।

কোরআনে কারিমের বহু স্থানে নামাজ ও জাকাতের আদেশ করা হয়েছে এবং আল্লাহর অনুগত বান্দাদের জন্য অশেষ সওয়াব, রহমত ও মাগফিরাতের পাশাপাশি আত্মশুদ্ধিরও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা নামাজ আদায় করো এবং জাকাত প্রদান করো। তোমরা যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর নিকটে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা করো আল্লাহ তা দেখছেন।’ -সূরা বাকারা: ১১০

কোরআনের অন্যত্র আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘তোমরা নামাজ আদায় করো, জাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পারো।’ -সূরা নূর: ৫৬

হাদিস শরিফে জাকাতকে ইসলামের সেতুবন্ধন বলা হয়েছে। কারণ, এটি ধনী ও গরীবের মাঝে অর্থনৈতিক সেতুবন্ধন সৃষ্টি করে। মুসলিম সমাজ থেকে দরিদ্রতা দূরীকরণে এবং সমাজে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়নে জাকাতের ভূমিকা অপরিসীম।

জাকাত আদায়ের গুরুত্ব
পবিত্র কোরআনের বিরাশিটি স্থানে নামাজের পর পরই জাকাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর কারণ প্রসঙ্গে আল্লামা তাবারি (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জাকাত আদায়ে সম্মত হবে না তার কোনো নামাজই গ্রহণযোগ্য হবে না।’ –তাবারি: ১৪/১৫৩

জাকাত যে কত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এ থেকে তা সহজে অনুমেয়। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, আমাদের সমাজে জাকাতের প্রচলন অনেক কম। অথচ নামাজ এবং জাকাত উভয়েই সমভাবে ফরজ। একটি হচ্ছে আল্লাহর হক আর অপরটি বান্দার হক।

সূরা নিসার ১৬২ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের জন্য ‘আজরুন আজিম’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং যারা নামাজ আদায় করে, জাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি তাদেরকে মহাপুরস্কার দেবো।’

অন্য আয়াতে জাকাতের গুরুত্বপূর্ণ সুফল বর্ণনা করে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তাদের সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করুন, যার দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র করবেন এবং পরিশোধিত করবেন এবং আপনি তাদের জন্য দোয়া করবেন। আপনার দোয়া তো তাদের জন্য চিত্ত স্বস্তিকর। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ -সূরা তওবা: ১০৩

এ কারণেই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম জাকাতের প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান করতেন।

হজরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু জাকাতের বিরূদ্ধচারণকারীদেরকে মুরতাদ হিসেবে গণ্য করেছিলেন। তাদের বিরূদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে বলেছিলেন, ‘আল্লাহর কসম! তারা যদি আমাকে ( জাকাতের) একটি উটের দড়িও প্রদান করতে অস্বীকার করে, যা তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রদান করত, আমি তাদের বিরূদ্ধে অস্ত্রধারণ করবো, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা তা আদায় করে দেয়।’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম

ইমাম ইবনে হাজার আসকালারি (রহ.)-এর ভাষায়, ‘জাকাত ইসলামি শরিয়তের এমন এক অকাট্য বিধান, যে সম্পর্কে দলিল-প্রমাণের আলোচনা নিষ্প্রয়োজন। জাকাত সংক্রান্ত কিছু কিছু মাসয়ালায় ইমামদের মধ্যে মতভিন্নতা থাকলেও মূল বিষয়ে অর্থাৎ জাকাত ফরজ হওয়া সম্পর্কে কোনো মতভেদ নেই। জাকাতের ফরজিয়াতকে যে অস্বীকার করে, সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়।’ -ফাতহুল বারি: ৩/৩০৯

জাকাতের উপকারিতা
সম্পদের জাকাত আদায় করা আল্লাহতায়ালার নির্দেশ। আল্লাহর সন্তুষ্টির অন্যতম মাধ্যম। পার্থিব কোনো উপকারিতা থাকুক আর না থাকুক, আল্লাহর নির্দেশ পালনে মুমিন সর্বদা বাধ্য। তবে আল্লাহর কোনো নির্দেশই পার্থিব উপকারিতা মুক্ত নয়। তেমনি জাকাতের মাঝেও রয়েছে ধর্মীয় অনুশাসন পালনের পাশাপাশি পার্থিব অনেক উপকারিতা।

এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান-খয়রাতকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ পছন্দ করেন না কোনো অবিশ্বাসী পাপীকে।’ -সূরা বাকারা: ২৭৬

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো বান্দা যখন জাকাত আদায় করেন, তখন আল্লাহর আদেশে একজন ফেরেশতা তার জন্য এভাবে দোয়া করতে থাকেন, হে আল্লাহ! আপনার পথে যে দান-সদকা করে, জাকাত দেয়- তার সম্পদকে আপনি বৃদ্ধি করে দিন, আর যে ব্যক্তি সম্পদ ধরে রাখে (জাকাত দেয় না) তার সম্পদ আপনি ছিনিয়ে নিন।’ –সহিহ বোখারি

জাকাত আদায় করলে বাহ্যিকভাবে মনে হয় সম্পদ কমে যাচ্ছে। কিন্তু জাকাত আদায় করলে আল্লাহতায়ালা অবশিষ্ট সম্পদে প্রভূত বরকত দান করেন, যা জাকাত না দিলে পাওয়া যেত না। আবার জাকাতের মধ্যে যে সম্পদ খরচ হয়, আল্লাহতায়ালা ভিন্ন কোনো উপায়ে সেই সম্পদ আবার ফিরিয়ে দেন।

জাকাত আদায় না করার ভয়াবহ পরিণতি
জাকাত প্রদানে যারা কার্পণ্য করবে, তাদের বিরুদ্ধে পবিত্র কোরআন এবং হাদিস শরিফে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যা তোমাদেরকে দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তারা যেন কিছুতেই মনে না করে যে, এটা তাদের জন্য মঙ্গল। না, এটা তাদের জন্য অমঙ্গল। যে সম্পদে তারা কৃপণতা করেছে কিয়ামতের দিন তাই তাদের গলায় বেড়ি হবে। আসমান ও জমিনের স্বত্ত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহরই। তোমরা যা করো আল্লাহ তা বিশেষভাবে অবগত।’ -সূরা আলে ইমরান: ১৮০

হাদিস শরিফে এসেছে, যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু সে তার জাকাত দেয়নি কিয়ামতের দিন তা বিষধর স্বর্পরূপে উপস্থিত হবে এবং তা তার গলায় পেঁচিয়ে দেওয়া হবে। সাপটি তার উভয় অধরপ্রান্তে দংশন করবে এবং বলবে, আমিই তোমার ওই ধন, আমিই তোমার পুঞ্জিভূত সম্পদ।’ –সহিহ বোখারি

জাকাত ফরজ হওয়ার শর্তসমূহ
১. নেসাব পরিমাণ মালের মালিক হওয়া। অর্থাৎ সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ, বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা, কিংবা সমপরিমাণ মূল্যের নগদ টাকা বা ব্যবসার মালের মালিক হওয়া।
২. মুসলমান হওয়া। কোনো কাফেরের ওপর জাকাত ফরজ নয়।
৩. বালেগ হওয়া। কোনো নাবালেগের ওপর জাকাত ফরজ নয়।
৪. জ্ঞানী ও বিবেক সম্পন্ন হওয়া। সর্বদা যে পাগল থাকে তার নেসাব পরিমাণ মাল থাকলেও তার ওপর জাকাত ফরজ নয়।
৫. স্বাধীন বা মুক্ত হওয়া। দাস-দাসীর ওপর জাকাত ফরজ নয়।
৬. মালের ওপর পূর্ণ মালিকানা থাকা। অসম্পূর্ণ মালিকানার ওপর জাকাত ফরজ হয় না।
৭. নেসাব পরিমাণ মাল নিত্য প্রয়োজনীয় সম্পদের অতিরিক্ত হওয়া।
৮. নেসাব পরিমাণ মাল এক বছর অতিবাহিত হওয়া।

জাকাত যাদের দেওয়া যাবে
আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘জাকাত তো কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত ও জাকাতের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য, যাদের মনোরঞ্জন উদ্দেশ্য তাদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জিহাদকারী ও মুসাফিরের জন্য। এ আল্লাহর বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’ -সূরা তওবা: ৬০

জাকাত আদায়ের সময়
জাকাত আদায়ের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময়ের বাধ্যবাধকতা নেই। তবে রমজান মাস জাকাত আদায়ের সর্বোত্তম সময়। রমজানে দান-সদকা করলে অন্য সময়ের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি সওয়াব হয়। তাই পবিত্র রমজান মাসে মুমিন বান্দারা একসঙ্গে গরীবের হক জাকাত ও ফিতরা আদায় করে থাকেন।

দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মাহে রমজানই অধিক সওয়াব প্রাপ্তির জন্য জাকাত আদায়ের উপযুক্ত মৌসুম ও শ্রেষ্ঠতর সময়। রমজান মাসে ধনী লোকেরা দরিদ্রদের জাকাত প্রদানের ফলে উভয় শ্রেণির মানুষের মধ্যে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে উঠে।

অভাবগ্রস্ত, অসহায়, সম্পদহীন, কর্মহীন, এতিম, বিপদ ও দায়গ্রস্ত মানুষকে সহায়তা করা আল্লাহতায়ালার সুস্পষ্ট নির্দেশ হলেও অত্যন্ত বিস্ময়কর এই যে, আমাদের অনেকেই এ ব্যাপারে উদাসীন। ধন-সম্পদের প্রাচুর্য থাকলেও মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসতে চান না। বলার অপেক্ষা রাখে না, মানুষকে সহায়তা করার মতো মহৎ কাজ বা সৎকর্ম আর কিছু হতে পারে না। বর্তমান বিশ্বে ‘করোনা ভাইরাস’ মানুষকে সাহায্য ও সহায়তা করার একটা সুযোগ এনে দিয়েছে।

জাকাত, দান ও সদকার অর্থ গরীব-দুঃখী-অসহায়দের মধ্যে বণ্টন করে দিলে দানের সওয়াব যেমন পাওয়া যাবে, তেমনি বিপন্ন ও বিপদগ্রস্ত মানুষ উপকৃত হবে। আমরা আশা করবো- সরকার, মিডিয়া ও আলেম সমাজ বেশি বেশি জাকাত, দান-খয়রাত ও সদকা করার ব্যাপারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নেবেন। মনে রাখতে হবে, জাকাত আদায় এবং অভাবী অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর এটাই শ্রেষ্ঠ সময়।

এইচ. এম. মুশফিকুর রহমান: শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক

   

জিলকদ মাসে যেসব আমল করবেন



মুফতি উমর ফারুক আশিকী
জিলকদ মাসের আমল, ছবি: সংগৃহীত

জিলকদ মাসের আমল, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুরু হয়েছে জিলকদ মাস। এ মাস সম্মানিত ও মহিমান্বিত মাসসমূহের একটি। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু বকরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ যেদিন আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন, সেদিন হতে সময় যেভাবে আবর্তিত হচ্ছিল আজও তা সেভাবে আবর্তিত হচ্ছে। বারো মাসে এক বছর। এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। জিলকদ, জিলহজ ও মহররম। তিনটি মাস পরস্পর রয়েছে। আর একটি মাস হলো- রজব-ই-মুযারা। যা জমাদিউল আউয়াল ও শাবান মাসের মাঝে অবস্থিত। -সহিহ বোখারি : ৩১৯৭

হাদিসে বর্ণিত মুযারা একটি সম্প্রদায়ের নাম। ‘আরবের অন্যান্য সম্প্রদায় হতে এ সম্প্রদায়টি রজব মাসের সম্মান প্রদর্শনে অতি কঠোর ছিল। তাই এ মাসটিকে তাদের দিকে সম্বন্ধ করে হাদিসে রাজাবু মুযারা বলা হয়েছে।

জিলকদ মাসে হজরত মুসা (আ.) তুর পাহাড়ে অবস্থান করেন
বনী ইসরাইলকে তাদের নাফরমানির কারণে ‘তিহ’ উপত্যকায় চল্লিশ বছর পর্যন্ত আটকে রাখা হয়। সে সময় তারা নবী হজরত মুসা (আ.)-এর কাছে দাবি করে, আপনি আমাদেরকে আসমানি কিতাব এনে দিন, যে কিতাবে আমাদের জীবনযাপনের নীতিমালা লেখা থাকবে। তখন হজরত মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করলেন, যার ফলে আল্লাহতায়ালা হজরত মুসা (আ.)-কে তুর পাহাড়ে এসে ত্রিশ দিন অবস্থান করতে বলেন। তবে বিশেষ কোনো কারণে এ সময়কে বাড়িয়ে চল্লিশ দিন করা হয়।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি মুসার জন্য ত্রিশ রাতের মেয়াদ স্থির করেছিলাম (যে, এ রাতসমূহে তুর পাহাড়ে এসে অবস্থান করবে)। তারপর আরও দশ দ্বারা তা পূর্ণ করি। এভাবে তার প্রতিপালকের নির্ধারিত মেয়াদ চল্লিশ রাত হয়ে গেল।’ -সুরা আরাফ : ১৪২

ইবনে কাসির (রহ.) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, অধিকাংশ তাফসিরকারের মত হলো, ‘ত্রিশ দিন জিলকদ মাস আর বাকি দশ দিন হলো- জিলহজের দশ দিন।’

জিলকদ মাসেই নবী কারিম (সা.) উমরা পালন করেন
জিলকদ মাসের একটি ফজিলত হলো, ‘হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) যত উমরা আদায় করেছেন, তার সবগুলোই ছিলো- জিলকদ মাসে। তবে একটা উমরা ব্যতীত। যা তিনি হজের সঙ্গে আদায় করেছিলেন।’

উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) জিলকদ ব্যতীত অন্যমাসে কোনো উমরা করেননি। -সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৯৯৭

হাদিসটির অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) জিলকদ ব্যতীত অন্যকোনো মাসে উমরা করেননি। তিনি তিনবার উমরা করেছেন। -মুসনাদে আহমাদ : ২৫৯১০

এ মাসের আমল
যখন কোনো সময়কে অন্য সময়ের তুলনায় কিছু বৈশিষ্ট্য দেওয়া হয়, এর উদ্দেশ্য হয় সময়টিতে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগি করে কাটানো এবং গোনাহ থেকে নিজেকে দূরে রাখা। যদিও সবসময়েরই আমল হলো, গোনাহের কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখা। তবুও ফজিলতপূর্ণ দিনগুলোকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া এবং আমলের পরিধি বাড়িয়ে দেওয়া। কেননা আল্লাহতায়ালা জিলকদসহ চারটি সম্মানিত মাস সম্পর্কে বলেন, ‘বারো মাসের মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ। এটিই সহজ-সরল দ্বীন। সুতরাং তোমরা এ মাসসমূহের মধ্যে নিজেদের প্রতি জুলুম করো না।’ -সুরা তওবা : ৩৬

বর্ণিত আয়াতে সম্মানিত মাসে নিজের প্রতি জুলুম করতে নিষেধ করা হয়েছে। এখানে জুলুমের অর্থ কি? হজরত আবদুর রহমান ইবনে যায়েদ ইবনে আসলাম (রহ.) বলেন, ‘জুলুম বলা হয়, আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হওয়া এবং তার হুকুম না মানা।’ -তাফসিরে তাবারি : ১১/৪৪৩

জুলুম তথা আল্লাহর আনুগত্য বর্জন এবং তার অবাধ্যতায় জড়িত হওয়া সবসময়ই নিষিদ্ধ। তবে জিলকদ মাসে জুলুম করা বেশি ভয়াবহ। সুতরাং মুমিন-মুসলমানের উচিৎ সর্বাত্মকভাবে এই মাসগুলোতে গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা।

জিলকদা মাসের আরও একটি গুরুত্বপুর্ণ আমল হলো, রোজা রাখা। এ বিষয়েও হাদিসে বর্ণনা রয়েছে। বাহিলিয়্যাহ গোত্রীয় ‘মুজিবা’ নামের এক নারী থেকে তার পিতা অথবা চাচার সূত্রে বর্ণিত। একদা তিনি (পিতা অথবা চাচা) হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে দেখা করতে আসলে নবী কারিম (সা.) তার আমলের ব্যাপারে বেশ কিছু কথা বলেন। তখন তাকে নবী কারিম ( সা.) বলেন, ‘তুমি হারাম মাসগুলোতে রোজা রাখো এবং রোজা বর্জনও করো। তুমি হারাম মাসগুলোতে রোজা রাখো এবং রোজা বর্জনও করো। তুমি হারাম মাসগুলোতে রোজা রাখো এবং রোজা বর্জনও করো। এ কথা বলে তিনি তিনটি আঙ্গুল একত্র করার পর তা ফাঁক করে দিলেন।’ -সুনানে আবু দাউদ : ২৪২৮

যেহেতু জিলকদ অতি সম্মানিত মাস। তাই এ মাসে অধিক পরিমাণে ইবাদত-বন্দেগি করে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভে সচেষ্ট হওয়া কাম্য। রাব্বে কারিম আমাদের তওফিক দিন। আমিন।

;

চলতি হজেই যাত্রীরা পাবেন উড়ন্ত ট্যাক্সি সেবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
এয়ার ট্যাক্সি হজযাত্রাকে করবে আরও মসৃণ, ছবি: সংগৃহীত

এয়ার ট্যাক্সি হজযাত্রাকে করবে আরও মসৃণ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সৌদি আরব হজযাত্রীদের জন্য প্রতিনিয়ত নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা বাড়াচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হজ ও উমরাকে করেছে অনেক সহজ। সেই ধারাবাহিকতায় এবার জেদ্দা থেকে মক্কা পর্যন্ত হজ ও উমরা পালনকারীরা উড়ন্ত ট্যাক্সিযোগে (এয়ার ট্যাক্সি) যাতায়াত করতে পারবেন।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) মদিনায় অবতরণ করা চলতি হজ মৌসুমের প্রথম হজযাত্রীদের স্বাগত জানানোর সময় এ তথ্য জানান সৌদি আরবের পরিবহন ও লজিস্টিক বিষয়ক মন্ত্রী সালেহ আল জাসের।

তিনি বলেন, ‘পরিবহবন ব্যবস্থার চরম উন্নতির পর উড়ন্ত ট্যাক্সির এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীতে পরিবহন ব্যবস্থায় এ সেবা দিতে অনেক বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। এ ধরনের পরিবহন পরিচালনায় প্রযুক্তি ও উপযুক্ত পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা জরুরি। এবারের হজ মৌসুমে এমন পরিবহন পরীক্ষামূলক চলবে।’

গত বছর সৌদি আরবের পরিবহন মন্ত্রী আল জাসের হজ মৌসুমে উড়ন্ত ট্যাক্সি পরিচালনার কথা জানিয়েছিলেন।

তখন তিনি বলেছিলেন, উড়ন্ত ট্যাক্সি সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা সামনে রেখে ১০০টি লিলিয়াম জেট কেনার চুক্তি করেছে সৌদি আরবের এয়ারলাইনস সাউদিয়া। জার্মান ইলেকট্রিক ভার্টিক্যাল টেক অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং (ইভিটিওএল) বিমান কিনবে সংস্থাটি।

সাউদিয়া গ্রুপের করপোরেট কমিউনিকেশনের পরিচালক আবদুল্লাহ আল শাহরানি বলেন, ‘জেদ্দার কিং আবদুল আজিজ বিমানবন্দর থেকে মসজিদে হারামের কাছে মক্কা হোটেল ও অন্য পবিত্র স্থানগুলোর মধ্যে ওমরা পালনকারীদের যাতায়াত মসৃণ করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

উড়ন্ত ট্যাক্সি মূলত ছোট বাণিজ্যিক বিমান, যা চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট এলাকায় ফ্লাই করে। ইভিটিওএল এয়ার ট্যাক্সি সর্বোচ্চ চার থেকে ছয়জন যাত্রী বহন করতে পারবে।

পরিবেশবান্ধব এসব বিমান সবোর্চ্চ ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে যাতায়াত করতে সক্ষম।

;

রেকর্ড সংখ্যক হজযাত্রীর প্রত্যাশা, ভয় কঠোর আইন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিগত ৫৫ বছরের ইতিহাসে ২০১২ সালে সর্বাধিক ৩১ লাখ ৬১ হাজার ৫৭৩ জন মানুষ পবিত্র হজ পালন করেন। যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হজ ছিল। অন্যদিকে করোনা মহামারির পর ২০২৩ সালে হজপালন করেছিলেন ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫ জন পুরুষ ও নারী। যার মধ্যে বিদেশির সংখ্যা ১৬ লাখ ৬০ হাজার ৯১৫ ও সৌদি আরবের হাজির সংখ্যা ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৩০ জন। এবার এখনও ঘোষণা দেওয়া হয়নি, তবে রেকর্ড সংখ্যক হজযাত্রী হজ পালন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সৌদির জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ১৪ জুন থেকে শুরু হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা। তবে চন্দ্রোদয় সাপেক্ষে হজের আনুষ্ঠানিকতা একদিন এগোতে বা পেছাতে পারে। চলতি ২০২৪ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ হজ করতে সৌদিতে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর দেশটির অভ্যন্তরে এ বছর হজ করতে পারেন অন্তত ১০ লাখ মানুষ। এই ৩০ লাখ মানুষকে যথাযথ পরিষেবা প্রদানের চূড়ান্ত প্রস্তুতির পর্যায় পার করছে সৌদির বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা সংস্থা।

অনুমতি ছাড়া হজ করলে জেল-জরিমানা
অবৈধ উপায়ে হজপালন রোধে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সৌদি আরব। এ বছর অনুমতি ছাড়া হজ করলে বা হজবিষয়ক কোনো নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল (দুই লাখ ৯২ হাজার ৭৯৪ টাকা) জরিমানা ধার্য করেছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

আরব নিউজের খবরে বলা হয়, সৌদি আরবের নাগরিক, বাসিন্দা ও দর্শনার্থীদের কেউ মসজিদে হারামের আশপাশের এলাকা, হজের স্থান, আল-রুসাইফা এলাকার হারামাইন স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্ধারিত সময়ে হজবিষয়ক নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ধরা পড়লে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে।

আগামী ২-২০ জুন হজ মৌসুমে নির্দেশনা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে এ জরিমানা প্রযোজ্য হবে। এ সময়ে নিয়ম লঙ্ঘনকারী বাসিন্দাদের তাদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং সৌদি আরবে পুনরায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে। তা ছাড়া এ নির্দেশনা বারবার লঙ্ঘন করলে পুনরায় ১০ হাজার সৌদি রিয়াল (২ লাখ ৯২ হাজার ৭৯৪ টাকা) জরিমানা করা হবে।

সৌদি বার্তা সংস্থা আরও জানায়, বিনা অনুমতিতে হজ করে হজবিষয়ক নির্দেশনা লঙ্ঘনকারীদের পরিবহন করে ধরা পড়লে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল (১৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯৭২ টাকা) জরিমানা করা হবে এবং ব্যবহৃত গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হবে।

তা ছাড়া পরিবহন করা মানুষের সংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জরিমানার পরিমাণ আরও বাড়বে। আর নির্দেশনা লঙ্ঘনকারী প্রবাসী হলে সাজাভোগের পর তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

নুসুক কার্ড ছাড়া মিনা-আরাফা ও মুজদালিফায় প্রবেশ নিষিদ্ধ
সৌদি আরবে হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবার প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য ‘নুসুক’ স্মার্ট কার্ড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হজযাত্রী অথবা হজ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কিংবা শ্রমিক যারাই মাশায়েরে মুকাদ্দাসায় (মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাত) প্রবেশ করতে চান, সবার জন্যই তা বাধ্যতামূলক।

মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স এবং ফেইসবুক পেজে ধারাবাহিক পোস্টে বলেছে যে, ‘নুসুক’ স্মার্ট কার্ড নিয়মিত এবং অনিয়মিত হজযাত্রীদের মাঝে পার্থক্য করতে পারে। সুতরাং যার কাছে কার্ডটি থাকবে না, তার পক্ষে মাশায়েরে মুকাদ্দাসায় (মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাত) প্রবেশ করা সম্ভব হবে না।

গত সপ্তাহে, সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় ‘নুসুক’ স্মার্ট কার্ডের উভয় সংস্করণ মুদ্রিত ও ডিজিটাল কপি উদ্বোধন করেছে। মুদ্রিত কপি হজযাত্রী বহন করবে এবং ফোনের ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটাল কার্ডের কোড স্ক্যান করে তাতে প্রবেশ করা যাবে।

হজ সম্পর্কে সৌদি আরবের বিভিন্ন নির্দেশনা

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, কার্ডটিতে অনেকগুলো পরিষেবা রয়েছে, যা হজযাত্রীদের জন্য তাদের হজের কার্যাবলী পালন করা সহজ করবে। কারণ এটি তাদের সহজভাবে চলাফেরা করতে এবং দলবদ্ধভাবে হজ কার্যক্রম সম্পাদনের সময়-সূচির ব্যাপারে নির্দেশনা-সতর্কতাবলী প্রাপ্তিতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে তারা তাদের জন্য প্রদত্ত যাবতীয় সেবা-পরিষেবার মান মূল্যায়ন এবং অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন।

বহু দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পেজে হজ ব্যবস্থাপনায় সেবা প্রদানের নামে ভূয়া বিজ্ঞপ্তিদাতা জাল হজ এজেন্সিগুলোর খপ্পরে না পড়ার জন্য মন্ত্রণালয় পুনঃরায় সতর্ক করেছে।

মন্ত্রণালয় আরও গুরুত্বারোপ করেছে যে, কেবলমাত্র সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যু করা হজ ভিসা লাভের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন দেশের হজ অফিসগুলোর মাধ্যমে কিংবা হজ মিশন নেই- এমন দেশগুলোতে ‘নুসুক হজ’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হজব্রত পালন করার জন্য আসা যাবে।

হাজিরা পাবেন ২২ বোতল করে জমজম
সৌদি আরবের একটি কোম্পানি জানিয়েছে, আসন্ন হজ মৌসুমে হাজিদের মধ্যে তারা জমজম পানির চার কোটি বোতল বিতরণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। আল জামেজিমাহ নামের এই কোম্পানিটির বোর্ড মেম্বার ইয়াসের সুসু বলেছেন, এ বছর প্রত্যেক হাজির জন্য ২২ বোতল পানি বরাদ্দ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, হাজিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে সেগুলো দেওয়ার জন্য একটি ডিজিটাল পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন তারা।

যার মধ্যে রয়েছে একটি বারকোড সেবা। যেটি বোতলের ওপর প্রদর্শিত থাকবে। এটির মাধ্যমে পানির অর্ডার এবং সেগুলো সরবরাহ করা হবে। এক্ষেত্রে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা হবে বলে বার্তাসংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সিকে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা। হাজিদের মধ্যে এসব পানির বোতল যেন সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা যায় সেজন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ বিভিন্ন কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের মূল কার্যক্রম হবে মক্কা শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চল ও মক্কার প্রবেশ ও বের হওয়ার পয়েন্টগুলোতে।

;

মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ

ভিসা হয়নি ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্প থেকে হজযাত্রায় বাংলাদেশি হজযাত্রীরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্প থেকে হজযাত্রায় বাংলাদেশি হজযাত্রীরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের ভিসা করার জন্য দ্বিতীয় দফায় আবেদনের জন্য বাড়ানো সময় শেষ হচ্ছে শনিবার (১১ মে)। কিন্তু এখনও ভিসা হয়নি ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বুলেটিনে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৮৯৯ হজযাত্রীর ভিসা হয়েছে।

বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন। সেই হিসাবে এখনও ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

তবে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সি আশা করছে, আজকের মধ্যেই বেশিরভাগ হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়ে যাবে। অল্প কিছু বাকি থাকলেও দুই-একদিনের মধ্যে তা করার সময় পাওয়া যাবে। তাই ভিসা জটিলতায় কেউ হজে যেতে পারবেন না- এমনটি হওয়ার সুযোগ নেই।

এর আগে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ভিসা সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরপর ৭ মে পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ভিসা আবেদনের সময় বাড়িয়ে ১১ মে করা হয়। এ সময়ের মধ্যে হজযাত্রীর ভিসা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে বলে জানিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

চলতি হজ মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার ৫৬২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে ৮০ হাজার ৬৯৫ জনসহ মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন। ইতোমধ্যে হজযাত্রার ফ্লাইট শুরু হয়েছে এবং ৫ হাজার ১৮২ জন হজযাত্রী সৌদি আরব গমন করেছেন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৪ সনের পবিত্র হজ ১৬ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এবার বেসরকারি হজযাত্রীরা ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত ২৫৯টি হজ এজেন্সির মাধ্যমে হজের কার্যক্রম সম্পন্ন করছেন। হজযাত্রীদের সৌদি আরব যাত্রার শেষ ফ্লাইট ১০ জুন আর প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন।

;